বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
প্রিয় সুহৃদ
আসসালামু আলাইকুম
ইলমে গায়ব বিষয়েআনেক তর্ক বিতর্ক হয়েছে , সে কারনে এই বিষয়ে কোরআনশরীফ থেকে ও সহীহ বুখারী শরিফও ( মুত্তাফাকুল আলাই )হাদিসনি্যে মুল পোস্টটি সাজান হয়েছে। যারা জানতেচান কেবল তাদেরজন্য । আর যারা সত্য জানবেন কিন্তূ কক্ষিন কালেওমেনে নিবেন না কোরআন হোক আর সহীহ হাদিস হোক নবী জি কে ছোট করা যাদেরধর্মে পরিনত হয়েছেকোরআন বা হাদীসকোন বিষয় নয় তাদের ব্যাপারে আমার কিছু বলার নাই । আল্লাহই তাদেরজন্য যথেষ্ট ।
হযরত আমর ইবনেআখতাব রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্নিত , তিনি বলেন , আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহয় তা'আলা আলাইহিস সালামএকদিন আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামাজ পড়লেন। অতঃপর মিম্বরে আরোহন করলেন এবং আমাদের উদ্দেশে দীর্ঘবক্তব্য প্রদান করলেন; এমন কি যোহরের নামায পড়ালেন ।অতঃপরআবারো আরোহন করলেনমিম্বরে , আর বক্তব্য দেওয়াশুরু করলেন ,এমন কি আসরের নামাযের সময় উপস্থিত হল । অতঃপর মিম্বরে হতে নেমে আসরওপড়লেন । পুনরায় মিম্বরে আরোহন করে বক্তব্য দিতে দিতএসুর্য অস্তমিত হয়ে গেল । সে দিন নবী করীমঅতীতে যা কিছুএবং ভবিষ্যতে যা কিছু হবে সকল বিষয়ে আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছেন । আমাদের মধ্যে যাঁদের স্মরণশক্তি অধিক তাঁরা সেসব(অদৃশ্য) সংবাদ বেশীমনে রাখতে পেরেছেন ।
( সুত্র : বুখারী শরীফ হাদিসনম্বর ৬২৩০ কিতাবুল কদর , মুসলিম শরিফ হাদিসনম্বর ২৮৯১ কিতাবুল ফিতান , তোরমিযী শরীফ হাদিসনম্বর ২১৯১ কিতাবুল ফিতান , আবু দাউদ শরীফ হাদিস নম্বর৪২৮ কিতাবুল ফিতাম, মিসকাতুল মাসাবিহ : কিটাবুল ফিটাম ৪৬১ পৃষ্ঠা )
প্রসঙ্গিক আলোচনা
মহান রাব্বুল আলামীন পৃথিবীর বুকে মানবজাতির হিদায়াতের জন্য যত নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন সবাইকে তাঁদের নুবুয়তের দলিল হিসাবে কতিপয়মু'জিযাও দান করেছেন ।
অন্যান্য নবীগনের ক্ষেত্রে ঐসব মু'জিযারসীমিত থাকলেও আমাদের প্রিয়রাসুল সাইয়্যিদুল মুরসালীন সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম-এর ব্যাপার ছিল সম্পুর্ন ভিন্ন । অন্য নবীগনের যাবতিয় মু'জিয়া একত্রিত করলে যা হয় তাঁর সবক'টি তো বটে; বরং এরপরেও আরো কত মু'জিযা দান করেছেন তা গননাকরা যাবে এমন হিসেবের খাতা নীল আকাশের নিচে খুজেপাওয়া যাবে না ,
গননা বাইরে যে সব মু'জিযারয়েছে এর একটিহল ইলমে গায়েববা "অদৃশ্যজ্ঞান "। এই ইল্মে গায়েব মহানবীর অতুলনীয় বৈশিষ্টাবলীর অন্যতম আর মহান আল্লাহর অনুগ্রহ । যেমনকোরআনে পাকে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন ।
এই আয়াতের শেষ অংশে " ওয়া আল্লামাকা মালাম তাকুন তায়'লাম ও কানা ফাদ'লুলাহি আলাইকা আযিমা'
অর্থাৎ আপনাকে যা জানা ছিল না তিনি আপনাকে সবই শিক্ষা দিয়েছেন এবং টা ছিল আপনারউপর আল্লাহর মহা অনুগ্রহ ।
পবিত্র ক্বোরআনের ভাষায় বলা যায় - নবীপাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য মহানআল্লাহ অজানা কিছুইরাখেন নি ; হোকনাতা অতীত কিংবাভবিষ্যত । কিয়ামত পরবর্তি বেহেশত-দোযখের সংবাদ পর্যন্ত যেখানে লুকায়ে থাকতে পারেনি ।তাই তো তিনিউপস্থিত আনেক লোকেরমনের খবর বলে দিয়েছেন , মুনাফিক্বেদের অন্তরে আবৃতঅন্ধকার কুঠুরিতে লালিত কপটতা প্রকাশ করে মসজিদ থেকে তাদেরঅনেককে বের করে দিয়েছেন । এমন কি অনেক সাহাবীর আবেদন পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বংশ তালিকা নিখুঁত ভাবেবলে দিয়েছেন এ গুলো কি প্রমান করে না নবীপাকের ইলমে গায়েব বিতর্কের উর্ধ্ধে একটি স্বীকৃত বিষয় ?
