হাজীর উপর আত্ম-পছন্দ ও রিয়ার চরম আক্রমণ
=================
প্রিয় হাজীরা! প্রিয় মদীনার মুসাফিররা! সম্ভবত নামায রোযা ইত্যাদির তুলনায় হজ্বে অনেক বেশী বরং প্রতি কদমে রিয়াকারীর আপদসমূহ সামনে আসে। হজ্ব এমন একটি ইবাদত যা প্রথমতো প্রকাশ্যভাবে করা হয়, আর দ্বিতীয়ত প্রত্যেকের তা নসীব হয়না। এজন্য লোকেরা বিনম্রভাবে সাক্ষাত করে, খুব সম্মান প্রদর্শন করে, হাতে চুমু দেয়, ফুলের মালা পরায়, দোআর আবেদন করে। এসব জায়গায় হাজী কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয় কেননা লোকদের বিশ্বস্থতামূলক আচরণের মধ্যে কিছু এমন স্বাদ থাকে যে, যার কারণে ইবাদতের বড় থেকে বড় কষ্টকেও ফুল মনে হয় এবং অনেক সময় বনাদা আত্নপছন্দ এবং রিয়াকারীর ধ্বংসলীলার গর্তের মধ্যে পতিত অবস্থায় থাকে কিন্তু তার এসবের ব্যাপারে খবরও থাকেনা। তার মনে চাই যে, সব লোক আমার হজ্বে যাওয়ার বিষয়টি জানুক, যেন আমার সাথে এসে মিলিত হয়। মোবারকবাদ পেশ করে, উপহার দেয়, আমার গলায় ফুলের মালা পরিধান করিয়ে দিক, আমার নিকট দোআর জন্য আরজ করে, মদীনাতে সালাম আরজ করার জন্য খুবই বিনিতভাবে আবেদন করে, আর আমাকে বিদায় জানানোর জন্য এয়ারপোর্ট পর্যন্ত আসে ইত্যাদি ইত্যাদি প্রবৃত্তির চাহিদাসমূহের সমাহার এবং ইলমে দ্বীন না থাকার কারণে হাজী অনেক সময় “শয়তানের খেলনাতে” পরিণত হয় এজন্য শয়তানের ধোকা থেকে সাবধান থাকতে গিয়ে নিজের মনের মধ্যে খুবই বিনম্রতা সৃষ্টি করুন। প্রদর্শনীর ভাব থেকে নিজেকে বাঁচান। খোদার কসম! রিয়াকারীর শাস্তি কারো পক্ষে সহ্য করা সম্ভব হবে না। দা’ওয়াতে ইসলামীর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত ৬১৬ পৃষ্ঠা সম্বলিত কিতাব “নেকীর দাওয়াত (১ম খন্ড)” এর ৭৯ পৃষ্ঠায় একটি হাদীস শরীফ রয়েছে;
নবী করীম, রউফুর রহীম صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “নিঃস্বন্দেহে জাহান্নামে একটি উপত্যকা রয়েছে, যার থেকে জাহান্নাম প্রতিদিন ৪০০ বার আশ্রয় প্রার্থনা করে। আল্লাহ তাআলা এই উপত্যকা উম্মতে মুহাম্মদীয়া عَلٰی صَاحِبِہَا الصَّلٰوۃُ وَالسَّلَام এর ঐ সকল রিয়াকারদের জন্য প্রস্থত করেছেন, যারা কুরআনের হাফেজ, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারোর জন্য সদকাকারী, আল্লাহ তাআলার ঘরের হাজী এবং আল্লাহ তাআলার পথে বের হওয়ার মুসাফির ব্যক্তির জন্য।” (আল মুজামুল কাবীর, ১২তম খন্ড, ১৩২ পৃষ্ঠা, হাদীস: ১২৮০৩)
হাজীদের রিয়ার দু’টি উদাহরণ
===============
নেকীর দাওয়াত ১ম খন্ডের ৭৬ পৃষ্ঠায় রয়েছে; ﴾১﴿ নিজের হজ্ব ও ওমরার সংখ্যা, কুরআনুল করীম তিলাওয়াতের প্রতিদিনের পরিমাণ, রজবুল মুরাজ্জবের এবং শাবানুল মুআজ্জমের পরিপূর্ণ এবং অন্যান্য নফলী রোযা সমূহ, নফল ইবাদত সমূহ, দরূদ শরীফের আধিক্য ইত্যাদি এজন্য প্রকাশ করা যেন বাহ্ বাহ্ দেওয়া হয়, আর লোকদের অন্তরে শ্রদ্ধাবোধ সৃষ্টি হয়। ﴾২﴿ এজন্য হজ্ব করা অথবা নিজের হজ্বকে প্রকাশ করা যেন লোকেরা হাজী বলে। সাক্ষাতের জন্য হাজির হয়। অনুনয় বিনয় করে দোআর জন্য অনুরোধ করে, মালা পরায়, উপহার ইত্যাদি পেশ করে। (যদি নিজেকে সম্মানের পাত্র বানানো বা তোহফা পাওয়া উদ্দেশ্য না হয় বরং নেয়ামতের আলোচনা ইত্যাদি ভাল ভাল নিয়্যত সমূহ বিদ্যমান থাকে, তবে হজ্ব ও ওমরার কথা প্রকাশ করা, সম্মানী ব্যক্তিবর্গ এবং আত্মীয় স্বজনদেরকে একত্রিত করা এবং “মাহফিলে মদীনা”আয়োজন করাতে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই বরং আখিরাতের জন্য সাওয়াবের কাজ। (রিয়াকারীর সম্পর্কে বিশতারিত জানার জন্য মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত কিতাব “নেকীর দাওয়াত”এর ১ম খন্ডের ৬৩ পৃষ্ঠা থেকে ১০৬ পৃষ্ঠা পর্যন্ত অধ্যয়ন করুন।
মেরা হার আমল বছ্ তেরে ওয়াসেতে হো
কর ইখলাছ এয়ছা আতা ইয়া ইলাহী! (ওয়াসায়িলে বখশিশ, ৭৮ পৃষ্ঠা)
صَلُّوْا عَلَی الۡحَبِیۡب! صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد