এখানে যা যা পড়বেন:
১) মাযার এর উপর গম্বুজ নির্মান করআ যাবে কিনা।
২) রাসুল (সা) সাহাবীদের কাদের (মুসলমানদের নাকি মুশরিকদের) উচু কবর ভেংগে দিতে পাঠিয়েছিলেন।
৩) মাযারে বসা,মাযার পাকা করা বা চুনকাম করার সম্পর্কে।
৪) নারীদের মাযার জিয়ারত কি জায়েজ?
৫) মাযারে বাতি জ্বালানো কি জায়েজ?

ওহাবী আহলে হাদিসরা এই জাতীয় কিছু হাদীসকে মাযার বিরোধী বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে।দেখুন এর প্রকৃত ব্যাখ্যা:-

♦Problem 1 :-

প্রখ্যাত তাবেয়ী আবুল হাইয়্যাজ আল আসাদী বলেন, আমাকে আলী (রাঃ) বললেনঃ

أَلاَّ أَبْعَثُكَ عَلَى مَا بَعَثَنِى عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ لاَ تَدَعَ تِمْثَالاً إِلاَّ طَمَسْتَهُ وَلاَ قَبْرًا مُشْرِفًا إِلاَّ سَوَّيْتَ“

তোমাকে কি আমি এমন একটি কাজ দিয়ে পাঠাবো না যে কাজ দিয়ে আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাঠিয়েছিলেন? তা হল কোন (মুশরিকদের) প্রতিকৃতি ও মূর্তি পেলে তাকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে ফেলবে, আর (মুশরিকদের কোন) উঁচু কবর দেখলে তা সমান করে দেবে।
” (মুসলিম).

♦ Sollution 1 :-

ব্যাখ্যা 1 :-
এগুলো কাফিরদের- মুশরিকদের কবর ছিল বুখারী শরীফের শ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যাকার হাফিজুল হাদিস ইমাম হাজর আসকালানী (রহ) বলেন,”‘
নবীগনও তাদের অনুসারীগনের কবর বাদ দিয়ে মুশরিকদের কবরগুলোকে ধ্বংশ করা হয়েছিল। কেন্না এগুলো উপরে ফেলার কারন ছিল নবীজী (সা) এর মানহানী করত।
Reference :
শরহে বুখারী ফতহুল বারী ২ খন্ড ২৬ পৃষ্টা।

তাই এই হাদিস ইমানদার সাধারন মুসলমানের জন্যও ব্যবহার করা যাবে না ওলীগনের ক্ষেত্রে তো Impossible!!!

কারন ইবনে ঊমর(রা) বলেন,” খারিজি সম্প্রদায় এর এমন স্বভাব ছিল যে তারা কাফির মুশরিকদের উপর অবতীর্ন আয়াত ইমানদার দের উপর প্রয়োগ করত।তাই তারা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে নিকৃষ্টতম জাতি বলে মনে করতেন।
Reference :-
বুখারী শরীফ

ব্যাখ্যা 2 :-

♦ হযরত আলী (রা) সম্ভবত তাঁর শাসনামলে, ৩৫ থেকে ৪০ হিজরির মধ্যে তাঁর সেনাপতিকে ওই আদেশ দিয়েছিলেন। নিচে এর মতই আরেকটা হাদিস পাওয়া যায় যেখানে রাসুল(সা) মসজিদ নির্মানের জন্য কাফির মুশরিকদের মুর্তি ও কবর এর উপরের স্থাপত্য সব ভেংগে সমান করে দিয়েছিলেন। হাদিসটি নিম্নরূপ *****

♦মূসাদ্দাদ (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদিনায় পৌঁছে,………. তিনি মসজিদ তৈরী করার নির্দেশ দেন……… আনাস (রাঃ) বলেন: আমি তোমাদের বলছি, এখানে মুশরিকদের কবর এবং ভগ্নাবশেষ (স্থাপত্য বা নিদর্শন বা মুর্তি) ছিল। আর ছিল খেজুরের গাছ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (এগুলো ভেংগে দেয়ার) নির্দেশ দিলে (এগুলো ভেংগে) মুশরিকদের কবর খুড়ে ফেলা হল। তারপর (মুশরিকদের স্থাপত্য/নিদর্শন/মুর্তি) ভগ্নাবশেষ যা ছিল সমতল করে দেয়া হল, খেজুরের গাছ গুলো কেটে ফেলা হল এর দুই পাশে পাথর বসানো হল (মসজিদ নির্মানের জন্য)।
Reference :-
(সহীহ বুখারী ৪১৬ (৪২০) এবং সহীহ মুসলিম ১০৬৮)


এবার দেখুন এই হাদিসের আদেশের সাথে হযরত আলী (রা) এর শ্রবণকৃত নবীজি (সা) এর আদেশের কথা মিলে যাচ্ছে। এই আদেশের কথাই হযরত আলী (রা) তাঁর সেনাপতিকে অবহিত করেছিলেন। অন্য কোন সময়ের এরকম কোন আদেশের কথা কোথাও নেই। ফলে ইমামগণ, মুফাসসিরিনে কেরাম এবং মুজতাহিদগণ একমত ছিলেন যে হযরত আলী (রা) এর হাদিসটি!!

Problem 2 :-

♦ জাবির (রাঃ) হতে র্বণিত; তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ (সঃ) কবর চুনকাম ও পাকা করতে, কবরের উপর বসতে এবং কবরের উপর গুম্বুজ তৈরী করতে নিষেধ করেছেন। (মুসলিম ১ম খন্ড ৩১২ পৃঃ, আবূ দুউদ ২য় খন্ড ৪৬০পৃঃ)

Solution 2 :-

ব্যাখ্যা ১ :-

♦ হযরত হাসান আল-বসরী (রহ:), ইমাম শাফেঈ (রহ:) ও ইমাম হাকিম (রহ:)-এর মতো সর্বোচ্চ পর্যায়ের মেধাসম্পন্ন মোহাদ্দেসীনবৃন্দ এই সব হাদীসকে আক্ষরিক অর্থে গ্রহণ করেননি।

’কবরে আস্তর না করা, না লেখা বা বসা’ সংক্রান্ত হাদীসটি বর্ণনার পরে ইমাম তিরমিযী (রহ:) বলেন:

এই হাদীসটি হাসান সহীহ এবং এটি বিভিন্ন সনদ বা সূত্রে হযরত জাবের (রা:) হতে বর্ণিত হয়েছে। কিছু উলেমা (কাদা) মাটি দ্বারা কবর আস্তর করার অনুমতি দিয়েছেন; এঁদের মধ্যে রয়েছেন ইমাম হাসান আল-বসরী (আমীরুল মো’মেনেীন ফীল্ হাদীস)। অধিকন্তু, ইমাম শাফেঈ (রহ:) কাদামাটি দ্বারা কবর আস্তর করাতে কোনো ক্ষতি দেখতে পাননি।
— সুনানে তিরমিযী, কবর আস্তর না করার হাদীস ,১০৫২

ওনাদের কাউকে ছোট করার স্পর্ধা আছে এমন কোন মুসলিম থাকতে পারে না।তাই চোখ বন্ধ করে ওনাদের বিশ্বাস করতে পারেন কারন তারা এই হাদিসটি জানতেন না এমন ধারনা করা মুর্খতা হবে।

ব্যাখ্যা ২ :-

♦ ইমাম মালেক (রহ:) নিম্নবর্ণিত শিরোনামে গোটা একখানা অধ্যায় বরাদ্দ করেছেন:
”জানাযার জন্যে থামা এবং কবরস্থানের পাশে বসা” – উক্ত অধ্যায়ে বর্ণিত দ্বিতীয় রওয়ায়াতে বিবৃত হয়:

এয়াহইয়া (রা:) আমার (ইমাম মালেকের) কাছে বর্ণনা করেন মালেক (রা:) হতে, যিনি শুনেছিলেন এই মর্মে যে, হযরত আলী ইবনে আবি তালেব (ক:) কবরে মাথা রেখে পাশে শুয়ে থাকতেন। মালেক (রা:) বলেন, ‘আমরা যা দেখেছি, কবরের ধারে পেশাব-মলত্যাগ করার ক্ষেত্রেই কেবল নিষেধ করা হয়েছে’।
— মুওয়াত্তা-এ-ইমাম মালেক, ১৬তম বই, অধ্যায় ১১, হাদীস ৩৪

মনে রাখা জরুরি, অনেক ইসলামী পণ্ডিতের মতে বোখারী শরীফ হতে ইমাম মালেক (রহ:)-এর ’মুওয়াত্তা’ গ্রন্থটি অধিক উচ্চতর ও বিশুদ্ধ।

Problem 3 :-


হযরত মা আয়েশা (রা:) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর বাণী, যিনি বলেন: “আল্লাহ পাক ইহুদী ও খৃষ্টানদের প্রতি লা’নত (অভিসম্পাত) দিয়েছেন, কেননা তারা তাদের আম্বিয়া (আ:)-বৃন্দের মাযার-রওযাকে মসজিদসমূহ (উপাসনার স্থান) হিসেবে গ্রহণ করেছিল।” [সহীহ বোখারী ও মুসলিম]


আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে র্বণিত;
তিনি বলেছেন : রাসূল (সঃ) কবর যিয়ারাতকারিনী মহিলাদেরকে এবং যারা কবরকে মাসজিদে (উপাসনার স্থানে) পরিনত করে আর যারা কবরে বাতি জ্বালায় তাদেরকে লা’নত করেছেন। (তিরমিযী, আবূ দাউদ ২য় খন্ড ৪৬১ পৃঃ, নাসায়ি, ইবনু মাজাহ)
আরেকটা :-
“”জেনে রাখা উচিৎ যে, তোমাদের পূর্বের লোকেরা তাদের নবীদের কবরসমূহকে মাসজিদে (উপাসনার স্থানে) পরিণত করত। সাবধান! তোমরা কবরগুলোকে মাসজিদে (উপাসনার স্থানে) পরিণত কর না। আমি তোমাদেরকে তা থেকে নিষেধ করছি।””
(মুসলিম)


Solution 3 :-

২টা হাদিসে সর্বমোট ৩ টি কথা এসেছে :

১) কবর যিয়ারাতকারিনী মহিলাদেরকে লানত
২) পুর্বে (কাফির-মুশরিক) যারা কবরকে মাসজিদে (অর্থ : সিজদার স্থানে) পরিনত করেছে তাদের লানত
৩) আর যারা কবরে বাতি জ্বালায় তাদেরকে লা’নত করেছেন।

ব্যাখ্যা 1 :-

♣ কবর যিয়ারাতকারিনী মহিলাদেরকে লানত : এর বিশাল ব্যাখ্যা:

১) উক্ত হাদিসে বলা হয়েছে আগে নিষেধ করতাম (ওহীর আদেশ পাওয়ার আগে) কিন্তু ওহীর আদেশ পেয়ে তিনি এই নিষেধ তুলে নিলেন (তখন স্বাভাবিক নিয়মে কিছু নিষেধ করা হাদিস রহিত হয়ে গেল)
২) এই হাদিসে কবর জিয়ারত করার আদেশ দিয়েছেন কিন্তু মহিলাদের এখানে কোন নিষেধও করেন নি।এই আদেশ পুরুষ মহিলা সবার জন্যই।

সুনানে ইবনে মা’জাতে ইবনে মাসউদের ভাষায়:-

اِنَّ رَسُولَ الله (ص) قال : کُنتُ نَهَيتُکُم عَن زيارة القُبورَ فَزُوُروها فَا نَّها تُزَهِّدُ في الدّتيا و تُذَ کِّرُ فِي الآخِرَة

নিশ্চয়ই রাসূনুল্লাহ (সাঃ) বলেন :- আমি (ইতিপূর্বে ) তোমাদেরকে কবর যিয়ারতে নিষেধ করেছিলাম, এখন এগুলোর যিয়ারতে যাও। কারণ কবর যিয়ারত, পৃথিবীতে সংয়ম ও আখারাতের স্মরণ আনয়ন করে।

Reference :
♦সহী মুসলিম, হাদীস ৯৭৭,
♦সুনানে নাসাঈ, খঃ৪ পৃঃ৮৯,
♦সূনানে ইবনে মা’জা খঃ১ পৃঃ৫০০-৫০১,
♦সুনানে তিরমিযি খঃ৪ পৃঃ২৭৪,
♦সুনানে আবি দাউদ, হাদীস ৩২৩৫,
♦মোয়াত্তা মালিক খঃ২ পৃঃ৪৮৫]

★ এখানে মুলত ওইসমস্ত নারীদের কথা বলা হয়েছে যারা বেপর্দা হয়ে কবর জিয়ারত করেন ও খুব ঘন ঘন বেপর্দা হয়ে জিয়ারত করতে যায়। আর যদি এই হাদিস দিয়ে সকল কবর জিয়ারতকারী সকল নারীদেরকে বুঝাত তাহলে হযরত মা ফাতেমা (আ) ও উম্মুল মুমেনিন হযরত আয়েশা (রা) নিজে রাসুল (সা) এর রওজা ও অনেকের মাযার জিয়ারত করেছেন।


A) রাসূল (সাঃ)-এর কবরের সর্বপ্রথম বিয়ারতকারী ছিলেন হযরত মা ফাতেমা (আ) :-

ইবনে জাওযী নিজ সনদে আলী (আঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে বলেনঃ যখন রাসূল (সাঃ)-কে সমাহিত করা হলো তখন হযরত ফাতেমা (ছাঃ) কবরের নিকট আসলেন ; কিছু সময় দাঁড়ালেন, অতঃপর এক মুষ্ঠি মাটি কবর থেকে তুলে নিলেন ও চোখে মাখলেন এবং নিম্নলিখিত পংক্তিগুলো পাঠ করলেন।

ما ذا عَلي مَن شَمَّ تُر بَةً اَحمَدٍ أن لا يَثُمَّ مَدَي الزَّمانِ غَواالياً صُبَّت عَلَيَّ مَصَائِبٌ لو اَنَّها صُبَّت عَلَي اَلأ يّام عُزنَ لَيا لِيًا

“ আহমাদের মাটির সুগন্ধ যে করেছে আঘ্রান কি-এমন দুঃখ তার যদি দু’জাহানের সুগন্ধ না হয় আস্বাদন আমার উপর এসেছে যে মুসিবাত যদি দিবসের উপর আসতো তবে তা হয়ে যেত রাত!”
Reference :
♦ ইবনে জাওযী উক্ত হাদিসটি বর্ননা করেন।

B) মা ফাতেমা (আ) রাসুল (সা) এর চাচা হযরত আমির হামজা (রা) এর মাযার প্রতি শুক্রবারে জুমার দিন জিয়ারত করতেন। (সেজন্য ওনি মদীনা থেকে ৩ মাইল দুরে অবস্থিত ওহুদের প্রন্তরে যেতেন)
Reference :-
♦ ইমাম বায়হাকী (রহ) : আস-সুনুনুল কুবরা : ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা ৭৮,
হাদিস ৪৯৯৯।
♦ ইমাম বদরুদ্দিন আইনী (রহ) : শরহে বুখারী গ্রন্থে

C) উম্মুল মুমেনিন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা) মক্কায় অবস্থিত তাঁর ভাই হযরত আব্দুর রাহমান বিন আবু বকর (রা) এর কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণ করেন এবং ওনার কবর জিয়ারত করতে মদীনা থেকে ৫০০ কিলোমিটার দুরে মক্কায় যেতেন। ৫৮ হিজরি উম্মুল মুমেনিন হযরত আয়েশা (রা) এর ওফাতের আগ পর্যন্ত এই আমল ছিল।

Reference :-
♦ মুস্তাদরেকে হাকিম ১ ম খন্ড, পৃষ্টা ৫৩২,হা: ১৩৯৪
♦ মুন্তাকা সরহে মুয়াত্তায়ে ইমাম মালেক
♦ বাদায়ে সানায়ে


D) উম্মল মুমেনিন হযরত সাইয়্যেদাহ আয়েশা (রা:) বর্ণনা করেন:

যে ঘরে মহানবী (দ:) ও আমার পিতা (আবূ বকর – রা:)-কে দাফন করা হয়, সেখানে যখন-ই আমি প্রবেশ করেছি, তখন আমার মাথা থেকে পর্দা সরিয়ে ফেলেছি এই ভেবে যে আমি যাঁদের যেয়ারতে এসেছি তাঁদের একজন আমার পিতা ও অপরজন আমার স্বামী। কিন্তু আল্লাহর নামে শপথ! যখন হযরত উমর ফারূক (রা:) ওই ঘরে দাফন হলেন, তখন থেকে আমি আর কখনোই ওখানে পর্দা না করে প্রবেশ করি নি; আমি হযরত উমর (রা:)-এর প্রতি লজ্জার কারণেই এ রকম করতাম।
Reference :-
♦ মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ২০২ পৃষ্ঠা, হাদীসঃ ২৫৭০১
♦ আল-বাছায়ের ৭৯
♦ ইমাম নূরুদ্দীন হায়তামী (রহ:) এই হাদীসটি সম্পর্কে বলেন:

এটি ইমাম আহমদ (রহ:) কর্তৃক বর্ণিত এবং এর বর্ণনাকারীরা সবাই সহীহ মানব।
— মজমাউয্ যাওয়াইদ, ৯:৪০, হাদীসঃ১২৭০৪

♦ ইমাম আল-হাকিম (রহ:) এটি বর্ণনা করার পর বলেন,

এই হাদীস বোখারী ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ।
— মোস্তাদরাক আল-হাকিম, হাদীসঃ ৪৪৫৮

♦ নাসিরুদ্দীন আলবানী আল-মোবতাদি আল-মাশহুর (কুখ্যাত বেদআতী) এই হাদীসকে মেশকাতুল মাসাবিহ গ্রন্থের ওপর নিজ ব্যাখ্যামূলক ‘তাখরিজ’পুস্তকে সমর্থন করেছে (# ১৭১২)।

E) মাতা আমেনা (রা) নিজে শিশু মুহাম্মদ(সা) কে নিয়ে হযরত আব্দুল্লাহ (রা) এর মাযার জিয়ারত করেন।সে সময়
মাতা আমেনা(রা) এর হৃদয় বিদারক বানীটি ছিল :-

হে আব্দুল্লাহ! দেখ তোমার ঔরসে কি মহারত্ন জন্মগ্রহণ করেছে।এই সে তোমার একমাত্র পুত্র তোমার সাক্ষাতে এসেছে।”

★★ ২) যারা নবীগনের কবরকে মাসজিদে বা সিজদাস্তানে পরিনত করেছে তাদের লানত:-


★ ব্যাখ্যা 2 :-

♦এই হাদিস ইহুদী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বর্নিত হয়েছিল মুসলমানদেরকে নয় :-

মুসলমান দের জন্য এই আয়াত দেখুন :-

মহা পরাক্রমশালী আল্লাহতা’লা এরশাদ ফরমান, “যখন এই সব লোক তাদের (আসহাবে কাহাফ) ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে বিতর্ক করতে লাগলো, অতঃপর (কেউ কেউ) বল্লো, ‘তাদের গুহার ওপর কোনো ইমারত নির্মাণ করো। তাদের রব্ব (খোদা)-ই তাদের ব্যাপারে ভাল জানেন।’ ওই লোকদের মধ্যে যারা (এ বিষয়ে) ক্ষমতাধর ছিল, তারা বল্লো, ‘শপথ রইলো, আমরা তাদের (আসহাবে কাহাফের পুণ্যময় স্থানের) ওপর মসজিদ নির্মাণ করবো’।” [সূরা কাহাফ, ২১তম আয়াত]

★* ইমাম আল-রাযী ‘শপথ রইলো, আমরা তাদের (আসহাবে কাহাফের পুণ্যময় স্থানের) ওপর মসজিদ নির্মাণ করবো’, এই আয়াতটির তাফসীরে বলেন যে এর মানে হলো ‘আল্লাহর এবাদত-বন্দেগী করবো এবং আসহাবে কাহাফের দেহাবশেষ (স্মৃতিচিহ্ন) তাতে সংরক্ষণ করবো।’

★*  ইমাম আল-বায়দাবীর তাফসীরের ব্যাখ্যামূলক গ্রন্থে শেহাবউদ্দীন খাফফাজী লেখেন: ”পুণ্যবান বান্দাদের (মাযার-রওযার) পাশে মসজিদ নির্মাণের অনুমতি এই দলিলে সাব্যস্ত হয়।”

★ ইমাম আল-বায়দাবী (রহ:) বলেন: “আল্লাহতা’লা ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে অভিসম্পাত দিয়েছেন, কারণ তারা তাদের আম্বিয়া (আ:)-বৃন্দের মাযার-রওযাকে উপাস্য বস্তু হিসেবে গ্রহণ করেছিল এবং কিবলা বানিয়ে সেদিকে ফিরে নামায পড়তো। আল্লাহ পাক মুসলমানদেরকে তা অনুকরণ করতে নিষেধ করেছেন। তবে কোনো বোযর্গ তথা ওলী-আল্লাহ’র মাযারের পাশে মসজিদ নির্মাণ করার বেলায় কোনো আপত্তি নেই; কিংবা তাঁকে পূজা-অর্চনার লক্ষ্যবস্তু না করে তাঁর মাযারের ভেতরে বরকত আদায়ের উদ্দেশ্যে যিকির-আযকার, ধ্যান সাধনা, দোয়া ইত্যাদি করার ক্ষেত্রেও কোনো আপত্তি নেই। তোমরা কি দেখো না, পবিত্র কা’বা শরীফের অভ্যন্তরে অবস্থিত হযরত ইসমাঈল (আ:)-এর রওযা পাক এবং ’হাতিমে’ সংরক্ষিত মাযার-রওযা হলো এবাদতের সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান? নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে শুধু সে সব কবরের বেলায়, যেগুলো থেকে দেহাবশেষ অপসারণ করা হয়েছে এবং তাতে মাটি-আবর্জনা অবশিষ্ট আছে।”

★ এই হাদীসে উদ্ধৃত ‘মসজিদসমূহ’ শব্দটি উপাসনার স্থানকে বুঝিয়েছে; মানে তারা ওই সব মাযার-রওযার দিকে  আরাধনার উদ্দেশ্যে সেজদা করতো, যেমনটি করে থাকে মূর্তি পূজারী অবিশ্বাসীরা তাদের প্রতিমার উদ্দেশ্যে। এটি অপর এক সহীহ রওয়ায়াতে সুস্পষ্ট হয়েছে; ইবনে আস’আদ স্বরচিত ‘তাবাকাত-এ-কুবরা’ গ্রন্থে হযরত আবূ হোরায়রা (রা:)-এর সূত্রে বর্ণনা করেন মহানবী (দ:)-এর হাদীস, যিনি এরশাদ ফরমান: “হে আল্লাহ, আপনি আমার রওযাকে পূজা-অর্চনার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করবেন না। যারা তাদের আম্বিয়া (আ:)-বৃন্দের মাযার-রওযাকে ‘মসজিদ’ হিসেবে গ্রহণ করেছিল, তাদের প্রতি আল্লাহ পাক লা’নত বর্ষণ করেছেন।” ‘যারা তাদের আম্বিয়া (আ:)-বৃন্দের মাযার-রওযাকে ‘মসজিদ’ হিসেবে গ্রহণ করেছিল, তাদের প্রতি আল্লাহ পাক লা’নত বর্ষণ করেছেন’, এই বাক্যটি উক্ত মাযার-রওযাকে উপাসনার স্থান হিসেবে ইঙ্গিত করে। কাজেই হাদীসটির মানে হলো, ‘হে আল্লাহ, মানুষের দ্বারা আমার রওযা শরীফকে (উপাস্য হিসেবে) অর্চনার বস্তুতে পরিণত করবেন না, যেমনটি ঘটেছিল পূর্ববর্তী আম্বিয়া (আ:)-দের মাযার-রওযা নিয়ে তাঁদের অনুসারীদের বেলায়।’ [অনুবাদকের নোট: এই হাদীসে প্রমাণিত হয় যে উম্মতে মোহাম্মদী কখনোই ’মাযার পূজা’ করবেন না। কেননা, উম্মতের জন্যে নবী (দ:)-এর দোয়া কবুল হয়ে থাকে। আল্লাহ তা ফিরিয়ে দেন না]

আরো স্পষ্ট বুঝে নিন :-

মুসলিম উম্মাহ’র বাস্তব ঐকমত্য ও উলেমাবৃন্দের সমর্থন

★* পুণ্যবান পূর্ববর্তী প্রজন্ম (মোতাকাদ্দেমীন) ও পরবর্তী প্রজন্মগুলো (মোতা’খেরীন) মসজিদে নববী এবং আম্বিয়া (আ:) ও আউলিয়া (রহ:)-মণ্ডলীর মাযার-রওযাবিশিষ্ট অন্যান্য মসজিদগুলোতে নামায আদায় করেছেন বিনা আপত্তিতে।

★* ওয়ালিদ ইবনে আব্দিল মালেক ৮৮ হিজরী সালে মদীনার তদানীন্তন শাসনকর্তা উমর ইবনে আব্দিল আযীযকে নির্দেশ দেন যেন তিনি মসজিদে নববীর চত্বরে মহানবী (দ:)-এর রওযা মোবারককে অন্তর্ভুক্ত করেন। মদীনা মোনাওয়ারার সাত জন নেতৃস্থানীয় আলেমের মধ্যে প্রায় সবাই এতে সম্মতি জ্ঞাপন করেন; ব্যতিক্রম ছিলেন শুধু সাঈদ ইবনে মুসাইয়েব। তিনি আপত্তি করেছিলেন যাতে মুসলমান সমাজ রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর ঘরকে নজির হিসেবে গ্রহণ করেন এবং তাঁর কৃচ্ছ্রব্রতপূর্ণ জীবনকে আদর্শ মানেন, আর দুনিয়ার ভোগ-বিলাস পরিহার করে চলেন। তাঁর এই আপত্তি মাযারবিশিষ্ট মসজিদে নামায পড়া হারাম মর্মে কোনো মতের ভিত্তিতে তিনি উত্থাপন করেননি।



১) ইহুদী-নাসারাগন তাদের নবীদের কবরকে “”কিবলা”” মনে করে নিয়ত করত ও সিজদার স্থানে পরিনত করেছিল।ইহুদীরা ওই সমস্ত পবিত্র নবীগনের ইবাদত করত এই ভেবে যে তারা খুশি হয়ে আল্লাহর কাছে তাদের ব্যপারে সুপারিশ করবে। তাই সকল কারনে তাদের উপর লানত করেছেন এবং মুসলমানদের এইসব শিরিক করা থেকে সতর্ক করেছেন।

২) আবার, মসজিদ মানে সিজদার স্থান তাই কবরের উপর ইবাদতের উদ্দেশ্যে সিজদা করা বা নামায পড়া যাবে না শরীয়তে নিষিদ্ধ। কিন্তু মাযার সংলগ্ন মসজিদ হলে কোন সমস্যা নেই তা ১০০% জায়েয।

★★ আর যারা কবরে বাতি জ্বালায় :-

ব্যাখ্যা 3 :-

ইসলাম কখনো অপচয়কে মেনে নেয় নি।তাই যদি কেউ এই উদ্দেশ্যে বাতি জালায় যে,””

১) এই নিয়তে যদি বাতি জ্বালায় যে রাতের অন্ধকারে রাস্তায় হেটে যাওয়া পথ চারীর সুবিধা হবে।

২) মাযারে কুরআন তেলাওয়াত ও জিকির হবে তাই তাদের সুবিধার্থে।

৩) কাউকে সতর্ক জন্য যেন সে দেখা মাত্র দুর থেকে বুঝতে পারে যে এখানে আল্লাহর ওলী শায়ীত আছেন যেন সে দুর থেকে দেখেই সতর্ক হয়ে যায় তখন সে মাযারের সাথে বিয়াদ্দবি করবে না। এসব কারন হলে জায়েয অথবা অন্য যেকোন নেক নিয়তে জায়েয। কিন্তু দিনের বেলা অপচয় করা জায়েয নহে।

তাছাড়া এই হাদিস টি দ্বয়ীফ এই সম্পর্কে আসুন মুহাদ্দিস গনের মতামত দেখে নেই :-

♦দ্বয়ীফ হাদিস : নাসায়ী নিজস্ব সনদে (সূত্রে) ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেছেন,মহানবী (সা.) বলেছেন,‘ আল্লাহ সে সকল নারীর উপর অভিশম্পাত বর্ষণ করুন যারা কবর জিয়ারত করে,আর তাদের উপর অভিশম্পাত  করুন যারা কবরকে মসজিদ বানায় ও সেখানে আলো (প্রদীপ) জ্বালায়।’

★আমাদের উত্তর হলো : উল্লিখিত হাদীসটি সনদ ও দালালাতের দৃষ্টিতে ত্রুটিপূর্ণ এবং সুস্পষ্টভাবে আল্লাহর ওলীদের কবরে (অপচয় ব্যাতীত) আলো জ্বালানোর নিষিদ্ধতার প্রমাণ তাতে নেই। কারণ




হাদীসটির সনদ বা সূত্রগত সমস্যা :

1.  বিশিষ্ট ওয়াহাবী হাদীসবিদ নাসিরউদ্দীন আলবানী ইবনে আব্বাসের হাদীসটি উল্লেখের পর বলেছেন,‘ এ হাদীসটি আবু দাউদ ও অন্যরা বর্ণনা করেছেন কিন্তু সনদের দিক থেকে তা দুর্বল (অর্থাৎ তাতে কয়েকজন দুর্বল বর্ণনাকারী রয়েছেন)। যদিও পূর্ববর্তী আলেমদের অনেকেই উক্ত হাদীসের ভিত্তিতে কথা বলেছেন কিন্তু আমাদেরকে অবশ্যই সত্যকে বলতে হবে ও তার অনুসরণ করতে হবে।’


2. এ হাদীসটিকে যারা দুর্বল বলেছেন তাদের মধ্যে মুসলিমও রয়েছেন। তিনি তার‘ আত তাফসীল’ গ্রন্থে বলেছেন : হাদীসটি নির্ভরযোগ্য নয়। যেহেতু হাদীসটির সনদে আবু সালিহ বাজাম রয়েছে,হাদীসবিদগণ তা গ্রহণে আপত্তি করেছেন। ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনাকারী রাবীর ব্যাপারেও সন্দেহ রয়েছে যে ইবনে আব্বাস হতে এ হাদীসটি শুনেছে কিনা বা শুনার সম্ভাবনা ছিল কিনা?


3. নাসিরুদ্দিন আলবানী  বলেছেন : উক্ত হাদীসটি যে দুর্বল আমি আমার‘ আল আহাদিসুজ জায়িফা ওয়াল মাওজুয়া ও আসারু হাস সাইয়ি ফিল উম্মাহ’ গ্রন্থে তা প্রমাণ করেছি। হাদীস শাস্ত্রবিদদের কেউই আবু সালিহ বাজামের বর্ণিত হাদীসসমূহ হতে প্রমাণ উপস্থাপন করেন না। কারণ তাদের নিকট সে দুর্বল বর্ণনাকারী এবং কেউই তাকে বিশ্বস্ত বা নির্ভরযোগ্য বলেন নি। তবে ইবনে হাব্বান ও আজলী তাকে নির্ভরযোগ্য বললেও তারা উভয়েই অতি উদারতার দোষে দুষ্ট। অন্য কোন সূত্রে বর্ণিত কোন সমর্থক হাদীসও আমরা এক্ষেত্রে পাই না

★আজিজী হাদীসটির ব্যাখ্যায় বলেছেন,‘ হাদীসটি ঐ ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য যখন আলো জ্বালানো হতে জীবিতরা কল্যাণ পায় না। কিন্তু যদি তা হতে কল্যাণ অর্জন করা যায় সেক্ষেত্রে অসুবিধা নেই।’

♦সিন্দী সুনানে নাসায়ীর ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলেছেন,‘ কবরের নিকট প্রদীপ ও আলো জ্বালাতে এজন্যই নিষেধ করা হয়েছে যে,তা অর্থের অপচয় ও কোন কল্যাণই তা থেকে লাভ করা যায় না। যদি কোন ক্ষেত্রে লাভ পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার বিধান থাকবে না।’

♦শেখ আলী নাসেফ বলেছেন,‘ কবরের নিকট আলো জ্বালানো বৈধ (জায়েয) নয়। কারণ এটি অর্থের অপচয়। কিন্তু যদি কোন জীবিত ব্যক্তি কবরের নিকট উপস্থিত থাকে সেক্ষেত্রে আলো জ্বালিয়ে রাখাতে কোন অসুবিধা নেই।’ ২৫০

♦হাদীসটিকে হারাম অর্থে না নিয়ে মাকরূহ অর্থেও নেয়া সম্ভব।

♦ মুসলমানদের চিরাচরিত রীতি ছিল এটি যে,তারা মৃত ব্যক্তিদের বিশেষত আল্লাহর ওলী ও বিশেষ ব্যক্তিদের কবরের নিকট আলো জ্বালিয়ে রাখতেন খতিব বাগদাদী স্বীয় সূত্রে ফিলিস্তিনী এক ব্যক্তি হতে বর্ণনা করেছেন যে,তিনি তুরস্কের কনস্টান্টিনোপলে একটি দেয়ালের পাদদেশে প্রজ্বলিত প্রদীপ দেখে প্রশ্ন করেন : কবরটি কার? এলাকাবাসী জবাব দেয় তা রাসূলের বিশিষ্ট সাহাবী আবু আইয়ুব আনসারীর। কবরের নিকটবর্তী হয়ে দেখতে পান কবরের উপর ছাদ হতে শিকলের সাহায্যে বাতি ঝুলানো রয়েছে।২৫১

♦ইবনে জাওযী বলেছেন,৩৮৬ হিজরী সালের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল বসরার লোকেরা দাবী করেছিল যে,একটি পুরাতন কবরের সন্ধান পেয়েছে যা জুবাইর ইবনে আওয়ামের কবর বলে জানা যায়। তখন চাটাই,প্রদীপ ও অন্যান্য সরঞ্জাম এনে তা পরিপাটি ও সজ্জিত করা হয় এবং সে স্থানের যত্ন নেয়ার জন্য এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দান করা হয়। ঐ স্থানটিও ওয়াক্ফ করে দেয়া হয়।

♦সাফাদী ইমাম মূসা কাজিম (আ.)-এর কবর সম্পর্কে বলেছেন,‘ তাঁর কবর ঐ স্থানে (বাগদাদের নিকটবর্তী কাজেমাইনে) প্রসিদ্ধ এবং লোকজন সেখানে জিয়ারতের জন্য যায়। তার উপর গম্বুজ নির্মিত হয়েছে যাতে স্বর্ণ ও রৌপ্য নির্মিত আচ্ছাদনসহ প্রদীপসমূহ প্রজ্বলিত ছিল। বিভিন্ন ধরনের কার্পেট সেখানে দৃশ্যমান ছিল।২

♦ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত হাদীসটির বিপরীত হাদীসসমূহ আমাদের হাতে রয়েছে যেমন মহানবী (সা.) রাত্রিতে জান্নাতুল বাকীতে যেতেন ও তাঁর সঙ্গে এক ব্যক্তি কবরের নিকট হাতে প্রদীপ জ্বালিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত






মাজার পাকা করা বা এর উপর গম্বুজ নির্মান করা জায়েয :-,

Problem 4 :-

বিশিষ্ট সাহাবী জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
কবরের উপর বিল্ডিং নির্মান করতে নিষেধ করেছেন। (মুসলিম)

Solution 4 :- মাযারে গম্বুজ নির্মান:-

আল- কোরআন ও তফসীর থেকে :-

প্রশ্ন:- মাযার নির্মান সম্পর্কে কোন দলিল আছে কি?স্পষ্ট দলিল থাকলে বলুন।

উত্তর:-
★ মাযার নির্মান সম্পর্কে স্পষ্ট দলিল:-

♦কুরআন মজীদে এরশাদ হয়েছে,

এবং এভাবে আমি তাদের (আসহাবে কাহাফ) বিষয় জানিয়ে দিলাম, যাতে লোকেরা জ্ঞাত হয় যে আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং কিয়ামতে কোনো সন্দেহ নেই; যখন এই সব লোক তাদের (আসহাবে কাহাফ) ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে বিতর্ক করতে লাগলো, অতঃপর তারা বল্লো, ’তাদের গুহার ওপর কোনো ইমারত নির্মাণ করো! তাদের রব (খোদা)-ই তাদের বিষয়ে ভাল জানেন। ওই লোকদের মধ্যে যারা (এ বিষয়ে) ক্ষমতাধর ছিল তারা বল্লো, ‘শপথ রইলো, আমরা তাদের (আসহাবে কাহাফের পুণ্যময় স্থানের) ওপর মসজিদ নির্মাণ করবো’।”
— সূরা কাহাফ, ২১ আয়াত]

♦তাফসীরে কবীর
ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী (রহ:) এই আয়াতের তাফসীরে লেখেন,

কেউ কেউ (ওদের মধ্যে) বলেন যে গুহার দরজা বন্ধ করে দেয়া হোক, যাতে আসহাবে কাহাফ আড়ালে গোপন থাকতে পারেন। আরও কিছু মানুষ বলেন, গুহার দরজায় একটি মসজিদ নির্মাণ করা হোক। তাঁদের এই বক্তব্য প্রমাণ করে যে এই মানুষগুলো ছিলেন ’আল্লাহর আরেফীন (আল্লাহ-জ্ঞানী), যাঁরা এক আল্লাহর এবাদত-বন্দেগীতে বিশ্বাস করতেন এবং নামাযও পড়তেন’।
— তাফসীরে কবীর, ৫ম খণ্ড, ৪৭৫ পৃষ্ঠ


♦ইমাম রাযী (রহ:) আরও লেখেন:

এবং আল্লাহর কালাম – ‘(এ বিষয়ে) যারা ক্ষমতাশালী’ বলতে বোঝানো হয়ে থাকতে পারে ‘মুসলমান শাসকবৃন্দ’, অথবা আসহাবে কাহাফ (মো’মেনীন)-এর বন্ধুগণ, কিংবা শহরের নেতৃবৃন্দ। ‘আমরা নিশ্চয় তাদের স্মৃতিস্থানের ওপরে মসজিদ নির্মাণ করবো’ – এই আয়াতটিতে এ কথাই বোঝানো হয়েছে, ‘আমরা যাতে সেখানে আল্লাহর এবাদত-বন্দেগী করতে পারি এবং এই মসজিদের সুবাদে আসহাবে কাহাফ তথা গুহার সাথীদের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করতে পারি’।
— তাফসীরে কবীর, ৫ম খণ্ড, ৪৭৫ পৃষ্ঠা

অতএব, যারা মাযার-রওযা ধ্বংস করে এবং আল্লাহর আউলিয়াবৃন্দের প্রতি বিদ্বেষভাব প্রদর্শন করে, তারা কুরআন মজীদের সূরা কাহাফে বর্ণিত উপরোক্ত সুস্পষ্ট আয়াতের সরাসরি বিরোধিতা করে। অথচ কুরআন মজীদ স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করে যে আউলিয়া কেরাম (রহ:)-এর মাযার-রওযা নির্মাণ ও তাঁদের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ বৈধ।

মদীনা মোনাওয়ারায় মহানবী (দ:) এবং সর্ব-হযরত আবূ বকর সিদ্দিক (রা:) ও উমর ফারূক (রা:)-এর রওযা মোবারক সবুজ গুম্বজের নিচে সুশোভিত আছে। সাহাবা-এ-কেরাম (রা:)-ই এই রওযাগুলো নির্মাণ করেন যা শরীয়তের দলিল।

♦তাফসীরে জালালাইন’ শিরোনামের বিশ্বখ্যাত সংক্ষিপ্ত ও সহজে বোধগম্য আল-কুরআনের ব্যাখ্যামূলক গ্রন্থে ইমাম জালালউদ্দীন সৈয়ুতী (রহ:) ও আল-মোহাল্লী (রহ:) লেখেন:

(মানুষেরা বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিল), অর্থাৎ, বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীরা (ওই) তরুণ (আসহাবে কাহাফ)-দের বিষয়ে বিতর্ক করছিল যে তাঁদের পার্শ্বে কোনো স্মৃতিচিহ্ন নির্মাণ করা যায় কি-না। এমতাবস্থায় অবিশ্বাসীরা বলে, তাঁদেরকে ঢেকে দেয়ার জন্যে ইমারত নির্মাণ করা হোক। তাঁদের প্রভু-ই তাঁদের অবস্থা সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। কিন্তু যে মানুষেরা ওই তরুণ আসহাবে কাহাফের বিষয়ে বেশি প্রভাবশালী ছিলেন, মানে বিশ্বাসীরা, তারা বল্লেন, আমরা তাঁদের পার্শ্বে এবাদতের উদ্দেশ্যে মসজিদ  নির্মাণ করবো। আর এটি গুহার প্রবেশপথে প্রকৃতই নির্মিত হয়েছিল।
— তাফসীর আল-জালালাইন, ১ম খণ্ড, ৩৮৯ পৃষ্ঠ

♦ইমাম নাসাফী (রহ:) নিজ ‘তাফসীরে নাসাফী’ পুস্তকে লেখেন:

যারা (আসহাবে কাহাফের বিষয়ে) প্রভাবশালী ছিলেন, তারা মুসলমান এবং শাসকবর্গ; এরা বলেন যে গুহার প্রবেশপথে একটি মসজিদ নির্মাণ করে দেবেন, যাতে ‘মুসলমানবৃন্দ সেখানে এবাদত-বন্দেগী করতে পারেন এবং তা (স্মৃতিচিহ্ন) থেকে বরকত আদায় করতে সক্ষম হন’।
— তাফসীর আল-নাসাফী, ৩য় খণ্ড, ১৮ পৃষ্ঠা

মাযার নির্মানের আরো evidance:-

♦ ইমাম শেহাবউদ্দীন খাফফাজী (রহ:) লেখেন:

(গুহামুখে মসজিদ নির্মাণ) সালেহীন তথা পুণ্যাত্মাবৃন্দের মাযার-রওযার পার্শ্বে মসজিদ নির্মাণের প্রামাণিক দলিল, যেমনটি উল্লেখিত হয়েছে ‘তাফসীরে কাশশাফ’ পুস্তকে; আর এই দালানের ভেতরে এবাদত-বন্দেগী করা ’জায়েয’ (বৈধ)।”
— ইমাম খাফফাজী কৃত ‘এনায়াতুল কাদী’, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৮৭ পৃষ্ঠা; দারুস্ সাদির, বৈরুত, লেবানন হতে প্রকাশিত

♦ ইমাম মোহাম্মদ বিন হাসান শায়বানী (রহ:) বলেন,

হযরত ইমাম আবূ হানিফাহ (রহ:) আমাদের জানিয়েছেন এই বলে যে সালিম আফতাস্ আমাদের (তাঁর কাছে) বর্ণনা করেন: ‘এমন কোনো নবী নেই যিনি কা’বা শরীফে আল্লাহর এবাদত-বন্দেগী করতে নিজ জাতিকে ছেড়ে আসেন নি; আর এর আশপাশে ৩০০ জন নবী (আ:)-এর মাযার-রওযা বিদ্যমান’।”
— ইমাম শায়বানীর ‘কিতাবুল আসার’; লন্ডনে Turath Publishing কর্তৃক প্রকাশিত; ১৫০ পৃষ্ঠ

♦ ইমাম শায়বানী (রহ:) আরও বলেন,

ইমাম আবূ হানিফা (রহ:) আমাদেরকে জানিয়েছেন এই বলে যে হযরত আতা’ বিন সায়েব (রা:) আমাদের (তাঁর কাছে) বর্ণনা করেন, ‘আম্বিয়া সর্ব-হযরত হুদ (আ:), সালেহ (আ:) ও শোয়াইব (আ:)-এর মাযার-রওযা মসজিদে হারামে অবস্থিত’।
— ইমাম শায়বানীর ‘কিতাবুল আসার’

♦ ইমাম ইবনে জারির তাবারী (রহ:) নিজ ‘তাফসীরে তাবারী’ পুস্তকে লেখেন:

মুশরিকরা বলেছিল, আমরা গুহার পার্শ্বে একটি ইমারত নির্মাণ করবো এবং আল্লাহর উপাসনা করবো; কিন্তু মুসলমানগণ বলেন, আসহাবে কাহাফের ওপর আমাদের হক বেশি এবং নিশ্চয় আমরা ওখানে ‘মসজিদ নির্মাণ করবো’ যাতে আমরা ওতে আল্লাহর এবাদত-বন্দেগী করতে পারি।
— তাফসীরে তাবারী, ১৫:১৪৯



♦ মোল্লা আলী কারী ওপরে উদ্ধৃত আয়াতের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন:

যে ব্যক্তি কোনো সত্যনিষ্ঠ বোযর্গ বান্দার মাযারের সন্নিকটে মসজিদ নির্মাণ করেন, কিংবা ওই মাযারে (মাক্কবারা) এবাদত-বন্দেগী করেন, অথবা উক্ত বোযর্গের রূহ মোবারকের অসীলায়
(মধ্যস্থতায়) সাহায্য প্রার্থনা করেন, বা তাঁর রেখে যাওয়া কোনো বস্তু থেকে বরকত তথা আশীর্বাদ অন্বেষণ করেন, তিনি যদি (এবাদতে) ওই বোযর্গকে তা’যিম বা তাওয়াজ্জুহ পালন না করেই এগুলো করেন, তবে এতে কোনো দোষ বা ভ্রান্তি নেই। আপনারা কি দেখেননি, মসজিদে হারামের ভেতরে হাতীম নামের জায়গায় হযরত ইসমাঈল (আ:)-এর রওযা শরীফ অবস্থিত? আর সেখানে এবাদত-বন্দেগী পালন করা অন্যান্য স্থানের চেয়েও উত্তম। তবে কবরের কাছে এবাদত-বন্দেগী পালন তখনই নিষিদ্ধ হবে, যদি মৃতের নাজাসাত (ময়লা) দ্বারা মাটি অপবিত্র হয়ে যায়। ….হাজর আল-আসওয়াদ (কালো পাথর) ও মিযা’য়াব-এর কাছে হাতীম জায়গাটিতে ’৭০জন নবী (আ:)-এর মাযার-রওযা’ বিদ্যমান।”
— মিরক্কাত শরহে মিশক্কাত, ২য় খণ্ড, ২০২ পৃষ্ঠা

♦ ইমাম ইবনে জারির তাবারী (রহ:) নিজ ‘তাফসীরে তাবারী’ পুস্তকে লেখেন:

মুশরিকরা বলেছিল, আমরা গুহার পার্শ্বে একটি ইমারত নির্মাণ করবো এবং আল্লাহর উপাসনা করবো; কিন্তু মুসলমানগণ বলেন, আসহাবে কাহাফের ওপর আমাদের হক বেশি এবং নিশ্চয় আমরা ওখানে ‘মসজিদ নির্মাণ করবো’ যাতে আমরা ওতে আল্লাহর এবাদত-বন্দেগী করতে পারি।
— তাফসীরে তাবারী, ১৫:১৪৯

♦ ইমাম আবূ হাইয়ান আল-আনদালুসী (রহ:) বলেন:

তাঁদের (আসহাবে কাহাফের) পার্শ্বে ইমারত নির্মাণের কথা যে ব্যক্তি বলেছিল, সে এক অবিশ্বাসী মহিলা। সে গীর্জা নির্মাণের কথা-ই বলেছিল, যেখানে কুফরী কাজ করা যেতো। কিন্তু মো’মেন বান্দারা তাকে থামিয়ে দেন এবং ওর পরিবর্তে মসজিদ নির্মাণ করেন।
— তাফসীরে বাহর আল-মুহীত, ৭ম খণ্ড, ১৫৮ পৃষ্ঠা

♦ ইবনুল জাওযী, যাকে কট্টর হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং ‘সালাফী’রাও মানে, তিনি উক্ত আয়াতের (১৮:২১) তাফসীরে বলেন:

ইবনে কুতায়বা (রা:) বর্ণনা করেন যে মুফাসসিরীনবৃন্দ মত প্রকাশ করেছিলেন, ওখানে যাঁরা মসজিদ নির্মাণ করেন, তাঁরা ছিলেন মুসলমান রাজা ও তাঁর মো’মেন সাথীবৃন্দ।”
— তাফসীরে যা’য়াদ আল-মাসীর, ৫ম খণ্ড, ১২৪ পৃষ্ঠা

♦ হযরত ইবনে উমর (রা:) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর হাদীস, যিনি বলেন:

মসজিদে আল-খায়ফের মধ্যে (’ফী’) ৭০ জন নবী (আ:)-এর মাযার-রওযা (এক সাথে) বিদ্যমান।
ইমাম আল-হায়তামী (রহ:) বলেন যে এটি আল-বাযযার বর্ণনা করেন এবং ”এর সমস্ত রাবী (বর্ণনাকারী)-ই আস্থাভাজন”। মানের দিক থেকে এই হাদীস সহীহ। ইমাম আল-হায়তামী (রহ:) নিজ ‘মজমাউয্ যাওয়াইদ’ পুস্তকের ৩য় খণ্ডে ‘বাবু ফী মসজিদিল্ খায়ফ’ অধ্যায়ে লিপিবদ্ধ #৫৭৬৯ নং হাদীসটি উদ্ধৃত করেন, যা’তে বিবৃত হয়:

মসজিদে খায়ফের মধ্যে (’ফী’) ৭০ জন আম্বিয়া (আ:)-এর মাযার-রওযা বিদ্যমান।

♦ শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী (রহ:) এ প্রসঙ্গে বলেন,

এই হাদীসের সনদ সহীহ।
— মোখতাসারুল বাযযার, ১:৪৭৬




আল-কুরআন ও হাদীস শরীফের এই সমস্ত ‘নস’ তথা দালিলিক প্রমাণ থেকে পরিস্ফুট হয় যে আম্বিয়া (আ:) ও আউলিয়া (রহ:)-বৃন্দের মাযার-রওযায় ইমারত নির্মাণ করা ইসলামে বৈধ ও সওয়াবদায়ক কাজ। সীমা লঙ্ঘনকারীরা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদেরকে ’মুশরিকীন’ বা মূর্তিপূজারী বলে আখ্যা দেয় এই বলে যে মাযার-রওযাগুলো হচ্ছে ‘মূর্তির ঘর’ (নাউযুবিল্লাহ)

♦ এবং স্মরণ করুন, যখন আমি এ ঘরকে (কা’বা শরীফকে) মানবজাতির জন্যে আশ্রয়স্থল ও নিরাপদ স্থান করেছি; আর (বল্লাম), ‘ইবরাহীমের দাঁড়াবার স্থানকে (মাকামে ইবরাহীম নামের পাথরকে যার ওপর দাঁড়িয়ে তিনি কা’বা ঘর নির্মাণ করেন) নামাযের স্থান হিসেবে গ্রহণ করো’; এবং ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে তাকিদ দিয়েছি, ‘আমার ঘরকে পুতঃপবিত্র করো, তাওয়াফকারী, এ’তেকাফকারী এবং রুকু’ ও সেজদাকারীদের জন্যে।” (জ্ঞাতব্য: তাওয়াফের পরে দু’রাকআত নামায ওখানে পড়তে হয়)
— সূরা বাকারাহ, ১২৫ আয়াত, মুফতী আহমদ এয়ার খানের ’নূরুল এরফান’ বাংলা তাফসীর থেকে সংগৃহীত; অনুবাদক: মওলানা এম, এ, মন্নান, চট্টগ্রাম

ইব্রাহীম (আ) যেখানে দাড়িয়ে কাবা ঘর নির্মান করেছিলেন সেই পাথরকে নিদর্শন করে দিয়েছে আল-কুরআন আর যেখানে তিনি শুয়ে আছে সেই মাযারকে ওহাবী সালাফীর দল মুর্তি, বিদাত শিরিকের কথা বলে সুন্নীদের মুশরিক ফতোয়া দএয়। নাউযুবিল্লাহ।





আমরা এবার ‘কবরের আকার-আকৃতি’ বিষয়টির ফয়সালা করবো।

♦হযরত আবূ বকর বিন আইয়াশ (রা:) বর্ণনা করেন: হযরত সুফিয়ান আত্ তাম্মার (রা:) আমাকে জানান যে তিনি মহানবী (দ:)-এর রওযা মোবারককে উঁচু ও উত্তল দেখতে পেয়েছেন।
— সহীহ বোখারী, ২য় খণ্ড, ২৩তম বই, হাদীস নং ৪৭৩

অতএব, মাযার-রওযা ভেঙ্গে ফেলা বা গুঁড়িয়ে দেয়া ‘সালাফী’দের দ্বারা ‘নস’ বা শরয়ী দলিলের চরম অপব্যাখ্যা ছাড়া কিছুই নয়।

♦মহান হানাফী মুহাদ্দীস ইমাম মোহাম্মদ ইবনে হাসসান শায়বানী (রহ:) এতদসংক্রান্ত বিষয়ে গোটা একটি অধ্যায় বরাদ্দ করে তার শিরোনাম দেন ‘কবরের ওপর উঁচু স্তূপাকৃতির ফলক ও আস্তর’। এই অধ্যায়ে তিনি নিম্নের হাদীসটি লিপিবদ্ধ করেন:


ইমাম আবূ হানিফা (রহ:) আমাদের কাছে হযরত হাম্মাদ (রহ:)-এর কথা বর্ণনা করেন, তিনি হযরত ইবরাহীম (রা:)-এর কথা উদ্ধৃত করেন, যিনি বলেন, কেউ একজন আমাকে জানান যে তাঁরা মহানবী (দ:), হযরত আবূ বকর (রা:) ও হযরত উমর (রা:)-এর মাযার-রওযার ওপরে ‘উঁচু স্তূপাকৃতির ফলক যা (চোখে পড়ার মতো) বাইরে প্রসারিত ছিল তা দেখতে পেয়েছিলেন এবং তাতে আরও ছিল সাদা এঁটেলমাটির টুকরো।
ইমাম মোহাম্মদ (রহ:) আরও বলেন

আমরা (আহনা’ফ) এই মতকেই সমর্থন করি; মাযার-রওযা বড় স্তূপাকৃতির ফলক দ্বারা চিহ্নিত করতে হবে। কিন্তু তা বর্গাকৃতির হতে পারবে না। এটি-ই হচ্ছে ’ইমাম আবূ হানিফা (রহ:)-এর সিদ্ধান্ত’।
— কিতাবুল আসা’র, ১৪৫ পৃষ্ঠা, Turath Publishing কর্তৃক প্রকাশিত

সীমা লঙ্ঘনকারীরা দাবি করে, সকল মাযার-রওযা-ই গুঁড়িয়ে দিতে বা ধ্বংস করতে হবে। এটি সরাসরি সুন্নাহর সাথে সাংঘর্ষিক। কেননা, তারা যে হাদীসটিকে এ ক্ষেত্রে অপপ্রয়োগ করে, তা মুশরিকীন (অংশীবাদী)-দের সমাধি সম্পর্কে বর্ণিত, মো’মেনীন (বিশ্বাসী মুসলমান)-দের কবর সম্পর্কে নয়। মাযার-রওযা নির্মাণ বৈধ, কারণ রাসূলুল্লাহ (দ:), সর্ব-হযরত আবূ বকর (রা:) ও উমর ফারূক (রা:) এবং অন্যান্য সাহাবা (রা:)-দের মাযার-রওযা উঁচু স্তূপাকৃতির ফলক দ্বারা নির্মিত হয়েছিল মর্মে দলিল বিদ্যমান।


♦মুসলমানদের কবর ও মুশরিকীন (অংশীবাদী)-দের সমাধির মধ্যকার পার্থক্য বোঝার জন্যে খেয়াল করবেন:-

১) দেখবেন, খৃষ্টানদের সমাধি সম্পূর্ণভাবে মাটির সাথে মেশানো তথা মাটির সমান, যা ওহাবীরা আমাদের বিশ্বাস করতে বলে এই মর্মে যে, মুসলমানদের কবরও অনুরূপ হওয়া উচিত। [কিন্তু বেশ কিছু হাদীসে ইহুদী ও খৃষ্টানদের বিপরীত করতে আমরা আদিষ্ট হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে মুসলমানদের কবর এক বিঘত পরিমান উচু রাখা সুন্নত (হাদিসে বর্নিত আছে); তবে মাযারের উপর কোনো মূর্তি নির্মাণ করা চলবে না, এমনকি নেইও এই প্রমান কেউ দিতে পারবে না]

২) দ্বিতীয়টি হল যে খৃষ্টানগণ ‘সমাধির ঠিক ওপরে মূর্তি নির্মাণ করেন’। অথচ মুসলমান সূফী-দরবেশদের মাযার-রওযাতে এগুলো করে না।

♦ অন্যান্য হাদিস ও কিতাব সমুহ থেকে প্রমান:-

Proof 1 :-

“হযরত উরওয়া (রা) হতে বর্ণিত,””
তিনি বলেন, ওয়ালিদ ইবনে আব্দুল মালিকের শাসনামলে (৮৬ হিজরীতে) একবার রাসুলুল্লাহ (সা) এর রওযা মুবারকের এক দিকের দেয়াল ধসে গেলে সাহাবায়ে কেরাম তা মেরামত শুরু করেন। মেরামতের সময় হঠাত এক খানা পা দৃষ্টি গোচর হল। উপস্থিত লোকজন মনে করলেন হয়তোবা রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর পা মুবারক হতে পারে। কিন্তু তথায় উপস্থিত হযরত উরওয়া রা: (হযরত আয়েশা রা: এর ভাগিনা) সমবেত লোকদের উদ্দেশ্যে বললেন, না আল্লাহর কসম, এটা নবী করীম (সা) এর পা মুবারক নয়। এটা তো হযরত উমর (রা) এর পা।” সাহাবা কেরামই সর্ব প্রথম নবী করীম (সা), হযরত আবু বক্কর (রা) ও হযরত ঊমর (রা) এর রওযা পাকা করেছিলেন।

Reference :
♦(বুখারি)



★* হযরত উরওয়া ইবনে আল-যুবায়র (রা:) বর্ণনা করেন হযরত আল-মুসাওয়ের ইবনে মাখরামা (রা:) ও মারাওয়ান ইবনে আল-হাকীম (রা:) হতে এই মর্মে যে, আবূ বাসীর (রা:) যখন ইন্তেকাল করেন, তখন আবূ জানদাল ইবনে সোহায়ল ইবনে আমর (রা:) তিন’শ জন সাহাবী (রা:)-এর উপস্থিতিতে ’সাইফ আল-বাহর’ নামের স্থানে তাঁকে দাফন করেন এবং সেখানে তাঁর মাযার-সংলগ্ন একটি মসজিদ নির্মাণ করে দেন [এই রওয়ায়াত ইমাম আবদুর রাযযাক হযরত মু’আমের (রা:)-এর সূত্রে ও অাবূ এসহাক ‘আল-সীরাহ’ পুস্তকে এবং মূসা ইবনে উকবা ‘মাগাযিয়্যাহ’ কেতাবে বর্ণনা করেন]। এই রওয়ায়াতের এসনাদ সহীহ (বিশুদ্ধ) এবং এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন আস্থাভাজন উলেমাবৃন্দ। এই কাজটি মহানবী (দ:)-এর আড়ালে গোপনে সংঘটিত হতে পারে না; এতদসত্ত্বেও রাসূলুল্লাহ (দ:) সেই মাযার অপসারণ বা (ওই সাহাবীর) দেহাবশেষ অন্যত্র স্থানান্তরের নির্দেশ দেননি।

★* বিশুদ্ধ রওয়ায়াতে হুযূর পূর নূর (দ:)-এর কথা উদ্ধৃত হয়েছে; তিনি বলেন: “আল-খায়ফ মসজিদে সত্তর জন আম্বিয়া (আ:)-এর মাযার-রওযা বিদ্যমান।” [আল-বাযযার ও আত্ তাবারানী কৃত ‘আল-মু’জাম আল-কবীর’; মোহাদ্দীস ইবনে হাজর নিজ ‘মোখতাসার যাওয়াঈদ আল-বাযযার’ গ্রন্থে এই হাদীসের সনদ ‘সহীহ’ বলেছেন]


এর দ্বারা বুঝা যায় কবর পাকা ছিল। এবং ভেংগে যাওয়ার পর আবার ঠিক করে পাকা করা হয়েছে।

Proof 2, 3, 4 :-

★ হযরত উমর (রা) উম্মুল মুমেনিন হযরত জয়নাব বিনতে জাহাশ (রা) এর মাজারের উপর গম্বুজ নির্মাণ করেছিলেন।

★ উম্মুল মুমেনিন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা) মক্কায় অবস্থিত তাঁর ভাই হযরত আব্দুর রাহমান (রা) এর কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণ করেন এবং ওনার কবর জিয়ারত করতেন।

★ তায়েফে অবস্থিত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) এর কবরের উপর বিশিষ্ট তাবীঈ মুহাম্মাদ বিন হানফিয়া (র) গম্বুজ নির্মাণ করেছিলেন।

Reference :-
♦ মুন্তাকা সরহে মুয়াত্তায়ে ইমাম মালেক
♦ বাদায়ে সানায়ে

Sollution 4:- মাযারের উপর গম্বুজ বা ইমারত এর দলিল:-

Proof 5:-
♦মদীনায় আল্লাহর রাসূলের (সাঃ) কবর :

‘তাবাকাতে ইবনে সা’দ’ ও ‘সিরেয়ে ইবনে হিশাম’-এ একটি রেওয়ায়েত আছে যার সারসংক্ষেপ নিম্নরূপঃ “রাসূল (সাঃ) নিজ গৃহে ঠিক যে কক্ষে তিনি নিজ প্রাণ মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট সমর্পণ করেছিলেন, সে কক্ষেই সমাধিস্থ হয়েছেন। এরপর, হযরত আবুবকর ও হযরত ওমর-এ দু’ খলিফাকে ও একে একে সেখানে কবরস্থ করা হয়। অতঃপর এ সবুজ গম্বুজ এর উপর নির্মাণ করা হয়।

Reference :-
[তাবাকাতে ইবনে সা’দ খঃ২ পৃঃ২৯২-২৯৪, সিরায়ে ইবনে হিশাম খঃ৪, পৃঃ৩৪৩]




Proof 6,7,8,9,10 :-

♦ইবনে জাওযি ‘হারাম শরীফে শায়িত মহান ব্যক্তিগন” অধ্যায়ে এবং আযরাকী “আখবারে মাক্কা”-তে একটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করেছেন যার সারসংক্ষপ এরূপ ঃ সকল নবীই যাদের উম্মত ধবংশ হতো মক্কায় আসতেন এবং মুমিনদেরকে নিজের সাথে নিয়ে এবাদত করতেন মৃত্যু পর্যন্ত!

♦হূদ (আঃ), সালেহ (আঃ) ও শুয়াইব (আঃ) ছিলেন তাদের অর্ন্তভুক্ত। রোকন ও মাকামে ইব্রাহীম এবং যমযম ও হিজরে ইসমাঈলের মধ্যবর্তী স্থানে নিরানব্বইজন নবীর কবর আছে। আবুবকর ফকীহ মহানবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, বলেন :
এমন কোন নবী ছিলনা যিনি নিজ গোত্র থেকে পৃথক হয়েছেন অথচ কাবায় আসেননি এবং আমৃত্যু আল্লাহর এবাদত করেননি।

♦হুদ (আঃ) শোয়াইব (আঃ) ও সালেহ (আঃ)-এর কবর যমযম ও মাকামে ইব্রাহীমের মধ্যবর্তী স্থানে।

♦হারাম (কাবা) শরীফে তিনশজন নবীর কবর আছে এবং

♦ইয়েমেনী রোকন ও রোকনে আমওয়াদের মধ্যে সত্তরজন নবীকে দাফন করা হয়েছে।

Reference :
[মোখতাসারু কিতাবুল বোলদান, আবুবকর ইবনে ফকীহ হামেদানী (জন্মঃ৩৪০হিঃ) তোরিল, লিদান মুদ্রিত ১৩০২পৃঃ১৭]



Proof 11,12,13,14 :-

♦মাকতাবে আহলে বাইত (আঃ)-এর হাদীসের কিতাব সমূহেও এগুলোর মত রেওয়ায়েত নিম্নলিখিত রূপে এসেছে :
কুলাইনী (৩২৯ হিজরীতে যার মৃত্যু) উসূলে কাফিতে এবং সাদুক (৩৮১ হিজরীতে যার মৃত্যু) মান লা’ ইয়াহজুরুহুল ফকীহ নামক কিতাবে এলালুশ শারায়া’-
তে এবং ফাইয কাশীনী (মৃত্যু (১০৮৯হি) ওয়াফিতে, মাজলিশি (মৃঃ১১১১) বিহারুল আনোয়ারে বর্ণনা করেছেন যে, (কাফি বর্ণনানুসারে)

♦মাতা হাজেরা ও হযরত ইসমাঈল (আ) এর মাযার হিজরে আছে
[ফুরুয়ে কাফী, কিতাবুল হাজ্জ, ইব্রাহীম ও ইসমাঈল (আঃ)-এর হজ্জ অধ্যায় হাদীস নং১৪ খঃ৪, পৃঃ২১০। মান লা ইয়াহজুরুহুল ফাকীহ, কিতাবুল হাজ্জ খঃ২, পৃঃ১২৫ ্ ওয়াফী, কিতাবুল হাজ্জ খঃ৮, পৃঃ২৮ এবং বিহারুল আনওয়ার কিতাবুল নবুওয়াত খঃ৫, পৃঃ ১৪৩ও১৪৪।]

♦অনুরূপ, বর্ণনা করেছেন যে, ‘হিজরে নবীগণের (আঃ) কবর আছে।’

♦হিজরে তৃতীয় রোকনের সীমানায় ইসমাঈল (আঃ)-এর কন্যারা শায়িত।
[ফুরুয়ে কাফী, কিতাবুল হাজ্জ, ইব্রাহীম ও ইসমাঈল (আঃ)-এর হজ্জ অধ্যায় হাদীস নং১৪ খঃ৪, পৃঃ২১০। মান লা ইয়াহজুরুহুল ফাকীহ, কিতাবুল হাজ্জ খঃ২, পৃঃ১২৫ ওয়াফী, কিতাবুল হাজ্জ খঃ৮, পৃঃ২৮ এবং বিহারুল আনওয়ার কিতাবুল নবুওয়াত খঃ৫, পৃঃ ১৪৩ও১৪৪।]


Proof 15

♦ইবনে জুরাইর তার ভ্রমন কাহিনীতে ইসমাঈল (আঃ) ও তাঁর মাতা হাজারের কবরের বর্ণনা দিয়েছেন ঃ

হিজর প্রাঙ্গনে নাভেদানের নাচে বাইতুল্লাহিল হারামের দেয়ালের পাশে হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর কবর। ঐ আলামত হলো সবুজ, মারবেল খচিত এবং মেহরাবের মত আয়াতাকার পাথর যে অন্য একটি মারবেল পাথর এর চার কিনারায় এসে সংযুক্ত হয়েছে। উভয় পাথরই বিষ্ময়কর ভাবে দর্শনীয়। ঐগুলোতে এমন ডোরা ও বিন্দু দাস আছে যে কিছুটা হলুদাভ যেন সেলাই করা ফাঁটন। এবং স্বর্ণ গলানোর পাত্রে অবশিষ্ট থাকা অুু সদৃশ। এর পার্শ্বে ইরাকীদের রোকনের নিকট তাঁর মাতা হাজেরার কবর। এর আলামত ও দেড় গজ মাপের একটি সবুজ পাথর। মানুষ হিজরের এ দু’টি স্থানে নামায আদায় করে বরকত কামনা করে এবং এটা তাদের জন্যে ন্যায়সঙ্গত। কারণ, ঐ দু’টি কবর ছিল ‘বাইতে আতিচ’ থেকে এবং দুটি পবিত্র ও সম্মানিত দেহকে ধারণ করেছে ।
★ যে সমস্ত কবরকে মহান আল্লাহ নূরানী করেছেন অগুলোর বরকতে ঐ স্থানে নামায আদায়কারী ও দোয়াকারীগনকে তিনি লাভবান করেন।
এ দু’টি পবিত্র কবরের দূরত্ব সাত গজ।

Reference :-
♦[ইবনে জুবাইর, মোহাম্মদ ইবনে যুবাইর কেনানী আন্দালোসী —৫৪০ বা ৫৩৯ হিজরীর ১০ রবিউল আউয়্যাল শুক্রবার দিবাগত রাতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৬২৬ হিজরীর ২৭ বা ২৯ শা’বান মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মৃত্যুবরণ করেন।]
♦আব্দুর রহমান ইবনে জাওযী (মৃঃ৫৯৭হিঃ) নিজ কিতাব [‘মাসিরুল গারাম আলসাকিম ইলা আশরাফিল আমাকেন’ দারুল রায়িয়াত লিলনাশর, রিয়াদ, ১৪১৫হিঃ পৃঃ২১৮]




Proof 16:- ♦ আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ ইবনে ইসহাক আলফাকেহী (মৃত্যু ২৭২হিঃ) নিজ কিতাবে [‘মিন আখাবারি মাক্কাহ ফি কাদিমিল দাহর ওয়া হাদীসা’ বৈরুত থেকে প্রকাশিত ১৪১৪ হিজরী আখবারি],

★””ইসমাঈল (আঃ)-এর কন্যাদের কবরসমূহের পরিচিতি’”” নামক অধ্যায়ে লিখেন ঃ বর্ণিত হয়েছে যে,

Proof 17:- ♦ইবনে যুবাইর বলেনঃ এই অর্ধবৃত্ত যা শ্যামের রোকনে সংযুক্ত হয়েছে সেখানে ইসমাঈল (আঃ)-এর কন্যাদের কবর। এ আবি ওমর নিজের হাদীসে বলেন, রাবি, সুফিয়ান থেকে জানতে চেয়েছিলঃ এ স্থানটি কোনটি ? তিনি নিজ হাত দিয়ে পশ্চিমের রোকনের সামনাসামনি যা ইয়েমেনী রোকন ‘দারুল আজালা’র প্রতি ইঙ্গিত করেছিলেন।

Reference :-
এ বিষয়টি [মাক্কাহ পৃঃ১২৩ অনুসারে] ‘আব্দুর রাজ্জাকও তার মোসান্নাফে (খঃ৫ পৃঃ১২০) এবং ‘আযরাক্বী’ (খঃ২পৃঃ৬৬) নিজ কিতাবে উল্লেখ করেছেন।

Proof 18:- ♦সিরাতে ইবনে হিশাম (মৃত্যু ঃ ২১৮হিঃ ), তারিখে তাবারী (মৃত্যু ঃ ৩১০হিঃ), তারিখে ইবনে আছির (মৃত্যুর ৬৩০হিঃ) এবং ইবনে কাছিরে (মৃত্যুঃ৭৭৪হিঃ) একটি রেওয়ায়েত আছে যে বলেন ঃ

“ইসমাঈল (আঃ) তাঁর মা হাজার (রা) এর সাথে ‘হিজরে’ শায়িত আছেন।”
“ইসমাঈল (আঃ) ওয়াসিয়াত করেছিলেন যাতে তাঁর মৃত্যুর পর তাঁকে হিজরে’ তাঁর মায়ের কবরের পাশে সমাধিস্থ করা হয়।”


Proof 19:- ♦ইবনে সা’দ তায় ‘তাবাকাতে’ বলেন ঃ ইসমাঈল (আঃ)-এর বিশ বছর বয়সে তাঁর ‘হাজার’ নব্বই বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
★ ইসমাঈল (আঃ)ও পিতা ইব্রাহীম (আঃ)-এর পর মৃত্যুবরণ করেন এবং মাতা হাজারের পাশে কা’বার দক্ষিণে সমাহিত হন।
অন্য এক রেওয়ায়েতে বলা হয় ঃ ইসমাঈলের (আঃ) কবর নাভেদানের নীচে রোকন ও বাইতুল্লাহর মাঝে অবস্থিত।

Reference :-
[তাবাকতে ইবনে সা’দ (ইউরোপ থেকে প্রকাশিত ) খঃ১, পৃঃ২৫, সংক্ষেপে তা বর্ণনা করা হলো।]

Proof 20:- ♦ কালায়ীর ‘আল-ইকতিফা’ কিতাবে বর্ণিত হয়েছে যে (সংক্ষেপে)ঃ
“হাজেরা , ইসমাঈল এবং তদীয় পুত্র নাবাত হিজরে সমাহিত হয়েছে।”

Reference :-
[‘আল ইকতিফা ফি মাগাযিল মোস্তফা ওয়াল সালাসাতুল খোলাফা, পৃঃ১১৯, তাসহীহ (হোনারী মাসা), মুদ্রনে (ঘুল কারিয়ূনান) আলজ্জাযায়ির ১৯৩১ খ্রীঃ]

Proof 21:-♦

★ বোযর্গানে দ্বীনের বিভিন্ন বর্ণনা থেকে জানা যায়, হযরত ইসমাঈল (আ:) ও তাঁর মাতা সাহেবানী হযরত হাজার (রা:) উভয়-ই (মক্কার) হারাম শরীফের অন্তর্গত আল-হিজর নামের স্থানে সমাহিত হন।

Reference :-
এই তথ্য আস্থাভাজন ইতিহাসবিদগণ উল্লেখ করেছেন এবং তা প্রসিদ্ধ ইসলামী ইতিহাসবেত্তাবৃন্দ কর্তৃক সমর্থিত হয়েছে; এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইবনে এসহাক নিজ ‘সীরাহ’ গ্রন্থে, ইবনে জারির তাবারী তাঁর ‘তারিখ’ পুস্তকে, আস্ সোহায়লী স্বরচিত ‘আল-রওদ আল-উনুফ’ কেতাবে, ইবনুল জাওযী নিজ ‘মুনতাযেম’ বইয়ে, ইবনুল আসির তাঁর ‘আল-কামেল’ পুস্তকে, আয্ যাহাবী স্বরচিত ‘তারিখ আল-ইসলাম’ গ্রন্থে এবং ইবনে কাসীর নিজ ’আল-বেদায়া ওয়ান্ নেহায়া’ কেতাবে। হুযূর পাক (দ:) আল-খায়ফ মসজিদে আম্বিয়া (আ:)-এর মাযার-রওযা এবং আল-হিজর স্থানে ইসমাঈল (আ:) ও তাঁর মায়ের দাফন হবার দুটি খবরেরই সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, অথচ সে সব মাযার-রওযা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেননি।




Facebook এ আমি :-

http://goo.gl/Stkd1o

Top