আল্লাহর রাসুলের বাল্যবন্ধু নয় কেবল সারাজীবনের একান্ত সঙ্গী ইসলামের প্রথম খলিফা এবং নবীগনের পর যিনিশ্রেষ্ট মানুষ , সিদ্দিকে আকবর হযরত আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ইসলামগ্রহনের প্রক্কালে নবী করীমের কাছে তাঁরনুবুয়তের পক্ষে দলিলকি আছে জানতেচাইলে নবী করীমউত্তর দিতে গিয়েভ্রু কুঁচকে ফেলেননি বরং দু'শ ভাগ দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে বলে দিয়েছিলেন কেন গত রাতেতুমি যে স্বপ্ন দেখেছ , আকাশের চন্দ্র-সুর্যতোমার কোলে এসে হাজির । আর সিরিয়া যাত্রাপথে সেই স্বপ্নের ব্যাখ্যাকারী তোমাকে যা কিছু বলেছেতাইতো আমার নুবুয়তের পক্ষে দলিল ।
এমন আশ্চর্যজনক তথ্যপ্রদানের অবস্থহচ্ছে সিদ্দিক-ই-আকবরের স্তম্ভিত ! তিনি শতভাগ নিশ্চিত হলেনযে , এই অদৃশ্যজ্ঞানের সংবাদদাতা (নবী) কষ্মিণকালেও মিথ্যুক হতে পরেন না ।
তিনিই মহান আল্লাহর সত্য নবী । সন্দেহাতিত ভাবে তাঁরনবুয়ত প্রমানিত ।
তদ্রুপ হযরত আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কথা শোনা যাক । বদরের যুদ্ধের বন্দিদের কে মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ হলে অন্য বন্দীরা যথারীতি মুক্তিপণ আদায়ে ব্যস্ত । এ দিকে চাচা হযরতআব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও ঐ যুদ্ধবন্দীদের একজন । তিনি ভাতিজার কাছেএসে আবেদন করলেনবাবা ! আমি তো গরিব মানুষ ! মুক্তিপন দেয়ার মত আমারকাছে কোন সম্পদনেই ।উত্তরে নবী করীম বললেন " কেন চাচা ! আপনি যুদ্ধে আসার পুর্বে আমারচাচীর কাছে যে স্বর্নালন্কার লুকিয়ে রেখেএসেছেন সে গুলোকোথায় ? হযরত আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহূর সে গোপন সংবাদ তো দুনিয়ার বুকে অন্যকেউ জানার কথা নয় ! কিন্তূ তাঁর ভাতিজা কিভাবে সুস্পস্টভাবে বলে দিলেন । তা রীতিমত বিষ্ময়ের ! না! এ ধরনের অদৃশ্য সংবাদদাতা কোনদিন মিথ্যুক হতে পারেন না । তাঁর কপালওচমকে উঠল । নবীজীর হাতে নিজেকে সঁ'পে দিয়েবলে উঠলেন হে আল্লাহর রাসুল ! আমাকেইসলামের কালেমা শরীফপড়িয়ে মুসলমান বানীয়ে দিন । আমি এতদিন ছিলাম গভীরঅন্ধকারে নিমজ্জিত। এবার আলোতে আসতে চাই । নবীজি তাঁকেকালেমা পড়িয়ে নিজ হাতে বায়াত করে মুসলমান বানালেন । এ ভাবে একজনজাহান্নামী মুহুর্তে বেহেশতী হয়ে গেলেন । শুধুকি তাই ? নবীরপরশে শ্রেষ্ট সোনারমানুষে রুপান্তরিত হলেন ।
এ ভাবে হাজারো দৃষ্টান্ত রয়েছে যদ্বারা স্পস্ট প্রমাণিত হয় -মহান আল্লাহ তাঁরপ্রিয় হাবীব কে ইলমে গায়েব দান করেছেন ।
এখন আরো কয়েকটি সহিহ হাদীসের উদ্ধৃতি পেশ করব যাতেসহীহ হাদীস ছাড়াঅন্য কিছূ মানিনা বলে যারা গলারপানি শুকিয়ে ফেলেতারা বিষয়েটি শজে বুঝতে পেরে হিদায়াত লাভ করে ।
হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুহতে বর্ণিত , তিনিবলেন একদা হুজুরনবী করীম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামআমাদের সামনে দন্ডায়মান হলেন অতঃপর সৃষ্টিজগতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তথা বেহেশত বাসীরা বেহেশতে এবং দোযখনাসীরা দোযখে প্রবেশ করা পর্যন্ত সবকিছু আমাদের সামনে বলে দিলেন । আমাদের মধ্যে যারা মুখস্ত রাখতে পেরেছে তারামুখস্ত রেখেছে ; আর যারা ভুলে যাবারতারা ভুলে গেছে।
[ বুখারী : হাদীস নং ৩০২০ : কিতাবু বাডয়িল খালক্ব ]
হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু আনহুহতে বর্নিত । তিনি বলেন রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সামনেএক জায়গায় দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করলেন- সে দিন থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যা কিছুঘটবে টার কোন বিষয়েই তাঁর বক্তব্যে বাদ দেননি । শ্রোতাদের মধ্যে যে মুখস্থ রাখার সে মুখস্ত রেখেছে আর যে ভুলে যাবাসে ভুলে গেছে।
( বুখারী শরীফ হাদীসনং ৬২৩০ কিতাবুল কদর । মুসলিম শরীফ হা:নং২৮৯১ কিতাবুল ফিতন )
হযরত আনাস বিন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আহু হতে াপর এক হাদীসশরিফে দেখা যায় । তিনি বলেনএকদা নবীপাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝেতাশরীফ আনলেন তখন সয়র্য পশ্চিমাকাশে দিকে ঝুঁকে পড়েছিল ( অর্থাৎ যোহরের নামাযের সময় হয়ে গিয়েছিল ) অতঃপরনবী করীম যোহরের মানায পড়লেন আর সালাম ফিরানোর পর মিম্বরে আরোহন করে ক্বিয়ামতের আলোচনা রাখলেন এবং ক্বিয়ামতের পুর্বেকার কতিপয়বড় বড় ঘটনাবর্ননা দিলেন আর উপস্থিত সাহাবিদেরকে সম্বোধন করে বললেন , খোদার কসম তোমরা আমার কাছেযা কিছু জানতেচাইবে আমি এই মজলিসেই সব প্রশ্নের উত্তর দেব ।
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুবলেন হুজুরের বানীরএমন দৃঢ়তা দেখেআনসারী সাহাবাদের মধ্যে আনন্দের কান্নার রোল বয়ে গেলো । আর নবীপাক বারবার বলে যাচ্ছেন - তোমরাআমাকে প্রশ্ন কর , প্রশ্ন কর । অতঃপর এক ব্যক্তি দাড়িয়ে প্রশ্ন করল- হে আল্লাহর রাসুল! পরকালে আমার ঠিকানা কোথায় হবে ? নবীপাকে বললেন জাহান্নাম । অথপর আবদুল্লাহ ইবনে হুযাফা বললেন -ইয়া রাসুল লাল্লাহ ! আমারপিতা কে ? নবী করীম বললেন - তোমারপিতা হুযাফা । নবীপাক আবার ও জোর তাগিদ দিয়েবললেন , তোমরা প্রশ্ন কর , প্রশ্ন কর ।
অথপর ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুনবী করীম বরাবরসামনে গিয়ে বসলেনআর বললেন -আমরাসন্তস্ট আল্লাহ কে রব হিসাবে পেয়ে, ইসলাম কে ড্বীনহিসাবে আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে রাসুলহিসেবে পেয়ে । তিনি এসব কথা বলার সময় নবী করীম চুপ রইলেন। অতঃপর বললেন-সেই সত্তার কসম! যার হাতে আমারপ্রান , আমার এ দেয়ালের সামনে এই মাত্র বেহেসত ও দোযখ হাজির করা হয়েছে , যখন আমি নামায পড়ছিলাম , আজকেরমত কোন ভাল-মন্দকেও দেখিনি ।
(সুত্র বুখারী শরীফহাদীস নং৬৮৬৪ কিতাবুল ই'তিসাম , বিল কিতাবে ওয়াস সুন্নাহ :, মুসলিম শরীফ হাদিস নং ২৩৫৯ )
এ ভাবে অসংখ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় রাসুলে আকরমসাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া ষাল্লাম ইলমে গায়েবের অধিকারী ছিলেন । অবশ্যই তা আল্লাহ প্রদত্ত ।
আর সত্তাগত আলিমুল গায়েব হলেন একমাত্র আল্লাহ । আর আল্লাহর রাসুলের ইলমেগায়েব আল্লাহ্ প্রদত্ত । যেমনএ পসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে-
'' মা কানাল্লাহু লি উতলিয়াকুম আলাল গাইবেওয়া কিন নাল্লাহা ইজতাবিয়ু মির রুসুলিহু মাইয়া সায়ু ''
অর্থাৎ হে সাধারাণ লোকগন ! আল্লাহ তা'আলার শান নয় যে , তিনি তোমাদেরকে ইলমে গায়েব দান করবেন , তবে হ্যাঁ রাসুলগনের মধ্য হতে তিনি যাকে চান তাকে অদৃশ্যজ্ঞানের জন্য মনোনীত করেন ।( সুরা আলইমরান ১৭৯)
রসুলগণের মধ্য হতে যদি আল্লাহ পাক কাউকে নির্বাচিত করেন। তাহলে সর্বপ্রথমে কাকে নির্বাচিত করবেন টা সহজেই অনুমেয় ।
আরেক জায়গায় ইরশাদহয়েছে ;
তিনি স্বীয়গায়েবের বিষয়ে কাউকেক্ষমতাবান করেন না । কিন্তূ রাসুলদের মধ্য যার উপর তিনি সন্তষ্ট হন ( তাকেই ক্ষমতা বান করেন )
(সুরা জিন- আয়াত২৬-২৭ )
আল্লাহ তায়ালা ইরশদকরেছেন ' আল্লামাকা মা লাম তাকুন তা'আলাম" আর্থাৎ ' তিনি আপনাকে এমন জিনিস শিক্ষা দিয়েছেন যা আপনিজানতেন না "
( সুরা নিসা আয়াত১১৩)
এ আয়াতে ব্যাখা করতে গিয়ে প্রসিদ্ধ গ্রন্থ জালালাইন শরীফে বলা হয়েছে " আউযয়ু মিনাল আহকামে ওয়ালগাইব '' অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুলসাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহিস সালাম কে শরীয়তের যাবতিয় হূকুম ও গায়েব সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছেন ।
উপরে বর্নিত আয়াতএবনহ জালালাইন শরীফের ব্যাখ্যা দ্বারা বুঝাগেল
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনন তানন হাবীব সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামকে ইলমে গায়েবজানাইয়াছেন । তাই আমরা বলি রাসুলসাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম ইলমেগায়েব জানেন । অসংখ্য হাদিসে মাধ্যমে জানা যায় যে রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামস্পস্ট বলে দিয়েছেন -কে কখন মৃত্যুবরন করবে ? কোন জায়গায় কে মারা যাবেএবং কার গর্ভেছেলে সন্তান অথবামেয়ে সন্তান রয়েছেইত্যাদি।
যদি রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামএ সব বিষয়েগয়েব না জানতেন , তাহলে সম্স্ত গয়েবের সংবাদকি ভাবে দিলেন?
তাফসীরে সাভার ৪র্থখন্ডে ২৭৫ পৃষ্টা রয়েছে
"ইনণাহু সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামলাম ইয়াখ রুজুমিনাদ দুনিয়া হাত্বা আ'লামাহু ল্লাহু বি জামইহি মুগিবাতিদ দুনিয়া ওয়ালআখেরাহ "
অর্থাৎ আল্লাহর দুনিয়া এবং আখেরাতের সমস্ত গায়েব না জানানো পর্যন্ত রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামদুনিয়া থেকে ইনতেকাল করেন নি ।
তাফসিরে খায়েন ৪র্থপারায় রয়েছে ;
" মা কানা ল্লাহু লি ইয়াজ রাল মুক মিনিনা আলা মা ানতুম আলাইকুম "
উক্ত আয়াতের ব্যখ্যাু উল্লেখ করা হয়েছে- রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামএরশাদ করেন , আমারকাছে আমর উম্মতকে তাদের নিজ নিজ মাটীর আকৃতিতে পেশ করা হয়েছে যেমনভাবে আদম আলািহিস সালাম এর কাছেপেশ করা হয়েছিল । আমাকে জানানো হয়েছে , কে আমার উপর ঈমান আনবে? কে আমাকে অস্বিকার করবে ? যখন এ খবর মুনাফিকদের কাছে পোছলো তখন তারাঠাট্টা করে বললো-কে তাঁর উপর ঈমান আনবে আর কে তাকে অস্বিকার করবে তাদের কে তাদের জন্মের পুর্বেই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামজানতেন বলে বলেন। অথচ আমরাতাঁর সাথেই আছি- কিন্তু আমাদেরকে চিন্তে পারেন নি । এ খবর যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম-এর নিকট পৌছলো। তখন তিনিমিম্বরের উপরে দাড়ালেন এবং আল্লাহর প্রসংসা করে ইরশাদ করলেন
(" কালা মা বালআকওয়ামে তায়ানু ফি ইলমিলা তাসআলু নি আন শাঈন ফিমাবাইনাকুম ওয়া বাইনাস সাআতি ইল্লা আনবাইতুকুম বিহ্")
অর্থাৎ " এসব লোকেদের ( মুনাফিকদের) কি যে হলো আমার জ্ঞান নি্যেতারা বিরূপ সমালোচনা করছে । তোমরাএখন থেকে কেয়ামত পর্যন্ত যে কোন বিষয় সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞাসা করো আমি াবশ্যই উহা তোমাদের কে বলে দিবো"
(তাফসীরে খয়েন )
বুখারী শরীফের ' বাদ্য়ু খালকে" শীর্ষক আলোচনায় ও মিশকাত শরীফের বাদয়ুখলকে ওয়া জিকরুল আমবিয়া শীর্ষক াধ্যায়ে হযরত উমর ফারূকরাদ্বিয়াল্লাহু আনহূ থেকেবর্নিত অর্থাৎ হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুবলেন -- " রাসুল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আনহু এক জায়গায় আমাদের সাথে অবস্থান করছিলেন । সে খানে তিনি আমাদের সৃষ্টির সুচনা তজেকেসংবাদ দিচ্ছিলেন - এমন কি বেহেস্তবাসী দোযখবাসী নিজ নিজ ঠিকানায় যাওয়ার াবধি পরিব্যাপ্ত যাবতিয় আবস্থা ও ঘটনাবলী প্ড়দান করেন,যিনি ওসব স্মরণরাখতে পেরেছেন তিনিতো স্মরণ রেখেছেন ; আর যিনি রাখতে পারেননি তিনি ভুলেগেছেন । ( মেশকাত শরীফ ৫০৬)
মেশকাত শরিফের আল-ফিতনা অধ্যায়ে বুখারী ও মুসলিম শরীফবরাত দিয়ে হযরতহুয়াইফা রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্নিত হয়েছে
অনুবাদ : রাসুল সাল্লাল্লাহু তাআলাআলাইহিস সালাম সে স্থানে কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবেসব কিছুর খবর দিয়েছেন । কোন কিছুই বাদ দেন নাই । যারামনে রাখার তারামনে রেখেছেন, আর যারা ভুলে যাওয়ার তারা ভুলে গেছেন।( মিশকাত)
এ সমস্ত হাদীসশরীফের মাধ্যমে জানাগেল রাসুল সাল্লাল্লাহু তাআলাআলাইহিস সালাম সৃষ্তির শুরু থেকে কেয়ামত পর্যন্ত যা কিছুঘটবে উহা জানতেন এবং উহার সংবাদসাহাবাদের দিয়েছেন ।
মুলত গবেষণা করলেদেখা যায় , নবীজীর বরকতময় জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে রয়েছে বিশ্বমানবতার জণয় শিক্ষনীয় বিষয় । আর অধিকাংশ গুরুত্বপুর্ণ মর্মসুচিতে দেখা যায় , ইলমেগায়েবের প্রভাব । পবিত্র ক্বোরআন-হাদীসের আলোতে সংক্ষেপে এতটুকু আলোচনা করলাম ।
আল্লাহ আমাদের উক্তআলোচনা থেকে প্রকৃত ইলম জানার ও বোঝার তৌফিক দান করূন - আ-মিন ।
( বিস্তারিত জানার জন্যদেখতে পারেন হা-আল-হক্ব : প্রথমখন্ড )
প্রিয় সুহৃদ
আসসালামু আলাইকুম
ইলমে গায়ব বিষয়েআনেক তর্ক বিতর্ক হয়েছে , সে কারনে এই বিষয়ে কোরআনশরীফ থেকে ও সহীহ বুখারী শরিফও ( মুত্তাফাকুল আলাই )হাদিসনি্যে মুল পোস্টটি সাজান হয়েছে। যারা জানতেচান কেবল তাদেরজন্য । আর যারা সত্য জানবেন কিন্তূ কক্ষিন কালেওমেনে নিবেন না কোরআন হোক আর সহীহ হাদিস হোক নবী জি কে ছোট করা যাদেরধর্মে পরিনত হয়েছেকোরআন বা হাদীসকোন বিষয় নয় তাদের ব্যাপারে আমার কিছু বলার নাই । আল্লাহই তাদেরজন্য যথেষ্ট ।
হযরত আমর ইবনেআখতাব রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্নিত , তিনি বলেন , আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহয় তা'আলা আলাইহিস সালামএকদিন আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামাজ পড়লেন। অতঃপর মিম্বরে আরোহন করলেন এবং আমাদের উদ্দেশে দীর্ঘবক্তব্য প্রদান করলেন; এমন কি যোহরের নামায পড়ালেন ।অতঃপরআবারো আরোহন করলেনমিম্বরে , আর বক্তব্য দেওয়াশুরু করলেন ,এমন কি আসরের নামাযের সময় উপস্থিত হল । অতঃপর মিম্বরে হতে নেমে আসরওপড়লেন । পুনরায় মিম্বরে আরোহন করে বক্তব্য দিতে দিতএসুর্য অস্তমিত হয়ে গেল । সে দিন নবী করীমঅতীতে যা কিছুএবং ভবিষ্যতে যা কিছু হবে সকল বিষয়ে আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছেন । আমাদের মধ্যে যাঁদের স্মরণশক্তি অধিক তাঁরা সেসব(অদৃশ্য) সংবাদ বেশীমনে রাখতে পেরেছেন ।
( সুত্র : বুখারী শরীফ হাদিসনম্বর ৬২৩০ কিতাবুল কদর , মুসলিম শরিফ হাদিসনম্বর ২৮৯১ কিতাবুল ফিতান , তোরমিযী শরীফ হাদিসনম্বর ২১৯১ কিতাবুল ফিতান , আবু দাউদ শরীফ হাদিস নম্বর৪২৮ কিতাবুল ফিতাম, মিসকাতুল মাসাবিহ : কিটাবুল ফিটাম ৪৬১ পৃষ্ঠা )
প্রসঙ্গিক আলোচনা
মহান রাব্বুল আলামীন পৃথিবীর বুকে মানবজাতির হিদায়াতের জন্য যত নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন সবাইকে তাঁদের নুবুয়তের দলিল হিসাবে কতিপয়মু'জিযাও দান করেছেন ।
অন্যান্য নবীগনের ক্ষেত্রে ঐসব মু'জিযারসীমিত থাকলেও আমাদের প্রিয়রাসুল সাইয়্যিদুল মুরসালীন সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম-এর ব্যাপার ছিল সম্পুর্ন ভিন্ন । অন্য নবীগনের যাবতিয় মু'জিয়া একত্রিত করলে যা হয় তাঁর সবক'টি তো বটে; বরং এরপরেও আরো কত মু'জিযা দান করেছেন তা গননাকরা যাবে এমন হিসেবের খাতা নীল আকাশের নিচে খুজেপাওয়া যাবে না ,
গননা বাইরে যে সব মু'জিযারয়েছে এর একটিহল ইলমে গায়েববা "অদৃশ্যজ্ঞান "। এই ইল্মে গায়েব মহানবীর অতুলনীয় বৈশিষ্টাবলীর অন্যতম আর মহান আল্লাহর অনুগ্রহ । যেমনকোরআনে পাকে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন ।
এই আয়াতের শেষ অংশে " ওয়া আল্লামাকা মালাম তাকুন তায়'লাম ও কানা ফাদ'লুলাহি আলাইকা আযিমা'
অর্থাৎ আপনাকে যা জানা ছিল না তিনি আপনাকে সবই শিক্ষা দিয়েছেন এবং টা ছিল আপনারউপর আল্লাহর মহা অনুগ্রহ ।
পবিত্র ক্বোরআনের ভাষায় বলা যায় - নবীপাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য মহানআল্লাহ অজানা কিছুইরাখেন নি ; হোকনাতা অতীত কিংবাভবিষ্যত । কিয়ামত পরবর্তি বেহেশত-দোযখের সংবাদ পর্যন্ত যেখানে লুকায়ে থাকতে পারেনি ।তাই তো তিনিউপস্থিত আনেক লোকেরমনের খবর বলে দিয়েছেন , মুনাফিক্বেদের অন্তরে আবৃতঅন্ধকার কুঠুরিতে লালিত কপটতা প্রকাশ করে মসজিদ থেকে তাদেরঅনেককে বের করে দিয়েছেন । এমন কি অনেক সাহাবীর আবেদন পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বংশ তালিকা নিখুঁত ভাবেবলে দিয়েছেন এ গুলো কি প্রমান করে না নবীপাকের ইলমে গায়েব বিতর্কের উর্ধ্ধে একটি স্বীকৃত বিষয় ?
আল্লাহর রাসুলের বাল্যবন্ধু নয় কেবল সারাজীবনের একান্ত সঙ্গী ইসলামের প্রথম খলিফা এবং নবীগনের পর যিনিশ্রেষ্ট মানুষ , সিদ্দিকে আকবর হযরত আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ইসলামগ্রহনের প্রক্কালে নবী করীমের কাছে তাঁরনুবুয়তের পক্ষে দলিলকি আছে জানতেচাইলে নবী করীমউত্তর দিতে গিয়েভ্রু কুঁচকে ফেলেননি বরং দু'শ ভাগ দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে বলে দিয়েছিলেন কেন গত রাতেতুমি যে স্বপ্ন দেখেছ , আকাশের চন্দ্র-সুর্যতোমার কোলে এসে হাজির । আর সিরিয়া যাত্রাপথে সেই স্বপ্নের ব্যাখ্যাকারী তোমাকে যা কিছু বলেছেতাইতো আমার নুবুয়তের পক্ষে দলিল ।
এমন আশ্চর্যজনক তথ্যপ্রদানের অবস্থহচ্ছে সিদ্দিক-ই-আকবরের স্তম্ভিত ! তিনি শতভাগ নিশ্চিত হলেনযে , এই অদৃশ্যজ্ঞানের সংবাদদাতা (নবী) কষ্মিণকালেও মিথ্যুক হতে পরেন না ।
তিনিই মহান আল্লাহর সত্য নবী । সন্দেহাতিত ভাবে তাঁরনবুয়ত প্রমানিত ।
তদ্রুপ হযরত আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কথা শোনা যাক । বদরের যুদ্ধের বন্দিদের কে মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ হলে অন্য বন্দীরা যথারীতি মুক্তিপণ আদায়ে ব্যস্ত । এ দিকে চাচা হযরতআব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও ঐ যুদ্ধবন্দীদের একজন । তিনি ভাতিজার কাছেএসে আবেদন করলেনবাবা ! আমি তো গরিব মানুষ ! মুক্তিপন দেয়ার মত আমারকাছে কোন সম্পদনেই ।উত্তরে নবী করীম বললেন " কেন চাচা ! আপনি যুদ্ধে আসার পুর্বে আমারচাচীর কাছে যে স্বর্নালন্কার লুকিয়ে রেখেএসেছেন সে গুলোকোথায় ? হযরত আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহূর সে গোপন সংবাদ তো দুনিয়ার বুকে অন্যকেউ জানার কথা নয় ! কিন্তূ তাঁর ভাতিজা কিভাবে সুস্পস্টভাবে বলে দিলেন । তা রীতিমত বিষ্ময়ের ! না! এ ধরনের অদৃশ্য সংবাদদাতা কোনদিন মিথ্যুক হতে পারেন না । তাঁর কপালওচমকে উঠল । নবীজীর হাতে নিজেকে সঁ'পে দিয়েবলে উঠলেন হে আল্লাহর রাসুল ! আমাকেইসলামের কালেমা শরীফপড়িয়ে মুসলমান বানীয়ে দিন । আমি এতদিন ছিলাম গভীরঅন্ধকারে নিমজ্জিত। এবার আলোতে আসতে চাই । নবীজি তাঁকেকালেমা পড়িয়ে নিজ হাতে বায়াত করে মুসলমান বানালেন । এ ভাবে একজনজাহান্নামী মুহুর্তে বেহেশতী হয়ে গেলেন । শুধুকি তাই ? নবীরপরশে শ্রেষ্ট সোনারমানুষে রুপান্তরিত হলেন ।
এ ভাবে হাজারো দৃষ্টান্ত রয়েছে যদ্বারা স্পস্ট প্রমাণিত হয় -মহান আল্লাহ তাঁরপ্রিয় হাবীব কে ইলমে গায়েব দান করেছেন ।
এখন আরো কয়েকটি সহিহ হাদীসের উদ্ধৃতি পেশ করব যাতেসহীহ হাদীস ছাড়াঅন্য কিছূ মানিনা বলে যারা গলারপানি শুকিয়ে ফেলেতারা বিষয়েটি শজে বুঝতে পেরে হিদায়াত লাভ করে ।
হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুহতে বর্ণিত , তিনিবলেন একদা হুজুরনবী করীম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামআমাদের সামনে দন্ডায়মান হলেন অতঃপর সৃষ্টিজগতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তথা বেহেশত বাসীরা বেহেশতে এবং দোযখনাসীরা দোযখে প্রবেশ করা পর্যন্ত সবকিছু আমাদের সামনে বলে দিলেন । আমাদের মধ্যে যারা মুখস্ত রাখতে পেরেছে তারামুখস্ত রেখেছে ; আর যারা ভুলে যাবারতারা ভুলে গেছে।
[ বুখারী : হাদীস নং ৩০২০ : কিতাবু বাডয়িল খালক্ব ]
হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু আনহুহতে বর্নিত । তিনি বলেন রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সামনেএক জায়গায় দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করলেন- সে দিন থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যা কিছুঘটবে টার কোন বিষয়েই তাঁর বক্তব্যে বাদ দেননি । শ্রোতাদের মধ্যে যে মুখস্থ রাখার সে মুখস্ত রেখেছে আর যে ভুলে যাবাসে ভুলে গেছে।
( বুখারী শরীফ হাদীসনং ৬২৩০ কিতাবুল কদর । মুসলিম শরীফ হা:নং২৮৯১ কিতাবুল ফিতন )
হযরত আনাস বিন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আহু হতে াপর এক হাদীসশরিফে দেখা যায় । তিনি বলেনএকদা নবীপাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝেতাশরীফ আনলেন তখন সয়র্য পশ্চিমাকাশে দিকে ঝুঁকে পড়েছিল ( অর্থাৎ যোহরের নামাযের সময় হয়ে গিয়েছিল ) অতঃপরনবী করীম যোহরের মানায পড়লেন আর সালাম ফিরানোর পর মিম্বরে আরোহন করে ক্বিয়ামতের আলোচনা রাখলেন এবং ক্বিয়ামতের পুর্বেকার কতিপয়বড় বড় ঘটনাবর্ননা দিলেন আর উপস্থিত সাহাবিদেরকে সম্বোধন করে বললেন , খোদার কসম তোমরা আমার কাছেযা কিছু জানতেচাইবে আমি এই মজলিসেই সব প্রশ্নের উত্তর দেব ।
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুবলেন হুজুরের বানীরএমন দৃঢ়তা দেখেআনসারী সাহাবাদের মধ্যে আনন্দের কান্নার রোল বয়ে গেলো । আর নবীপাক বারবার বলে যাচ্ছেন - তোমরাআমাকে প্রশ্ন কর , প্রশ্ন কর । অতঃপর এক ব্যক্তি দাড়িয়ে প্রশ্ন করল- হে আল্লাহর রাসুল! পরকালে আমার ঠিকানা কোথায় হবে ? নবীপাকে বললেন জাহান্নাম । অথপর আবদুল্লাহ ইবনে হুযাফা বললেন -ইয়া রাসুল লাল্লাহ ! আমারপিতা কে ? নবী করীম বললেন - তোমারপিতা হুযাফা । নবীপাক আবার ও জোর তাগিদ দিয়েবললেন , তোমরা প্রশ্ন কর , প্রশ্ন কর ।
অথপর ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুনবী করীম বরাবরসামনে গিয়ে বসলেনআর বললেন -আমরাসন্তস্ট আল্লাহ কে রব হিসাবে পেয়ে, ইসলাম কে ড্বীনহিসাবে আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে রাসুলহিসেবে পেয়ে । তিনি এসব কথা বলার সময় নবী করীম চুপ রইলেন। অতঃপর বললেন-সেই সত্তার কসম! যার হাতে আমারপ্রান , আমার এ দেয়ালের সামনে এই মাত্র বেহেসত ও দোযখ হাজির করা হয়েছে , যখন আমি নামায পড়ছিলাম , আজকেরমত কোন ভাল-মন্দকেও দেখিনি ।
(সুত্র বুখারী শরীফহাদীস নং৬৮৬৪ কিতাবুল ই'তিসাম , বিল কিতাবে ওয়াস সুন্নাহ :, মুসলিম শরীফ হাদিস নং ২৩৫৯ )
এ ভাবে অসংখ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় রাসুলে আকরমসাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া ষাল্লাম ইলমে গায়েবের অধিকারী ছিলেন । অবশ্যই তা আল্লাহ প্রদত্ত ।
আর সত্তাগত আলিমুল গায়েব হলেন একমাত্র আল্লাহ । আর আল্লাহর রাসুলের ইলমেগায়েব আল্লাহ্ প্রদত্ত । যেমনএ পসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে-
'' মা কানাল্লাহু লি উতলিয়াকুম আলাল গাইবেওয়া কিন নাল্লাহা ইজতাবিয়ু মির রুসুলিহু মাইয়া সায়ু ''
অর্থাৎ হে সাধারাণ লোকগন ! আল্লাহ তা'আলার শান নয় যে , তিনি তোমাদেরকে ইলমে গায়েব দান করবেন , তবে হ্যাঁ রাসুলগনের মধ্য হতে তিনি যাকে চান তাকে অদৃশ্যজ্ঞানের জন্য মনোনীত করেন ।( সুরা আলইমরান ১৭৯)
রসুলগণের মধ্য হতে যদি আল্লাহ পাক কাউকে নির্বাচিত করেন। তাহলে সর্বপ্রথমে কাকে নির্বাচিত করবেন টা সহজেই অনুমেয় ।
আরেক জায়গায় ইরশাদহয়েছে ;
তিনি স্বীয়গায়েবের বিষয়ে কাউকেক্ষমতাবান করেন না । কিন্তূ রাসুলদের মধ্য যার উপর তিনি সন্তষ্ট হন ( তাকেই ক্ষমতা বান করেন )
(সুরা জিন- আয়াত২৬-২৭ )
আল্লাহ তায়ালা ইরশদকরেছেন ' আল্লামাকা মা লাম তাকুন তা'আলাম" আর্থাৎ ' তিনি আপনাকে এমন জিনিস শিক্ষা দিয়েছেন যা আপনিজানতেন না "
( সুরা নিসা আয়াত১১৩)
এ আয়াতে ব্যাখা করতে গিয়ে প্রসিদ্ধ গ্রন্থ জালালাইন শরীফে বলা হয়েছে " আউযয়ু মিনাল আহকামে ওয়ালগাইব '' অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুলসাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহিস সালাম কে শরীয়তের যাবতিয় হূকুম ও গায়েব সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছেন ।
উপরে বর্নিত আয়াতএবনহ জালালাইন শরীফের ব্যাখ্যা দ্বারা বুঝাগেল
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনন তানন হাবীব সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামকে ইলমে গায়েবজানাইয়াছেন । তাই আমরা বলি রাসুলসাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম ইলমেগায়েব জানেন । অসংখ্য হাদিসে মাধ্যমে জানা যায় যে রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামস্পস্ট বলে দিয়েছেন -কে কখন মৃত্যুবরন করবে ? কোন জায়গায় কে মারা যাবেএবং কার গর্ভেছেলে সন্তান অথবামেয়ে সন্তান রয়েছেইত্যাদি।
যদি রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামএ সব বিষয়েগয়েব না জানতেন , তাহলে সম্স্ত গয়েবের সংবাদকি ভাবে দিলেন?
তাফসীরে সাভার ৪র্থখন্ডে ২৭৫ পৃষ্টা রয়েছে
"ইনণাহু সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামলাম ইয়াখ রুজুমিনাদ দুনিয়া হাত্বা আ'লামাহু ল্লাহু বি জামইহি মুগিবাতিদ দুনিয়া ওয়ালআখেরাহ "
অর্থাৎ আল্লাহর দুনিয়া এবং আখেরাতের সমস্ত গায়েব না জানানো পর্যন্ত রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামদুনিয়া থেকে ইনতেকাল করেন নি ।
তাফসিরে খায়েন ৪র্থপারায় রয়েছে ;
" মা কানা ল্লাহু লি ইয়াজ রাল মুক মিনিনা আলা মা ানতুম আলাইকুম "
উক্ত আয়াতের ব্যখ্যাু উল্লেখ করা হয়েছে- রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামএরশাদ করেন , আমারকাছে আমর উম্মতকে তাদের নিজ নিজ মাটীর আকৃতিতে পেশ করা হয়েছে যেমনভাবে আদম আলািহিস সালাম এর কাছেপেশ করা হয়েছিল । আমাকে জানানো হয়েছে , কে আমার উপর ঈমান আনবে? কে আমাকে অস্বিকার করবে ? যখন এ খবর মুনাফিকদের কাছে পোছলো তখন তারাঠাট্টা করে বললো-কে তাঁর উপর ঈমান আনবে আর কে তাকে অস্বিকার করবে তাদের কে তাদের জন্মের পুর্বেই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালামজানতেন বলে বলেন। অথচ আমরাতাঁর সাথেই আছি- কিন্তু আমাদেরকে চিন্তে পারেন নি । এ খবর যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম-এর নিকট পৌছলো। তখন তিনিমিম্বরের উপরে দাড়ালেন এবং আল্লাহর প্রসংসা করে ইরশাদ করলেন
(" কালা মা বালআকওয়ামে তায়ানু ফি ইলমিলা তাসআলু নি আন শাঈন ফিমাবাইনাকুম ওয়া বাইনাস সাআতি ইল্লা আনবাইতুকুম বিহ্")
অর্থাৎ " এসব লোকেদের ( মুনাফিকদের) কি যে হলো আমার জ্ঞান নি্যেতারা বিরূপ সমালোচনা করছে । তোমরাএখন থেকে কেয়ামত পর্যন্ত যে কোন বিষয় সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞাসা করো আমি াবশ্যই উহা তোমাদের কে বলে দিবো"
(তাফসীরে খয়েন )
বুখারী শরীফের ' বাদ্য়ু খালকে" শীর্ষক আলোচনায় ও মিশকাত শরীফের বাদয়ুখলকে ওয়া জিকরুল আমবিয়া শীর্ষক াধ্যায়ে হযরত উমর ফারূকরাদ্বিয়াল্লাহু আনহূ থেকেবর্নিত অর্থাৎ হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুবলেন -- " রাসুল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আনহু এক জায়গায় আমাদের সাথে অবস্থান করছিলেন । সে খানে তিনি আমাদের সৃষ্টির সুচনা তজেকেসংবাদ দিচ্ছিলেন - এমন কি বেহেস্তবাসী দোযখবাসী নিজ নিজ ঠিকানায় যাওয়ার াবধি পরিব্যাপ্ত যাবতিয় আবস্থা ও ঘটনাবলী প্ড়দান করেন,যিনি ওসব স্মরণরাখতে পেরেছেন তিনিতো স্মরণ রেখেছেন ; আর যিনি রাখতে পারেননি তিনি ভুলেগেছেন । ( মেশকাত শরীফ ৫০৬)
মেশকাত শরিফের আল-ফিতনা অধ্যায়ে বুখারী ও মুসলিম শরীফবরাত দিয়ে হযরতহুয়াইফা রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্নিত হয়েছে
অনুবাদ : রাসুল সাল্লাল্লাহু তাআলাআলাইহিস সালাম সে স্থানে কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবেসব কিছুর খবর দিয়েছেন । কোন কিছুই বাদ দেন নাই । যারামনে রাখার তারামনে রেখেছেন, আর যারা ভুলে যাওয়ার তারা ভুলে গেছেন।( মিশকাত)
এ সমস্ত হাদীসশরীফের মাধ্যমে জানাগেল রাসুল সাল্লাল্লাহু তাআলাআলাইহিস সালাম সৃষ্তির শুরু থেকে কেয়ামত পর্যন্ত যা কিছুঘটবে উহা জানতেন এবং উহার সংবাদসাহাবাদের দিয়েছেন ।
মুলত গবেষণা করলেদেখা যায় , নবীজীর বরকতময় জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে রয়েছে বিশ্বমানবতার জণয় শিক্ষনীয় বিষয় । আর অধিকাংশ গুরুত্বপুর্ণ মর্মসুচিতে দেখা যায় , ইলমেগায়েবের প্রভাব । পবিত্র ক্বোরআন-হাদীসের আলোতে সংক্ষেপে এতটুকু আলোচনা করলাম ।
আল্লাহ আমাদের উক্তআলোচনা থেকে প্রকৃত ইলম জানার ও বোঝার তৌফিক দান করূন - আ-মিন ।
( বিস্তারিত জানার জন্যদেখতে পারেন হা-আল-হক্ব : প্রথমখন্ড )