ওয়ায়িল ইবন হুজর(রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর "হাত বাধা" সম্পর্কিত হাদীসটির বিভিন্ন সুত্র নিম্নরুপ, কিন্তু এগুলোরে ""বুকের উপর হাত রাখার"" বর্ননাটি সম্পুর্ন অনুপস্থিত :



সৌদি আরবের প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস শাইখ মুকবিল ইবন হাদী আল-ওয়াদায়ীর উপস্থাপনায় শাইখ খালীদ ইবন আব্দুল্লাহ আশ-শায়ি’ ‘আল-ইলাম বি তাখয়ীরিল মুসাল্লী বিমকানি ওয়াদয়িল ইয়াদাইনি বা’দা তাকবীরাতিল ইহরাম’(তাকবীর তাহরীমার পরে হস্তদ্বয়ের অবস্থান মুসল্লীর ইচ্ছাধীন হওয়া অবগতকরন) নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাদের গবেষণায় ওয়ায়িল ইবন হুজর(রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর হাদীসটির বিভিন্ন সুত্র নিম্নরুপঃ

(১) মুসনাদে আহমাদ (৪/৩১৮) আব্দুস সামাদ, যায়েদা থেকে।
(২) মুসনাদে আহমাদ (৪/৩১৮) ইউনূস ইবন মুহাম্মাদ, আব্দুল ওয়াহিদ থেকে।
(৩) মুসনাদে আহমাদ (৪/৩১৮) আব্দুল্লাহ ইবন ওয়ালীদ, সুফিয়ান থেকে।
(৪) মুসনাদে আহমাদ (৪/৩১৮) আসওয়াদ ইবন আমির, যুহাইর থেকে।
(৫) মুসনাদে আহমাদ (৪/৩১৯) আসওয়াদ ইবন আমির, শু’বা থেকে।
(৬) সুনানে আবু দাউদ (৭২৬ নং) মুসাদ্দাদ, বিশর ইবনুল মুফাদ্দাল থেকে।
(৭) সুনানে আবু দাউদ (৭২৭ নং) হাসান ইবন আলী, আবুল ওয়ালীদ, যায়েদা থেকে।
(৮) সুনানে ইবন মাজাহ (৮১০ নং) আলী ইবন মুহাম্মাদ, আব্দুল্লাহ ইবন ইদরীস ও বিশর ইবনুল মুফাদ্দাল থেকে।
(৯) সুনানে নাসাঈ (৮৮৯ নং) সুওয়াইদ ইবন নাসর, ইবনুল মুবারাক, যায়েদা থেকে।
(১০) সহীহ ইবন খুযাইমা (৪৭৭ নং) আব্দুল্লাহ ইবন সাঈদ, ইবন ইদরীস থেকে।
(১১) সহীহ ইবন খুযাইমা (৪৭৮ নং) হারুন ইবন ইসহাক, ইবন ফুদাইল থেকে।

উপরের ১১টি সনদে হাদীসটি(ওয়ায়িল ইবন হুজরের হাদীস) বর্ণিত হয়েছে আসিম ইবন কুলাইব থেকে, তার পিতা থেকে, ওয়ায়িল ইবন হুজর থেকে। এগুলোতে যায়েদাহ, সুফিয়ান, শু’বা, আব্দুল ওয়াহিদ, ইবন ইদরীস কূফী, বিশর ইবনুল মুফাদ্দাল, যুহাইর ইবন মুআবিয়া, ইবন ফুদাইলঃ এ আট জন নির্ভরযোগ্য রাবী হাদীসটি আসিম ইবন কুলাইব থেকে বর্ণনা করেছেন। তারা ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা বা ধরার কথা বলেছেন কিন্তু ★★★ কেউই ‘বুকের উপর’ কথাটি বলেন নি।

(১২) সহীহ মুসলিম (১/৩০১) যুহাইর, আফফান, হাম্মাম, মুহাম্মাদ ইবন জুহাদাহ থেকে
(১৩) মুসনাদে আহমাদ (৪/৩১৬) ওকী, মাসঊদী, আব্দুল জাব্বার ইবন ওয়ায়িল, পরিবারের লোকজন থেকে ওয়ায়িল থেকে
(১৪) মুসনাদে আহমাদ (৪/৩১৭) আফফান, হাম্মাম, মুহাম্মাদ ইবন জুহাদাহ, আব্দুল জাব্বার, আলকামা ও মাওলা থেকে ওয়ায়িল থেকে
(১৫) মুসনাদে আহমাদ (৪/৩১৮) ইয়াহইয়া ইবন আবী বুকাইর, যুহাইর, আবূ ইসহাক, আব্দুল জাব্বার থেকে উপরের সনদে
(১৬) মুসনাদে আহমাদ (৪/৩১৮) হাসান ইবন মূসা, যুহাইর, আবূ ইসহাক, আব্দুল জাব্বার ইবন ওয়ায়িল থেকে …
(১৭) সুনানে দারিমী (১/২৮৩) আবূ নুআইম, যুহাইর, আবূ ইসহাক আব্দুল জাব্বার ইবন ওয়ায়িল থেকে …
(১৮) মুসনাদে আহমাদ (৪/৩১৬) মুহাম্মাদ ইবন জা’ফার, শু’বা, সালামাহ ইবন কুহাইল, হাজর ইবন আবিল আনবাস, আলকামা থেকে …
(১৯) মুসনাদে আহমাদ (৪/৩১৬) ওকী, মূসা ইবন উমাইর, আলকামা থেকে …।

★★★ এদের কারো বর্ণনাতেই ‘বুকের উপর’ কথাটি নেই।

অর্থাৎ, সুফিয়ান সাওরী, আব্দুল ওয়াহীদ ইবন যিয়াদ, শু’বা, যুহাইর, যায়েদা ইবন কুদামা, বিশর ইবনুল মুফাদ্দাল, আব্দুল্লাহ ইবন ইদরীস ও মুহাম্মাদ ইবনুল ফুদাইলঃ আট জন আসিম ইবন কুলাইবের সুত্রে বর্ণনা করেছেন। আর মুহাম্মাদ ইবন জুহাদাহ, আবূ ইসহাক ও মাসঊদীঃ তিন জন আব্দুল জাব্বার ইবন ওয়ায়িল থেকে বর্ণনা করেছেন। আর হাজর ইবন আবিল আনবাস ও মুসা ইবন উমাইর দুজন আলকামা থেকে বর্ণনা করেছেন।

★ মোট ১৩ জন রাবী (তাদের অধিকাংশই প্রসিদ্ধ হাদীসের ইমাম) তারা কেউ ‘বুকের উপর’ কথাটি উল্লেখ করেন নি।
★ শুধু মুআম্মাল ইবন ইসমাঈল এর বর্ণনাতেই ‘বুকের উপর’ কথাটি রয়েছে। মুআম্মাল দুর্বল হওয়ার কারনে তার হাদীস দুর্বল। উপরন্তু সকল নির্ভরযোগ্য রাবীর বিপরীত বর্ণনা হওয়ার কারনে তা ‘মুনকার’ অর্থাৎ, অত্যন্ত দুর্বল বা আপত্তিকর।

★ ইরাকের প্রসিদ্ধ হাদীস গবেষক ড. মাহির ইয়াসীন বলেন যে, মুআম্মাল ইবন ইসমাঈল এ হাদীসটি(আলোচ্য ‘খ’ নং হাদীসটি) ইমাম সুফিয়ান সাওরী থেকে বর্ণনা করেছেন। অথচ সুফিয়ান সাওরী সালাতে হস্তদ্বয় নাভীর নিচে রাখতে বলেছেন। এতে প্রমান হয় যে, ‘বুকের উপর’ কথাটি সুফিয়ান সাওরী বর্ণনা করেন নি; বরং মুআম্মাল ভুলে কথাটি সংযোজন করেছেন। কারন সুফিয়ান বর্ণিত হাদীসে ‘বুকের উপর’ কথাটি থাকলে তিনি তার বিপরীতে মত প্রকাশ করতেন না।[42]


অর্থাৎ, ইবন খুযাইমাতে বর্ণিত উপরোক্ত ‘বুকে’ হাত বাধার হাদীস অত্যন্ত দুর্বল, যা মোটেও দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়।



(গ) ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল বলেনঃ

“আমাদেরকে ইয়াহইয়া ইবন সাঈদ বলেন, তিনি সুফিয়ান থেকে, তিনি বলেন, আমাদেরকে সিমাক ইবন হারব বলেন, তিনি কাবীসাহ ইবন হুলব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি বলেন, আমি নাবীউল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখলাম…, তিনি এটিকে(হস্তদ্বয়কে) বুকের উপর রাখলেন। ইয়াহইয়া ইবন সাঈদ ব্যাখ্যা করে দেখানঃ ডান হাতকে বাম হাতের উপর, কব্জির উপর।”[43]

উপরোক্ত হাদীসের সমস্যা মূলত তিনটি, যথাঃ

(১) হাদীসের সনদে থাকা একজন রাবী ‘কাবীসাহ ইবন হুলব’ অজ্ঞাত পরিচয়।
(২) হাদীসটি ‘শাযয’ [44]।
(৩) হাদীসটি মুদাল্লাস।

হাদীসটির প্রথম সমস্যা হলো ‘কাবীসাহ ইবন হুলব’। সিমাক ছাড়া কেউ তার কাছ থেকে হাদীস বর্ণনা করেন নি, আর ইমাম ইবনুল মাদীনী এবং ইমাম নাসায়ী ‘কাবীসাহ ইবন হুলব’কে ‘মাজহূল’ বা অজ্ঞাত পরিচয়[45] বলেছেন। হাফিয ইবন হাজার তাকবীরে তাকে ‘মাকবূল’ বলেছেন।
হাদীসটির দ্বিতীয় সমস্যা হচ্ছে হাদীসটি ‘শাযয’। মুহাদ্দিসগন একমত যে, ‘শাযয’ হাদীস অত্যন্ত দুর্বল এবং অগ্রহণযোগ্য। উপরোক্ত হাদীসের এক বর্ণনায়[46] ‘বুকের উপর’ কথাটি নেই আর উপরোক্ত বর্ণনায় তা আছে। শাইখ মুকবিল এবং শাইখ খালিদ ‘আল-ই’লাম’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছন যে, হাদীসটির উপরোক্ত বর্ণনাটি ‘শাযয’। কারন এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ইয়াহইয়া আল-কাত্তান সুফিয়ান থেকে, সিমাক থেকে কাবীসাহ থেকে…। এ বর্ণনায় ‘বুকের উপর রাখলেন’ কথাটি রয়েছে। এ হাদীসটি ইয়াহইয়া ছাড়াও নিম্নের কয়েকজন প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস ‘সুফিয়ান সাওরী’ থেকে বর্ণনা করেছেনঃ

(১) ওয়াকী ইবনুল জাররাহ(মৃঃ ১৯৬ হিজরী), তিনি ইলমুল হাদীসের প্রসিদ্ধ ইমাম ও হাফিযুল হাদীস। ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল তার মুসনাদে(৫/২৬৬) হাদীসটি আবূ বকর ইবন আবী শাইবা থেকে, ওয়াকী থেকে সুফিয়ান থেকে … সংকলন করেছেন।

(২) আব্দুর রহমান ইবন মাহদী(মৃঃ ১৯৮ হিজরী), তিনি ইলমুল হাদীসের প্রসিদ্ধতম ইমাম ও হাফিযুল হাদীস। দারাকুতনী তার সুনান গ্রন্থে(১/২৮৫) হাদীসটি আব্দুর রহমান ইবন মাহদী থেকে সুফিয়ান থেকে সংকলন করেছেন।

(৩) আব্দুর রাযযাক ইবন হাম্মাম সানআনী (মৃঃ ২১১ হিজরী), তিনি ইলমুল হাদীসের প্রসিদ্ধ ইমাম ও হাফিযুল হাদীস। তিনি তার মুসান্নাফ গ্রন্থে(১/২৮৫) সুফিয়ান সাওরী থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

(৪) হুসাইন ইবন হাফস ইবনুল ফাদল হামদানী (মৃঃ ২১০ হিজরী), তিনি ইসপাহানের প্রসিদ্ধ কাযী ও মুফতী ছিলেন। ইমাম মুসলিম তার বর্ণনা গ্রহন করেছেন। ইবন হাজার আসকালানী তাকে ‘সত্যপরায়ণ’ বলেছেন। বাইহাকী তার সুনান গ্রন্থে(২/২৯৫) হুসাইন ইবন হাফস ইবনুল ফাদল হামদানী থেকে সুফিয়ান সাওরী থেকে… হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

(৫) মুহাম্মাদ ইবন কাসীর আল-আবদী (মৃঃ ২৩৩ হিজরী), তিনি ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম স্বীকৃত সিকাহ বা নির্ভরযোগ্য রাবী। ইবন কানি ‘‘মু’জামুস সাহাবা’ গ্রন্থে(৫/১৬৩) এবং আবূ নুআইম ইসপাহানী ‘‘মা’রিফাতুস সাহাবা’ গ্রন্থে(৫/১৬৩) মুহাম্মাদ ইবন কাসীর আল-আবদী থেকে সুফিয়ান সাওরী থেকে হাদীসটি সংকলন করেছেন।

★ তারা কেউই ‘বুকের উপর রাখলেন’- এই অতিরিক্ত কথাটুকু বর্ণনা করেন নি। শুধু তাই নয়; ইয়াহয়া এবং উপরের সকল রাবীর উস্তাদ সুফিয়ান সাওরী ছাড়া অন্যান্য যে সকল রাবী এ হাদীসটি সিমাক ইবন হারব থেকে বর্ণনা করেছেন তারাও এই অতিরিক্ত কথাটুকু(‘বুকের উপর রাখলেন’ কথাটি) বলেন নিঃ


(১) শারীক, সিমাক থেকেঃ মুসনাদে আহমাদ ৫/২২৬
(২) শু’বা, সিমাক থেকেঃ মুসনাদে আহমাদ ৫/২২৬, সুনানে আবু দাউদ ১/২৭৩
(৩) আবুল আহওয়াস, সিমাক থেকেঃ মুসনাদে আহমাদ ৫/২২৬
(৪) যায়েদা, সিমাক থেকেঃ মুসনাদে আহমাদ ৫/২২৭
(৫) আবসাত ইবন নাসর, সিমাক থেকেঃ তাবারানী, কাবীর ২২/১৬৪
(৬) হাফস ইবন জামী, সিমাক থেকেঃ তাবারানী, কাবীর ২২/১৬৫
(৭) যাকারিয়া ইবন আবী যায়েদা, সিমাক থেকেঃ তাবারানী, কাবীর ২২/১৬৭
(৮) ইসরাঈল, সিমাক থেকেঃ ইবন কানি, মু’জামুস সাহাবাহ ৩/১৯৮
(৯) কাইস ইবন রাবী, সিমাক থেকেঃ ইবন কানি, মু’জামুস সাহাবাহ ৩/১৯৯

★ এরা সকলেই(উপরের ৯ জন) সিমাক থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন কিন্তু তাদের কেউই ‘বুকের উপর’ কথাটি বর্ণনা করেন নি। এতে প্রমান হয় যে, এ হাদীসে ‘বুকের উপর রাখলেন’ কথাটি সিমাক বলেন নি।
তার নয় জন ছাত্রের কেউই তা(‘বুকের উপর রাখলেন’ কথাটি) বর্ণনা করেন নি।

★ দশম ছাত্র সুফিয়ান সাওরীর কোনো ছাত্রই তা বলেন নি।

★ শুধু ইয়াহইয়া ইবন সাঈদ তা বলেছেন।

→ ইয়াহইয়া ইবন সাঈদ আল-কাত্তান (মৃঃ ১৯৮ হিজরী), :

তিনি ইলমুল হাদীসের সুপ্রসিদ্ধ ইমাম। তবে তিনি এ হাদীসটির বর্ণনায়

* ইমাম ওয়াকী,
* ইবন মাহদী,
* ইমাম আব্দুর রাযযাক ও অন্যান্য প্রসিদ্ধ ইমাম ও নির্ভরযোগ্য রাবীদের বিপরীত বর্ণনা করেছেন; ফলে তার বর্ণনাটি ‘শাযয’ বলে গণ্য।

★ সর্বোপরি ইয়াহইয়া ইবন সাঈদ হাদীসটি সুফিয়ান সাওরীর সুত্রে বললেন; অথচ আমরা দেখেছি যে, সুফিয়ান সাওরীর মত ছিল সালাতে নাভীর নিচে হাত রাখা।



এতে প্রমান হয় যে, ‘বুকের উপর’ কথাটি সুফিয়ান সাওরীর বর্ণনায় ছিল না; ইয়াহইয়া ইবন সাঈদ ভুল করে তা সংযোজন করেছেন।


শাইখ মুকবিল এবং শাইখ ওয়ালিদের মতে ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল এ কারনের এ হাদীস গ্রহন করেন নি। তিনি(ইমাম আহমাদ) নিজেই হাদীসটি সংকলন করেছেন(তার মুসনাদ গ্রন্থে), তা সত্ত্বেও তিনি নিজেই সালাতে হস্তদ্বয় বুকে রাখা মাকরুহ বলে সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করেছেন।

প্রসিদ্ধ হাম্বলী ফকীহ মুহাম্মাদ ইবন মুফলিহ (মৃঃ ৭৬৩ হিজরী) বলেনঃ

“হস্তদ্বয় বুকের উপর রাখা মাকরুহ। তিনি(ইমাম আহমাদ) সুস্পষ্টভাবে এ কথা বলেছেন, যদিও আহমাদ নিজেই এ হাদীস সংকলন করেছেন।”[47]

ইমাম আবু দাউদ ইমাম আহমাদের বিভিন্ন ফিকহী মত নিজে তার কাছ থেকে শুনে গ্রন্থাকারে লিপিবদ্ধ করেন। উক্ত গ্রন্থে বুকে হাত রাখা সম্পর্কে ইমাম আহমাদের মত প্রসঙ্গে ইমাম আবু দাউদ বলেনঃ

“আমি তাকে(ইমাম আহমাদ) বলতে শুনেছি, হস্তদ্বয় বুকের নিকট রাখা মাকরুহ[48]।”[49]

★ হাদীসটির তৃতীয় সমস্যা হচ্ছে হাদীসটি ‘তাদলীস’। তাদলীস-কারী (মুদাল্লিস) রাবী তার কোনো উস্তাদের হাদীস সরাসরি তার থেকে না শুনে তার কোনো দুর্বল ছাত্রের মাধ্যমে শুনলে ছাত্রের নাম উল্লেখ না করে তার উস্তাদের নাম উল্লেখ করেন। এজন্য মুদাল্লিস রাবী ‘আমি নিজে শুনেছি’ না বললে তার হাদীস দুর্বল বলে গণ্য। কাবীসাহ ‘মুদাল্লিস’ রাবী। তিনি তার পিতা থেকে হাদীসটি শুনেছেন বলে জানান নি, শুধু বলেছেনঃ “পিতা থেকে”। এজন্য হাদীসটি ‘মুদাল্লাস’। শাইখ খালিদ শায়ি বলেন, এ অতিরিক্ত কথাটুকুর(‘বুকের উপর রাখলেন’) কারনের ইমাম তিরমিযী এটিকে গ্রহন করেন নি। তিনি(ইমাম তিরমিযী) কাবীসার যেই বর্ণনাটি ‘হাসান’ বলেছেন সেটিতে এ অতিরিক্ত কথা নেই। কাজেই তিরমিযীর বর্ণনাকে হাসান বলার কারনে এ বর্ণনাকে(‘বুকের উপর রাখলেন’ কথা যুক্ত বর্ণনাকে) হাসান বলার সুযোগ নেই। শাইখ খালিদ শায়ি বলেনঃ
“আল্লামা আলবানী(শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী)(রাহিমাহুল্লাহ) সিফাতুস সালাত (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নামায) গ্রন্থে বলেছেনঃ ‘তিরমিযী কাবীসা বর্ণিত কোনো কোনো সনদকে হাসান বলেছেন।’ আল্লামা আলবানীর(রাহিমাহুল্লাহ) এ কথাটি সঠিক নয়, বরং এটি তার অসতর্কতা। কারন ‘বুকের উপর’- এ অতিরিক্ত কথাটুকু যে বর্ণনায় নেই তিরমিযী(রাহিমাহুল্লাহ) শুধু সে বর্ণনাকেই হাসান বলেছেন। অতিরিক্ত কথাটুকু-সহ বর্ণনাটি তিরমিযী গ্রহন করেন নি। কাজেই তিরমিযীর মত দ্বারা এ অতিরিক্ত কথাটুকুর হাসান হওয়া সমর্থন করা সঠিক নয়।”[50]

অর্থাৎ, কাবীসাহ বর্ণিত ‘বুকে হাত রাখা’ সম্পর্কিত হাদীসটি অত্যন্ত দুর্বল তাই দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়।



(ঘ) ইমাম আবু দাউদ বলেনঃ


“আমাদেরকে আবূ তাওবা বলেছেন, আমাদেরকে হাইসাম ইবন হুমাইদ বলেছেন, আমাদেরকে সাওর বলেছেন, তিনি সুলাইমান ইবন মূসা থেকে, তিনি তাউস থেকে[51], তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতের মধ্যে থাকা অবস্থায় তার ডান হাতকে তার বাম হাতের উপর রাখতেন, অতঃপর উভয়কে বুকের উপর চেপে ধরতেন।”[52]
উপরোক্ত হাদীসটিতে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, তাবিয়ী তাউস সরাসরি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন কোনো সাহাবীর নাম উল্লেখ না করে, আমরা জানি তাবিয়ীগন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখেননি। তাই এই হাদীসটি ‘মুরসাল’[53]। আর হাদীসতাত্ত্বিকভাবে ‘মুরসাল’ হাদীস দুর্বল বলে গণ্য। হাদীসটির সনদের পর্যালোচনাঃ

(ক) হাদীসের প্রথম রাবীঃ আবূ তাওবা রাবী ইবন নাফি(মৃঃ ২৪১ হিজরী), তিনি ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম স্বীকৃত নির্ভরযোগ্য রাবী।
(খ) হাদীসের দ্বিতীয় রাবীঃ হাইসাম ইবন হুমাইদ, তাকে কিছু মুহাদ্দিস দুর্বল বলেছেন তার ‘কাদারিয়া’ মতের কারনে।
(গ) হাদীসের তৃতীয় রাবীঃ সাওর ইবন ইয়াযিদ, তিনি ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম স্বীকৃত নির্ভরযোগ্য রাবী।
(ঘ) হাদীসের চতুর্থ রাবীঃ সুলাইমান ইবন মূসা সত্যপরায়ণ রাবী। তবে মৃত্যুর অল্প আগে তার স্মৃতি বিলোপ ঘটে। ইমাম মুসলিম তার বর্ণনা গ্রহন করেছেন।
(ঙ) হাদীসের পঞ্চম রাবীঃ তাউস ইবন কাইসান(মৃঃ ১০৬ হিজরী) ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম স্বীকৃত সুপ্রসিদ্ধ নির্ভরযোগ্য তাবিয়ী।

এভাবে আমরা দেখেছি যে, হাইসাম ইবন হুমাইদ ছাড়া এ সনদের রাবীগন ইমাম মুসলিম শর্তানুসারে নির্ভরযোগ্য। হাইসাম ইবন হুমাইদ-কে কেউ কেউ কিছুটা দুর্বল বলে গণ্য করেছেন।
এছাড়াও হাদীসটি মুরসাল। তাউস তাবিয়ী। তিনি কার কাছ থেকে হাদীসটি শুনেছেন তা বলেন নি। মুরসাল হাদীস গ্রহনের বিষয়ে ফকীহগন মতভেদ করেছেন। হাদীসতাত্ত্বিকভাবে মুরসাল হাদীস দুর্বল বলে গণ্য।
শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী(রাহিমাহুল্লাহ) এ হাদীস সম্পর্কে বলেনঃ

“এ হাদীসটি মুরসাল হলেও তা সকলের নিকটই প্রমান হিসেবে স্বীকৃত। অধিকাংশ আলীম মুরসাল হাদীসকে প্রমান হিসেবে গ্রহন করেছেন। তাদের মতে তো এটি গ্রহণযোগ্য। আর যারা মুরসাল হাদীস অন্য বর্ণনা দ্বারা প্রমানিত না হলে গ্রহন করেন নি তাদের নিকটও এ মুরসাল হাদীসটি গ্রহণযোগ্য; কারন এ হাদীসটির দুটি প্রমান করেছেঃ

প্রথম প্রমান ওয়ায়িল ইবন হুজর(রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর হাদীস(‘খ’ নং হাদীস যা ইবন খুজাইমাও সংকলন করেছেন)…, বাইহাকী দুটি সনদে হাদীসটি সংকলন করেছেন। এর দুটি বর্ণনার একটি অন্যটির শক্তি বৃদ্ধি করে।
দ্বিতীয় প্রমাণ কাবীসাহ ইবন হুলব থেকে বর্ণিত(আলোচ্য ‘গ’ নং হাদীস)। এ তিনটি হাদীস প্রমাণ করে যে ‘বুকের উপর’ হস্তদ্বয় রাখাই সুন্নাত। এ তিনটি হাদীস যিনি একত্রে বিচার করবেন তিনি সন্দেহমুক্ত হবেন যে, এগুলো প্রমাণ হিসেবে পেশ করার যোগ্য। পক্ষান্তরে নাভীর নিচে হাত রাখার হাদীস সর্বসম্মতভাবে দুর্বল। নববী, যাইলাই ও অন্যান্য আলীম তা উল্লেখ করেছেন।”[54]


শাইখ মুকবিল ও শাইখ খালিদ শায়ি দ্বিবিদভাবে ভিন্নমত পোষণ করেছেনঃ

প্রথমতঃ এ হাদীসটি(‘ঘ’ নং তাউস এর মুরসাল হাদীসটি) মুরসাল হওয়া ছাড়াও এর অন্য দুর্বলতা যে, এর বর্ণনাকারী সুলাইমান ইবন মূসা এবং বিশেষত হাইসাম ইবন হুমাইদের বিষয়ে মুহাদ্দিসগনের আপত্তি রয়েছে। ইলমে হাদীসের ইমামগনদের বক্তব্য পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় যে, কোনো রাবীর বর্ণনা কিছু দুর্বলতা থাকলেই শুধু তারা তাকে ‘সিকাহ’ বা নির্ভরযোগ্য না বলে ‘সাদুক’ বা সত্যপরায়ন বলেছেন। এ সকল রাবীর বর্ণনা অন্যান্য রাবীদের বর্ণনার সাথে যাচাই করে গ্রহন করতে হয়। অন্য সকল রাবীর বিপরীতে শুধু তাদের বর্ণিত হাদীসকে প্রমাণ হিসেবে গ্রহন করা যায় না। যারা মুরসাল হাদীসকে এককভাবে প্রমাণ হিসেবে গ্রহন করেছেন এবং যারা অন্যান্য প্রমাণ সাপেক্ষ গ্রহন করেছেন সকলেই একমত যে, মুরসাল হাদীস তখনই প্রমাণ বা গ্রহণযোগ্য বলে গণ্য হয় যখন তার সনদ ‘তাবিয়ী’ পর্যন্ত ‘সহীহ’ হয়। এ হাদীসটিকে(আলোচ্য ‘ঘ’ নং তাউসের হাদীস) এ পর্যায়ের ‘সহীহ মুরসাল’ বলে গণ্য করা যায় না।

