নবী করীম ﷺ এর ৩টি বাণী
===============
﴾১﴿ “(একজন) হাজী সাহেব নিজ পরিবারের মধ্য হতে চারশত ব্যক্তিকে সুপারিশ করবে এবং গুনাহ থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে, যেন সে ঐ দিনই আপন মায়ের পেট থেকে জন্ম নিয়েছে।”(মুসনদে বাজ্জার, ৮ম খন্ড, ১৬৯ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৩১৯৬)
﴾২﴿ “হাজীর ক্ষমা হয়ে যায়, আর হাজী যার জন্য মাগফিরাতের দোআ করে তার জন্যও ক্ষমা রয়েছে।”(মাজমাউয যাওয়ায়েদ, ৩য় খন্ড, ৪৮৩ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৫২৮৭)
﴾৩﴿ “যে ব্যক্তি হজ্ব অথবা ওমরার উদ্দেশ্যে বের হয় এবং পথিমধ্যে (রাশতায়) মৃত্যুবরণ করল, তার হিসাব নিকাশ হবে না আর তাকে বলা হবে; اُدۡخُلِ الۡجَنَّةَ অর্থাৎ তুমি জান্নাতে প্রবেশ করো।” (আল মু’জামুল আওসাত, ৪র্থ খন্ড, ১১১ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৮৮৩৫)
প্রত্যেক কদমে সাত কোটি নেকী
===================
আ’লা হযরত মাওলানা শাহ আহমদ রযা খান رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ “আনোয়ারুল বিশারত”গ্রন্থে পায়ে হেঁটে হজ্ব করার প্রতি উৎসাহ প্রদান করতে গিয়ে বলেছেন যে, সম্ভব হলে আপনি পায়ে হেঁটে (মক্কা শরীফ থেকে মিনা, আরাফাত ইত্যাদিতে) যান, আর যখন আপনি মক্কা শরীফে ফিরে আসবেন, তখন আপনার প্রত্যেক কদমের বিনিময়ে সাত কোটি নেকী লিখা হবে, আর এই নেকী সমূহ আনুমানিক হিসাবে সাত লক্ষ চুরাশি হাজার কোটি হয় এবং আল্লাহ তাআলা এর অনুগ্রহ তাঁরই প্রিয় নবী, হুযুর صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সদকায় এই উম্মতের উপর অগণিত রয়েছে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ১০ম খন্ড, ৭৪৬ পৃষ্ঠা) (লিখক) সগে মদীনা عُفِیَ عَنہُ আরজ করেন যে, আ’লা হযরত رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ পুরাতন দীর্ঘ সড়কের অনুপাতে এই হিসাব করেছেন। এখন যেহেতু মক্কা শরীফ থেকে মিনায় যাওয়ার জন্য পাহাড় সমুহের মধ্যে সুড়ঙ্গ বের করা হয়েছে, আর পায়ে হেঁটে যাওয়া যাত্রীদের জন্য সড়ক খুবই সংক্ষিপ্ত ও সহজ হয়ে গেছে। সে হিসেবে নেকী সমুহের সংখ্যা ও কমে আসবে। وَاللہ وَرَسُوۡلُہٗ اَعۡلَم عَزَّوَجَلَّوَ صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم
পায়ে হেঁটে হজ্বকারীর সাথে ফিরিশতারা আলিঙ্গন করে
==================
নবী করীম صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “যখন হাজী (কোন বাহণে) আরোহণ করে আসে, তখন ফিরিশতারা তাঁর সাথে মুসাফাহা করে (অর্থাৎ হাত মিলায়), আর যে হাজী পায়ে হেঁটে আসে ফিরিশতারা তার সাথে মুআনাকা করে (অর্থাৎ আলিঙ্গন করে)। (ইত্তেহাফুস সাদাতু লিয্ যুবাইদী, ৪র্থ খন্ড, ৪৬৫ পৃষ্ঠা)
হজ্ব মধ্যবর্তী কুরআনের হুকুম
=================
২য় পারার সূরা বাকারার ১৯৭ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন: فَلَا رَفَثَ وَ لَا فُسُوۡقَ ۙ وَ لَا جِدَالَ فِی الۡحَجِّ ؕ
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: তবে না স্ত্রীদের সামনে সম্ভোগের আলোচনা করা হবে, না কোন গুনাহ, না কারো সাথে ঝগড়া হজ্বের সময় পর্যন্ত।
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা, হযরত আল্লামা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আজমী رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেছেন: (হজ্বের মধ্যে) আপনাকে ঐ সকল কথাবার্তা থেকে অবশ্যই অবশ্যই অনেক দূরে থাকতে হবে। যখন রাগ আসে অথবা ঝগড়া হয় বা কোন গুনাহের খেয়াল হয় তখন সাথে সাথে দ্রুত মাথা নিচু করে অন্তরের দিকে মনোনিবেশ করে এই আয়াতটির তিলাওয়াত করুন এবং দু’একবার ‘লা হাওলা শরীফ’পড়ুন। ঐ বিষয়গুলো চলে যেতে থাকবে। এরকম নয় যে, শুধু হাজী সাহেবের পক্ষ থেকে ঐ বিষয়গুলো প্রথমে শুরু হবে অথবা তার সঙ্গী-সাথীদের সাথে ঝগড়া হয়ে যাবে বরং অনেক সময় পরীক্ষামূলক চলন্ত পথিকদেরকে সামনে ঠেলে দেয়া হয় যে, তারা কোন কারণ ছাড়া ঝগড়া বাঁধিয়ে ফেলে এমনকি গালি-গালাজ, অভিশাপ ও অপবাদ দিতেও কুন্ঠাবোধ করে না। তাই হাজী সাহেবকে সর্বদা এ ব্যাপারে সজাগ থাকা চায়। আল্লাহ না করুন, আবার যেন এমন হয়ে না যায় যে, দু’একটি বাক্যের কারণে সকল পরিশ্রম এবং ব্যয় করা সব অর্থ বরবাদ হয়ে যায়। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ১০৬১ পৃষ্ঠা)
সামবাল কার পাও রাখনা হাজীয়ো! রাহে মদীনা মে
কহি এয়্যসা না হো ছারা সফর বেকার হো জায়ে
صَلُّوْا عَلَی الۡحَبِیۡب! صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد