গোসলের অযুই যথেষ্ট
===========
গোসলের জন্য যে অযু করা হয়, সেটাই যথেষ্ট, যদিও  উলঙ্গাবস্থায়     গোসল     করে     থাকে।      গোসলের      পর  দ্বিতীয়বার  অযু  করা  জরুরী  নয়।  যদি  গোসলের  পূর্বে  অযু   নাও   করা   হয়,   তবুও   গোসলের   মাধ্যমে   অযুর  অঙ্গসমূহে পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে অযু হয়ে যায়, নতুনভাবে       অযু       করার       দরকার       নেই।       কাপড়  পাল্টানোর কারণে অযু ভঙ্গ হয় না।

থুথুর মধ্যে রক্ত
========
(১) মুখ থেকে রক্ত বের হলো, থুথুর উপর যদি রক্তের প্রাধান্য থাকে, তবে অযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। অন্যথায় ভঙ্গ হবে না। রক্তের প্রাধান্য বুঝার পদ্ধতি হচ্ছে;যদি  থুথুর রং  লাল হয়, তাহলে বুঝতে হবে  এতে রক্তের প্রাধান্য আছে,   তাই  অযু   ভঙ্গ  হয়ে  যাবে  এবং   এ  লাল  (থুথু) নাপাকও।  যদি থুথুর রং হলুদ  হয়,   তবে  বুঝতে  হবে  এতে রক্তের  উপর  থুথুর প্রাধান্য  আছে। অতএব   অযু ভঙ্গ হবে না, আর    এ  হলুদ  বর্ণের থুথু   নাপাকও  নয়। (বাহারে  শরীয়াত ১ম খন্ড ৩০৫ পৃষ্ঠা) (২)  মুখ  থেকে এত বেশি   পরিমাণ   রক্ত বের হলো যে,  থুথু লাল হয়ে  গেলো,  এমতাবস্থায়  কুলি   করার   জন্য  লোটা  (বদনা) অথবা  গ্লাসে মুখ লাগিয়ে  পানি   নিলে লোটা  (বদনা) ,  গ্লাস   ও   সবটুকু   পানি   নাপাক    হয়ে   যাবে।    এ   সময় অত্যন্ত   সাবধানতার  সাথে   হাতের   কোষে  পানি  নিয়ে কুলি    করতে    হবে।    আর    কুলির    পানির    ছিঁটা    যেন  কাপড়   ইত্যাদিতে   না   পড়ে    সে   ব্যাপারেও    সতর্ক থাকতে হবে।

অযুর মধ্যে সন্দেহ আসার ৫টি বিধান
=============
❁   অযুকালীন  সময়ে   যদি  কোন  অঙ্গ  ধৌত    করা   না করার    ক্ষেত্রে   সন্দেহ   জাগে   এবং  এ  সন্দেহ  জীবনে  প্রথম  বারের  মত   ঘটে    থাকে,   তাহলে  সে  অঙ্গ   ধুয়ে নিন।    আর    যদি   এরূপ    সন্দেহ   প্রায়ই     ঘটে    থাকে, তাহলে    তার  প্রতি  ভ্রুক্ষেপ করবেন না। অনুরূপ অযুর পরেও   যদি   কোন  অঙ্গ   ধৌত      করা  না  করার  ক্ষেত্রে সন্দেহ   সৃষ্টি  হয়,    তার   প্রতি    কোন  দৃষ্টি   দিবেন  না।  (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩১০ পৃষ্ঠা) ❁আপনি অযু অবস্থায় ছিলেন,  কিন্তু  এখন আপনার  অযু আছে কিনা, তাতে    আপনার    সন্দেহ    সৃষ্টি    হলো।    এমতাবস্থায়ও  আপনার অযু বহাল থাকবে নতুন ভাবে আপনাকে অযু করতে হবে না। কেননা, সন্দেহের কারণে অযু ভঙ্গ হয় না।   (প্রাগুক্ত,  ৩১১  পৃষ্ঠা)  ❁  প্ররোচনার   কারণে   অযু ভেঙ্গে  গেছে  মনে  করে  পুনরায়   অযু   করা  সাবধানতা অবলম্বন করা নয় বরং তা শয়তানেরই অনুকরণ মাত্র। (প্রাগুক্ত)   ❁নিশ্চিতভাবে    আপনি   ততক্ষণ    পর্যন্ত   অযু অবস্থায় থাকবেন যতক্ষণ পর্যন্ত অযু  ভঙ্গ হওয়ার উপর শপথ    করে     বলার    মত     আপনার    প্রবল    ধারণা    না জন্মে।❁আপনার স্মরণ আছে যে, আপনার একটি অঙ্গ অধৌত  রয়ে  গেছে।   তবে   কোন  অঙ্গটি  অধৌত  রয়ে  গেছে   তা   আপনি    নিশ্চিতভাবে   বলতে   পারছেন     না, এমতাবস্থায়     আপনি     বাম     পা     ধুয়ে     নিন।     (দুররে  মুখতার, ১ম খন্ড, ৩১০ পৃষ্ঠা) 
তন্দ্রা দ্বারা অযু ভঙ্গ হওয়া ও না হওয়ার বর্ণনা
=============
তন্দ্রা দ্বারা অযু ভঙ্গ হওয়ার দু’টি শর্ত: (১) তন্দ্রার সময় উভয় নিতম্ব ভালভাবে সংযুক্ত না  থাকা।  (২) অচেতন অবস্থায়  তন্দ্রার  ক্ষেত্রে  কোন  প্রতিবন্ধকতা  না  হওয়া।  দুটি শর্ত এক সাথে পাওয়া  গেলে  অর্থাৎ তন্দ্রার  সময় উভয়       নিতম্ব     ভালভাবে     সংযুক্ত    না     থাকলে    এবং অচেতন অবস্থায় তন্দ্রার দ্বারা অযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। আর একটি   শর্ত   পাওয়া   গেলে   এবং   অপরটি   পাওয়া   না  গেলে তন্দ্রা দ্বারা অযু ভঙ্গ হবে না।

নিম্নোক্ত  দশ   ধরণের  তন্দ্রাতে  অযু    ভঙ্গ  হয়   না:   (১) উভয় নিতম্ব  জমিনের সাথে  সংযুক্ত   রেখে এবং উভয়   পা এক দিকে প্রসারিত করে বসা অবস্থায় তন্দ্রা পেলে। চেয়ার,    বাস   ও   রেল   গাড়ির    আসনে   বসা   অবস্থায় তন্দ্রারও একই হুকুম। (২) উভয় নিতম্ব জমিনের সাথে সংযুক্ত   রেখে    এবং   উভয়   হাত   দ্বারা     উভয়     পায়ের গোছাকে   বেষ্টন   করে  বসা   অবস্থায়  তন্দ্রা   পেলে  চাই হাত জমিনের উপর রাখুক বা মাথা হাঁটুর উপর রাখুক। (৩) জমিন,   পালঙ্ক, চতুষ্পদ  জন্তু  ইত্যাদিতে   চারজানু হয়ে বসা অবস্থায় তন্দ্রা পেলে। (৪) দু’জানু করে সোজা হয়ে বসা অবস্থায় তন্দ্রা পেলে। (৫) ঘোড়া বা খচ্চরের জিন সজ্জিত পৃষ্ঠে আরোহণ অবস্থায়  তন্দ্রা পেলে। (৬) জীবজন্তু   উঁচু    ভূমিতে   আরোহণের    সময়    বা   সমতল ভূমিতে   চলার   সময়   এদের    জিনশূন্য  পৃষ্ঠে   সাওয়ার অবস্থায় তন্দ্রা  পেলে।   (৭)   উভয় নিতম্ব  সংযুক্ত  রেখে বালিশ    বা    অন্য    কোন    কিছুতে    হেলান    দিয়ে    বসা  অবস্থায়  তন্দ্রা পেলে। যদিও তা সরিয়ে ফেলা হলে  সে পড়ে যাবে। (৮) দন্ডায়মান  অবস্থায়  তন্দ্রা। (৯)   রুকু অবস্থায় তন্দ্রা পেলে। (১০) পেট উরুর সাথে এবং  বাহু পার্শ্বের     সাথে     না     লাগিয়ে    পুরুষেরা    যেরূপ    সুন্নাত মোতাবেক    সিজদা    করে   থাকে,     সেরূপ    সিজদারত অবস্থায় তন্দ্রা গেলে।

তন্দ্রার উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো   চাই  নামাযরত  অবস্থায়  পাওয়া     যাক      বা     নামাযের       বাহিরে      পাওয়া     যাক সর্বাবস্থায়  অযু  ভঙ্গ  হবে    না   এবং  নামাযরত  অবস্থায় পাওয়া       গেলে       নামাযও       ভঙ্গ         হবে       না,       যদিও ইচ্ছাকৃতভাবে ঘুমিয়ে থাকুক না কেন। অবশ্য নামাযের যে    সমস্ত   রুকন   তন্দ্রাবস্থায়   আদায়    করা   হয়েছে   তা পুনরায়   আদায়    করে  দিতে   হবে।    আর  যদি   জাগ্রত অবস্থায়   নামায    বা   নামাযের    কোন    রুকন   শুরু   করে তন্দ্রায়  আচ্ছন্ন  হয়ে  পড়ে তাহলে   নামাযের যে  অংশ  জাগ্রত   অবস্থায়   আদায়  করা  হয়েছে  তা  আদায়  হয়ে   যাবে    আর   তন্দ্রাবস্থায়     যা   আদায়    করা    হয়েছে    তা পুনরায় আদায় করে দিতে হবে।

নিম্নোক্ত  দশ ধরণের তন্দ্রাতে   অযু  ভঙ্গ হয়ে  যায়: (১) পয়ের উপর ভর   দিয়ে হাঁটু গেড়ে বসা   অবস্থায় তন্দ্রা গেলে। (২) চিৎ হয়ে  শয়ন  করা  অবস্থায় তন্দ্রা  গেলে,  (৩) উপুড়  হয়ে শয়ন করা    অবস্থায় তন্দ্রা গেলে, (৪)  ডান     কাতে  বা  বাম  কাতে  শয়ন   করা   অবস্থায়  তন্দ্রা গেলে,  (৫)   এক  কনুইতে  ঠেস  দিয়ে  বা  এক   হাতের  উপর ভর দিয়ে তন্দ্রা গেলে (৬) বসে তন্দ্রার সময় এক দিকে ঝুঁকে পড়লে এবং এক অথবা উভয় নিতম্ব উঠে গেলে।   (৭)  জীবজন্তু নিচু ভূমিতে নামার   সময় এদের জিনশূন্য পৃষ্ঠে সাওয়ার অবস্থায় তন্দ্রা গেলে, (৮) পেট উরুর উপর রেখে দু’জানু হয়ে বসে  তন্দ্রার  সময় উভয় নিতম্ব    সংযুক্ত  না   থাকলে,    (৯)  মাথা  উরু   ও  পায়ের গোছার   উপর   রেখে   চার    জানু  হয়ে   বসাবস্থায়  তন্দ্রা  গেলে। (১০)  পেট উরুর সাথে  এবং  বাহু পার্শ্বের সাথে লাগিয়ে   এবং   উভয়    হাত   মাটিতে     বিছিয়ে   মহিলারা যেরূপ সিজদা করে থাকে, সেরূপ   সিজদারত  অবস্থায় তন্দ্রা  গেলে।  তন্দ্রার উপরোক্ত  পদ্ধতিগুলো  নামাযরত অবস্থায় পাওয়া যাক বা নামাযের বাইরে পাওয়া যাক,  সর্বাবস্থায়   অযু   ভঙ্গ   হয়ে   যাবে।   অতঃপর   যদি   উক্ত  পদ্ধতিতে  ইচ্ছাকৃত  তন্দ্রা  যায়  তখন  নামায  ভঙ্গ  হয়ে  যাবে। আর   অনিচ্ছাকৃতভাবে  তন্দ্রা গেলে  নামায  ভঙ্গ  হবে  না তবে অযু ভঙ্গ   হয়ে যাবে।   পুনরায় নতুনভাবে অযু   করে   অবশিষ্ট   নামায   যেখানেই   তন্দ্রা   এসেছিল  সেখান থেকেই নির্দিষ্ট শর্তাবলী পালন সহ আদায় করে দিতে হবে, যেখানে তন্দ্রা এসেছিলো । আর শর্ত জানা না  থাকলে  নতুনভাবে   সম্পূর্ণ    নামায   পুনরায়  আদায় করে   দিন।  (ফতোওয়ায়ে  রযবীয়া  (সংকলিত)     ,  ১ম খন্ড, ৩৬৫, ৩৬৭ পৃষ্ঠা)

আম্বীয়ায়ে  কিরাম  عَلَیۡہِمُ   الصَّلٰوۃُ     وَ    السَّلَام  এর  অযু এবং ঘুম মোবারক
==============
আম্বীয়ায়ে  কিরামদের  عَلَیۡہِمُ   الصَّلٰوۃُ       وَ   السَّلَام  অযু  ঘুমানোর      দ্বারা     ভঙ্গ    হয়    না।     ফায়েদা:    আম্বীয়ায়ে  কিরামদের  عَلَیۡہِمُ  الصَّلٰوۃُ    وَ   السَّلَام   চক্ষু  ঘুমায়   কিন্তু অন্তর  ঘুমায়    না,  ❁  কতিপয়  অযু   ভঙ্গ     করা  জিনিস   আম্বীয়ায়ে  কিরাম  عَلَیۡہِمُ  الصَّلٰوۃُ    وَ   السَّلَام   এর  জন্য এই    ভাবে    অযু    ভঙ্গের    কারণ    নয়।    তাদের    থেকে  সেগুলো প্রকাশ হওয়া অসম্ভব। উদাহরণ স্বরূপ- পাগল হওয়া   বা নামাযের   মধ্যে অট্টহাসি। ❁বেহুশ  হওয়াটা  আম্বীয়ায়ে কিরামদের عَلَیۡہِمُ الصَّلٰوۃُ  وَ السَّلَام শরীরের উপর   প্রকাশ   হতে   পারে।   কিন্তু   অন্তর   ঐ   অবস্থায়ও  সজাগ      ও     জাগ্রত     থাকে।      (ফতোওয়ায়ে     রযবীয়া  (সংকলিত) , ৪র্থ খন্ড, ৭৪০ পৃষ্ঠা)

মসজিদ সমূহের অযুখানা

মিসওয়াক করার কারণে অনেক সময় দাঁত  দিয়ে রক্ত  বের   হওয়ার   ফলে  থুথু  লাল   হয়ে  নাপাক  হয়ে   যায়। কিন্তু   আফসোস!   এর   থেকে   বাঁচার   কোন   তৎপরতা  মানুষের  মধ্যে  দেখা     যায়   না।  অধিকাংশ  মসজিদের অযুখানাগুলোও  ততবেশি  গভীর  করে  তৈরী  করা  হয়  না।   ফলে  অযু   করার  সময়  লাল   থুথু  বিশিষ্ট     কুলির  নাপাক পানির  ছিটা কাপড় বা শরীরে গিয়ে পড়ে তা নাপাক হয়ে যায়।    অনুরূপ ঘরে  নির্মিত  গোসলখানার  সমতল ও কঠিন মেঝে অযু করার সময়ও অযুর পানির ছিটা   অধিক   হারে   কাপড়     বা   শরীরে    গিয়ে     পড়ে থাকে।    তাই  এর  থেকেও  সাবধানতা   অবলম্বন     করা একান্ত প্রয়োজন।

ঘরে অযুখানা তৈরী করুন

বর্তমানে মানুষের মধ্যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বেসিনে অযু করার   প্রচলন   দেখা    যায়,     যা   মুস্তাহাবের    পরিপন্থী। আফসোস!              আজকাল               মানুষেরা               নিজেদের আরাম-আয়েশের জন্য অনেক  বড়  বড় বিলাস বহুল দালানকোঠা     নির্মাণ    করে    থাকলেও    এতে    সামান্য  একটি    ছোট্ট  অযুখানা    তৈরী   করতে  তারা  কার্পন্যতা  বোধ    করে।    তাই   সুন্নাতের    প্রতি   আন্তরিকতা   আছে এমন ইসলামী ভাইদের প্রতি আমার মাদানী আবেদন, সম্ভব হলে আপনারা প্রত্যেকেই আপনাদের ঘরে পানি নিষ্কাশনের    ব্যবস্থা    সম্বলিত      পাইপ      বিশিষ্ট    একটি অযুখানা তৈরী করে   নিবেন।  তবে  অযুখানা বানানোর সময়  বিশেষভাবে  লক্ষ্য  রাখবেন,  পানির  ধারা   যাতে  সোজা  মেঝেতে  না  পড়ে  ঢালু  জায়গায়  গিয়ে  পড়ে  সেভাবে  পাইপের  নল  ফিট  করা  হয়।    অন্যথায়  অযু   করার সময়  দাঁত  দিয়ে রক্ত  বের হলে সে রক্ত মিশ্রিত  কুলির   নাপাক   পানির   ছিটা  কাপড়  বা  শরীরে   গিয়ে পড়ার সম্ভাবনা   থাকবে।   আপনি যদি সে ছিটা থেকে বাঁচার   যথাযথ ব্যবস্থা সম্বলিত একটি  অযুখানা  নির্মাণ  করতে   চান   তাহলে   এই   রিসালার     শেষে   অযুখানার প্রদত্ত নমুনা   অনুসরণ করেই করতে  পারেন।  ওয়াটার ক্লজেট তথা W.C তে পানি দ্বারা ইস্তিঞ্জা করার সময়ও সচরাচর পায়ের গোড়ালীর দিকে  নাপাক পানির ছিটা এসে  পড়ে। তাই শৌচকর্মের পর উভয় পা ভালভাবে ধৌত করে নেবেন।

অযুখানা বানানোর নিয়ম
=============
পারিবারিক অযুখানার দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে ৪২ ইঞ্চি এবং পৌন  ৪৯"   ইঞ্চি  প্রস্থ,   উচ্চতা জমিন থেকে পৌন  ১৪  ইঞ্চি।   উচ্চতা  ১৪   ইঞ্চির   উপরে   থাকবে,  সাড়ে  ৭" ইঞ্চি  প্রস্থ  এবং   দৈর্ঘ্য  এক   সিড়ি  থেকে  অন্য   সিড়ি পর্যন্ত সাড়ে ৩২"   ইঞ্চি উচ্চতা বিশিষ্ট  সিড়ির ধাপের ন্যায় একটি বৈঠকখানা। বৈঠকখানাটি অযুখানার দৈর্ঘ্য বা  প্রস্থ  যে   কোন   বরাবরই   হতে   পারবে।  বৈঠকখানা এবং সম্মুখস্থ দেয়ালের মাঝখানেব ব্যবধান থাকবে ২৫ ইঞ্চি।   অযুখানাটির   সামনের   দিকে   এমনিভাবে   ঢালু  (ঝখঙচঊ)    করতে   হবে  যাতে  নালা  সাড়ে  ৭  ইঞ্চির বেশি  না   হয়।   পা  রাখার  স্থান  পায়ের   দৈর্ঘ্যরে    চেয়ে সামান্য  বেশি  সর্বোচ্চ  সাড়ে ১১ ইঞ্চি  নিচুতে করতে   হবে। এর পুরো  জায়গায় সম্মুখস্থ স্থানে সাড়ে  ৪ ইঞ্চি উঁচু নিচু করবে যাতে ঘষার ফলে পায়ের ময়লা (বিশেষ করে   ঠান্ডার   সময়)   বের   হয়ে   চলে   যায়।     খ   বা   ট সাইজের   একটি বক্র  নল   মাটি   হতে ৩২  ইঞ্চি উপরে স্থাপন করতে হবে। এভাবে অযুখানা তৈরী করে পানির নল   খুলে  দেয়া  হলে   পানির  ধারা  ঢালু   পায়োনালিতে গিয়ে পড়বে এবং আপনার জন্য দাঁতের রক্ত  ইত্যাদি নাজাসাত  হতে বেঁচে  থাকা  اِنۡ  شَآءَ اللّٰہ   عَزَّوَجَلَّ  সহজ হয়ে   যাবে।   সামান্য   সংস্কার   করে   মসজিদ   সমূহেও  অনুরূপ অযুখানা তৈরী করা যেতে পারে।