দ্বিতীয়তঃ অন্য যে দুটো হাদীসকে শাইখ আলবানী এ হাদীসের প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন সে হাদীসদুটোও ‘শাযয’ ও ‘মুদাল্লাস’ হওয়ার কারনে অত্যন্ত দুর্বল বলে গণ্য। এজন্য এদুটো হাদীস প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। এজন্য এ তিনটি হাদীস একত্রে গ্রহণযোগ্য বলে প্রমানিত হয় না।[55]

কেউ কেউ কিছু হাদীসের এ অংশ দ্বারাও ‘বুকে হাত রাখা’ প্রমাণ করতে চানঃ “তিনি(রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার ডান হাত তার বাম হাতের তালুর পিঠ, কব্জি ও বাহুর উপর রাখলেন।” শাইখ আলবানী হাদীসের এ অংশকে ‘বুকে হাত রাখার’ পক্ষে প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী বলেছেনঃ

“এ কথা জানতে হবে যেমন হাদীসে বলা হয়েছেঃ তিনি তার ডান হাত তার বাম হাতের তালুর পিঠ, কব্জি ও বাহুর উপর রাখলেন। এতে প্রমানিত হয় যে, তিনি হস্তদ্বয়কে তার বুকের উপর রেখেছিলেন।”[56]

প্রকৃতপক্ষে হাদীসের এ অংশটি শাইখ আলবানীর এ দাবীর পক্ষে নিশ্চিত প্রমান নয়। হাদীসের ঠিক এই একই অংশ দিয়ে ইমাম ইবনুল মুনযির নাভীর উপরে বা নিচে হাত রাখার কথা বলেছেন।
পূর্ববর্তী মুহাদ্দিসগন ‘ডান হাত’ বলতে হাতের ‘করতল’ বুঝেছেন। আর ডান হাতের করতলকে বাম হাতের পাতা ও কব্জিসহ বাহুর কিয়দাংশের উপর রাখলে হস্তদ্বয় বুকের উপর থেকে শুরু করে নাভীর নিচে পর্যন্ত রাখা সম্ভব।[57]






রেফারেন্স সমুহ :





