ওমরার পদ্ধতি
তাওয়াফের নিয়ম
========
তাওয়াফ শুরু করার আগে পুরুষেরা ‘ইজতিবা’করে নিবেন। অর্থাৎ চাদরকে ডান হাতের বগলের নিচ দিয়ে এমনভাবে বের করে বাম কাঁধের উপর এভাবে রাখবেন, যেন ডান কাঁধ খোলা থাকে। এখন প্রেমিকগণ কাবার আশে পাশে তাওয়াফের জন্য তৈরী হয়ে যান। ইজতিবায়ী অবস্থায় কা’বা শরীফের দিকে মুখকরে হাজরে আসওয়াদের ঠিক বামদিকে রুকনে ইয়ামানীর পাশে হাজরে আসওয়াদের নিকটে এমন ভাবে দাঁড়িয়ে যাবেন যেন সম্পূর্ণ হাজরে আসওয়াদ আপনার ডান হাতের দিকে থাকে। এখন হাত না উঠিয়ে এভাবে তাওয়াফের নিয়্যত করুন:
اَللّٰھُمَّ اِنِّیْۤ اُرِیْدُ طَوَافَ بَیْتِکَ الْحَرَامِ فَیَسِّرْہُ لِیْ وَتَقَبَّلْہُ مِنِّیْ ط
অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমি তোমারই সম্মানীত ঘরের তাওয়াফ করার ইচ্ছা করছি। তুমি তাকে আমার জন্য সহজ করে দাও, আর আমার পক্ষ থেকে তা কবুল করে নাও।
নিয়্যত করে নেয়ার পর কাবা শরীফেরই দিকে মুখ করে ডান হাতের দিকে এতটুকু পরিমাণ পথ এগিয়ে যাবেন যেন হাজরে আসওয়াদ আপনার ঠিক সামনে হয়ে যায়। (আর এটা অতি সামান্য পরিমাণ সড়লেই হয়ে যাবে। এখন আপনি হাজরে আসওয়াদের ঠিক ডানে এসে গেছেন। এ কথাটির বাস্তব প্রমাণ এটাই যে, দূরে পিলারে যে সবুজ লাইট লাগানো রয়েছে তা ঠিক আপনার পিঠের সোজা পিছনে হয়ে যাবে।) سُبۡحٰنَ اللہ عَزَّوَجَلَّ ইহা জান্নাতের ঐ সোভাগ্যময় পাথর যাকে আমাদেরই প্রিয় আক্বা, মাদানী মুস্তফা صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم নিশ্চিত ভাবে চুমু দিয়েছেন।
এর পর উভয় হাত এভাবে কান পর্যন্ত উঠাবেন যেন হাতের তালুদ্বয় ‘হাজরে আসওয়াদ’ এর দিকে হয় এবং মুখে এই দোআ পড়বেন:
بِسْمِ اللّٰہِ وَالْـحَمْدُ لِلّٰہِ وَاللّٰہُ اَکْبَرُ وَالصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَـلٰی رَسُوْلِ اللّٰہؕ
অনুবাদ: আল্লাহর নামে আরম্ভ আর সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহ সবার চেয়ে মহান, আর আল্লাহর রাসুল صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর উপর দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক।
এখন যদি সম্ভব হয় তাহলে ‘হাজরে আসওয়াদ’শরীফের উপর উভয় হাতের তালু আর তাদের মধ্যখানে মুখ রেখে এভাবেই চুমু দিন যেন শব্দ না হয়। তিন বার এই নিয়মটি পালন করবেন। سُبۡحٰنَ اللہ عَزَّوَجَلَّ আনন্দে আন্তহারা হয়ে যান যে, আপনার ঠোঁট ঐ স্থানকে স্পর্শ করেছে, যেখানে নিশ্চয় মদীনা ওয়ালা আক্বা صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর ঠোঁট মোবারক লেগেছিল। খুশিতে মেতে উঠুন আন্দোলিত হোন, জেগে উঠুন, আর যদি সম্ভব হয় তবে চোখকে আনন্দাশ্রুতে ভাসিয়ে দিন। হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ বিন ওমর رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُمَا বলেছেন যে, আমাদের প্রিয় আক্বা صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم হাজরে আসওয়াদের উপর নিজের ঠোঁট মোবারক রেখে কান্না করছিলেন। তারপর চোখ তুলে ফিরে তাকালেন তখন দেখলেন যে, হযরত ওমরও رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ কাঁদছেন। তখন ইরশাদ করলেন: হে ওমর رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ! ইহা কাঁদার ও অশ্রু ভাসানোরই স্থান। (ইবনে মাজাহ, ৩য় খন্ড, ৪৩৪ পৃষ্ঠা, হাদীস নং: ২৯৪৫)