নোট: যদি  টাইলস  লাগাতে  হয়,   তবে কম পক্ষে  ঢালু জায়গায়  সাদা  রঙের    লাগান, যাতে  মিসওয়াক করার দ্বারা   যদি দাঁত  থেকে  রক্ত বের  হয়  তবে  থুথু ইত্যাদি নজরে পড়ে।

অযুখানার ৯টি মাদানী ফুল

(১)  সম্ভব  হলে   এই রিসালার  শেষে   অযুখানার প্রদত্ত নমুনা    অনুসরণ   করেই   নিজের   ঘরে   অযুখানা   তৈরী  করুন।

(২) রাজমিস্ত্রিদের প্রদত্ত   নির্দেশনা উপেক্ষা করে প্রদত্ত নকশা    অনুসারে    নির্মিত    পারিবারিক    অযুখানার    পা  রাখার স্থান  (SLOPE) দুই ইঞ্চি রাখুন।

(৩)  যদি  একাধিক  নল  লাগাতে  হয়,    তবে   দুই  নলে  মাঝখানে পঁচিশ ইঞ্চির ব্যবধান রাখুন।

(৪)    অযুখানার      নলে     প্রয়োজনানুসারে      কাপড়    বা প্ল্যাস্টিকের ছিপি লাগিয়ে নিন।

(৫)      যদি      পাইপ    দেয়ালের    বাইরে    লাগিয়ে    থাকে প্রয়োজন অনুসারে বৈঠকখানা  আরো এক বা দুই ইঞ্চি দূরে করুন।

(৬)       সর্বোত্তম    হবে    কাজ    অসম্পূর্ণ    থাকা     অবস্থায়  পরীক্ষামূলকভাবে     দু-একবার     বসে     বা     অযু      করে  ভালভাবে দেখে তারপর কাজ সম্পূর্ণ করা।

(৭)    অযুখানা,     গোসলখানা    ইত্যাদির   মেঝে   টাইল্স লাগাতে         হলে         অমসৃন          ও         খশখশে          (SLIP RESISTANCE) লাগাবেন যাতে পিছলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা না থাকে।

(৮)  পা   রাখার  স্থানের  কিনারা  এবং   এর  নিচের  ঢালু অংশ কমপক্ষে দুই ইঞ্চির পাথুরে, খুবই খশখশে এবং  গোলাকার   করুন।   যাতে   প্রয়োজনে   পা   ঘষে   পায়ের  ময়লা পরিস্কার করা যায়।

(৯)       বাবুর্চিখানা,      গোসলখানা,       পায়খানা,      উন্মুক্ত  আঙ্গিনা,      ঘরের       ছাদ,      মসজিদের     অযুখানা      এবং যেখানেই   পানি    প্রবাহিত    করার   প্রয়োজন   আছে   সে সমস্ত    স্থানের   ঢালু     রাজমিস্ত্রি    যা     বলবে    তার   চেয়ে দেড়গুণ   বেশি   করুন।   যেমন     সে   দুই   ইঞ্চি   রাখতে বললে  আপনি তিন  ইঞ্চি রাখুন। রাজমিস্ত্রি  তো   বলবে আপনি    কোন   চিন্তা     করবেন   না   এক   ফোটা   পানিও আটকে  থাকবে না।  আপনি   যদি  তার   কথা অন্ধভাবে মেনে নেন  তাহলে   ঢালু সমান   নাও হতে পারে।   তাই তার   কথার   উপর  নির্ভর  না  করে  নিজের  সুবিধা  মত কাজ করুন।اِنۡ شَآءَ اللّٰہ عَزَّوَجَلَّ এর উপকারীতা আপনি নিজেই    দেখতে   পাবেন।   কেননা,    বাস্তবে   অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেঝের বিভিন্ন স্থানে পানি আটকে থাকতে দেখা যায়।

যাদের অযু থাকে না, তাদের জন্য ৬টি বিধান

(১) প্রস্রাবের ফোঁটা ঝরলে, বায়ু  নির্গত  হলে, ক্ষতস্থান থেকে রক্ত বা  পূঁজ বের হয়ে গঁড়িয়ে পড়লে, চোখের অসুখের  কারণে  চক্ষু  হতে  অশ্রু  প্রবাহিত  হলে,  নাক,  কান   ও  স্তন     দিয়ে    পানি   বের  হলে  ফোঁড়া   বা  ক্ষত ইত্যাদি হতে তরল পদার্থ প্রবাহিত হলে, ডায়রিয়া হলে অযু     ভঙ্গ    হয়ে     যায়।    যদি    কেউ    এরূপ     দুরারোগ্য রোগব্যাধিতে  আক্রান্ত  হয়  এবং  সর্বদা  তার  সাথে  সে  রোগ  ব্যাধি  লাগা  থাকার   কারণে  সে   শুরু  থেকে  শেষ পর্যন্ত   নামাযের   সম্পূর্ণ   সময়সীমাতে  অযু  করে   ফরয নামায আদায় করতে না পারে, তাহলে সে  শরীয়াতের দৃষ্টিতে (মাযুর) অক্ষম হিসেবে গণ্য হবে। তাই সে এক অযু দ্বারা সে ওয়াক্তের মধ্যে ফরয, নফল যত নামাযই আদায়  করতে  চায়  আদায়  করতে  পারবে।   উল্লেখিত  রোগের    কারণে    তার    অযু    ভঙ্গ    হবে    না।    (বাহারে  শরীয়াত,  ১ম খন্ড, ৩৮৫ পৃষ্ঠা।  দুররে  মুখতার, রদ্দুল মুহতার, ১ম খন্ড, ৫৫৩ পৃষ্ঠা)   এই মাসয়ালাটি  আরো সহজ ভাষায় বুঝানোর    চেষ্টা  করছি; এ  ধরণের রোগী নারী  পুরুষ  তাদের  অক্ষমতা  শরয়ী  হওয়া  না  হওয়ার  ব্যাপারে এভাবেই পরীক্ষা  করুন,   যে কোন   দুই  ফরয  নামাযের মধ্যবর্তী  সময়ের মধ্যে  চেষ্টা করবে যে, অযু  করে  পবিত্রতার   সাথে  কমপক্ষে  ফরয  নামায   আদায় করা যায় কিনা। সম্পূর্ণ   সময়ের  ভিতর    বারবার চেষ্টা  করা    সত্ত্বেও   যদি   এতটুকু   সুযোগ   না    পায়।    সে   এ ধরণের  যে,  কখনো  তো  অযু  করার  সময়ই  অক্ষমতা  হয়ে যায়  এবং শেষ  সময় এসে গেছে তবে  তখন তার জন্য   অনুমতি   রয়েছে   যে,   অযু   করে   নামায   আদায়  করলে নামায হয়ে যাবে। এখন যদিও নামায আদায়ের সময়   অসুস্থতার    কারণে   নাপাকী    শরীর   থেকে    বের হোক  বা না হোক।   ফোকাহায়ে  কিরামগণ رَحِمَہُمُ   اللہُ السَّلَام বলেন: কারো  নাকের  ফোঁড়া  ফেঠে গেলো বা সেটার   ক্ষত   বের   হলো,   তবে   সে   শেষ   সময়   পর্যন্ত  অপেক্ষা   করবে     যদি   রক্ত     বের   না    হয়,    বরং    যদি ধারাবাহিক ভাবে থেমে থেমে প্রবাহিত হয়, তখন সময় বের হওয়ার আগেই  অযু করে  নাময   আদায়   করবে।  (আল বাহরুর রায়েক, ১ম খন্ড, ৩৭৩-৩৭৪ পৃষ্ঠা)

(২) ফরয নামাযের ওয়াক্ত শেষ   হওয়ার সাথে সাথেই (মাযুরের) অক্ষমের অযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। এ কথার অর্থ হলো, যেমন-কেউ আসরের সময় অযু করলো। তাহলে সূর্য  অস্ত     যাওয়ার  সাথে   সাথেই    তার   অযু  ভঙ্গ  হয়ে যাবে। আর কেউ সূর্যোদয়ের পর অযু করলো। তাহলে যোহরের   ওয়াক্ত  শেষ  না  হওয়া  পর্যন্ত  তার   অযু  ভঙ্গ হবে না। কেননা, যোহরের  ওয়াক্ত  শেষ  হওয়ার আগে কোন   ফরয   নামাযের   সময়সীমা    শেষ    হয়ে     যাওয়া পাওয়া যায়নি। তাই যোহরের  নামাযের  সময়  শেষ না হওয়া       পর্যন্ত     অক্ষমের    অযু    বহাল    থাকবে।     ফরয নামাযের  ওয়াক্ত  শেষ হওয়ার  সাথে  সাথেই অক্ষমের  অযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। সে এক ওয়াক্তের অযু  দ্বারা  অন্য ওয়াক্তে    ফরয,    নফল    কোন    নামায    আদায়   করতে পারবে  না।  অন্য   ওয়াক্তে  নামায  আদায়  করার  জন্য  তাকে পুনরায় নতুনভাবে  অযু  করতে  হবে।  তবে  অযু ভঙ্গ     হওয়ার   এ   হুকুম    তখনই   প্রযোজ্য    হবে    যখন  (মাযুরের) অক্ষমের সে রোগ তার অযুকালীন সময়ে বা অযুর   পর দেখা  দেয়। আর  এরূপ   না হলে এবং  অযু   ভঙ্গের   অন্য   কোন   কারণও   পাওয়া   না   গেলে    ফরয  নামাযের    ওয়াক্ত    শেষ   হওয়ার   সাথে   সাথেই   শরয়ী মাযুরের অযু ভঙ্গ হবে না। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩৮৬  পৃষ্ঠা।  দুররে  মুখতার  রদ্দুল  মুহতার,  ১ম   খন্ড,  ৫৫৫ পৃষ্ঠা)

(৩)   অক্ষমতা  প্রমাণিত  হওয়ার   পর   একটি  নামাযের সম্পূর্ণ   সময়সীমার মধ্যে একবারও    সে  রোগ পুনরায় দেখা  দিলে  সে  (মাযুর)   অক্ষম   হিসেবে  থেকে  যাবে। যেমন-কারো    নামাযের   সম্পূর্ণ    সময়ই   ফোঁটা   ফোঁটা  প্রস্রাব  পড়তে   থাকে  এবং  অযু   করে  পবিত্র   অবস্থায় ফরয আদায়  করার  সুযোগটুকুও সে  পায় না।  তাহলে সে     (মাযুর)     অক্ষম     প্রমাণিত     হলো।      এখন      অন্য নামাযের     সম্পূর্ণ    সময়   সীমাতে   যদি   তার   অনবরত ফোঁটা    ফোঁটা    প্রস্রাব    না    পড়ে,    বরং    মাঝে    মধ্যে  দু-একবার   পড়ে   থাকে   এবং   সে   অযু   করে     পবিত্র অবস্থায়    নামায       আদায়ের    সুযোগ    পায়    তবুও     সে (মাযুর)     অক্ষম     হিসেবে     গণ্য     হবে।     তবে     একটি  নামাযের সম্পূর্ণ সময়সীমার মধ্যে একবারও যদি তার ফোঁটা  ফোঁটা  প্র¯্রাব না পড়ে  এবং  গোটা সময়ই সে সুস্থ তথা প্রস্রাববিহীন অবস্থায় অতিবাহিত করে তাহলে সে আর (মাযুর)  অক্ষম    থাকবে না, যতক্ষণ   পর্যন্ত সে  তার  পূর্বাববস্থায়  ফিরে  না  আসে।  অর্থাৎ  সে  পুনরায়  (মাযুর)     অক্ষম    হিসেবে    গণ্য     হওয়ার    জন্য    একটি নামাযের   সম্পূর্ণ   সময়ই    তার     ফোঁটা    ফোঁটা   প্রস্রাব   পড়তে হবে। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩৮৫ পৃষ্ঠা)

(৪) যে রোগের কারণে    (মাযুর)  অক্ষম সাব্যস্ত হয়েছে  সে  রোগ দ্বারা  (মাযুরের) অক্ষমের  অযু   ভঙ্গ হবে  না।  তবে  অযু     ভঙ্গ  হওয়ার   অন্য  কোন   কারণ   যদি   তার মধ্যে পাওয়া  যায়, তাহলে তা দ্বারা  তার অযু ভঙ্গ হয়ে  যাবে। যেমন কারো অনবরত বায়ু নির্গত হওয়ার রোগ আছে, তাহলে বায়ু নির্গত হওয়ার কারণে তার অযু ভঙ্গ না হলেও তার থেকে প্রস্রাবের ফোঁটা পড়লে অযু ভঙ্গ হয়ে    যাবে।    অনুরূপ    কারো    অনবরত   ফোঁটা   ফোঁটা প্রস্রাবের পড়ার রোগ  আছে। তাহলে প্রস্রাবের কারণে তার অযু  ভঙ্গ না   হলেও তার থেকে   বায়ু   নির্গত   হলে অযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। (প্রাগুক্ত, ৫৮৬ পৃষ্ঠা)

(৫)   যে   রোগের   কারণে    অক্ষম    সাব্যস্ত    হয়েছে     তা ব্যতীত      অযু  ভঙ্গ  হওয়ার     অন্য  কোন  কারণ  পাওয়া যাওয়ার কারণে (মাযুর) অক্ষম অযু করলো, অযু করার সময় তার  সে রোগও দেখা গেলো না, যার কারণে  সে অক্ষম   হয়েছিল,   কিন্তু   অযু   করার   পর  তার  মধ্যে  ঐ রোগ দেখা গেলো, তাহলে  অযু  ভঙ্গ হয়ে যাবে। (তবে এ   হুকুম   তখনই   প্রযোজ্য   হবে   যদি   (মাযুর)   অক্ষম  নিজের   রোগ   ব্যতীত   অযু   ভঙ্গ    হওয়ার    অন্য    কোন কারণ  পাওয়া    যাওয়ার  কারণে অযু করে  থাকে। আর যদি  নিজের রোগের  কারণে অযু    করে  থাকে,  তাহলে অযু  করার  সময়  সে  রোগ  দেখা  না  গিয়ে  অযু  করার  পর   দেখা  গেলেও  অযু  ভঙ্গ   হবে  না।)  যেমন-  কারো ফোঁটা   ফোঁটা   প্রস্রাব   পড়তো,  তার   বায়ূ    বের  হলো  এবং   সে  অযু   করলো,  এখন     অযু  করার   সময়   তার ফোঁটা    ফোঁটা প্রস্রাব পড়া বন্ধ  ছিলো এবং অযু করার পর  তার  ফোঁট   ফোঁটা   প্রস্রাব  পড়ল,   তবে   অযু  ভঙ্গ হয়ে যাবে। তবে অযু   করা কালীন  সময়ে পড়লে অযু ভঙ্গ হবে না। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩৮৭ পৃষ্ঠা। দুররে মুখতার রদ্দুল মুহতার, ৫৫৭ পৃষ্ঠা)

