তাবেয়ী ইবনে সিরিন (রহঃ) বলেছেন,
إنَّ هذا العلم دين ؛ فانظروا عمَّن تأخذون دينكم
“নিশ্চয় এই ইলম দ্বীনের অন্তর্ভূক্ত। সুতরাং লক্ষ্য রেখো! কার নিকট থেকে তুমি তোমার দ্বীন গ্রহণ করছো”
- আধুনিক আহলে হাদীস দলের অন্যতম বক্তা ডঃ জাকির নায়েক ও মতিউর রহমান মাদানী তাদের অন্যতম গুরু, নেতা ও শাইখ হল এই নাসিরুদ্দিন আলবানী। জাকির নায়েকের আকিদা ও রিসার্চ মুলত আলবানীর আকিদা ও বই পুস্তক অনুসারে। যেমনঃ আলবানী যে হাদিস দুর্বল কিংবা জাল বলেছে তাকে অন্যান্য মুহাদ্দিসগন সহিহ বললেও জাকির নায়েক আলবানীকেই সমর্থন দিয়ে থাকে। এ আহলে হাদীসকে সালাফী নামে পরিচয়দানকারী হলো নাসির উদ্দিন আলবানী। ডাক নাম আবু আবদুর রহমান। ইউরোপ মুসলিম অধ্যুষিত দেশ আলবেনীয়ায় জন্ম হওয়ায় তাকে আলবানী বলা হয়। তিনি ১৩৩৩ হিজরী মোতাবেক ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে আলবেনীয়ার রাজধানী স্কোডার ( Shkoder বর্তমান নাম তিরানা) এ জন্ম গ্রহন করেন।
- →→ তার পরিবার ছিল দরিদ্র। তার পিতা ছিল হানাফী মাযহাব অনুসরণকারী। আলবেনিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ জাগু নারীদের পর্দা নিষিদ্ধ করলে শিশু আলবানীকে নিয়ে তার পিতা সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে চলে আসেন।
- →→ আলবানী লিখিত 'সিফাতুস সালাত' কিতাবের ভূমিকাতে উল্লেখ্য করেন, নাসির উদ্দিন আলবানী ব্যক্তিগত জীবনে প্রথম অবস্থায় কাঠ মিস্ত্রির কাজ করতেন, পরবর্তীতে পিতার ঘড়ি মেরাতের কাজে নিয়জিত ছিলেন। অথচ বর্তমানে আহলে হাদীসগন তাকে শাইখ উপাধীতে ভুষিত করেছেন।
- →→ আলাবনী প্রথম জীবনে হানাফী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে মাযহাব হতে ছিটকে পড়েন হানাফী ফিকাহর কিতাব পাঠ করলেও তিনি হানাফী মাযহাব সহ সমস্ত মাযহাবকে অস্বীকার করেন, ঠিক ইবনে ওহাব নজদীর ন্যায় এবং কোরআন হাদীস ও সলফে সালেহীনদের বিরুদ্ধাচরণ করেতে থাকেন।
- ১৯৬০ সালের প্রথম দিকে তিনি সকলের নজরে পড়েন এবং দু'বার গ্রেপ্তার হয়েছেন। প্রথম বার ১৯৬৮ সালের আগে দামেস্কের কেল্লা কারাগারে বন্দী ছিলেন এক মাসের জন্য। এটা সে কারাগার যেখানে ইবনে তাইমিয়া বন্দী ছিল। ১৯৬৮ যুদ্ধের সময় সিরিয়া সরকার সকল রাজবন্দীকে মুক্ত করে দিলে তিনিও মুক্ত হন। কিন্তু আবার ও তার মত প্রচার করতে থাকেন। ফলে তাকে পুনরায় দামেস্কের পূর্ব-উত্তরাঞ্চলের আল হাসাকা কারাগারে বন্দি করা হয় তিনি ওখানে আট মাস অতিবাহিত করেন। কারগার হতে মুক্তি পেয়ে তিনি পরবর্তীতে সিরিয়া ত্যাগ করে জর্ডানে আশ্রয় নেন এবং জর্ডানের রাজধানী আম্মানে স্থায়ীভাবে বসবাস করে,সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।
তার ওহাবি কার্যাবলীর কারণে সৌদি রাজতন্ত্র তাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করে। তাদের আর্থিক সহায়তায় ওহাবী মতবাদ প্রচার করার সুবর্ণ সুযোগ লাভ করেন। বর্তমান বিশ্বে আহল হাদীস তথা সালাফী ওহাবীদের কেন্দ্র হল সৌদিআরব। ভারতের ঐতিহ্যবাহী আহলে হাদীস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া বেনারসে হাদীসের শিক্ষক হিসেবে আলবানীকে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব পাঠানো হয়। কিন্তু তৎকালীন সময় ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ চলছিল। তাই তিনি সেখনে যেতে অপারগতা পেশ করেন।
- সাউদী সরকার ওহাবী মতবাদ শক্ত করার জন্য আলবেনীকে ১৩৯৫ হিজরী থেকে ১৩৯৮ হিজরী পর্যন্ত মদীনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট সদস্য হিসাবে মনোনীত করেন। আলবেনী ১৪২০ হিজরী, ২ জুমাদাল আখেরা, শনিবার মোতাবেক ২ অক্টোবর, ১৯৯৯ ক্রিস্টাব্দে মারা যান।
নাসির উদ্দিন আলবানী ছিল কট্টর ওহাবী-সালাফী ২ দলেরই নেতাঃ
- সুন্নী চার মাযহাবকে তিনি ভীষণভাবে কটাক্ষ করেছেন। তিনি লিখেছেন " মুসলিম ইমামগণের (মাযহাবের ইমামগন) ওমুক ইমাম কোন মাসয়ালার ইজতিহাদে বা তার রায়ে ভুল করেছেন তা আমরা কেন বলতে পিছপা হব??
হানাফী মাযহাবকে খ্রিস্টধর্মের সাথে তুলনাঃ
শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানী হানাফী মাযহাবকে খ্রিস্টধর্মের সাথে তুলনা করে লিখেছেন,
هذا صريح في أن عيسى عليه السلام يحكم بشرعنا ويقضي بالكتاب والسنة لا بغيرهما من الانجيل أو الفقه الحنفي و نحوه
“এ থেকে স্পষ্ট যে, হযরত ঈসা (আঃ) আমাদের শরীয়ত অনুযায়ী ফয়সালা দিবেন এবং কিতাব ও সুন্নাহের মাধ্যমে বিচার করবেন। তিনি ইঞ্জিল, হানাফী ফিকহ কিংবা এজাতীয় অন্য কিছু দ্বারা বিচার করবেন না।”
[আল্লামা মুনযীরি (রহঃ) কৃত “মুখতাসারু সহিহীল মুসলিম” এর উপর শায়েখ নাসীরুদ্দিন আলবানী এর টিকা সংযোজন, তৃতীয় সংস্করণ, ১৯৭৭, আল-মাকতাবুল ইসলামি, পৃষ্ঠা-৫৪৮]
অথচ তার পিতা নুহ নাতাজীও হানাফী ছিলেন।
এছাড়া তিনি তার জীবনে দীর্ঘ একটি সময় নিজেও হানাফী ছিলেন। তাঁর জীবনীতে লেখা হয়েছে,
الحنفي (قديماً) ، ثم الإمام المجتهد بعد
“প্রথম জীবনে হানাফী, পরবর্তী জীবনে নিজেই মুজতাহিদ ইমাম”
[সাবাতু মুয়াল্লাফাতিল আলবানী, আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ আশ্-শামরানী, পৃষ্ঠা-২, ১৬]
বর্তমান বিশ্বে ৯২.৫ ভাগ মুসলমান চার মাযহাবের কোন একটি অনুসরণ করে থাকে এবং অবশিষ্ট ৭.৫ ভাগ লোক শিয়া মতাবলম্বী। দীর্ঘ তের শ’ বছর যাবৎ মুসলিম উম্মাহ মাযহাবের অনুসরণ করে আসছে, তবে কি তিনি সব মুসলমানকে খ্রিস্টানদের মত পথভ্রষ্ট মনে করেন?
