Very very Important : আমরা সেই ছোট বেলাতেই "ইমানে মুফাসসাল" নামে একটা কালেমা পড়েছি যার মধ্যে আমরা ইমান এনেছি।
তাই ভাগ্যে বিশ্বাস করার নাম হল ইমান। একটা ফির্কা আছে যারা নাকি ভাগ্যে বিশ্বাস করে না। তাদেরকে কদরীয়া বলে তারা বাতিল একটা ফির্কা। আমাদের আকিদা এটাই যে ভাল মন্দ যা হবে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে আসবে। আমাদের পাপের দ্বারা আমরা দুর্ভাগ্য অর্জন করি আর পুন্যের দ্বারা ভাল কিছু।
আবার ভাগ্যে খারাপ থাকলে দোয়ার দ্বারা আল্লাহ ভাগ্য পরিবর্তনও করে দেন।

মানুষ কোন বিপদ বা পাপ করলে বলে ভাগ্যে ছিল বলেই করেছি, কোন শাস্তি বা কষ্ট ভাগ্যে ছিল বলেই পেয়েছি, জাহান্নাম ভাগ্যে ছিল বলেই পাব এসব বলে তারা ভাগ্যকে দোষারোপ করে অথচ সে নিজে জেনে শুনেই নামাজ পড়ে না, দিনে শত শত মিথ্যা বলে, মেয়েদের দিকে খারাপ নজরে তাকায়, টিভি, গান, নাচানাচি, চুরি, ওয়াদার খেলাফ করা, মানুষকে ধোকা দেয়া, এমনকি পদে পদে সে গোনাহ করছে। যা করছে তা ভুল করছে এসব জেনে শুনে, বুঝেও সজ্ঞানে পাপ করে আর শয়তানের অনুসরন করে জাহান্নামে যায় কিন্তু ঠাস করে বলে দেয় ভাগ্য খারাপ ছিল। ভাগ্যকে গাল দেয় এসব মুলত গোনাহের কাজ। যদি নিজে ঠিক না হয়ে ভাগ্যকে বসে বসে দোষ দেন তাহলে কি হবে?


★ইমানে মুফাসসাল ★


*** আমানতু বিল্লাহি ওয়া মালা-ইকাতিহি, ওয়া কুতুবিহি, ওয়া রুসুলিহি, ওয়াল ইয়াওমিল আখিরি, ওয়াল কাদরি খায়রিহি ওয়া শাররিহি মিনাল্লাহি তা-আলা ওয়াল বা'সি বা'দাল মাউত।

¤ অর্থঃঃ-আমি ইমান আনলাম-

(১) আল্লাহর প্রতি,
(২) তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি,
(৩) তাঁর কিতাবগুলোর প্রতি,
(৪) তাঁর রাসূলগণের প্রতি,
(৫) আখিরাতের প্রতি,
(৬) তাকদিরের প্রতি, যার ভালো-মন্দ আল্লাহ তায়ালার নিকট থেকেই হয় এবং,
(৭) মৃতুর পর পুনরুথানের প্রতি।



প্রশ্ন : যেহেতু তাকদীর পুর্ব হতে র্নিধারন করা থাকে , তাহলে আমার কোন কাজে যদি বিফলতা ভাগ্যে লেখা থাকে , আমি যতই পরিশ্রম করিনা কেন তাতে কি আমার উক্ত কাজ সফলকাম হবে ?

জবাব :



★  আল্লামা নাসাফী (রঃ) শারহুল আকাঈদ নামক গ্রন্থে লেখেনঃ

আল্লাহ তায়া’লা কিছু কাজ মানুষের উপর ছেড়ে দিয়েছেন , যদি কেহ ভাল কাজ করে তাহলে সে সওয়াব পাবে, আর যদি কেউ খারাপ কাজ করে তাহলে তার আযাব ভুগ করতে হবে। সুতরাং যদি কাহারো ভাগ্যে বিফলতা লেখা থাকে তাহলে সে পরিশ্রম তথা ভাল কাজের মাধ্যমে সফলকাম হতে পারে।



★ হাদিস শরীফে রাসুল (সঃ) ফরমান- "নিশ্চয় আল্লাহ্ তায়ালা আদম (আঃ)- কে সৃষ্টি করলেন, অতঃপর তিনি (তাঁর) ডান হাত দ্বারা আদম (আঃ)-এর পিঠে স্পর্শ করলেন অতঃপর তিনি তার থেকে একটি বংশধর বের করে আনলেন, অতঃপর আল্লাহ্ বললেন, আমি এদেরকে জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করেছি, এরা জান্নাতবাসীদের ন্যায় কাজ করবে, পুনরায় তিনি (আল্লাহ্) আদমের পিঠে স্পর্শ করলেন,অতঃপর তিনি তার থেকে আরেকটি বংশধর বের করে আনলেন, তখন আল্লাহ্ বললেন, আমি এদেরকে সৃষ্টি করেছি জাহান্নামের জন্য, এরা জাহান্নামীদের ন্যায় কাজ করে ।"

Reference :

★ তিরমিজি ও
★ আবু দাউদ শরীফের সূত্রে মেশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা-২১

★ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে হযরত রাসুল (সঃ)-এর একখানা দীর্ঘ হাদিস বর্ণিত আছে । তার মর্মকথা এই যে, মানুষ তার জন্মের পূর্বে বিভিন্ন স্তর অতিক্রম করে আসে । আর তখনই তার জন্ম-মৃত্যু, ভাল-মন্দের হিসাব লিপিবদ্ধ ও সংরক্ষিত হয়ে যায় । হাদিস শরীফে আরো আছে- "তকদীর পরিবর্তন হয় না, কিন্তু দোয়া দ্বারা পরিবর্তন হয় ।" (আল-হাদিস)

★ পবিত্র কুরআন ও হাদিসের উপরোল্লেখিত বর্ণনা থেকে তকদীর সম্পর্কে দুই প্রকার ধারণা লাভ করা যায় । যথা-

১। তকদীর আল্লাহ্ করতিক পূর্ব নির্ধারিত, যা অপরিবর্তনশীল এবং
২। তকদীর মানুষের কর্মের দ্বারা সৃষ্টি হয়, যা পরিবর্তনশীল ।



                       আল-কোরআন থেকে :


★ আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, আয়াত

وَمَا أَصَابَكُم مِّن مُّصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ وَيَعْفُو عَن كَثِيرٍ

"তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তিনি তোমাদের অনেক গোনাহ ক্ষমা করে দেন।  (শুরা ৩০)



★"তোমরা যা কিছু মঙ্গল সবই আল্লাহর দেয়া, আর যা কিছু অমঙ্গল তা তোমার নিজেরই কারণে ।" (সূরা-আন নিসা-৪, আয়াত-৭৯)


★ "একজনের কর্মের জন্য অন্য জন দায়ী নয় ।" (সূরা- বনী ঈসরাইল-১৭, আয়াত- ১৫)



★ এবং আল্লাহ তায়’লা সূরায়ে রুমে এরশাদ করেন,

ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ لِيُذِيقَهُم بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ

"স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।" (রুম ৩০: ৪১)


★ পৃথিবীতে বা ব্যাক্তিগতভাবে তোমাদের উপরে যে বিপর্যয় আসে আমি উহা সংগঠিত করিবার পুর্বে উহা লিপিবদ্ধ থাকে; আল্লাহর পক্ষে ইহা খুবই সহজ (৫৭;২২)


★ অদৃশ্য কুঞ্জি (চাবি সমুহ) একমাত্র তাঁহার নিকট রহিয়াছে, তিনি ব্যাতিত অন্য কেহ তাহা জানে না। জলে ও স্থলে যাহা কিছু আছে তাহা তিনি অবগত, তাঁহার অজ্ঞাতসারে একটি পাতাও পড়ে না। মৃত্তিকার অন্ধকারে এমন কোন শস্যকনাও অঙ্কুরিত হয় না অথবা রসযুক্ত কিংবা শুস্ক এমন কোন বস্তু নাই যাহা সুস্পস্ট কিতাবে নাই (৬;৫৯)


★ আমারই নিকট আছে প্রত্যেক বস্তুর ভান্ডার এবং আমি উহা পরিজ্ঞাত পরিমানেই সরবরাহ করিয়া থাকি (১৫;২১)


★... আল্লাহ যাহাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন এবং যাহাকে ইচ্ছা সৎপথে পরিচালিত করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী , প্রজ্ঞাময়। (আল-কোরআন)


★ বল, হে সার্বভৌম শক্তির মালিক আল্লাহ। তুমি যাহাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর এবং যাহার নিকট হইতে ইচ্ছা ক্ষমতা কাড়িয়া লও; যাহাকে ইচ্ছা তুমি ইজ্জত দান কর, আর যাহাকে ইচ্ছা তুমি হীন কর। কল্যান তোমার হাতেই। নিশ্চয়ই তুমি সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান। (আল-কোরআন)


★ মানুষ কর্ম ও চেস্টায় ভাগ্য পরিবর্তন হয়ঃ (আল - কোরআন)


★... এবং আল্লাহ কোন সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না যতক্ষন না উহারা নিজ অবস্থা নিজে পরিবর্তন করে ...।(১৩;১১)


★... কাহাকেও আমি প্রেথিত করিয়াছিলাম ভুগর্ভে এবং কাহাকেও করিয়াছিলাম নিমিজ্জিত। আল্লাহ তাহাদের প্রতি জুলুম করে নাই; তাহারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি জুলুম করিয়াছিল। (২৯;৪০)


★ ... অতঃপর উহা আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করল , ফলে তাহারা যাহা করিত তজ্জন্য আল্লাহ তাহাদেরকে স্বাদ গ্রহন করাইলেন ক্ষুধা ও ভীতি আচ্ছাদনের। (১৬;১২২)


★ ... যে সতকর্ম করে সে নিজের কল্যানের জন্যই উহা করে এবং কেহ মন্দ কর্ম করিলে উহার প্রতিফল সে-ই ভোগ করিবে। তোমার প্রতিপালক তাঁহার বান্দাদের প্রতি জুলুম করেন না(৪১;৪৬)


★ আমি তাহাকে পথের নির্দেশ দিয়াছি, হয় সে কৃতজ্ঞ হইবে, না হয় সে অকৃতজ্ঞ হইবে। (৭৬;৩)


★ বল, সত্য তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে ; সুতরাং যাহার ইচ্ছা বিশ্বাস করুক ও যাহার ইচ্ছা সত্য প্রত্যাখ্যান করুক ... (১৮;২৯)
Top