আসসলামু আলাইকুম ওয়া রাহমতুল্লাহি ওবারাকাতুহ
শরু করছি পরম করুণাময় সেই প্রেমময় জাল্লে জালালু আহাদময় অসীমদয়ালু আল্লাহ সুবাহানু তাআলা ও তার পেয়ারে নূরময় হাবীবশাফেয়ীন মুজনেবিন রাহমাতালাল্লিল আলামিন আহমদ মোস্তফা মুহাম্মদ মোস্তফা (সা:) উনার উপর দুরুদ পেশ করে এবং আমার দাদাহুজুর আক্তার উদ্দিন শাহ ও আমারমূর্শীদ কেবলা দয়ালমোখলেছ সাই এর সরণে...
(প্রসঙ্গ বেদাত কি.বেদাত বলতেই সবকিছুকে হারাম বুঝায়না উত্তমবেদাতের জন্য সওয়াবনির্ধারিত)
প্রথমে একটি কথা না বলে পারছিনা আজ থেকে ৫ বছর আগে বেদাত শব্দটি এত প্রচলন ছিলনাবর্তমানে যেই হারেপ্রচলিত আছে টিভিতে ওয়াজে মসজিদে রাস্তায় এখন বিদাত শব্দটির মিছিল শুনছি আর আমাদের পূর্ববর্তীগণ যা করেছেন তাদের সবই নাকি এখন বিদাতে পরিণত হয়েছে ইসলামযাদের কাছ থেকেআমরা শিখলাম তারাইযদি বর্তমান মোল্লাদের কাছে বিদাত হয়ে যায় তাহলে যারা৫০০ বছর আগে ইসলামকে দিনের পর দিন শাসন করেছেন তারা কি হবে তাদের চোখে কাঠ মোল্লারাই ভাল বলতেপারবেন..
বিদাত কি..?.বিদয়াতের লোগাতী অর্থহচ্ছে-
(১) “বিদয়াত হলো-দ্বীনের পূর্ণতার পর নতুনকোন বিষয় উদ্ভবহওয়া অথবা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পর আমল ও খাহেশাত সম্পর্কিত কোন বিষয় নতুনউদ্ভব হওয়া।” (লোগাতুল কামূস আল মহীত্ব ৩য় জিঃ পৃঃ৩, বায়ানুল লিসান, পৃঃ১১৫)
(২) “বিদয়াত হলো- নমুনাব্যতীত সৃষ্ট জিনিস।” (মিছবাহুল লোগাত, পৃঃ ২৭)
(৩) “বিদয়াত মূলতঃ ওটাকেই বলা হয়, যা পূর্ব নমুনা ব্যতীত সৃষ্টি করা হয়েছে।” (ফাতহুল বারীশরহে বুখারী ৪র্থজিঃ পৃঃ২১৯, মিরকাত শরীফ)
(৪) “জেনে রাখ, হুযূরে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পারে উদ্ভবঘটেছে এমন প্রত্যেক কাজই বিদয়াত।” (আশয়াতুল লোমআত)
(৫) “বিদয়াত হলো- নতুনকথা, নতুন প্রথা।” (আরবী ফিরোজুল লোগাত পৃঃ৫৩)
(৬) “বিদয়াত ওটাকে বলা হয়, যা পূর্বনমুনা ব্যতীত সৃষ্টি করা হয়।” (লোগাতআল মনজিদ পৃঃ৭৬)
(৭) “বিদয়াত হলো- নতুনকথা।” (লোগাতে সাঈদী পৃঃ৯৬)
সুতরাং বিদয়াত শব্দের লোগাতী বা আভিধানিক মূল অর্থ হলো- নতুনউৎপত্তি, নতুন উদ্ভব, নতুন সৃষ্টি। পূর্বে যার কোন অস্তিত্ব ছিলনা।
বিদয়াতের শরীয়তী অর্থ
-----------------------
(১) বিদয়াতের শরীয়তী অর্থ সম্পর্কে বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফক্বীহ্ আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি লিখেছেন, “প্রকৃতপক্ষে বিদয়াত হলো- এমন জিনিসের আবির্ভাব, যার নমুনা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সময় ছিলনা।” (ওমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী ৫ম জিঃ পৃঃ৩৫৬)
(২) আল্লামা ইসমাইল নাবিহানী রহমতুল্লাহি আলাইহি লিখেছেন, (শায়খুল ইসলাম) ইজদুদ্দীন ইবনে সালাম বলেন, “বিদয়াত এমন একটিকাজ, যা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যামানায় সম্পন্ন হয়নি।” (জাওয়াহিরুল বিহার পৃঃ২৮০)
(৩) ইমাম নববীরহমতুল্লাহি আলাইহি লিখেছেন, “শরীয়ত মুতাবেক বিদয়াত হচ্ছে- এমনসব নব আবিস্কৃত জিনিসের নাম, যা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সময় ছিলনা।” (শরহে মুসলিম লিন নববী)
(৪) হাফেজ ইবনেরজব রহমতুল্লাহি আলাইহি লিখেছেন, “বিদয়াত ঐ বিষয়কেই বলা হয়, যার ভিত্তি শরীয়তে নেই। সুতরাং শরীয়তে যে বিষয়ের ভিত্তি রয়েছে, শরীয়ত মুতাবেক তা বিদয়াত নয়, যদিওআভিধানিক অর্থে বিদয়াত বলা হয়।” (জামিউল উলূম ওয়াল হাকামপৃঃ১৯৩, ইরশাদুল উনূদপৃঃ১৬১)
(৫) ইমাম নববীরহমতুল্লাহি আলাইহি লিখেছেন, ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “বিদয়াতের শরীয়তী অর্থ হচ্ছেএমন একটি নতুনকর্ম, যা হুযূরে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যামানায় ছিলনা।” (তাহযীবুল আসমা ওয়াল লোগাত)
শরীয়তের দৃষ্টিতে বিদয়াত শব্দের মূল অর্থ হলো- ঐ নতুন উদ্ভববিষয়, যার ভিত্তি কুরআন শরীফ, হাদীসশরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসে নেই। সুতরাং সহজ ভাবে বলতেগেলে বিদআত হল নতুন সৃষ্টি.যার কোন নমুনা রাসূলসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় ছিল না.নতুনআবিষ্কৃত জিনিসটি ভালওহতে পারে আবারখারাপও হতে পারে.যদি ভাল হয় তথা কোরআন সুন্নাহ ইজমা ও কিয়াসের বিরোধী না হয় তাহলে তা জায়েযএবং এতে উত্তমপ্রতিদান রয়েছে যেমনহাদীস শরীফে আছে--যে ব্যক্তি ইসলামে একটি নতুন ভাল প্রথার প্রচলন করবেতার জন্য উত্তমপ্রতিদান রয়েছে,এবং যারা এর উপর আমল করবে তাদেরজন্যও উত্তম প্রতিদান রয়েছে এতে লোকেরা যত আমল করেছে,তাকে সব আমলকারীর সমান সওয়াব দেওয়াহবে (মুসনাদে আহমদ-১ম খন্ড-১৬১ পৃ:)অন্যদিকে বলা আছে যদি নতুনআবিষ্কৃত কাজটি খারাপবা শরীয়ত বিরোধী কাজ হয় তাহলেতা হারাম হবে যেমন হাদীস শরীফেআছে--আর যে ব্যক্তি ইসলামে একটিখারাপ প্রথা
চালু করবে ও লোকেরা সে অনুযায়ী আমল করবে ,তাকে সব আমলকারীর সমান পাপ দেওয়া হবে। আবারতাদের পাপে কম করা হবে না (মুসনাদে আহমদ-১ম খন্ড-১৬০ পৃ:)আশা করি বুঝতেপেরেছেন উত্তম বিদাতের জন্য সওয়াব নির্ধারিত তা হাদীসে প্রমান হলো
বিদাত হালাল হবে নাকিহারাম হবে তা সম্পুর্ণ নির্ভর করে কোরান হাদীস ইজমাকিয়াস এবং শরীয়তসম্মত নাকী শরিয়তবিরোধী এর উপর তাই উত্তমবেদাতের জন্য অবশ্যই পুরষ্কার নির্ধারিত রয়েছে যদিও আজকাল কাঠ মোল্লারা পূর্ববর্তী গলদের অনেক কাজকে বেদাতবলে ফতোয়া দেয় মূলত তারা বেদাতকি সেটাই বুঝেনা যদি বুঝততাহলে টিভিতে বসে গলা ফাটিয়ে বিদাতবিদাত বলে ছিল্লাতো না আর তাদেরবাবারা যে বিদাতকরে আসছে সেগুলির উপর কোন ফতোয়া নাই আছে আমাদের দেশের ওলি আওলিয়া গণের উপর অতছ আল্লাহ বলতেছেন হাদীসশরীফে যে ব্যক্তি আমার ওলীর সাথেকোন বেয়াদবী করবেআমি আল্লাহ তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছি (বুখারী শরীফ১০ খন্ড-৬০৫৮) পরিশেষে সকল পাঠকদের বলতে চায় যারাবেদাত বেদাত গলা ফাটায় মুলত তারাইপধভ্রষ্ঠ আর যারাতাদের পথের অনুসারী তারাও পথভ্রষ্ট তাই যে কেই গলা ফাটিয়ে বিদাত বললেইকোন বিষয় বিদাতহয় না যতক্ষণ না পর্যন্ত তা কোরান সুন্নাগ ইজমাকিয়াস এবং শরীয়তবিরোধী না হয় আসূন আমরা ওলী আওলিয়ার সঙ্গী হয়ে সিরাতুল মুস্তাকিমে চলার জন্য আল্লাহর কাছেমাগফিরাত কামনা করি.আমিন-প্রচারে-মোখলেছিয়া সূন্নী খানকা শরীফ