মীনায় রওনা
=======
আজ  ৮    তারিখ  রাত,  ইশার  নামাযের  পর  চারিদিকে ধুম   পড়ে  গেছে। সবার একই লক্ষ্য  একই  সেস্নাগান  যে,    মিনায়   চল!   আপনিও   তৈরী   হয়ে   যান।    নিজের প্রয়োজনীয়    জিনিসপত্র  যেমন;    তাসবীহ,  জায়নামায, ক্বিবলা   নির্ণয়ের    যন্ত্র,  গলায়  ঝুলিয়ে  নেয়া  যায়  এমন পানির    বোতল,       প্রয়োজনী     ঔষধপত্র,    মোয়াল্লিমের ঠিকানা, আর এটাতো সব সময় সাথে থাকা আবশ্যক। কারণ রাশতা ভুলে গেলে অথবা مَعَاذَ اللہ عَزَّوَجَلَّ কোন দূর্ঘটনা  হলে,  অথবা বেহুশ   হয়ে  কোথায় পড়ে গেলে কাজে  আসবে। সাথে  যদি মহিলা হাজী   থাকে  তাহলে সবুজ   অথবা    কোন   উজ্জল    রঙের   কাপড়ের    টুকরা তাদের মাথার পিছনের   দিকে বোরকার   সাথে  সেলাই করে  (অথবা   বেঁধে)  নিন,  যাতে  ভিড়ের   মধ্যে  চেনা  যায়। রাশতায় চলার সময় বিশেষ  করে ভিড়ের মধ্যে তাদেরকে     নিজের       সামনে    রাখবেন।    যদি     আপনি সামনে   থাকেন    আর    এরা    বেশী    পিছনে   রয়ে   যায়, তাহলে   হারিয়ে    যেতে  পারে।  চুলা   সাথে   নিবেন  না,  কেননা সেখানে এটির নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। খাবার এবং কোরবানী   ইত্যাদির   জন্য      প্রয়োজনীয়    টাকা    পয়সা সাথে  নিতে  ভুলে  যাবেন  না।  যদি  সম্ভব   হয়  তাহলে  মিনা,    আরাফাত    মুজদালিফা   ইত্যাদির    সফর   পায়ে হেঁটে   করবেন।   এতে    করে  মক্কা   শরীফ  ফিরে   আসা পর্যন্ত প্রতি কদমে সাত কোটি করে নেকী মিলবে। وَاللهُ ذُوالْفَضْلِ  الْعَظِيْمِ   “আর  আল্লাহ  মহা  অনুগ্রহ    পরায়ন।”  সারা রাশতায় লব্বায়কা, জিকির  এবং দরূদ খুব বেশী বেশী  পড়বেন।  যখনই   মিনা  শরীফ   দৃষ্টিতে  পড়বে দরূদ শরীফ পড়ে এই দোআটি পড়বেন:

اَللّٰھُمَّ ھٰذِهٖ  مِنًی  فَامْنُنْ  عَلَیَّ بِمَا   مَنَنْتَ   بِہٖ  عَلٰی   اَوْلِیَآئِکَ  ط

অনুবাদ:   হে আল্লাহ! ইহা  মীনা, তুমি আমার উপর   ঐ  দয়া  কর,    যা   তোমার  আউলিয়াদের  (বন্ধুদের)  উপর করেছ।

এই দেখুন! আপনি এখন  মীনা   শরীফের সুন্দর সুন্দর  উপত্যকায় প্রবেশ করেছেন। আপনাকে মোবারকবাদ! কতইনা     মনোরম      দৃশ্য।    কি    জমিন,     কি    পাহাড়, চারিদিকে    শুধু    তাবু    আর    তাবুরই    বাহার    আসছে।  আপনিও    নিজ    মোয়াল্লিমের    দেয়া    তাবুতে    অবস্থান  করুন। ৮ তারিখে জোহর থেকে  শুরু করে  আগামীকাল ৯  তারিখের ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামায আপনাকে মিনা শরীফে আদায় করতে হবে।  কারণ আল্লাহর প্রিয় মাহবুব    صَلَّی   اللہُ   تَعَالٰی   عَلَیْہِ    وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم         এরকমই করেছেন।

মীনা শরীফে ১ম দিন জায়গার জন্য ঝগড়া
============
মীনা  শরীফে   আজকের  হাজেরী   মহান  ইবাদত,  আর  লক্ষ    লক্ষ     হাজীরা    এই    মহান     ইবাদতের    উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়েছে।  এ কারণে   শয়তানও কোমড়  বেঁধে নেমেছে, আর কথায় কথায়   হাজীদের রাগিয়ে তুলছে। এই রাগের বহিপ্রকাশ কিছুটা এভাবেও হয়ে থাকে যে, তাবুতে  জায়গার  জন্য    অনেক    হাজীরা  ঝগড়া  এবং  শোর-চিৎকার    ও    গালিগালাজে    ব্যস্ত।    আপনি    কিন্তু  শয়তানের  ফাঁদ  থেকে  সর্বদা হুশিয়ার  থাকবেন।  যদি  কোন  হাজী  সাহেব  আপনার  (জন্য  নির্ধারিত)  জায়গা  সত্যি   সত্যি  জবর দখল করে নেয়  তাহলে   করজোরে  খুব  নম্রভাবে  তাকে    বুঝান।   এখন  সে  যদি   না  মানে আর    আপনার     কাছে   অন্য   কোন    স্থানও   নাই   তখন ঝগড়া     করার     পরিবর্তে       মুআলিস্নামের       লোকদের শরণাপন্ন  হোন। اِنۡ شَآءَ اللہ    عَزَّوَجَلّ  আপনার সমস্যা সমাধান   হয়ে  যাবে।  সর্বোপরি    আপনাকে  সব  সময়   বড়     মন     মানসিকতা      রাখতে     হবে      এবং     আল্লাহ তাআলার মেহমানদের সাথে খুব  নরম  মেজাজে  এবং  ক্ষমা     সুন্দর     দৃষ্টি    নিয়ে     মিলেমিশে    থাকতে     হবে। আজকের দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিন।  হতে পারে অনেক লোক গল্পগুজবে ব্যস্ত।  কিন্তু  আপনি তাদের প্রতি দৃষ্টি না      দিয়ে    নিজ    ইবাদতে    লিপ্ত    থাকুন।    সম্ভব    হলে তাদেরকে নেকীর দাওয়াত দিন,  কেননা এটাও একটি উচ্চস্তরের   ইবাদত।  আজকে    আগমনকারী   রাত  হল,  ‘আরাফাতের    রাত’।  যদি   সম্ভব  হয়  তাহলে   অবশ্যই এই       রাত     ইবাদতে      অতিবাহিত      করবেন।      কারণ ঘুমানোর  দিন  অনেক  পড়ে  আছে,  আর  এই  সুযোগ  বারবার কখন, কবে ফিরে আসবে!

Top