উল্লেখ্য যে, হানাফী ফিকাহ সমুহ হল ইসলামের অন্যান্য ফিকাহ থেকে শ্রেষ্ঠশ্রেষ্ঠ ফিকাহ তাই একে খ্রিষ্টান দের বিকৃত ইঞ্জিল তথা বাইবেলের সাথে তুলনা করা উচিত হয় নি। কারন আলবানী যে ইঞ্জিল দেখেছিল বা পেয়েছিক তা বিকৃত ইঞ্জিল আর এতে শিরিকের মত জঘন্য বাক্যও রয়েছে যা আল্লাহর বানী নয় কিন্তু ইসলামি ফিকাহ কখনো ইসলামী শরীয়তের আইন নীতি থেকে পৃথক নয়।
ইমাম আবু হানিফার শানে বিয়াদ্দবিঃ
★ আলবানী তার 'সিলসিলাতুল আহাদীসিয যয়ীফা" কিতাবে একটি হাদীস এনে ইমামা আবু হানিফা (রঃ) সম্পর্কে মন্তব্য করেন ' একমাত্র হানিফা ছাড়া হদিসের অন্যান্য বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য। "
( সূত্র আলবানী কৃত যঈফ ও জাল হাদীস সিরিজ)।
আলবানীর ধৃষ্টতা কল্পনাহীন। ইমাম আবু হানাফী (রহ.) একজন বিখ্যাত তাবেঈ।
ইমাম নববী (রহ.), হাফেজ ইবনে হাজার ( রহ.), ইমাম কাসতালানী (রহ.), ইমাম দারুতুতনী (রহ.), ইমাম সূযুতী (রহ.) প্রমুখগণ ইমাম আবু হানাফী (রহ.) কে ইমাম হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন।
- ইমাম আবু হানাফী কয়েকজন সাহাবী থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন তা ইমাম কুরাশীর ' আল জাওয়াহীরুল মুযিয়্যা ফী তবাকাতিল হানাফিয়্যা' কিতাবে বর্ণনা করেছেন।
- ইমাম বুখারী (রহ.) এর উস্তাদ মক্কী ইবনে ইব্রাহীম (রহ.) ' তাহযীবুত তাহযীব' কিতাবে উল্লেখ করেন, ' ইমাম আবু হানাফী (রহ.) তাঁর জামানায় সবচেয়ে বড় আলেম ছিলেন।"
অথচ এমন একজন তাবেঈ কে আলবানী কটাক্ষ করেছে। কথায় বলে দু পয়সার বৈরাগী ভাত বলে অন্ন। কেননা এক জন ঘড়ির মিস্ত্রির পক্ষে ইমাম আবু হানাফা ( রহ.) কে পরিমাপ করা সম্ভব নয়। পিঁপড়া গাধার প্রস্রাবে সাতাঁর কাটে আর বলে আমি প্রশান্ত মহাসাগরে সাতাঁর কাটছি। পিঁপড়ার যেমন মহা সাগর সম্পর্কে জ্ঞান নেই, তেমনি নাসিরুদ্দিন আলবানী তথা আহলে হাদীসদের ইমাম আবু হানাফী (রহ.) সম্পর্কে জ্ঞান নেই।
ইমাম বুখারী ( রহ.) এর শানে বিয়াদ্দবিঃ
★ নাসীরুদ্দিন আলবানী ইমাম বোখারী (রহঃ) কে অমুসলিম আখ্যায়িত করেছেন। ইমাম বোখারী (রহঃ) বোখারী শরীফের “কিতাবুত তাফসীর” এ সূরা কাসাস এর ৮৮ নং আয়াতের যে ব্যাখ্যা করেছেন, সে সম্পর্কে নাসীরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) লিখেছেন,
ان هذا التأويل لا يقول به مؤمن مسلم وقال إن هذه التأويل هو عين التعطيل.
“এ ধরণের ব্যাখ্যা কোন মুমিন-মুসলমান দিতে পারে না। তিনি বলেন, এ ধরণের ব্যাখ্যা মূলতঃ কুফরী মতবাদ “তা’তীলের” অন্তর্ভূক্ত"
ইমাম বোখারী (রহঃ) সূরা কাসাসের ৮৮ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন,
كُلُّ شَىْءٍ هَالِكٌ إِلاَّ وَجْهَهُ إلا ملكه, ويقال: إلا ما أُريد به وجه الله
“আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সব কিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে”
এখানে তিনি “ওয়াজ্হুন” শব্দের ব্যাখ্যা করেছেন “মুলকুন” তথা আল্লাহর রাজত্ব। তখন অর্থ হবে, সবকিছু ধ্বংস হবে, তাঁর রাজত্ব ব্যতীত। অথবা “ওয়াজহুন” দ্বারা যা উদ্দেশ্য হবে, তা ব্যতীত সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে।
[ফাতাওয়াশ শায়েখ আলবানী, পৃষ্ঠা-৫২৩, মাকতাবাতুত তুরাছিল ইসলামী, প্রথম প্রকাশ ১৯৯৪ইং]
ইমাম বুখারী বেশি জানে নাকি নাসিরুদ্দিন আলবানী বেশি জানে? আপনারাই চিন্তা করুন।
- এ ছাড়া নাসির উদ্দিন আলবনী ইমাম বুখরী (রহ.) এর লিখিত কিতাব ' আল আবদুল মুফরাদ' এর ৮৩ অধ্যায় থেকে ৩২৯টি হাদিস শরীফকে বাদ দেয় বিভিন্ন মিথ্যে বাহানায়।
- সে এমন দুঃসাহস করেছে ইমামা বুখারী (রহ.) ও ইমাম আযম আবু হানিফা ( রহ.) কেও মুশরিক ঘোষনা করে ( আসতাগফিরুল্লাহ) ( সূত্রঃ introduction to al- San ani s Raf al- Astarm page -24-25)
নাসীরুদ্দিন আলবানী ওহাবী ও সালাফীদের ইমাম ইবনে তাইমিয়াকেও ছাড়ে নিঃ
★ নাসীরুদ্দিন আলবানী ইবনে তাইমিয়া সম্পর্কে লিখেছেন,
إنني رأيت شيخ الإسلام ابن تيمية ، قد ضعف الشطر الأول من الحديث ، وأما الشطر الآخر ، فزعم أنه كذب !وهذا من مبالغاته الناتجة في تقديري من تسرعه في تضعيف الأحاديث قبل أن يجمع طرقها ويدقق النظر فيها.والله المستعان
“আমি শায়খ ইবনে তাইমিয়াকে দেখেছি, তিনি হাদীসের প্রথম অংশকে দুর্বল বলেছেন এবং হাদীসের শেষ অংশকে তিনি মিথ্যা মনে করেছেন। আমার ধারণামতে “হাদীসকে যয়ীফ বলার ক্ষেত্রে এটি ইবনে তাইমিয়া এর বাড়াবাড়ি, যা তাঁকে হাদীসটি যয়ীফ বলতে উদ্বুদ্ধ করেছে; অথচ তিনি হাদীস বর্ণনার বিভিন্ন পরম্পরা খতিয়ে দেখেননি। এবং এ ব্যাপারে গভীর দৃষ্টিপাত করেননি।”
[সিলসিলাতুস সহীহা, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-৩৪৩-৩৪৪, হাদীস নং ১৭৫০]
★ ইবনে তাইমিয়া “কালিমুত তাইয়্যিব” নামক বিখ্যাত একটি কিতাব রচনা করেছেন।
নাসীরুদ্দিন আলবানী সে কিতাবের হাদীসগুলো বিশ্লেষণ করে একটি কিতাব লিখেছেন,
সহীহুল কালিমিত তাইয়্যিব। এ কিতাবে নাসীরুদ্দিন আলবানী লিখেছে-