[42] . ড. মাহির ইয়াসীন, আসার ইলালিল হাদীস ফী ইখতিলাফিল ফুকাহা, ৬/৬৮। আরো দেখুনঃ ইমাম নববী, আল-মাজমূ, ৩/৩১৩ ; ইমাম ইবন কুদামা, আল-মুগনী, ১/৫৪৯
[43] . মুসনাদে ইমাম আহমাদ
[44] . শাযয এর সংজ্ঞাঃ কোনো হাদীস যদি অধিকাংশ নির্ভরযোগ্য রাবী এককভাবে বর্ণনা করেন, কিন্তু তাদের বিপরীতে একজন নির্ভরযোগ্য রাবী অন্যরূপ বর্ণনা করেন তবে হাদীসটিকে ‘শাযয’ বলা হয়।
[45] . অজ্ঞাত পরিচয় এর অর্থ হলো উক্ত রাবী বা বর্ণনাকারী সম্পর্কে জানা যায় না, তাই উক্ত রাবীর হাদীস গ্রহণযোগ্য কিনা তাও জানা যায় না।
[46] . বর্ণনাটি হচ্ছেঃ
ইমাম তিরমিযী বলেনঃ “আমাদেরকে কুতাইবা বলেছেন, আমাদেরকে আবুল আহওয়াস বলেছেন, তিনি সিমাক ইবন হারব থেকে, তিনি কাবীসাহ ইবন হুলব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের ইমামতি করতেন, তখন তিনি তার বাম হাতকে ডান হাত দিয়ে ধরতেন।” [সুনানে তিরমিযী, ২/৩২]
ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল হাদীসটি সংকলন করেছেন ইবন আবী শাইবা থেকে, ওকী থেকে, সুফিয়ান সাওরী থেকে সিমাক থেকে। তার বর্ণনায়ঃ “তখন তিনি তার ডান হাতকে বাম হাতের উপর রাখতেন।” [মুসনাদে আহমাদ, ৫/২২৬]
ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। আর শাইখ আলবানী হাদীসটিকে ‘হাসান সহীহ’ বলেছেন। পক্ষান্তরে শাইখ শুআইব আরনাঊত বলেনঃ “কাবীসাহ অজ্ঞাতপরিচয় রাবী হওয়ার কারনে এ সনদটি দুর্বল।” [আলবানী, সহীহ ওয়া যায়ীফ সুনানিত তিরমিযী, ১/২৫৬ ; মুসনাদে ইমাম আহমাদ(শুআইব আরনাঊতের টীকা সহ), ৫/২২৬]
[47] . ইবন মুফলিহ, আল-ফুরু, ২/১০৯
[48] . ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল(রাহিমাহুল্লাহ) নিজে সালাতে ‘বুকে হাত রাখা’ বিষয়ে হাদীস সংকলন করেছেন তার ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে, কিন্তু তিনি নিজেই তা গ্রহন করেন নি, এ থেকে বিষয়টি সুস্পষ্ট হয় যে, উক্ত হাদীসটি দুর্বল বলে ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল তা গ্রহন করেন নি। আর ইমাম আহমাদ সালাতে ‘বুকে হাত রাখা’কে মাকরুহ বলতেন, যা পরবর্তীতে ইমাম ইবন তাইমিয়্যাহও বলেছেন। যদি আলোচ্য হাদীসটি অত্যন্ত দুর্বল না হতো তাহলে ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল হাদীসটি পাওয়া সত্ত্বেও ‘বুকে হাত রাখা’কে মাকরুহ বলতেন না। ইলমে হাদীস সম্পর্কে যার প্রাথমিক জ্ঞান রয়েছে তিনিও জানেন যে, ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল হাদীস শাস্ত্রে একজন নক্ষত্রতুল্য ইমাম ও হাফীযুল হাদীস ছিলেন। তিনি সেই ব্যক্তি ছিলেন যাকে ৪০ হাজার প্রশ্ন করা হয়েছিল আর প্রশ্নের জবাবে ইমাম আহমাদ শুধুই হাদীস বলেছিলেন। আর ইসলামী ইতিহাস সম্পর্কে যার প্রাথমিক জ্ঞান রয়েছে তিনিও জানেন যে, ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল কোরআন এবং সুন্নাহর দৃঢ় অনুসারী ছিলেন, এর জন্য তাকে সহ্য করতে হয়েছিল কঠোর শাস্তি। তিনি ছিলেন বিদ’আতীদের আতঙ্ক। তাই ‘বুকে হাত রাখা’ সম্পর্কিত হাদীস পাওয়া সত্ত্বেও তার বিপক্ষে মত প্রকাশ করার অর্থ এই যে, ‘বুকে হাত রাখা’ সম্পর্কিত হাদীসগুলো অত্যন্ত দুর্বল।
[49] . ইমাম আবু দাউদ, মাসায়েলে আহমাদ, পৃঃ ৩১
[50] . মুকবিল ওয়াদায়ী ও খালিদ শায়ি, আল-ই’লাম, পৃঃ ১৭
[51] . তাউস, ইনি হচ্ছেন তাবিয়ী তাউস ইবন কাইসান(মৃঃ ১০৬ হিজরী), তাউস সরাসরি বলেছেনঃ ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতের মধ্যে…’। এরুপ হাদীসকে মুরসাল বলা হয়। এরুপ হাদীস দুর্বল বলে গণ্য।
[52] . সুনানে আবু দাউদ, খণ্ড-১, হাদীসঃ ৭৫৯ [ইসলামী ফাউনডেশন বাংলাদেশ]
[53] . মুরসাল হাদীসের সংজ্ঞাঃ কোনো হাদীসে যদি তাবিয়ী তার পরবর্তী বর্ণনাকারীর নাম উল্লেখ না করে সরাসরি ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ থেকে বর্ণনা করেন তাহলে সেই হাদীসকে মুরসাল হাদীস বলা হয়। এরুপ হাদীস দুর্বল বলে গণ্য। কেননা তাবিয়ী কার কাছ থেকে হাদীসটি শুনেছেন তা তিনি বলেন নি।
[54] . আলবানী, আহকামুস জানাইয, পৃঃ ১১৮-১১৯
[55] . ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, সালাতের মধ্যে হাত বাধার বিধান, পৃঃ ৪৭
[56] . বিস্তারিত আলোচনাঃ ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, সালাতের মধ্যে হাত বাধার বিধান, পৃঃ ২০-২২, ৪৭
[57] . মুকবিল ওয়াদায়ী ও খালিদ শায়ি, আল-ই’লাম, পৃঃ ১৭







Top