আরাফাতের দোআ (বাংলা)
============
(দোআ  চলাকালীন  সময়ে  সময়ে  লাব্বাইকা  ও  দরূদ  শরীফ পড়ুন)

উভয়  হাত বক্ষ পর্যন্ত  অথবা কাঁধ পর্যন্ত অথবা   চেহারা বরাবর   অথবা   মাথার     একটু   উপরে     উঠিয়ে   হাতের তালুগুলোকে   আসমানের   দিকে   এমনভাবে   প্রসারিত  করে   দিন  যেন  বগলের  নিচের  শুব্র   অংশ  দেখা  যায়, কেননা   দোআর  ক্বিবলা  হল  আসমান।   এখন  এভাবে দোআ প্রার্থনা করুন:

اَلْحَمْدُ   لِلہِ    رَبِّ   العٰلَمِیْنَ      وَالصَّلٰوۃُ   وَالسَّلامُ   عَلٰی       سَیِّدِ الْمُرْسَلِیْنَ۔  یَا  اَرْحَمَ  الرَّاحِمِیْنَ  یَا   اَرْحَمَ   الرَّاحِمِیْنَ      یَا     اَرْحَمَ الرَّاحِمِیْنَ یَا رَبَّنَا  یَا رَبَّنَا  یَا رَبَّنَا  یَا رَبَّنَا  یَا رَبَّنَا  

যতটুকু পরিমাণ দোআয়ে  মাসুরা  (অর্থাৎ কোরআন  ও হাদীসের    দোআ    সমূহ)    আপনার    মুখস্থ     আছে,    তা  আরবীতে  আরজ করার পর আাপনার  অন্তরের আবেগ নিজ   মাতৃভাষায়   আপন   দয়ালু   পরওয়ারদেগার    এর  মহান  দরবারে এ রকম  দৃঢ় বিশ্বাস  নিয়ে যে  আপনার  দোআ   কবুল   হচ্ছে,   এভাবে   আরজ   করুন   یَا   اَللہُ   یَا  رَحْمٰنُ یَا رَحِـیْمُ!

তোমার   কোটি   কোটি   দয়া   যে   তুমি   আমাকে   মানুষ  বানিয়েছেন,    মুসলমান     করেছ     এবং    আমার     হাতে   দামানে রহমতে আলামিয়ান, নবী করীম صَلَّی اللہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  দান করেছ।  হে  আল্লাহ!  হে   মুহাম্মদে আরবী  صَلَّی  اللہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم  এর    সৃষ্টিকর্তা!  আমি কোন ভাষায় আপনার শোকর আদায়  করব   যে,  তুমি  আমাকে  হজ্ব  করার  মর্যাদা  দান  করেছ।  আমার  কতই   সৌভাগ্য  যে,   আমি আজ আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত। যার   নিশ্চিতভাবে তোমার প্রিয়   হাবীব   এবং আমার প্রিয় মাদানী আক্বা صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর   কদম   মোবারক   চুমু   খাওয়ার  সৌভাগ্য  হয়েছে।  পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তর থেকে এসে লক্ষ  লক্ষ  মুসলমান আজ       এখানে       একত্রিত       হয়েছে।       তাদের       মধ্যে  নিশ্চিতভাবে  তোমার  দুইজন   নবী  হযরত  ইলিয়াছ   ও হযরত       খিজির        عَلَیۡهِمَا        السَّلَام        এবং         অসংখ্য আউলিয়ায়ে  কিরামও  উপস্থিত   আছেন।   হে    রাসুলের রব!   আজ   রহমতের   যে    বৃষ্টি   তোমার   নবীগণ    এবং ওলীগণের উপর বর্ষিত হচ্ছে তাঁদের সদকায় এক আধ ফোটা আমি গুনাহগারের উপরও বর্ষণ করে দাও।

یَااللّٰہُ یَا رَحمٰنُ یَاحنّانُ یَا مَنّانُ

বখ্‌শ  দে  বখশে   হুঁয়ো  কা   সদকা,  ইয়া    আল্লাহ  মেরি ঝুলি ভরদে।
(ওয়াসায়িলে বখশিশ, ১০৭ পৃষ্ঠা)