أنصح لكل من وقف علي هذا الكتاب ( الكلم الطيب لإبن تيمية) و غيره: أن لا يبادر إلي العمل بما فيه من الأحاديث، إلا بعد التأكيد من ثبوتها، و قد سهلنا له السبيل إلي ذلك بما علقنا عليه ، فما كان ثابتا منها عمل به …وإلا تركه، ( صحيح الكلم الطيب-ص-৪)
“যারা আল্লামা ইবনে তাইমিয়া এর এ কিতাবটি সম্পর্কে অবগত রয়েছে, তাদেরকে নসীহত করব, এ কিতাবে যে সমস্ত হাদীস রয়েছে, সেগুলোর প্রতি তারা যেন আমল করতে অগ্রসর না হয়, যতক্ষণ না হাদীসগুলো শক্তিশালীভাবে প্রমাণিত হয়। আমি এর উপর যে টিকা সংযোজন করেছি, এর মাধ্যমে প্রত্যেকের জন্য বিষয়টি সহজ করে দিয়েছি। সুতরাং যে সমস্ত হাদীস প্রমাণিত হবে, সেগুলোর উপর আমল করা হবে, নতুবা সেটি পরিত্যাগ করা হবে”
[সহীহুল কালিমিত তাইয়্যিব, পৃষ্ঠা-৪]
ওহাবীদের নেতা শায়েখ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাফ সম্পর্কে আলবানীর বক্তব্যঃ
শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ এর প্রতি অভিশাপঃ
শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ সম্পর্কে শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানী লিখেছে,
أشل الله يدك وقطع لسانك -يدعو على العلامة الشيخ عبد الفتاح أبي غدة-.
ويقول عنه: إنه غدة كغدة البعير
ثم يقول مستهزئا ضاحكا: أتعرفون غدة
“আল্লাহ তায়ালা তোমার হাত অবশ করে দিক এবং তোমার জিহ্ক্ষাকে কর্তন করুক । [কাশফুন নিকাব, পৃষ্ঠা-৫২]
তিনি আরও বলেন , সে হল উটের প্লেগ রোগের মত একটা মহামারী (গুদ্দাতুল বায়ীর)। অতঃপর তিনি হাসতে হাসতে উপহাস করে বললেন, তোমরা কি জানো, উটের প্লেগ কী?
নাসীরুদ্দিন আলবানীর এ কথা উল্লেখ করে হাবীবুর রহমান আজমী লিখেছেন,
و ليس يعني الألباني بذلك إلا أنه يجب علي الناس أن يتخذوه إماما و يقلدوه تقليدا أعمي، ولا يعتمدوا علي إبن تيمية و لا علي غيره من الثقات الأثبات من المحدثين، في ثبوت الأحاديث حتي يسألوا الألباني و يرجعوا إلي تحقيقاته!
“অর্থাৎ নাসীরুদ্দিন আলবানীর একথা বলার দ্বারা মূল উদ্দেশ্য হল, মানুষ যেন আবশ্যকভাবে তাঁকে ইমাম বানায় এবং তাঁর অন্ধ অনুকরণ করে। এবং যতক্ষণ পর্যন্ত আলবানীকে জিজ্ঞেস না করবে এবং তার বিশ্লেষণকে গ্রহণ না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লামা ইবনে তাইমিয়াসহ অন্য কোন বিশ্বস্ত ও গভীর পাণ্ডিত্যের অধিকারী মুহাদ্দিসের হাদীসের উপরও নির্ভর করবে না।”
ইমাম জালাল উদ্দিন সূয়ুতী (রহ.) এর শানে বিয়াদ্দবিঃ
জালালুদ্দিন সূয়ূতী (রহঃ) সম্পর্কে শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানী লিখেছেন,
فيا عجباً للسيوطي كيف لم يخجل من تسويد كتابهِ الجامع الصغير بهذا الحديث
“কী আণ্ডর্য! জালালুদ্দিন সূয়ূতী তাঁর জামে সগীরে কিভাবে এ হাদীস উল্লেখ করতে একটু লজ্জাবোধ করলেন না!
তিনি জালালুদ্দিন সূয়ূতী (রহঃ) সম্পর্কে আরও লিখেছেন-
وجعجع حولهُ السيوطي
অর্থাৎ জালালু্িদ্দন সূয়ূতী (রহঃ) হাঁক-ডাক ছেড়ে থাকেন।
[সিল-সিলাতুজ জয়িফা, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-১৮৯]
- ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতী (রহ) - ১ লক্ষ হাদিসের হাফিজ,
- জগত বিখ্যাত মুহাদ্দিস, মুফাসসির।
- তফসিরে জালালাইন ও তফসীরে দুররে মনসুর এর প্রনেতা। যার কিতাব এমন কোন মাদ্রাসা নেই পড়ানো হয় না।
- যিনি রাসুল (ﷺ) কে জাগ্রত অবস্থায় ও স্বপ্নে ৭০ বার এর অধিক দেখেছেন।
- নবম হিজরির মুজাদ্দিদও ছিলেন তিনি।
ইমাম হাকেম, ইমাম যাহাবী এবং আল্লামা মুনযিরি (রহঃ) সম্পর্কে শায়েখের উক্তিঃ
শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানীর দৃষ্টিতে একটা হাদিস সহীহ নয়, অথচ অন্যান্য মুহাদ্দিস তাকে সহীহ বলায় তিনি হাদীসের বিখ্যাত তিন মুহাদ্দিস ইমাম হাকেম, ইমাম যাহাবী, ইমাম মুনযিরি (রহঃ) সম্পর্কে বলেছেন,
وقال الحاكم : ” صحيح الاسناد ” ! ووافقه الذهبي ! وأقره المنذري في ” الترغيب ” ( ৩ / ১৬৬ ) ! وكل ذلك من إهمال التحقيق ، والاستسلام للتقليد ، وإلا فكيف يمكن للمحقق أن يصحح مثل هذا ا لاسناد
“হাকেম বলেছেন, হাদীসটির সনদ সহীহ। ইমাম যাহাবী তাঁর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। ইমাম মুনযিরি (রহঃ) “তারগীব ও তারহীব” নামক কিতাবে তার স্বীকৃতি দিয়েছেন।
আর এটি হয়েছে, তত্ত্ব-বিশ্লেষণের প্রতি উদাসীনতা, তাকলীদের প্রতি আত্মসমর্পণ
(অন্ধানুকরণ), নতুবা একজন বিশ্লেষণধর্মী আলেম কিভাবে একে সহীহ বলতে পারেন”
হাফেয তাজুদ্দিন সুবকী (রহঃ) সম্পর্কে শায়েখ নাসীরুদ্দিন আলবানী মন্তব্য করেছেন-
ولكنه دافع عنه بوازع من التعصب المذهبي ، لا فائدة كبرى من نقل كلامه وبيان ما فيه من التعصب. .
মাযহাব অনুসরণের গোঁড়ামি তাঁকে প্ররোচিত করেছে। তাঁর কথা উল্লেখ করে এবং তাঁর গোঁড়ামির কথা আলোচনা করে তেমন উল্লেখযোগ্য কোন উপকারিতা নেই।
[সিল-সিলাতুজ যয়িফা, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২৮৫]
শায়খ হাবীবুর রহমান আজমী তাঁর সম্পর্কে লিখেছেন,
الشيخ ناصر الدين الالباني شديد الولوع بتخطئة الحذاق من كبار علماء الاسلام ولا يحابى في ذلك أحدا كائنا من كان ، فتراه يوهم البخاري ومسلما ، ومن دونهما ، ويغلط ابن عبد البر وابن حزم والذهبي وابن حجر والصنعانى ، ويكثر من ذلك حتى يظن الجهلة والسذج من العلماء ان الالباني نبغ في هذا العصرنبوغا يندر مثله
“শায়েখ নাসীরুদ্দিন আলবানী পৃথিবী বিখ্যাত গভীর পাণ্ডিত্যের অধিকারী আলেমদের ভুল ধরার ব্যাপারে চরম বেপরোয়া। এ পথে তিনি কাউকেই মুক্তি দেননি। আপনি দেখবেন!
