ফয়যানে আযান

(প্রতিদিন ৩ কোটি ২৪ লাখ নেকী অর্জন করুন)

দরূদ শরীফের ফযীলত

মদীনার   তাজেদার,   রাসুলদের   সরদার,  হুযুর   পুরনূর صَلَّی  اللّٰہُ    تَعَالٰی   عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم  ইরশাদ  করেছেন:“যে (ব্যক্তি)      কুরআন       পড়লো,      আপন       প্রতিপালকের প্রশংসা করলো, অতঃপর নবী صَلَّی  اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم      এর      উপর      দরূদ      পড়লো,     তারপর     নিজ  প্রতিপালক    থেকে    ক্ষমা     প্রার্থনা     করলো,    তবে    সে মঙ্গলকে  সেটার  জায়গা  থেকে  তালাশ  করে    নিলো।” (শুয়াবুল ঈমান, ২য় খন্ড, ৩৭৩ পৃষ্ঠা, হাদীস- ২০৮৪)

صَلُّوْا عَلَی  الْحَبِیْب!                              صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد

হুযুর   পুরনূর   صَلَّی   اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ    وَسَلَّم  একবার আযান দিয়েছিলেন

রাসুলে আকরাম صَلَّی   اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم সফরে একবার আযান দিয়েছিলেন এবং কালিমায়ে শাহাদাত  এভাবে বলেন:  اَشْهَدُاَنِّىْ  رَسُوْلُ اللهِ  (আমি  সাক্ষ্য  দিচ্ছি যে,  আমি  আল্লাহর   রাসুল)  ।  (ফতোওয়ায়ে   রযবীয়া, ৫ম  খন্ড, ৩৭৫  পৃষ্ঠা।   তুহফাতুল   মুহতাজ,  ১ম খন্ড, ২০৯ পৃষ্ঠা)

آذَان নাকি اَذَان?

অনেক লোক آذَان বলে থাকে  এটি ভুল উচ্চারণ।  آذَان শব্দটি اُذْنٌ  এর  বহুবচন,  আর  اُذُنْ  শব্দের  অর্থ:  কান।  শুদ্ধ  উচ্চারণ হলো اَذَان। اَذَان এর শাব্দিক  অর্থ:  সতর্ক করা।

আযানের ফযীলত সম্বলিত ৯টি বরকতময় হাদীস

(১) কবরে পোকামাকড় থাকবে না

“সাওয়াব  অর্জনের  উদ্দেশ্যে  আযান  দাতা ঐ শহীদের মত   যে  রক্তে    রঞ্জিত  আর  যখন  সে  মৃত্যুবরণ  করবে কবরের মধ্যে   তার শরীরে পোকা  পড়বে না।” (আল  মুজামুল   কবীর    লিত    তাবারনী,   ১২তম   খন্ড,    ৩২২ পৃষ্ঠা, হাদীস-১৩৫৫৪)

(২) মুক্তার গম্বুজ

“আমি  জান্নাতে    গেলাম।  এতে  মুক্তার    গম্বুজ  দেখতে পেলাম   আর   এর     মাটি   মেশকের     ছিলো।   জিজ্ঞাসা  করলাম:  হে জিব্রাঈল!  এটা কার  জন্য? আরয  করল:  আপনি  صَلَّی  اللّٰہُ   تَعَالٰی   عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ    وَسَلَّم  এর   উম্মতের মুয়াজ্জিন  ও  ইমামদের জন্য।”   (আল জামিউস   সগীর লিস সুয়ূতী, ২৫৫ পৃষ্ঠা, হাদীস-৪১৭৯)

(৩) পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ

“যে   (ব্যক্তি)   পাঁচ  ওয়াক্ত   নামাযের    আযান   ঈমানের ভিত্তিতে সাওয়াবের নিয়্যতে দিল তার যে   সমস্ত গুনাহ পূর্বে  সংঘটিত  হয়েছে   তা    ক্ষমা   হয়ে  যাবে।  আর  যে (ব্যক্তি) ঈমানের ভিত্তিতে সাওয়াবের  নিয়্যতে  নিজের  সাথীদের  পাঁচ  ওয়াক্ত  নামাযের  ইমামতি  করবে  তার  পূর্ববর্তী  গুনাহ  ক্ষমা করে  দেয়া  হবে।” (আস  সুনানুল  কুবরা        লিল       বায়হাকী,      ১ম      খন্ড,      ৬৩২       পৃষ্ঠা,  হাদীস-২০৩৯)

(৪) শয়তান ৩৬ মাইল দূরে পালিয়ে যায়

“শয়তান  যখন  নামাযের  উদ্দেশ্যে  প্রদত্ত  আযান  শুনে  পালিয়ে  রোহা  চলে    যায়।”  বর্ণনাকারী  বলেন:  মদীনা শরীফ থেকে রোহা ৩৬ মাইল দূরে অবস্থিত। (মুসলিম, ২০৪ পৃষ্ঠা, হাদীস-৩৮৮)

(৫) আযান দোয়া কবুল হওয়ার মাধ্যম

“যখন মুয়াজ্জিন  আযান  দেয় তখন  আসমানের   দরজা খুলে      দেয়া      হয়     এবং     দোয়া     কবুল     হয়।”     (আল মুসতাদরাক    লিল     হাকিম,     ২য়     খন্ড,     ২৪৩    পৃষ্ঠা, হাদীস-২০৪৮)

(৬) মুয়াজ্জিনের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা

“মুয়াজ্জিনের আওয়াজ যতটুকু  পৌছে,  তাঁর জন্য ক্ষমা করে  দেয়া  হয়   এবং   প্রত্যেক  জল-স্থলের  মধ্যে   যারা তাঁর আওয়াজ শুনে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকে। (মুসনাদে ইমাম  আহমদ   বিন   হাম্বল,  ২য়  খন্ড, ৫০০ পৃষ্ঠা, হাদীস-৬২১০)

(৭)    আযান     দেয়া     হয়     এমন       দিন    আযাব    থেকে নিরাপদ

“যে    এলাকাতে   আযান    দেয়া     হয়,    আল্লাহ্    তাআলা আপন আযাব থেকে   ঐ দিন   এটিকে  নিরাপত্তা   প্রদান করেন।”   (আল    মুজামুল  কবীর   লিত   তাবারানী,   ১ম খন্ড, ২৫৭পৃষ্ঠা, হাদীস-৭৪৬)

(৮) ভয়ভীতির চিকিৎসা

“যখন  আদম عَلٰی   نَبِیِّنَا  وَعَلَیۡہِ الصَّلٰوۃُ وَالسَّلَام জান্নাত থেকে হিন্দুস্থানে অবতরণ করেন তাঁর ভয়ভীতি অনুভব হয় তখন জিব্রাঈল عَلَیۡهِ الصَّلٰوۃُ وَالسَّلَام অবতরণ করে আযান   প্রদান     করেন।”   (হিলয়াতুল     আওলিয়া,    ৫ম খন্ড, ১২৩ পৃষ্ঠা, হাদীস-৬৫৬৬)

(৯) দুঃশ্চিন্তা দূর করার উপায়

“হে আলী! আমি  তোমাকে  দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ অবস্থায় পাচ্ছি   নিজের  ঘরের  কোন  অধিবাসীকে  কানে  আযান  দিতে  বল।      আযান       দুঃশ্চিন্তা       ও       দুঃখ      প্রতিরোধকারী। (জামেউল   হাদীস    লিস   সুয়ূতী,     ১৫তম   খন্ড,   ৩৩৯ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৬০১৭) এই বর্ণনাটি লিপিবদ্ধ করার পর আ’লা   হযরত    رَحْمَۃُ     اللّٰہِ     تَعَالٰی   عَلَیْہِ   “ফতোওয়ায়ে রযবীয়া       শরীফে    ৫ম   খন্ডের,   ৬৬৮   পৃষ্ঠায়    বলেন: মাওলা   আলী    کَرَّمَ    اللہُ    تَعَالٰی    وَجۡہَہُ    الۡکَرِیۡم    এবং মাওলা  আলী  পর্যন্ত  এই  হাদীসের  যতজন  বর্ণনাকারী  আছে সকলে বলেন: فَجَرَّبْتُهُ فَوَجَدْتُهُ كَذٰ لِكَ (আমরা এর ব্যাপারে পরীক্ষা চালাই আর এটিকে ঐ রকম পেয়েছি) ।      (মিরকাতুল    মাফাতিহ,      ২য়      খন্ড,    ৩৩১    পৃষ্ঠা। জামেউল        হাদীস,        ১৫তম        খন্ড,        ৩৩৯        পৃষ্ঠা,  হাদীস-৬০১৭)

মাছেরাও ক্ষমা প্রার্থনা করে

বর্ণিত  আছে:  আযান    প্রদানকারীর  জন্য   প্রত্যেক   বস্তু ক্ষমা      প্রার্থনা      করে      এমনকি      সমূদ্রের      মাছেরাও।  মুয়াজ্জিন  যে  সময়  আযান  দেয়  তখন  ফিরিশতাগণও  তার  (সাথে সাথে  আযানের)   পূনরাবৃত্তি  করতে  থাকে আর  যখন   আযান   শেষ  হয়ে  যায়  তখন  ফিরিশতাগণ কিয়ামত  পর্যন্ত তাঁর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিন  থাকা  অবস্থায়  মৃত্যুবরণ  করে  তার  কবরের  আযাব হয় না এবং  মুয়াজ্জিন মৃত্যুকালীন  যন্ত্রণা থেকে  মুক্তি  পেয়ে  যায়।   কবরের   কঠোরতা  এবং  সংকীর্ণতা হতেও   নিরাপদ  থাকে।   (সূরা   ইউসূফের  তাফসীরের  সার সংক্ষেপ, অনুদিত ২১ পৃষ্ঠা)

আযানের উত্তর দেয়ার ফযীলত

মদীনার তাজেদার صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم একদা ইরশাদ   করেন:  “হে  মহিলাগণ!   যখন  তোমরা  বিলাল رَضِیَ اللّٰہُ تَعَالٰی عَنْہُ কে আযান ও ইক্বামত দিতে শুনবে, তখন     সে     যেভাবে   বলে   তোমরাও   অনুরূপ    বলবে, কেননা আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য প্রত্যেক শব্দের বিনিময়ে   এক  লাখ   নেকী  লিখে  দিবেন,  এক   হাজার মর্যাদা  বৃদ্ধি করে দিবেন  এবং  এক  হাজার গুনাহ্ মুছে দিবেন।”

মহিলাগণ      এটা      শুনে      আরয     করলেন:     এটা     তো  মহিলাদের  জন্য, পুরুষদের   জন্য  কি রয়েছে? ইরশাদ করলেন:     “পুরুষদের     জন্য     এর      দ্বিগুণ।”      (তারিখে দামেশক   লিইবনে আসাকির, ৫৫তম খন্ড, ৭৫  পৃষ্ঠা)

صَلُّوْا عَلَی  الْحَبِیْب!                            صَلَّی  اللهُ تَعَالٰی  عَلٰی مُحَمَّد

Top