রোনে ওয়ালে আঁকে মাগোঁ রোনা সব কা কাম নেহী,
যিকরে মুহাব্বত আম হে লেকীন সুযে মুহাব্বত আম নেহী।
এই কথার বিশেষ খেয়াল রাখবেন, যেন মানুষের গায়ে আপনার ধাক্কা না লাগে। এটা শক্তি দেখানোর স্থান নয়। বরং অক্ষমতা ও অসহায়ত্ব প্রকাশের স্থান। অধিক ভিড়ের কারণে যদি চুমু দেয়া সম্ভব না হয়, তাহলে না অন্যকে কষ্ট দিবেন, না নিজে ভিড়ে ঠেলাঠেলি করবেন। বরং হাত অথবা লাকড়ি দ্বারা হাজরে আসওয়াদকে স্পর্শ করে তাতে চুমু খাবেন, আর যদি ইহাও সম্ভব না হয় তখন হাতে সেদিখে ইঙ্গিত করে নিজ হাতকে চুমু খাবেন, আর এটাও কি কোন কম কথা যে, মক্কী মাদানী ছরকার, হুযুর صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর মোবারক মুখ রাখার স্থানে আপনার দৃষ্টি পড়ছে।
হাজরে আসওয়াদ কে চুমু দেয়া কিংবা লাকড়ি বা হাতে স্পর্শ করে চুমু দেয়া কিংবা হাতের ইঙ্গিতে ইহাকে চুমু দেয়াকে ‘ইসতিলাম’বলা হয়।
নবী করীম صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “কিয়ামতের দিন এই পাথরকে উঠানো হবে, এর চোখ হবে যার মাধ্যমে সে দেখবে, জিহ্বা (মুখ) হবে, যার মাধ্যমে কথা বলবে। যিনি সততার সাথে এর ‘ইসতিলাম’ করেছে। তার জন্য সাক্ষী দিবে।” (তিরমিযী, ২য় খন্ড, ২৮৬ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৯৬৩)
اَللَّهُمَّ اِيْمَا نًام بِكَ وَاتِّبَا عًا لِّسُنَّةِ نَبِيِّكَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ تَعَا لٰى عَلَيْهِ وَ سَلَّم
(অনুবাদ: হে আল্লাহ! তোমার উপর ঈমান এনে এবং তোমার নবী মুহাম্মদ صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সুন্নাতের অনুসরনার্থে এই তাওয়াফ করছি।) এরূপ বলতে বলতে কা’বা শরীফের দিকে মুখ করে ডান হাতের দিকে অল্প করে সড়ে দাঁড়ান। এমতাবস্থায় হাজরে আসওয়াদ আপনার চেহারার সামনে আর থাকবে না (আর ইহা স্বল্প নড়া চড়ার মধ্যে সেটা হয়ে যাবে) তখন দ্রুত এমনভাবে সোজা হয়ে যান, যেন খানায়ে কা’বা আপনার বাম হাতের দিকে হয়ে যায়। এভাবেই পথ চলবেন যেন আপনার দ্বারা অন্যজনের গায়ে ধাক্কা না লাগে। পুরুষেরা প্রথম তিন চক্করে রমল করে পথ চলবে। অর্থাৎ খুব দ্রুত অল্প অল্প পা রেখে গর্দান (ঝাঁকিয়ে) পথ চলবেন। যেমনিভাবে শক্তিমান ও বাহাদুর লোকেরা চলে। কিছু লোক লাফিয়ে এবং দৌড়িয়ে পথ চলে এইরূপ করাটা সুন্নাত নয়, আর যেখানে যেখানে ভিড় খুব বেশী হবে আর রমলের মধ্যে নিজের কিংবা অন্য লোকের কষ্ট হবে বলে মনে হয় তখন সেই সময় পর্যন্ত রমল করবেনা। তবে রমলের জন্য থেমে থাকা যাবেনা, তাওয়াফ চালিয়ে যাবেন। তারপর যখনই সময় সুযোগ পাবেন ততক্ষণ সময় পর্যন্ত রমল সহকারে তাওয়াফ করবেন। তাওয়াফের মধ্যে যতটুকু সম্ভব খানায়ে কাবার নিকটে থাকবেন, ইহাই উত্তম। তবে এতবেশী নিকটবর্তীও হবেন না, যা দ্বারা আপনার শরীর কিংবা কাপড় কা’বা শরীফের দেওয়ালের মাটি কিংবা সিমেন্টের দেওয়ালের সাথে লেগে যাবে, আর যখন কাছাকাছিতে ভিড়ের কারণে রমল করা সম্ভবপর না হয়, তখন দুরে থেকেই তাওয়াফ করাটা উত্তম। ইসলামী বোনদের জন্য তাওয়াফ করার ক্ষেত্রে খানায়ে কা’বা থেকে দূরে থাকাই উত্তম। প্রথম চক্করে চলতে চলতে দরূদ শরীফ পড়ে নিন্মের দোআটি পড়বেন:
প্রথম চক্করের দোআ
===========
سُبْحَانَ اللہِ وَالْحَمْدُ لِلہِ وَلَآاِلٰہَ اِلَّا اللہُ وَاللہُ اَکْبَرُط وَلَا حَوْلَ وَلَاقُوَّۃَ اِلَّا بِاللہِ الْعَلِیِّ الْعَظِـیْمِ ط وَالصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلٰی رَسُـوْلِ اللہِ صَلَّی اللہُ عَلَیْہِ وَسَلَّمَ ط اَللّٰهُمَّ اِیْمَانًامبِکَ وَتَصْدِیْقًام بِکِتَابِکَ وَ وَفَآءًم بِعَھْدِکَ وَاتِّبَاعًا لِسُنَّۃِ نَبِیِّکَ وَحَـبِیْبِکَ مُـحَمـَّدٍ صَلَّی اللہُ عَلَیْہِ وَسَلَّمَ ط اَللّٰھُمَّ اِنِّیْۤ اَسْئَلُکَ الْعَفْوَ وَالْعَافِیَۃَ وَالْمُعَافَاۃَ الدَّآئِمَۃَ فِی الدِّیْـنِ وَالـدُّنْیَا وَالْاٰخِـرَۃِ وَالْفَـوْزَ بِالْجَنَّۃِ وَالنَّجَـاۃَ مِنَ النَّارِ ط
অনুবাদ: আল্লাহ তায়ালা পবিত্র, আর সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহ তাআলা ব্যতিত কেউ ইবাদতের যোগ্য নয়। আল্লাহ সবচেয়ে মহান, আর গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার উপায় আর ইবাদতের প্রতি আগ্রহী হওয়ার শক্তি একমাত্র তারই কুদরতে। যিনি মহান এবং মর্যাদাশীল। পূর্ণ দরূদ ও সালাম অবতীর্ণ হোক আল্লাহর রাসুল صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর উপর। হে আল্লাহ! তোমার উপর ঈমান আনয়ন করতঃ আর তোমার কিতাবকে সত্য মেনে নিয়ে, আর তোমার সঙ্গে কৃত অঙ্গিকার পূর্ণ করে তোমার নবী ও তোমারই হাবীব মুহাম্মদ صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সুন্নাতের আনুগত্য করতেই আমি তাওয়াফ শুরু করলাম। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট গুনাহের ক্ষমা ও (প্রত্যেক বিপদাপদ থেকে) নিরাপত্তা, এবং কষ্টদায়ক বিষয় থেকে সর্বদার জন্য হেফাজত লাভ করার প্রার্থনা করছি। দ্বীন ও দুনিয়াবী বিষয়ে, পরকালে আর জান্নাতে কামিয়াবী লাভ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি ভিক্ষা করছি। (এরপর দরূদ শরীফ পড়ে নিন)
রুকনে ইয়ামানীতে পৌঁছা পর্যন্ত এই দোআটি পূর্ণ পড়ে নিবেন। যদি ভিড়ের কারণে নিজের কিংবা অন্যের কষ্ট হওয়ার ভয় না হয়, তবে রুকনে ইয়ামানীকে উভয় হাতে কিংবা ডান হাতে বরকতের উদ্দেশ্যে স্পর্শ করে নিবেন। শুধুমাত্র বাম হাতে স্পর্শ করবেন না। সুযোগ পেলে রুকনে ইয়ামানীকে চুমুও দিয়ে দিবেন। যদি চুমু দেয়া কিংবা স্পর্শ করার সুযোগ না হয় তখন এখানে হাতে ইশারা করে তাতে চুমু খাওয়া সুন্নাত নয়। আজকাল লোকেরা রুকনে ইয়ামনীতে অধিক হারে সুগন্ধি লাগিয়ে দেয়, তাই ইহরাম পরিহিতরা তা ছোঁয়া ও চুমু দেয়ার ক্ষেত্রে অধিক সতকর্তা অবলম্বণ করুন। এখন আপনি কা’বা শরীফের তিন কোণের তাওয়াফ পূর্ণ করে চুতর্থ কোণে রুকনে আসওয়াদের দিকে অগ্রগামী হচ্ছেন। রুকনে ইয়ামানী ও রুকনে আসওয়াদের মধ্যবর্তী দেয়ালকে ‘মুছতাজাববলা হয়। এখানে (বান্দার) কৃত দোআর উপর আমিন বলার জন্য (৭০) হাজার ফিরিশতা নিয়োজিত রয়েছে। এখন আপনি যা চান, নিজ ভাষায় নিজের জন্য ও সকল মুসলামানের জন্য দোআ চেয়ে নিন কিংবা সকলের নিয়্যতে এবং আমি গুনাহগার সগে মদিনা عُفِىَ عَنْهُ (লিখক) কেও দোআতে অন্তর্ভূক্ত করে একবার দরূদ শরীফ পড়ে নিন, আর এই কোরআনী দোআও পড়ে নিন:
رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنۡـیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الۡاٰخِرَۃِ حَسَنَۃً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿۲۰۱﴾
অনুবাদ: হে আমাদের আল্লাহ! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দান কর, আর পরকালেও কল্যাণময় কর এবং আমাদেরকে দোযখের শাসিন্ত থেকে পরিত্রাণ প্রদান কর।
ওহে আশ্রয় প্রার্থীগণ! আপনি হাজরে আসওয়াদের নিকট এসে পৌঁছেছেন। এখানে আপনার এক চক্কর পূর্ণ হল। মানুষেরা এখানে একে অন্যের দেখাদেখি অনেক দূর থেকে হাতকে দুলিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়, এরকম করা কখনো সুন্নাত নয়। এখন আপনি পূর্ব নিয়ানুসারে সতর্কতার সাথে ক্বিবলা মুখী হয়ে হাজরে আসওয়াদের দিকে মুখ করে নিবেন। এখন আর নিয়্যত করার প্রয়োজন নেই। কেননা তা তো প্রথমেই হয়েছে, আর এখন আপনি দ্বিতীয় চক্কর শুরু করতে প্রথম চক্করের ন্যায় উভয়হাত উভয় কান পর্যন্ত উঠিয়ে এই দোআ পড়ে নিবেন:
بِسۡمِ اللہِ وَالۡحَمۡدُ لِلّٰہِ وَاللہُ اَکۡبَرُ وَالصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلٰی رَسُوۡلِ اللہ
পাঠ করে ইছতিলাম করবেন। অর্থাৎ সম্ভব হলে হাজরে আসওয়াদকে চুমু দিয়ে দিবেন। আর যদি সম্ভব না হয়, তাহলে ঐ দিকে হাতে ইঙ্গিত করে হাতকে চুমু খাবেন। প্রথমবারের মত কা’বা শরীফের দিকে মুখ করে অল্প করে ডান হাতের দিকে সড়ে দাঁড়ান। এখন হাজরে আসওয়াদ আপনার সামনে থাকবেনা। তখন দ্রুত ঐ অবস্থায় কা’বা শরীফকে আপনার বাম হাতের দিকে রেখে তাওয়াফে লিপ্ত হয়ে যাবেন এবং দরূদ শরীফ পড়ে এই দোআটি পড়বেন:
দ্বিতীয় চক্করে দোআ
===========
اَللّٰھُمَّ اِنَّ ھٰذَا الْبَیْتَ بَیْتُکَ وَالْحَرَمَ حَرَمُکَ وَالْاَمْـنَ اَمْنُکَ وَالْعَبْدَ عَبْدُکَ وَاَنَا عَبْدُکَ وَابْنُ عَبْدِکَ وَھٰذَا مَقَامُ الْعَآئِذِ بِکَ مِنَ النَّار ط فَـحَرِّمْ لُحُوْمَنَا وَ بَشَرَتَنَا عَلَی النَّارِط اَللّٰھُمَّ حَبِّبْ اِلَیْنَا الْاِیْمَانَ وَزَیِّنْہُ فِیْ قُلُوْبِنَا وَکَرِّہْ اِلَیْنَا الْکُفْرَ وَ الْفُسُوْقَ وَالْعِصْیَانَ وَاجْعَلْنَا مِنَ الرَّاشِدِیْنَ ط اَللّٰھُمَّ قِنِیْ عَذَابَکَ یَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَکَ ط اَللّٰھُمَّ ارْزُقْنِیْ الْجَنَّۃَ بِغَیْرِ حِسَابٍ ط
অনুবাদ: হে আল্লাহ! নিশ্চয় ইহা তোমারই ঘর। আর এই হারম তোমারই দেয়া। আর (এখানের) নিরাপত্তা তোমারই প্রদত্ত নিরাপত্তা। আর প্রত্যেক বান্দা তোমারই বান্দা। আর আমিও তোমার বান্দা। আর তোমার বান্দার পুত্র। ইহা তোমারই নিকট দোযখ থেকে আশ্রয় প্রার্থনার স্থান। আমাদের মাংস ও চামড়া দোযখের উপর হারাম করে দাও। হে আল্লাহ! ঈমানকে আমাদের নিকট পছন্দনীয় কর। আর ইহাকে আমাদের অন্তরে মুহাব্বত সৃষ্টি কর। আর কুফর, খারাপ কাজ ও নাফরমানী কে আমাদের নিকট অপছন্দনীয় কর। আর আমাদেরকে হেদায়াত প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত কর। হে আল্লাহ! আমাকে মুক্তি দাও, তোমার আযাব থেকে যেদিন তোমার বান্দাদেরকে তুমি পুনরুত্থিত করবে। হে আল্লাহ! আমাকে বিনা হিসাবে জান্নাতের অধিকারী কর। (এরপর দরূদ শরীফ পড়ে নিন)
রুকনে ইয়ামানীতে পৌঁছার পূর্বেই এই দোআ শেষ করে নিবেন এবং প্রথমবারের মত আমল করতে করতে হাজরে আসওয়াদের দিকে এগিয়ে যাবেন, আর দরূদ শরীফ পড়ে আগের মত এই কোরআনী দোআটি পড়বেন:
رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنۡـیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الۡاٰخِرَۃِ حَسَنَۃً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿۲۰۱﴾
অনুবাদ: হে আমাদের আল্লাহ! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দান কর, আর পরকালেও কল্যাণময় কর। আর আমাদেরকে দোযখের শাসিন্ত থেকে মুক্তি প্রদান কর।
এই দেখুন! আপনি এখন হাজরে আসওয়াদের নিকটে এসে পৌছেছেন। এখন আপনার দ্বিতীয় চক্করও পূর্ণ হয়েছে। তারপর পূর্বের মত উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে এই দোআটি পড়বেন:
بِسۡمِ اللہِ وَالۡحَمۡدُ لِلّٰہِ وَاللہُ اَکۡبَرُ وَالصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلٰی رَسُوۡلِ اللہ
অতঃপর হাজরে আসওয়াদকে ইসতিলাম করবেন এবং প্রথমবারের মতই তৃতীয় চক্কর আরম্ভ করবেন, আর দরূদ শরীফ পড়ে এই দোআটি পড়ে নিবেন:
তৃতীয় চক্করের দোআ
============
اَللّٰھُمَّ اِنِّیْۤ اَعُوْذُ بِکَ مِنَ الشَّکِّ وَالشِّرْکِ وَالنِّفَاقِ وَالشِّقَاقِ وَسُوۡۤ ءِالْاَخْلَاقِ وَسُوۡۤ ءِ الْمَنْظَرِ وَ الْمُنْقَلَبِ فِی الْمَالِ وَ الْاَھْلِ وَ الْوَلَدِ ط اَللّٰھُمَّ اِنِّیْۤ اَسْئَلُکَ رِضَاکَ وَالْجَنَّۃَ وَاَعُوْذُبِکَ مِنْ سَخَطِکَ وَالنَّارِط اَللّٰھُمَّ اِنِّیْۤ اَعُوْذُبِکَ مِنْ فِتْنَۃِ الْقَبْرِ وَاَعُوْذُ بِکَ مِنْ فِتْنَۃِ الْمَحْیَا وَالْمَمَاتِ ط
অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় চাই, সন্দেহ থেকে, তোমার সত্ত্বা ও গুণাবলীতে শিরক থেকে, আর মতভেদ, মুনাফেকী, খারাপ চরিত্র, খারাপ অবস্থা ও খারাপ পরিণতি থেকে সম্পদে ও পরিবার পরিজনে, হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় চাই। তোমার সন্তুষ্টিও জান্নাত প্রাপ্তি বিষয়ে এবং তোমার আশ্রয় চাই, তোমার গজব ও দোযখ থেকে। হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় চাই কবরের জীবন ও মরনের ফিতনা থেকে। (এরপর দরূদ শরীফ পড়ে নিন)
রুকনে ইয়ামানীতে পৌঁছার পূর্বে এই দোআ শেষ করে নিবেন। আর পূর্বের ন্যায় আমল করতে করতে হাজরে আসওয়াদের দিকে এগিয়ে যাবেন এবং দরূদ শরীফ পড়ে আগের মত কোরআনী এই দোআটি পড়বেন:
رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنۡـیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الۡاٰخِرَۃِ حَسَنَۃً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿۲۰۱﴾
অনুবাদ: হে আমাদের আল্লাহ! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দান কর, আর পরকালেও কল্যাণময় কর। আর আমাদেরকে দোযখের শাসিন্ত থেকে মুক্তি প্রদান কর।
হে আশ্রয় প্রার্থী এই দেখুন! আপনি আবার হাজরে আসওয়াদের কাছে এসে পৌঁছেছেন। এখন আপনার তৃতীয় চক্করও পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। এখন আগের মত উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে এই দোআটি পড়বেন:
بِسۡمِ اللہِ وَالۡحَمۡدُ لِلّٰہِ وَاللہُ اَکۡبَرُ وَالصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلٰی رَسُوۡلِ اللہ
অতঃপর হাজরে আসওয়াদকে ইসতিলাম করবেন। প্রথমবারের মত করে চতুর্থ চক্কর আরম্ভ করবেন। এখন আর রমল করবেন না। কেননা শুধু প্রথম তিন চক্করেই রমল করতে হয়। এখন নিয়মানুযায়ী মধ্যম পন্থায় অবশিষ্ট চক্করগুলো পালণ করে নিবেন। দরূদ শরীফ পড়ে এই দোআ পড়ে নিবেন:
৪র্থ চক্করের দোআ
==========
اَللّٰھُمَّ اجْعَلْہُ حَـجًّـا مَّـبْرُوْرًا وَّسَعْیًا مَّشْکُـوْرًا وَّذَنْبًا مَّـغْفُوْرًا وَّعَمَلاً صَالِحًا مَّقْبُوْلاً وَّتِجَارَۃً لَّنْ تَبُوْرَ ط یَاعَالِمَ مَا فِی الصُّدُوْرِ اَخْرِجْنِیْ یَآاَللہُ مِنَ الظُّلُمَاتِ اِلَی النُّوْرِط اَللّٰھُمَّ اِنِّیْۤ اَسْئَلُکَ مُوْجِبَاتِ رَحْمَتِکَ وَعَزَآئِمَ مَغْفِرَتِکَ وَالسَّلَامَۃَ مِنْ کُلِّ اِثْمٍ وَّالْغَنِیْمَۃَ مِنْ کُلِّ بِرٍّ وَّ الْفَوْزَ بِالْجَنَّۃِ وَ النَّجَاۃَ مِنَ النَّارِ ط اَللّٰھُمَّ قَنِّعْنِیْ بِمَا رَزَقْتَنِیْ وَ بَـارِکْ لِیْ فِیْهِ وَاخْـلُفْ عَلٰی کُلِّ غَآئِبَۃٍ لِّیْ بِخَیْرٍ ط