সে ইমাম বোখারী (রহঃ), ইমাম মুসলিমসহ অপরাপর ইমামদের ব্যাপারে বিরূপ মন্তব্য করে। তিনি যুগশ্রেষ্ঠ আলেম ইবনে আব্দুল বার (রহঃ), ইবনে হাযাম (রহঃ), ইমাম যাহাবী (রহঃ) ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ), ইমাম সানআনী (রহঃ) সহ আরও অনেককে ভুল সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছেন।
অথচ অনেক অজ্ঞ এবং সাধারণ আলেম তাঁকে বর্তমান যুগের বিরল ব্যক্তিত্ব মনে করে থাকেন।”
নাসিরুদ্দিন আলবানীর অন্যান্য বিয়াদ্দবি ও বাতিল মতবাদঃ
★ নবীজি (ﷺ) এর রওজা মুবারক হভেংগে ফেলতে এবং নবীজি (ﷺ) এর রওজা শরীফকে মসজিদে নববী হতে বের করার জন্য আবেদন করেছিল নাসিরুদ্দীন আলবানী। (নাউযুবিল্লাহ)
(সূত্রঃ তাহযিরুজ সাজিদ মিন ইত্তিখাযিল কুবুরি মাসাজিদ, শায়েক আলবানী, পৃ-৯৮)
নাসির উদ্দিন আলবানীর কিছু কুফরীমূলক আকিদাঃ ( নাউযুবিল্লাহ পাঠ করবেন)
★ সালাফী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা হলেন আল্লাহ তায়ালা ( সূত্রঃ ফাতাওয়াল আলবানী ফিল মদীনাতি ওয়াল ইমারত, পৃ-১৮)
★ আশ্চর্য হওয়া আল্লাহর একটি সিফত। (কিতাবুশ শায়েখ আলবানী)
★ এটা ঈমান রাখো যে আল্লাহ তায়ালা (শুধু) আসমানে রয়েছে। (আল হাবী মিন ফাতাওয়াশ শায়েখ আলবানী,১ম খন্ড ৪৩ পৃ)
★ নবীগন যে নিষ্পাপ এটা সাধারণ বা ব্যাপক নয়। (ফাতাওয়াল আলবানী ফিল মাদীনাতি ওয়াল ইমারত,পৃ ১৮)
★ নবী-রাসূলগণ বিভিন্ন ধরনের সগীরা গুনাহ ও আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়ে থাকেন। (আল ফাতাওয়াল কুয়্যেতিয়্যা লিল আলবানী,পৃ ২৯)
★ আল্লাহর রাসূল (ﷺ) মানুষকে যে সমস্ত আয়াত শিখিয়েছেন তা তিনি ভুলে যেতে পারেন। (আল ফাতাওয়াল কুয়্যেতিয়্যা লিল আলবানী,পৃ ৩০)
★ নবী করীম (ﷺ) কে ওসিলা করে দোয়া করা হারাম ( আহকামুল যানায়েজ ওয়া বিদাউহা, পৃ -২৬৪)
★ রাসূল (ﷺ) সৃষ্টিকুলের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নন।( আত তাওয়াসসুল আনওয়াউহু ওয়া আহকামুহু, পৃ-১৪৯)
★ নবী করীর (ﷺ) রওজা জিয়ারতের উদ্দশ্যে সফর করা হারাম ( ফাতাওয়াল আলবানী ফিল মদীনাতি ওয়াল ইমারত, পৃ-১২)
★ নবী করীম (ﷺ) ও অন্য কোন মৃতদের উদ্দশ্যে কোন আমলের সোয়াব প্ররণ করা জায়েজ নয়। ( আহাকমুল জানায়েয ওয়া বিদাউহা, শায়েখ আলবানী, পৃ-২৬০-২৬১)
★ জুমার দিনে 'ইন্নাল্লাহা ওয়ামালাইকাতাহু' এই আয়াত শরীফ পাঠ করা জায়েজ নয় এবং এটি একটি বেদাত ( আল আজউইবাতুন নাফেয়া, শায়েক আলবানী,পৃ-৬৭)