(শুরু      এবং      শেষে        দরূদ       শরীফ      এবং      তিনবার  ‘লাব্বাইক’পড়ুন)

ওহে  মুস্তফা  صَلَّی    اللہُ   تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم  এর  রব! আমার     দূর্বলতা     এবং     শক্তিহীনতা     তোমার     নিকট  দৃশ্যমান। আহ! আমিতো   ঐ দূর্বল বান্দা, যে  না বেশী গরম  সহ্য করতে পারি,  না বেশী ঠান্ডা,  আমার মাঝে ছারপোকা,    মশার   দংশনও  সহ্য   করার  ক্ষমতা  নেই, এমনকি   যদি  পিপঁড়াও  কামড়    দেয়   তাহলে  অস্থির হয়ে    পড়ি।   হায়!   কোন     সাধারণ   কীটপতঙ্গও    যদি পোষাকের ভিতর ঢুকে পড়ে নড়াচড়া করতে থাকে, তাহলে  আমাকে  তা দিশেহারা করে ফেলে।  আহ! হায় আমার  ধ্বংস!  যদি  গুনাহের   কারণে    আমাকে    কবরে তোমার কহর এবং গজবের আগুন ঘিরে ফেলে তাহলে আমি কি করব?

আহ!   যদি  আমার  কাফনে  সাপ  আর   বিচ্ছু  ঢুকে  যায় তাহলে  আমার  কি  অবস্থা হবে।  ওহে মুহাম্মদ صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  এর রব!

মুহাম্মদ   صَلَّی   اللہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم  এর  ওসিলায় আমার  প্রতি   দয়া  কর।  আমাকে  কবর,   হাশরের  কষ্ট থেকে   রক্ষা কর। আমি   নিশ্চিতভাবে  বিশ্বাস করি  যে,  যদি  তোমার   দয়ার শুধুমাত্র  একটি  দৃষ্টি আমার উপর   পড়ে যায় তাহলে আমার মত পাপী, বদকারের দুনিয়া ও আখিরাত উভয়টি সুন্দর হয়ে যাবে। হে মাহবুব صَلَّی اللہُ    تَعَالٰی  عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم   এর  মালিক!  আমার   প্রতি তোমার    দয়া    ও    কৃপা    প্রদর্শণ    কর,     আমার     উপর সবসময়ের জন্য সন্তুষ্ট হয়ে যাও, আর আমাকে তোমার পছন্দনীয় বান্দা বানিয়ে নাও।

গুনাহগার তলবগারে আফউ রহমত হে
আযাব সাহনে কা কিছ মে হে হাউসালা ইয়া রব!
(ওয়াসায়িলে বখশিশ, ৯৭ পৃষ্ঠা)

(শুরু       এবং      শেষে       দরূদ      শরীফ       এবং       তিনবার ‘লাব্বাইক’পড়ুন)

ওহে মুস্তফা صَلَّی  اللہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর মালিক! আমাকে তোমার প্রিয় রাসুল, মুহাম্মদে মাদানী صَلَّی اللہُ تَعَالٰی  عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم তোমার এই ঘোষণা  আমি  পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন    যে, “হে আদম সন্তান,  যতক্ষণ পর্যন্ত  তুমি  আমার  নিকট  দোআ  করতে  থাকবে  এবং  আশা  করতে   থাকবে    তাহলে  আমি  তোমার  গুনাহ  সমূহকে ক্ষমা  করতে   থাকব,  হে  আদম   সন্তান!    যদি    তোমার গুনাহ  আসমান পর্যন্ত    পৌঁছে  যায় এবং এরপরও যদি  তুমি  আমার   নিকট  থেকে   ক্ষমা  প্রার্থনা    কর,   তাহলে আমি  ক্ষমা করে দিব এবং  আমার   কোন  পরোয়া হবে না।  হে   আদম  সন্তান!  যদি  তুমি  সমস্ত  জমিন   ভরপুর সম গুনাহ    নিয়ে আমার   কাছে আস কিনত্মু ঐ অবস্থায় যে, তুমি   কোন কুফর এবং শিরক করনি তাহলে  আমি জমিন  ভরপুর   সম   রহমত  এবং  মাগফিরাতের    সাথে তোমার   নিকট  পৌছব।”   (তিরমিযী,  ৫ম  খন্ড,  ৩১৭  পৃষ্ঠা,  হাদীস: ৩৫৫১) হে  আমার  মাদানী   মাহবুব صَلَّی اللہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم       এর  মাবুদ!   যদিও  আমি গুনাহ দ্বারা জমিন ও আসমানকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি, কিনত্মু  তারপরও  তোমার   রহমতের  উপর  আমি     খুব আশান্বিত।  ইলাহী!   আমার  গাউছে  আজম    رَحۡمَۃُ  اللہِ تَعَالٰی  عَلَیْہِ  এর  উসিলায়,  গরীবে  নেওয়াজ  رَحۡمَۃُ  اللہِ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  এর  ওসিলায়,  আমার  ইমাম   আহমদ  রযা  رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ এর ওসিলায় এবং আমার মুর্শিদে করীম  رَحۡمَۃُ  اللہِ  تَعَالٰی   عَلَیْہِ   এর   ওছিলায়,   আমাকে  বিনা    হিসাবে   ক্ষমা করে দাও।   আমাকে বিনা হিসাবে ক্ষমা   করে    দাও,   আমাকে   বিনা    হিসাবে   ক্ষমা   করে দাও।

তু বে হিসাব বখ্‌শ কে হে বে শুমার জুরম
দেতাহো  ওয়াসেতা  তুঝে  শাহে   হিজাজ   কা।  (যওকে না’ত)

(শুরু এবং শেষে দরূদ শরীফ এবং তিনবার ‘লাব্বাইক’ পড়ুন)

ওহে মুহাম্মদ মুস্তফা صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  এর  রব!  আমি স্বীকার করছি  যে, আমি     অনেক  বড় বড় গুনাহ    করেছি,    কিনত্মু    এগুলো    সবই    তোমার    মহা  ক্ষমাশীলতার মর্যাদার সামনে অনেক ছোট। হে আমার অতি    প্রিয়    মালিক!   নিঃস্বন্দেহে   তোমার   ক্ষমা     এবং বখশিশ       গুনাহগারদেরকে     তালাশ      করে      আর     এ  আরাফাতের ময়দানে  আমার চেয়ে   বড় অপরাধী  কে আছে? হে আমার  মাদানী নবী صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم    এর  রব!   আমি  আমার  গুনাহের  উপর  লজ্জিত, আর  আশা  করতেছি যে, তোমার ক্ষমার পুরস্কার আমি গুনাহগারের উপর  অবশ্যই  থাকবে। হে   বিশ্ব জগতের মালিক! তোমাকে খোলাফায়ে রাশেদীন رَضِیَ اللہُ   تَعَالٰی عَنۡہُمۡ  এবং  উম্মাহাতুল  মুমিনীন  رَضِیَ  اللہُ  تَعَالٰی  عَنۡہُنَّ  ওসিলা     পেশ    করছি,    বিবি    ফাতিমা    ও    হাসনাইনে  করীমাইনের  رَضِیَ   اللہُ    تَعَالٰی   عَنۡہُمۡ  বিলাল  হাবশী    ও  ওয়ায়েস   করনি    رَضِیَ   اللہُ   تَعَالٰی   عَنۡہُمۡ    এর   ওসিলায় আমাকেও ক্ষমা করে দাও এবং আমার সম্মানিত দয়ালু মুর্শিদ,   আমার   সম্মানিত      শিক্ষকমন্ডলী,    সমস্ত    সুন্নী ওলামা    মাশায়েখ,   আমার   মা-বাবা    ও   ঘরের    সকল সদস্যদেরকে   ক্ষমা  করে   দাও,  আর  সকল   উম্মতের  ক্ষমা কর।

দাওয়ামে দ্বীন পে আল্লাহ মারহামাত ফরমা!
হামারি বলকে উম্মত কি মাগফিরাত ফরমা!
(শুরু এবং শেষে দরূদ শরীফ এবং তিনবার ‘লাব্বাইক’ পড়ুন)

হে নিষ্পাপ  মুহাম্মদ صَلَّی اللہُ تَعَالٰی  عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  এর চিরঞ্জীব,  চিরস্থায়ী   মালিক!   নিঃসন্দেহে  মুসলমানদের দান-খয়রাত  করাটা তুমি  পছন্দ  কর। তবে  হে  অধিক দানশীল   ও  দয়ালু   আল্লাহ!  নেকীর  ব্যাপারে।  আমার  চেয়ে    বড়    গরীব,   ফকীর,   অসহায়,   আর    কে   হতে পারে? আর দাতা হিসেবে তোমার চেয়ে বড় দানশীল কে  হতে পারে!  তাই  ওহে মুস্তফা  صَلَّی  اللہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর মালিক! মুস্তফা   صَلَّی  اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সদকায় আমাকে দ্বীনের উপর অটলতা দিয়ে দাও। আপনার স্থায়ী সন্তুষ্টি, জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং বিনা   হিসাবে   ক্ষমার   ভিক্ষা   দান   করে   আমার   উপর  সবচেয়ে বড় দয়াটি কর।

হুসাইন      ইবনে      আলীকে       লা-ঢলে      কা        ওয়াসিতা মাওলা!
বাঁচালে হামকো তু নারে জাহান্নাম ছে বাঁচা মাওলা!
(শুরু এবং শেষে দরূদ শরীফ এবং তিনবার ‘লাব্বাইক’ পড়ুন)

হে নিজের মাহবুব صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم    এর ঘামের        মধ্যে        সুগন্ধি       সৃষ্টিকারী!       হে       অসুস্থদের আরোগ্যদানকারী!  সমস্ত  মুসলমানদের  মধ্যে দুনিয়ার  ভালবাসার       সবচেয়ে    বড়     রোগী,    সম্পদের    লোভ লালসার রোগী, কঠিন  গুনাহে আক্রান্ত রোগী, আরোগ্য প্রার্থনাকারী    হয়ে     আশ্রয়হীনদের     আশ্রয়স্থল    তোমার দরবারে      উপস্থিত     হয়েছি।      হে     রোগ     সমূহ      হতে  আরোগ্যদানকারী! আমি দুনিয়ার ভালবাসা এবং গুনাহ সমূহের   রোগ হতে   সুস্থতা প্রার্থনা  করছি।  হে  আল্লাহ! নবীদের সরদার, সায়্যিদুল  আবরার       صَلَّی  اللہُ    تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর   ওসিলায়  আমাকে  পরিপূর্ণ  সুস্থতা দান কর, আমাকে নেক্‌কার বানিয়ে দাও এবং আমাকে মুস্তফাصَلَّی  اللہُ   تَعَالٰی    عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم  এর   ভালবাসার রোগী  বানিয়ে  দাও,  আর  আমাকে  মদীনার  ভালবাসা  দান কর।

মাই গুনাহো মে লিথড়া হুয়া হো,   বদ ছে  বদতর হো বিগড়া হুয়া হো!
আফবে   জুর্‌ম  ও কুচুর ও খাতা কি,    মেরে  মওলা  তু খায়রাত দে দে।
(শুরু এবং শেষে দরূদ শরীফ এবং তিনবার ‘লাব্বাইক’ পড়ুন)

হে   মুস্তফা صَلَّی  اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর মালিক!    তোমাকে তোমার  প্রত্যেক  নবী   عَلَیۡهِمُ السَّلَام সাহাবা, আহলে বায়ত  عَلَیۡہِمُ الرِّضۡوَان ও  সমস্ত ওলীদের رَحِمَہُمُ اللہُ تَعَالٰی উসিলা পেশ করছি। তুমি আমাদের অসুস্থতার আরোগ্য দান কর,    ঋণগ্রস্থদেরকে  ঋণের বোঝা  হতে মুক্তি  দান  কর,  অভাবগ্রস্থদেরকে  স্বচ্ছলতা  দান  কর,  আয়         রোজগারহীন        বেকারদেরকে       হালাল       এবং সহজভাবে          রিজিকদান          কর,            সন্তানহীনদেরকে অপারেশন ব্যতীত সুস্থতার সাথে নেক সন্তান দান কর, যাদের   বিবাহ   হচ্ছেনা  তাদেরকে   সৎ   জোড়া   নসীব কর,    হে     মুস্তফাصَلَّی    اللہُ   تَعَالٰی   عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم   এর মালিক!    মুসলমানদেরকে     পশ্চিমা    ফ্যাশনের     বিপদ থেকে  রক্ষা   করে   সুন্নাতের  অনুসরণ  করার  তাওফিক দান কর, হে মুস্তফা صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  এর  মালিক!     যারা   অহেতুক   মিথ্যা   মামলা     মোকাদ্দামায়  জড়িত হয়ে পড়েছে   তাদেরকে মুক্তি  দান কর, যারা অসন্তুষ্ট   রাগ  করেছে তাদের সনত্মুষ্ট   করে দাও,  যারা  পৃথক হয়ে গেছে  তাদেরকে  মিলিয়ে দাও, যাদের ঘরে মনোমালিন্য রয়েছে তাদেরকে পরস্পর  মিলিয়ে দাও।

হে মুহাম্মদ صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  এর মালিক! যাদেরকে   যাদু   করা হয়েছে অথবা যাদের  উপর   জ্বিন প্রভাব বিশতার করেছে তাদেরকে যাদু এবং জ্বিন হতে মুক্তি দান কর। হে মুস্তফাصَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  এর মালিক! মুসলমানদেরকে বিপদাপদ থেকে বাঁচাও, সর্ব       প্রকার       শত্রুদের       শত্রুতা,       দুষ্টদের       দুষ্টামি,  হিংসুকদের    হিংসা   এবং    কুদৃষ্টিদান   কারীদের   কুদৃষ্টি হতে হিফাজতে এবং নিরাপদে রাখ।

উও  কে  আরছে ছে বীমার হে  জো,      জ্বীন ও জাদু ছে বে-জার হে জো!
আপনি রহমত ছে উন কো শিফা কি,   মেরে মওলা  তু খায়রাত দে দে।
(শুরু এবং শেষে দরূদ শরীফ এবং তিনবার ‘লাব্বাইক’ পড়ুন)

ওহে দয়ালু আল্লাহ! বিবি ফাতিমা  رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہَا  এর     ওসিলায়,     সায়্যিদাতুনা     জয়নাব,     সায়্যিদাতুনা  ছকিনা,    সারা,  বিবি হাজেরা, বিবি  আছিয়া এবং  বিবি  হাওয়া,     বিবি    মরিয়ম   رَضِیَ    اللہُ   تَعَالٰی   عَنۡہُنَّ    গণের ওসিলায়   আমাদের   মা,   বোন   এবং   স্ত্রী   কন্যাদেরকে  লজ্জা ও শরমের চাদর দান কর এবং তাদেরকে সকল গাইরে  মাহরাম ছাড়াও নিজের দেবর, ভাশুর, চাচাত   ভাই,     খালাত     ভাই,      ফুফাত       ভাই,     মামাত     ভাই, ভগ্নীপতি,      ফুফা,    এবং     খালু     ইত্যাদি     সকল     হতে বিশুদ্ধভাবে শরীয়াত সম্মত পন্থায় পর্দা করার তাওফিক দান কর।

দে  দে  পরদা  মেরি  বেটিউ  কো,      মাওঁ  বেহনো  সবী  আওরাতো কো।
ভীক  দে  দে  তু  আপনি  আতা  কি,      মেরে  মাওলা  তু  খয়রাত দে দে।
(শুরু এবং শেষে দরূদ শরীফ এবং তিনবার ‘লাব্বাইক’ পড়ুন)

হে আল্লাহ! (আমার) এমন আমল  যা তোমার দরবারে গ্রহণ  যোগ্য  নয়,  এমন  অন্তর   যা   তোমার  স্মরণ  হতে সর্বদা  অমনোযোগী,    এমন   চোখ   যা   সিনেমা,  নাটক দেখে   থাকে   ও   কুদৃষ্টি    দিতে   থাকে,    এমন   কান   যা গানবাজনা,    গীবত     এবং   চোগলখোরী    শ্রবণ   করতে থাকে, এমন পা যা  খারাপ আসর গুলোর  দিকে চলতে থাকে,   এমন   হাত   যা    মানুষের    উপর   জুলুম   করতে উম্মুক্ত থাকে, এমন জিহ্বা যা অনর্থক কথাবার্তা বলা ও গালিগালাজ করা থেকে বিরত হয় না, এমন বিবেক যা সর্বদা খারাপ  খারাপ  ফন্দি আঁটতে থাকে, এমন হৃদয়  যা মুসলমানদের  প্রতি ঘৃণা  আর  শত্রুতায় ভরা,   আমি  তোমার   নিকট    আশ্রয়   চাচ্ছি,    হে   আমার    রব!   মক্কা  মদীনার    তাজেদার,    তোমার    দান     ও     দয়ায়      সমস্ত খোদায়ীর  মালিক  ও   মুখতার صَلَّی  اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  এর সদকায়, সকল মুজতাহেদীন ও শরীয়াতের চার  ইমামগণ  এবং চার সিলসিলার সকল আউলিয়ায়ে কেরাম رَحِمَہُمُ اللہُ تَعَالٰی এর ওসিলায় আমাকে তোমার প্রতিটি  নির্দেশের  আনুগত্যকারী  বানিয়ে  দিয়ে  আমার  উপর তোমার বিশেষ অনুগ্রহ ও দয়া কর।

হে   মুস্তফা صَلَّی   اللہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  এর মালিক! তোমাকে সমস্ত আশিকে  রাসুলগণের এর ওসিলা পেশ করছি, আমাকে মুস্তফা صَلَّی  اللہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم  এর    ভালবাসা    পাগল    এবং    তাঁর   ও   তাঁর   সুন্নাতের  ভালবাসা  জর্জরিত  এমন  দু’টি   অশ্রুসিক্ত    চোখ   এবং তাঁর    স্মরণে   স্পন্দিত      হয়,     এমন    অন্তর   দান   কর। আমাকে সত্যিকারের আশিকে রসুল বানিয়ে দাও এবং আমার বিরান হৃদয়কে মুহাব্বতে  হাবিব صَلَّی  اللہُ   تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  এর মদীনা বানিয়ে দাও, আর আমাকে বেওয়াফা   দুনিয়ার  নয়  বরং   মদীনার  প্রেমিক  বানিয়ে দাও।

পিছা মেরা দুনিয়া কি মুহব্বত ছে ছুড়াদে,
ইয়া রব! মুঝে দিওয়ানা মদীনে কা বানা দে।
(ওয়াসায়িলে বখশিশ, ১০০ পৃষ্ঠা)

(শুরু এবং শেষে দরূদ শরীফ এবং তিনবার ‘লাব্বাইক’ পড়ুন)

হে   মুস্তফা   صَلَّی   اللہُ   تَعَالٰی   عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم   এর   রব!  তোমাকে     সম্মানিত     কা’বা     শরীফ      এবং       (তোমার হাবীবের)  সবুজ    গম্বুজ শরীফের   ওসিলা পেশ করছি, তুমি আমার হজ্ব ও জেয়ারত এবং আমার সকল জায়িয দোআ সমূহ  যা আমার জন্য মঙ্গলজনক হবে তা কবুল কর,    আর   আমাকে    ‘মুশতাজাবুত    দাওয়াত’   বানিয়ে দাও, আমার এবং আরাফাতের ময়দানে আজ উপস্থিত প্রত্যেক  হাজীর  গুনাহ  সমূহকে  ক্ষমা  করে  দাও,  আর  আমাকে      প্রতি    বৎসর    হজ্ব    ও    জেয়ারতে     মদীনার  সৌভাগ্য দ্বারা মর্যাদাবান করে দাও এবং

আমাকে    মদীনা  পাকে    সবুজ   গম্বুজের   নিচে  তোমার মাহবুব       صَلَّی    اللہُ    تَعَالٰی   عَلَیْہِ    وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم                 এর জলওয়াতে     (ছায়ায়)    নিরাপত্তার    সাথে     শাহাদাতের মৃত্যু,      জান্নাতুল      বাক্বীতে       দাফন       এবং      জান্নাতুল ফিরদৌসে তোমার প্রিয় হাবীব صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  এর প্রতিবেশী   হওয়ার  তৌফিক    দান  কর।  হে মুশতাফা   صَلَّی   اللہُ   تَعَالٰی    عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ     وَسَلَّم    এর   রব! আমাকে  যে  সকল ইসলামী  ভাই ও ইসলামী  বোনেরা  দোআর জন্য  বলেছে; নবী   করীম صَلَّی اللہُ   تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  এর ওসিলায়  তুমি তাদের সকল কল্যাণকর জায়িয     উদ্দেশ্যকে    পূরণ     করে    দাও     এবং    তাদের সকলকে ক্ষমা করে দাও ।

اٰمِين  بِجا  هِ  النَّبِيِّ  الْاَمين          صَلَّی  اللہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم

জিন জিন মুরাদো কে লিয়ে আহবাব নে কাহা
পেশে খবীর কিয়া মুঝে হাজত খবর কি হে! (হাদায়িকে বশশিশ)

(শুরু এবং শেষে দরূদ শরীফ এবং তিনবার ‘লাব্বাইক’ পড়ুন)

সূর্যাসেন্তর পর পর্যন্ত দোআ করতে থাকুন!
============
এভাবে     আহাজারীর     সাথে      দোআ     করতে     থাকুন,  যতক্ষণ না  সূর্য  অস্ত যায় এবং রাতের  কিছু অংশ এসে যায়। ইহার  পূর্বে  অবস্থান স্থল  (অর্থাৎ যেখানে  আপনি অবস্থান   করছেন)   হতে   চলে   যাওয়া   নিষেধ  রয়েছে,  আর সূর্যাসেন্তর পূর্বে আরাফাতের সীমানা হতে  বাইরে বেরিয়ে  যাওয়া  হারাম  এবং   ‘দম’     দেওয়া  ওয়াজিব।  যদি   সূর্যাসেন্তর   পূর্বেই   আবার     পুনরায়    আরাফাতের ময়দানে প্রবেশ করে  তবে     আর ‘দম’  দিতে হবে না।  মনে   রাখবেন!   আজ     হাজী   সাহেবানদের   মাগরিবের নামায    এখানে    নয়    বরং    এশার    নামাযের    ওয়াক্তে  মুজদালিফায়     মাগরিব     ও    এশার    নামায     একসাথে পড়তে হবে।

গুনাহ হতে পবিত্র হয়ে গেল
============
প্রিয়  হাজী সাহেবগণ! আপনাদের  জন্য   ইহা আবশ্যক যে, আল্লাহর  দেয়া সত্য ওয়াদা  সমূহের    উপর  ভরসা  করে দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করে নিন যে, আজ আমি গুনাহ হতে এমনভাবে পবিত্র   হয়ে  গেছি   যেমনিভাবে ঐদিন  যখন  মায়ের পেট হতে জন্ম   নিয়েছিলাম,   এখন   চেষ্টা করুন যেন আগামীতে কোন গুনাহ না হয়।

যাকাত   ইত্যাদিতে    যাতে   কখনো    অলসতা   না    হয়। সিনেমা, নাটক এবং গান বাজনা, হারাম রুজি উপার্জন, দাড়ি   মুন্ডানো    অথবা    এক     মুষ্টি    হতে   কম     রাখা, মা-বাবার   মনে   কষ্ট    দেওয়া  ইত্যাদি  ইত্যাদি    গুনাহে লিপ্ত    হয়ে    কখনো     আবার    আপনি    যেন    শয়তানের  ধোকায় শিকার হয়ে না যান।

صَلُّوْا   عَلَی الۡحَبِیۡب!                            صَلَّی  اللہُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد

Top