(৬)   (শরয়ী   মাযুরের)   অক্ষমের    এমন     রোগ   আছে,  যাদ্বারা তার কাপড় সর্বদা নাপাক হয়ে যায়। যদি তার কাপড়  এক দিরহামের বেশি নাপাক হয়ে  থাকে এবং সে  যদি  মনে   করে  কাপড়  ধৌত করে  পাক করে তা দ্বারা  নামায  আদায়   করা    সম্ভবপর  হবে,   তাহলে   তা পাক করেই নামায আদায় করা তার উপর ফরয। আর যদি   মনে  করে   তা   পাক  করে  নামায  আদায়   করতে গেলে   নামায  শেষ  করার  আগেই  পুনরায়  তা   নাপাক হয়ে যাবে, তাহলে তা ধৌত করা  আবশ্যক  নয়, ধৌত না করেই  তা দ্বারা নামায আদায় করা যাবে। এর দ্বারা জায়নামায বা নামাযের স্থান অপবিত্র হয়ে গেলেও তার নামায   শুদ্ধ   হয়ে  যাবে।  (বাহারে   শরীয়াত,  ১ম  খন্ড, ৩৮৭ পৃষ্ঠা)

(অক্ষমের (মাযুরের) অযুর বিস্তারিত   মাসয়ালা  বাহারে শরীয়াত    ১ম   খন্ডের  ৩৮৫-৩৮৭  পৃষ্ঠা,  ফতোওয়ায়ে রযবীয়া  (সংকলিত)  ৪র্থ খন্ড  ৩৬৭-৩৭৫  পৃষ্ঠা থেকে জেনে নিন)

অযু সম্পর্কিত ৭টি মাসয়ালা

(১)  পুরুষ  বা  নারীর  প্রস্রাব  বা  পায়খানার  রাস্তা  দিয়ে  প্রস্রাব, পায়খানা, বীর্য, কৃমি, পাথরি ইত্যাদি বের হলে অযু  ভঙ্গ হয়ে   যাবে।  (আলমগিরী,  ১ম  খন্ড,  ৯ পৃষ্ঠা) (২) পুরুষ বা মহিলার  পিছনের  রাস্তা  দিয়ে সামান্যতম  বায়ূ  বের  হলেও  অযু  ভঙ্গ  হয়ে  যাবে।  তবে  পুরুষ  বা  মহিলার   মূত্রদ্বার দিয়ে  বায়ু নির্গত  হলে  অযু  ভঙ্গ  হবে  না।    (বাহারে   শরীয়াত,    ১ম   খন্ড,    ৩০৪   পৃষ্ঠা)   (৩) বেঁহুশ হয়ে পড়লে অযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। (ফতোওয়ায়ে আলমগিরী,  ১ম খন্ড,  ১২ পৃষ্ঠা)  (৪)   কেউ কেউ বলে  থাকে  শুয়োরের   নাম  নিলে  অযু   ভঙ্গ  হয়ে   যায়।  এটা একটি  ভুল  কথা।   (৫)   অযু   করার  সময়ে   যদি     বায়ু  নির্গত হয়   বা  অন্য কোন  কারণে  অযু   ভঙ্গ  হয়ে যায়,  তাহলে    পুনরায়   নতুনভাবে    অযু    করতে   হবে।   পূর্বে ধৌত  করা   অঙ্গ   সমূহও  পুনরায়  ধৌত  করতে   হবে।   (ফতোওয়ায়ে  রযবীয়া  (সংকলিত)  ,  ১ম  খন্ড,   ২৫৫   পৃষ্ঠা)  (৬)  অযু  ব্যতীত  কুরআন  শরীফ  বা  এর  কোন  আয়াত বা  যে কোন ভাষায় অনুদিত কুরআন  শরীফের অনুবাদ     স্পর্শ      করা      সম্পূর্ণরূপে     হারাম।     (বাহারে শরীয়াত,  ১ম  খন্ড,   ৩২৬-৩২৭    পৃষ্ঠা)   (৭)    কুরআন শরীফ  স্পর্শ  না  করে  দেখে   দেখে   বা   মুখস্থ    কুরআন শরীফের কোন আয়াত অযুবিহীন পাঠ করা যাবে।

Top