অনুবাদ: হে আল্লাহ! ইহাকে মাবরুর হজ্বে পরিণত কর। আর চেষ্টাকে পূর্ণসফল, গুনাহ সমুহের ক্ষমা, সৎ গ্রহনীয় কাজে এবং ঘাটতিহীন ব্যবসায় পরিণত কর। হে অন্তরের অবস্থার জ্ঞানী! হে আল্লাহ! আমাকে (গুনাহের) অন্ধকার থেকে (ভাল কাজের) আলোর দিকে নিয়ে যাও। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট তোমার রহমত অর্জনের কারণসমূহ, তোমার ক্ষমা প্রাপ্তির কৌশল সমুহ, প্রত্যেক পাপাচার থেকে নিরাপত্তা, প্রত্যেক নেকী দ্বারা লাভবান হওয়া, জান্নাত পেয়ে সফলকাম হওয়া এবং দোযখ থেকে মুক্তি চাই। হে আল্লাহ! আমাকে সন্তুষ্ট কর তোমার দেয়া রিযিকে, আর আমার জন্য বরকতময় কর, যা তুমি আমাকে দান করেছ। আর আমার অনুপস্থিতিতে আমারই রেখে যাওয়া বস্থকে তুমি কল্যাণময় কর। (এরপর দরূদ শরীফ পড়ে নিন)
রুকনে ইয়ামানী পর্যন্ত পৌঁছে এই দোআটি শেষ করে নিবেন। তারপর পূর্বের ন্যায় আমল করবেন ও হাজরে আসওয়াদের দিকে এগিয়ে আসবেন। দরূদ শরীফ পড়ার পর নিন্মের কোরআনী দোআটি পড়ে নিবেন:
رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنۡـیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الۡاٰخِرَۃِ حَسَنَۃً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿۲۰۱﴾
অনুবাদ: হে আমাদের আল্লাহ! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দান কর, আর পরকালেও কল্যাণময় কর। আর আমাদেরকে দোযখের শাসিন্ত থেকে মুক্তি প্রদান কর।
এই দেখুন! আপনি তারপর হাজরে আসওয়াদে পৌঁছে যাবেন। পূর্বের মত উভয় হাত, কান পর্যন্ত উঠিয়ে নিন্মের দোআটি পড়বেন:
بِسۡمِ اللہِ وَالۡحَمۡدُ لِلّٰہِ وَاللہُ اَکۡبَرُ وَالصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلٰی رَسُوۡلِ اللہ
তারপর ‘ইছতিলাম’ করবেন। ও পঞ্চম চক্কর আরম্ভ করবেন এবং দরূদ শরীফ পড়ে ৫ম চক্করের দোআটি পড়বেন।
৫ম চক্করের দোআ
==========
اَللّٰھُمَّ اَظِلَّنِیْ تَـحْتَ ظِلِّ عَرْشِکَ یَـوْمَ لَاظِـلَّ اِلَّاظِلُّ عَرْشِـکَ وَلَابَاقِیَ اِلَّا وَجْھُکَ وَاسْقِنِیْ مِنْ حَوْضِ نَبِیِّکَ سَیِّدِنَا مُحَـمَّدٍ صَلَّی اللہُ عَلَیْہِ وَسَلَّمَ شَرْبَۃً ھَنِیْۤئَۃً مَّرِیْۤئَۃً لَّا نَظْمَأُ بَعْدَھَاۤ اَبَدًا طاَللّٰھُمَّ اِنِّیْۤ اَسْئَلُکَ مِنْ خَیْرِ مَا سَئَلَکَ مِنْہُ نَبِیُّکَ سَیِّدُنَامُحَمَّدٌ صَلَّی اللہُ عَلَیْہِ وَسَلَّمَ وَاَعُوْذُبِکَ مِنْ شَرِّمَا اسْتَعَاذَکَ مِنْہُ نَبِیُّکَ سَیِّدُنَا مُحَمَّدٌ صَلَّی اللہُ عَلَیْہِ وَسَلَّمَ ط اَللّٰھُمَّ اِنِّیْۤ اَسْئَلُکَ الْجَنَّۃَ وَنَعِیْمَہَا وَ مَا یُقَـرِّبُنِیْۤ اِلَیْھَا مِنْ قَوْلٍ اَوْفِعْلٍ اَوْ عَمَلٍطوَ اَعُوْذُبِکَ مِنَ النَّارِ وَ مَا یُقَـرِّبُنِیْۤ اِلَیْھَا مِنْ قَوْلٍ اَوْ فِعْلٍ اَوْ عَمَلٍ ط
অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমাকে ছায়া প্রদান কর তোমার আরশের ছায়ার নিচে। যেদিন তোমার আরশের ছায়া ব্যতিত কোন ছায়া থাকবে না। এবং তুমি ব্যতিত কেউ অবশিষ্ট থাকবে না। এবং আমাকে তোমারই নবী আমাদেরই আক্বা صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর হাউজে (কাওসার থেকে) পানি পান করার তাওফীক দান কর। যা এমনই পানীয় কখনো গলায় আটকেনা, খুবই সুস্বাধু, যার পরে কখনো পিপাসা অনুভব হবে না। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ঐ সকল বস্থর কল্যাণ চাই, যা তোমারই নবী, হুযুর صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم তোমার নিকট চেয়েছিল এবং আমি তোমার নিকট এ সকল বস্থর অনিষ্টতা থেকে মুক্তি চাই, যা তোমারই নবী মুহাম্মদصَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم তোমার নিকট চেয়েছিল। হে আল্লাহ! তোমার নিকট জান্নাত ও তার নেয়ামত সমূহ প্রার্থনা করছি, আর আমাকে ঐ সকল উপকরণ প্রদান কর যা দ্বারা আমি এর নিকটবর্তী হতে পারি। কথায়, কাজেও আমলে এবং আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই, দোযখ থেকেও ঐ সকল উপকরনের যা দ্বারা আমি এর নিকটবর্তী হই, কথায় কাজে ও আমলে। (এরপর দরূদ শরীফ পড়ে নিন)
রুকনে ইয়ামানী পর্যন্ত পৌঁছে এই দোআটি শেষ করবেন তারপর পূর্বের মত হাজরে আসওয়াদের দিকে অগ্রসর হবেন। দরূদ শরীফ পড়ার পর নিম্নের দোআটি পড়ে নিবেন:
رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنۡـیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الۡاٰخِرَۃِ حَسَنَۃً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿۲۰۱﴾
অনুবাদ: হে আমাদের আল্লাহ! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দান কর, আর পরকালেও কল্যাণময় কর। আর আমাদেরকে দোযখের শাসিন্ত থেকে মুক্তি প্রদান কর।
অতঃপর হাজরে আসওয়াদে এসে উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে নিন্মের দোআটি পড়বেন:
بِسۡمِ اللہِ وَالۡحَمۡدُ لِلّٰہِ وَاللہُ اَکۡبَرُ وَالصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلٰی رَسُوۡلِ اللہ
তারপর ইছতিলাম করে নিবেন এবং ৬ষ্ঠ চক্কর শুরু করবেন এবং দরূদ শরীফ পড়ে এই দোআটি পড়বেন।
৬ষ্ঠ চক্করের দোআ
===========
اَللّٰھُمَّ اِنَّ لَکَ عَلَیَّ حُقُـوْقًا کَثِیْرَۃً فِیْمَا بَیْنِیْ وَبَیْنَکَ وَحُقُوْقًا کَثِیْرَۃً فِیْمَا بَیْنِیْ وَبَیْنَ خَلْقِکَ اَللّٰھُمَّ مَاکَانَ لَکَ مِنْھَا فَاغْفِرْہُ لِیْ وَمَاکَانَ لِخَلْقِکَ فَتَحَمَّلْہُ عَنِّیْ وَاَغْنِنِیْ بِحَلَالِکَ عَنْ حَرَامِکَ وَ بِطَاعَتِکَ عَنْ مَّعْصِیَتِکَ وَبِفَضْلِکَ عَمَّنْ سِوَاکَ یَا وَاسِعَ الْمَغْفِـرَۃِطاَللّٰھُمَّ اِنَّ بَیْتَکَ عَظِیْمٌ وَوَجْھَکَ کَرِیْمٌ وَاَنْتَ یَا اَللہُ حَلِیْمٌ کَرِیْمٌ عَظِیْمٌ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّیْ ط
অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমার প্রতি তোমার দেওয়া অনেক দায়- দায়িত্ব আছে। যা শুধুমাত্র তোমার আমার মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং আরো অনেক দায়-দায়িত্ব আমার উপর রয়েছে যা তোমার সৃষ্টি ও আমার মধ্যে সীমাবদ্ধ।
হে আল্লাহ! আমার উপর তোমার যে হক আছে তা ক্ষমা করে দাও এবং তোমার সৃষ্টির হকগুলো আদায়ের দায়িত্ব তুমি বহন কর। তোমার হালাল রিজিক প্রদান করে হারাম হতে আমাকে মুক্ত রাখ। তোমার আনুগত্যের মাধ্যমে আমাকে তোমার নাফরমানী থেকে বাঁচাও। হে মহাক্ষমাশীল! তোমার অনুগ্রহ দ্বারা অন্যের মুখাপেক্ষী হওয়া হতে আমাকে বাঁচাও। হে আল্লাহ! নিশ্চয় তোমার ঘর অতিশয় মর্যাদাবান এবং দয়ালু। হে আল্লাহ! তুমি অতিশয় দয়ালু, সহনশীল ও মহান দয়াময়। তুমি তো ক্ষমা পছন্দ কর। সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দাও। (এরপর দরূদ শরীফ পড়ে নিন)
রুকনে ইয়ামানী পর্যন্ত এই দোআ শেষ করবেন। তারপর পূর্বের ন্যায় হাজরে আসওয়াদের দিকে এগিয়ে যাবেন এবং দরূদ শরীফ পড়ে নিন্মের দোআটি পড়ে নিবেন:
رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنۡـیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الۡاٰخِرَۃِ حَسَنَۃً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿۲۰۱﴾
অনুবাদ: হে আমাদের আল্লাহ! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দান কর, আর পরকালেও কল্যাণময় কর। আর আমাদেরকে দোযখের শাসিন্ত থেকে মুক্তি প্রদান কর।
তারপর হাজরে আসওয়াদে এসে উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে নিন্মের দোআটি পড়বেন:
بِسۡمِ اللہِ وَالۡحَمۡدُ لِلّٰہِ وَاللہُ اَکۡبَرُ وَالصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلٰی رَسُوۡلِ اللہ
তারপর হাজরে আসওয়াদকে ইছতিলাম করবেন এবং ৭ম চক্কর শুরু করবেন। দরূদ শরীফ পড়তঃ ৭ম চক্করের দোয়াটি পড়ে নিবেন:
৭ম চক্করের দোয়া
==========
اَللّٰھُمَّ اِنِّیْۤ اَسْئَلُکَ اِیْمَانًا کِامِلاً وَّ یَقِیْنًا صَادِقًا وَّ رِزْقًا وَّاسِـعًا وَّ قَلْبًاخَاشِعًا وَّ لِسَانًا ذَاکِرًا وَّ رِزْقًاحَلَالاً طَیِّبًا وَّ تَوْبَۃً نَّصُوْحًا وَّ تَوْ بَۃً قَبْلَ الْمَوْتِ وَرَاحَۃً عِنْدَ الْمَوْتِ وَمَغْفِـرَۃً وَّرَحْمَۃً م بَعْدَ الْمَوْتِ وَ الْعَفْوَ عِنْدَ الْحِسَابِ وَالْفَوْزَ بِالْجَنَّۃِ وَالنَّجَاۃَ مِنَ النَّارِ بِرَحْمَتِکَ یَاعَزِیْزُ یَاغَفَّارُ طرَبِّ زِدْنِیْ عِلْمًا وَّ اَلْحِقْنِیْ بِالصَّالِحِیْنَ ط
অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট তোমার রহমতের ওছিলা পরিপূর্ণ ঈমান, সত্যিকারের বিশ্বাস, ভীত হৃদয়, জিকিরে লিপ্ত জিহ্বা, স্বচ্ছল জীবিকা, পবিত্র ও হালাল রোজগার, সত্যিকারের তাওবা, মৃত্যুর সময়ে শানিন্ত, মৃত্যুর পরে ক্ষমা ও দয়া, বিচারের সময় ক্ষমা, জান্নাত লাভের মাধ্যমে সাফল্য ও দোযখ হতে মুক্তি চাচ্ছি। হে মহাপরাক্রমশীল ও ক্ষমাশীল! তোমার দয়ায় আমার দোআ কবুল কর। হে আমার প্রতিপালক! আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দাও এবং সৎকর্মশীলদের দলে আমাকে অন্তর্ভূক্ত কর। (এরপর দরূদ শরীফ পড়ে নিন)
রুকনে ইয়ামানীতে পৌছেই এই দোআটি শেষ করবেন। তারপর পূর্বের ন্যায় আমল করতঃ দরূদ শরীফ পড়ে এই কুরআনী দোআটি পড়ুন:
رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنۡـیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الۡاٰخِرَۃِ حَسَنَۃً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿۲۰۱﴾
অনুবাদ: হে আমাদের আল্লাহ! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দান কর, আর পরকালেও কল্যাণময় কর। আর আমাদেরকে দোযখের শাসিন্ত থেকে মুক্তি প্রদান কর।
হাজরে আসওয়াদে পৌছতেই আপনার ৭ম চক্কর সম্পূর্ণ হয়ে গেল। কিনত্মু পুনরায় অষ্টম বার আগের মত দুই হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে এই দোআ পড়ে নিন بِسۡمِ اللہِ وَالۡحَمۡدُ لِلّٰہِ وَاللہُ اَکۡبَرُ وَالصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلٰی رَسُوۡلِ اللہ এরপর ইসতিলাম করুন, আর এটা সর্বদা মনে রাখবেন! যখনই তাওয়াফ করবেন তখন এতে চক্কর হবে ৭টা আর ইসতিলাম হবে ৮টা।