ওহাবী-জামাতী-সালাফীরা প্রচার করে যে রাসুলুল্লাহ (সা) ছাড়া কেউ সুপারিশ করতে পারবে না তাদের দাঁতভাঙা জবাব।
এই কথাটা কুরআন সুন্নাহ বিরোধী
★ ""আল্লাহতায়ালা শুধুমাত্র একজনকেই সুপারিশের
অনুমতি দেবেন।""
এই উক্তিটি কিছু মানুষের বানোয়াট কথা যারা ওলীগনের বিরোদ্ধে।
★ ""আসলে আয়াত হল : তোমাদের কে আছে আমার অনুমতি ছাড়া শাফায়াত করবে?
★ কুরআন হাদিসে অপর জায়গায় বুঝানো হয়েছে "
"সর্বপ্রথম শাফায়াত কারী হবেন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
অথবা রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সর্বপ্রথম শুপারিশের জন্য মাকামে মাহমুদ পাবে।
তারপর সহিহ হাদিসে আছে,
** আল্লাহর অলী আউলিয়াগন ,পীরগন।
** শহীদগন,
** ওয়াইছ করনী (রহ)
** হক্কানী উলামায়ে কেরাম (যারা আল্লাহর ওলী)
** হাফিজুল কুরআন &
** আল-কুরান,
** আল-কুরআনের সুরা মুলক ,
** রোজা ইত্যাদি ইত্যাদি শাফায়াত করে থাকবে।
তাহলে শুধুমাত্র ১জন কথাটা কি ঠিক? এটা ওহাবী-সালাফীদের বানানো কথা। কোন কুরআন হাদিসের কথা নয়।
আল-কোরআন থেকে শাফায়াত :
★ আল্লাহ বলেন :
ﻗُﻞ ﻟِّﻠَّﻪِ ﺍﻟﺸَّﻔَﺎﻋَﺔُ ﺟَﻤِﻴﻌًﺎ ﻟَّﻪُ ﻣُﻠْﻚُ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻭَﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﺛُﻢَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺗُﺮْﺟَﻌُﻮﻥَ
বলুন, সমস্ত সুপারিশ আল্লাহরই ক্ষমতাধীন, আসমান ও যমীনে তাঁরই সাম্রাজ্য। অতঃপর তাঁরই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। (সুরা যুমার ৪৪)
★ মুমিনদের সুপারিশ প্রসংগে আল্লাহপাক বলেন :
ﻭَﻟَﺎ ﻳَﺸْﻔَﻌُﻮﻥَ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻤَﻦِ ﺍﺭْﺗَﻀَﻰ ﻭَﻫُﻢ ﻣِّﻦْ ﺧَﺸْﻴَﺘِﻪِ ﻣُﺸْﻔِﻘُﻮﻥَ
তারা শুধু তাদের জন্যে সুপারিশ করে, যাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং তারা তাঁর ভয়ে ভীত।(সুরা আম্বিয়া ২৮)।
★ আল্লাহপাক আরো ইরশাদ করেন -
ﻳَﻮْﻣَﺌِﺬٍ ﻟَّﺎ ﺗَﻨﻔَﻊُ ﺍﻟﺸَّﻔَﺎﻋَﺔُ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﻦْ ﺃَﺫِﻥَ ﻟَﻪُ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦُ ﻭَﺭَﺿِﻲَ ﻟَﻪُ ﻗَﻮْﻟًﺎ
দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন এবং যার কথায় সন্তুষ্ট হবেন সে ছাড়া কারও সুপারিশ সেদিন কোন উপকারে আসবে না। (সূরা ত্বোয়া-হা ১০৯)
★ আল্লাহপাক আরো ইরশাদ করেন :
ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻨْﻔَﻊُ ﺍﻟﺸَّﻔَﺎﻋَﺔُ ﻋِﻨْﺪَﻩُ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻤَﻦْ ﺃَﺫِﻥَ ﻟَﻪُ
আর আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন সে ছাড়া তাঁর কাছে কোন সুপারিশ কারো উপকার করবে না।(সূরাঃ সাবা ২৩)
হাদিসের আলোকে :
★★★ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর শাফায়াত :-
★ হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন :
ﺃَﻥ ﻳَﺒْﻌَﺜَﻚَ ﺭَﺑُّﻚَ ﻣَﻘَﺎﻣًﺎ ﻣَّﺤْﻤُﻮﺩًﺍ (সুরা বনী ইসরাঈল ৭৯)
আপনার প্রতিপালক অচিরেই সেইদিন আপনাকে ‘মাক্বামে মাহমূদে’ পৌঁছিয়ে দেবেন’। বিশ্বনবী হাবীবুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিয়ামতের দিন সায়্যিদুশ শুফাআ’ বা শাফাআতকারীদের সর্দার হবেন। এ সত্ত্বেও তিনি সিজদাবনত হবেন আল্লাহর দরবারে এ উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
ﺁﺗﻲ ﺗَﺤْﺖَ ﺍﻟْﻌَﺮْﺵِِ ﻓَﺄَﺧِﺮُّ ﺳَﺎﺟِﺪًﺍ
আমি আরশের নিচে আসব আর সিজদায় লুটিয়ে পড়ব।
★ হাদিস শরীফে আল্লার প্রিয় হাবীব ইরশাদ করেন :-
ﺟَﺎﺑِﺮُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ " ﺃُﻋْﻄِﻴﺖُ ﺧَﻤْﺴًﺎ ﻟَﻢْ ﻳُﻌْﻄَﻬُﻦَّ ﺃَﺣَﺪٌ ﻣِﻦَ ﺍﻷَﻧْﺒِﻴَﺎﺀِ ﻗَﺒْﻠِﻲ، ﻧُﺼِﺮْﺕُ ﺑِﺎﻟﺮُّﻋْﺐِ ﻣَﺴِﻴﺮَﺓَ ﺷَﻬْﺮٍ، ﻭَﺟُﻌِﻠَﺖْ ﻟِﻲَ ﺍﻷَﺭْﺽُ ﻣَﺴْﺠِﺪًﺍ ﻭَﻃَﻬُﻮﺭًﺍ، ﻭَﺃَﻳُّﻤَﺎ ﺭَﺟُﻞٍ ﻣِﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﺃَﺩْﺭَﻛَﺘْﻪُ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓُ ﻓَﻠْﻴُﺼَﻞِّ،ﻭَﺃُﺣِﻠَّﺖْ ﻟِﻲَ ﺍﻟْﻐَﻨَﺎﺋِﻢُ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﻳُﺒْﻌَﺚُ ﺇِﻟَﻰ ﻗَﻮْﻣِﻪِ ﺧَﺎﺻَّﺔً، ﻭَﺑُﻌِﺜْﺖُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻛَﺎﻓَّﺔً، ﻭَﺃُﻋْﻄِﻴﺖُ ﺍﻟﺸَّﻔَﺎﻋَﺔَ "
হযরত জাবির ইবনুূু আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: আমাকে এমন পাঁচটি বিষয় প্রদান করাহয়েছে, যা আমার আগে কোন নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেয়া হয়নি।
১। আমাকে এমন প্রভাব দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে যা একমাসের দূরত্ব পর্যন্ত অনুভূত হয়।
২। সমস্ত জমিন আমার জন্য সালাত (নামাজ) আদায়ের স্থান ও পবিত্রতা অর্জনের উপায় করা হয়েছে। কাজেই আমার উম্মতের যে কেউ যেখানে সালাত-এর ওয়াক্ত হয় (সেখানেই) যেন সালাত আদায় করে নেয়।
৩। আমার জন্য গণীমতের মাল হালাল করা হয়েছে যা ইতিপূর্বে কারো জন্যই হালাল ছিল না।
৪। প্রত্যেক নবী প্রেরিত হতেন কেবলমাত্র তার সম্প্রদায়ের জন্য, কিন্তু
আমি প্রেরিত হয়েছি সমগ্র মানব জাতির জন্য।”
৫। আমাকে (সর্ব প্রথম ও ব্যাপকভাবে) শাফায়াতের অধিকার প্রদান করা হয়েছে।(সহিহ বুখারী/৪২৫ইফা/আহমাদ ১৪২৬৮)
★ হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: প্রত্যেক নবী কে তাঁর উম্মাতের ব্যাপারে একটি করে এমন দু’আর অনুমতি দেয়া হয়েছে, যা অবশ্যই কবুল করা হবে। আমি সংকল্প করেছি, আমার দু’আটি পরে আমার উম্মাতের শাফাআতেরজন্য করব।(সহীহ মুসলিম/ইফা৩৮৯)
★ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন :-
ﺩَﻋْﻮَﺗِﻲ ﺷَﻔَﺎﻋَﺔً ﻟِﺄُﻣَّﺘِﻲ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ
আমি আমার দু‘আকে ক্বিয়ামাতের দিনে আমার উম্মাতের শাফা‘আতের জন্য রেখে দিয়েছি।
★ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :-
ﺃَﻧَﺎ ﺃَﻭَّﻝُ ﺷَﺎﻓِﻊٍ ﻭَ ﺃَﻭَّﻝُ ﻣُﺸَﻔَّﻊٍ (ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
“আমিই প্রথম সুপারিশকারী এবং আমার শাফাআতই প্রথম গ্রহণ করা হবে। (বুখারী, মুসলিম)
★ অপর হাদিসে আছে :
ﺃَﻧَﺎ ﺃَﻭَّﻝُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻳَﺸْﻔَﻊُ ﻓِﻰ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ﻭَﺃَﻧَﺎﺃَﻛْﺜَﺮُ ﺍﻷَﻧْﺒِﻴَﺎﺀِ ﺗَﺒَﻌًﺎ
হযরত আনাস ইবনু মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন জান্নাত সম্পর্কে আমই হবো সর্বপ্রথম সুপারিশকারী এবং এত অধিক সংখ্যক মানুষ আমার প্রতি ঈমান আনবে,যা অন্য কোন নবী র বেলায় হবে না। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দের কেউ কেউ তো এমতাবস্হায়ও আসবেন,যার প্রতি মাত্র এক ব্যাক্তিই ঈমান এনেছে। (সহীহ মুসলিম/ইফা ৩৮১ )
♦হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু
আনহুমা বলেন,নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামা ইরশাদ করেছেন...
ﺇﻥ ﺍﻟﺸﻤﺲ ﺗﺪﻧﻮ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﺣﺘﻰ ﻳﺒﻠﻎ ﺍﻟﻌﺮﻕ ﻧﺼﻒ
ﺍﻷﺫﻥ، ﻓﺒﻴﻨﺎ ﻫﻢ ﻛﺬﻟﻚ ﺍﺳﺘﻐﺎﺛﻮﺍ ﺑﺂﺩﻡ، ﺛﻢ ﺑﻤﻮﺳﻰ، ﺛﻢ ﺑﻤﺤﻤﺪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ )). ﻭﺯﺍﺩ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺣﺪﺛﻨﻲ ﺍﻟﻠﻴﺚ ﺣﺪﺛﻨﻲ ﺍﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺟﻌﻔﺮ: (( ﻓﻴﺸﻔﻊ
ﻟﻴﻘﻀﻰ ﺑﻴﻦ ﺍﻟﺨﻠﻖ، ﻓﻴﻤﺸﻲ ﺣﺘﻰ ﻳﺄﺧﺬ ﺑﺤﻠﻘﺔ ﺍﻟﺒﺎﺏ، ﻓﻴﻮﻣﺌﺬ ﻳﺒﻌﺜﻪ ﺍﻟﻠﻪ
ﻣﻘﺎﻣﺎ ﻣﺤﻤﻮﺩﺍ، ﻳﺤﻤﺪﻩ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺠﻤﻊ ﻛﻠﻬﻢ
অবশ্যই কিয়ামতের দিন সূর্য মানুষের কাছেই
চলে আসবে।তাদের শরীর থেকে এতবেশি ঘাম বের
হবে যা কান পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।এমন কঠিন
মুহুর্তে তারা প্রথমে হযরত আদম আলাইহিস সালাম
এর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে।তারপর হযরত
মুসা আলাইহিস সালাম এর কাছে সাহায্য
প্রার্থনা করবে।(এভাবে একেক নবী আলাইহিস
সালাম এর কাছে সাহায্য
প্রার্থনা করতে করতে অবশেষে) নবীদের
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা এর
কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে।সুবহানাল্লাহ!
সূত্র:সহীহুল বুখারী
কিতাব:কিতাবুয যাকাত
বাব:বাবু মান সায়ালান নাসু তাকসুরান
★ হজরত ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
আমরা নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে এক যিয়াফতে উপস্থিত ছিলাম। তাঁর সামনে (রান্না করা) ছাগলের বাহু পেশ করা হল, এটা তাঁর কাছে পছন্দনীয় ছিল। তিনি সেখান থেকে এক টুকরা খেলেন এবং বললেন, আমি কিয়ামতের দিন সমগ্র মানব জাতির সরদার হব। তোমরা কি জানো? আল্লাহ কিভাবে (কিয়ামতের দিন)একই সমতলে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল মানুষকে একত্রিত করবেন? যেন একজন দর্শক তাদের সবাইকে দেখতে পায় এবং একজন আহ্বানকারীকে ডাক সবার কাছে পোঁচছায়। সূর্য তাদের অতি নিকটে এশে যাবে। তখন কোন কোন মানুষ বলবে, তোমরা কি লক্ষ্য করনি, তোমরা কি অবস্তায় আছে এবং কি পরিস্তিতির সম্মুখীন হয়েছে। তোমরা কি এমন ব্যাক্তিকে খুঁজে বের করবে না, যিনি তোমাদের জন্য তোমাদের রবের নিকট সুপারিশ করবেন? তখন কিচু লোক বলবে, তোমাদের আদম পিতা আদম আলাইহি ওয়া সাল্লাম আছেন। (চল তাঁর কাছে যাই)। তখন সকলে তাঁর কাছে যাবে এবং বলবে, হে আদম! আপনি সমস্ত মানব জাতির পিতা। আল্লাহ আপনাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন এবং তার পক্ষ থেকে রূহআপনার মধ্যে ফুঁকেছেন। তিনি ফিরিশ্তাদেরকে (আপনার সম্মানের) নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী সকলে আপনাকে সিজ্দাও করেছেন এবং তিনি আপনাকে জান্নাতে বসবাস করতে দিয়েছেন। আপনি কি আমাদের জন্য রবের নিকট সুপারিশ করবেন না? আপনি দেখেন না আমরা কি অবশ্তায় আছি এবং কি কষ্টের সম্মুখীন হয়েছি? তখন তিনি বলবেন,আমার রব আজ এমন রাগান্বিত হয়েছেন, এর পূর্বে এমন রাগান্বিত হননি আর পরেও এমন রাগান্বিত হবেন না। আর তিনি আমাকে বৃক্ষটি থকে (ফল খেতে) নিষেধ করেছিলেন। তখনআমি ভুল করেছি। এখন আমি নিজের চিন্তায় ব্যস্ত। তোমরা আমি ব্যতিত অন্য কার কাছেযাও। তোমরা নূহের কাছে চলে যাও। তখন তারা নূহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আসবেএবং বলবে, হে নূহ! পৃথিবীবাসীদের নিকট আপনিই প্রথম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং আল্লাহ আপনার নাম রেখেছেন কৃতজ্ঞ বান্দা। আপনি কি লক্ষ্য করেছেন না, আমরা কি ভয়াবহ অবশ্তায় পরে আছি? আপনি দেখছেন না আমরা কতইনা দুঃখ কষ্টের সম্মুখীন হয়ে আছি? আপনি কি আমাদের জন্য আপনার রবের কাছে সুপারিশ করবেননা? তখন তিনি বলবেন, আমার রব আজ এমন রাগান্বিত হয়ে আছেন, যা ইতিপূর্বে হন নাই এবং এমন রাগান্বিত পরেও হবেন না। এখন আমি নিজের চিন্তায় ব্যস্ত। তোমরা নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মুহাম্মদ)–এর কাছে চলে যাও। তখন তারা আমার কাছে আসবে আর আমি আরশের নীচে সিজ্দায় পড়ে যাবে।তখন বলা হবে, হে মুহাম্মদ! আপনার মাথা উঠান এবং '''সুপারিশ করুন। আপনার সুপারিশ গ্রহন করা হবে আর আপনি যা চান, আপনাকে তাই দেওয়া হবে।````
( অধ্যায় : আম্বিয়া কিরাম সহীহ বুখারি/ ইফা ৩১০৪)
♦সহীহ বুখারী শরীফে বর্নিত আছে-
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
ইরশাদ মুবারক করেন, "
কিয়ামতের দিন হাশরবাসীগন
বিক্ষিপ্ত ভাবে ছোটাছুটি করে একজন
অন্যজনের নিকট চলে যাবে। অতঃপর
তারা হযরত আদম আলাইহিস সালাম
উনার নিকট এসে বলবে, আপনি আপনার রবের
নিকট আমাদের জন্য সুপারিশ করুন।
তখন তিনি বলবেন, আমি এখন
একাজে উপযুক্ত
নই। তোমাদের এ ব্যাপারে ইব্রাহিম
আলাইহিস সালাম উনার নিকট
যাওয়া উচিত। কেননা তিনি হচ্ছেন পরম
করুনাময় আল্লাহ পাক উনার খলীল।
সূতরাং তারা হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস
সালাম উনার নিকট এসে সুপারিশ
প্রর্থনা করবে। তিনিও বলবেন,
আমি একাজে সক্ষম নই। সুপারিশের
জন্য
তোমরা হযরত মুসা আলাইহিস সালাম
উনার
কাছে যাও। কেননা তিনি আল্লাহ পাক
উনার সাথে কথা বলেছিলেন। অতপর
তারা মুসা আলাইহিস সালাম উনার নিকট
আসবে এবং সুপারিশ প্রার্থনা করবে।
তিনি বলবেন আমিও সক্ষম নই।
তবে তোমাদের হযরত ঈসা আলাইহিস
সালাম উনার কাছে যাওয়া উচিত।
কেননা তিনি হচ্ছেন, রুহুল্লাহ। তখন
তারা ঈসা আলাইহিস সালামের
কাছে আসবে এবং সুপারিশ
প্রার্থনা করবে। তিনিও বলবেন আমি এ
ব্যাপারে সক্ষম নই। তবে তোমাদের
হযরত সাইয়্যিদুনা মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এর নিকট যাওয়া উচিত।
তখন তারা আমার নিকট আসবে,
আর আমি তাদের আশ্বস্ত
করে বলবো, আমিই এ ব্যাপারে সক্ষম।
তখন আমি আমার প্রতিপালকের নিকট
অনুমতি প্রার্থনা করবো।"
[তথ্যসূত্রঃ- সহীহ বুখারী শরীফ]
♦এ প্রসঙ্গে হাসীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে :-
ﻗﺎﻝ ﻛﺎﻥ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻛﻨﺖ ﺍﻣﺎﻡ ﺍﻟﻨﺒﻴﻴﻦ ﻭ
ﺧﻄﻴﺒﻬﻢ ﻭ
ﺻﺎﺣﺐ ﺷﻔﺎﻋﺘﻬﻢ ﻏﻴﺮ ﻓﺨﺮ
অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক
করেন, কিয়ামতের দিন আমিই
হবো সমস্ত
নবী রসূল আলাইহিমুস সালামগনের ইমাম
ও তাদের খতীব এবং আমিই হবো তাঁদের
ছহিবে শাফায়াত এতে আমার কোন অহংকার
নেই।"
[তথ্যসূত্রঃ- সুনানে তিরমিযী শরীফ,
মিশকাত শরীফ ৫১৪ পৃষ্ঠা]
♦সহিহ হাদিস মতে আল্লাহর তাবেয়ী, প্রিয় ওলীগন ও অন্যান্য বান্দাগনের সুপারিশ:-
♦তাপস্যকুল শিরোমণি বিখ্যাত ওলী ও আশিকে রাসুল (সা) হযরত উয়ায়স করনীর শ্রেষ্টত্ব সম্বন্ধে আল্লাহর রাসুলের হাদীসের কয়েকটি হাদিসের তরজমা করা হইল :-
♦হযরত ওমর (রা.) বলিয়াছেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺকে বলিতে শুনিয়াছি, নিশ্চয়ই , অনুগতদিগের (খায়রুত্তাবেয়ীন) মধ্যে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি যাহার নাম উয়ায়ছ। তাহার মা আছে এবং তাহার শরীরে একটি শ্বেত চিহ্ন আছে। তোমরা (তাহার সংগে দেখা করিয়া) অনুরোধ করিবে যেন সে তোমাদের ক্ষমার জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে।
(মুসলিম শরীফ ৬২৬০/ মিশকাত ৬০০৬)
♦হযরত উমর বিন খাত্তাব হইতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূলﷺ বলিয়াছেন, “নিশ্চয়ই ইয়েমেন হইতে তোমাদের নিকট এক লোক আসিবে যে উয়ায়ছ নামে অবিহীত। সে তাহার মাতার জন্য ইয়েমেন ত্যাগ করিতে পারে না। তাহার শরীরে শ্বেত রোগ ছিল। সে আল্লাকে ডাকিল, তাহার শ্বেত রোগ এক দিরহাম পর্যন্ত ব্যতীত দূর হইয়া গেল। তোমাদের মধ্যে যে কেহ তাহার সাক্ষাত পাও তাহাকে অনুরোধ করিবে যেন সে তোমাদের মাগফিরাতের জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে ।
(মুসলিম শরীফ ৬২৫৯/ মিশকাত শরীফ ৬০০৬)
♦রাসূলল্লাহ হযরত ওমরকে বলিলেন, উয়ায়ছ ইবনে আমর মুজাহিদগণের সাহায্যার্থে আগমনকারী ইয়েমেনবাসীদের সহিত তোমাদের নিকট আসিবে। সে মুজার গোত্রের কারণ শাখার অন্তর্ভুক্ত। তাহার ধবল রোগ ছিল। (আল্লাহর নিকট দোয়া করিবার কারণে) এক দিরহাম পরিমান স্থান ব্যতীত সে উহা হইতে আরোগ্য লাভ করে। তাহার মাতা আছে। সে তাহার মাতার সহিত সদ্ব্যবহার করে। সে আল্লাহর নিকট শপথ করিলে, আল্লাহ তাহা পূরণ করে। তাহার দ্বারা তোমাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা করাইতে সক্ষম হইলে তাহা করাইবে।
(মিশকাত শরীফ)
♦ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের
এক বিশেষ ওলী আল্লাহর সুপারিশ
করা সম্পর্কে ইরশাদ করেন,
"হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবুল
জাদয়া রদ্বিয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্নিত, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে বলতে শুনেছি, আমার উম্মতের
এক ব্যক্তির সুপারিশে বনী তামীম
গোত্রের লোক সংখ্যা হতেও অধিক
লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
[তথ্যসূত্রঃ- সুনানে তিরমিযী শরীফ,
সুনানে ইবনে মাজাহ, মিশকাত শরীফ
৫৩৬১, সুনানে দারেমী]
নোট : এই হাদিসটি অনেক উলামায়ে কেরাম ""আশিকে রাসুল (সা) বিখ্যাত তাবেযী ওয়াইস করনী (রহ) এর কথা বলে উল্লেখ করেছেন। নিচে বর্নিত হয়েছেন।
♦রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন," হযরত উয়ায়ছ করণীর শাফায়াতে রাবী ও মুজার গোত্রের মেষের পশম সমপরিমান লোক বেহেশতে যাইবে।
(মিশকাত শরীফ)
♦হযরত আবি মাসউদ-উল-আনসারী হতে বর্নিতঃ রাসূল ﷺ বলেছেন,
“আমার উম্মতের ভিতর এক ব্যক্তি, যাহাকে লোকে উয়ায়েছ ইবনে আবদুল্লাহ্ করণী বলে, তাহার প্রার্থনায় অবশ্যই রাবিয়া ও মুজার এই দুই গোত্রের বকরীর পশমের সংখ্যক গুনাহ্গার উম্মতের গুনাহ্ মাফ হইবে।”
(শওয়াহেদুন-নবুওয়াত/মছনবী রহীম)
♦ হযরত আনাস (রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে বর্ণিত, হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) ফরমায়েছেন,
ﻳﺸﻔﻊ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﺛﻼﺛﺔ ﺍﻻﻧﺒﻴﺎﺀ ﺛﻢ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ
ﺛﻢ ﺍﻟﺸﻬﺪﺍﺀ
অর্থ: কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণীর
লোক সুপারিশ করবে।
(১) নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম ।
(২) উলামায়ে কিরাম (বা আউলিয়া কেরাম)
রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
(৩) শহীদ গন।"
[সুনানে ইবনে মাজাহ
শরীফ, মিশকাত শরীফ ৫৩৭০]
নোট: পুর্ববর্তী হক্কানী উলামায়ে কেরাম (রহ) গন সব আল্লাহর ওলী ছিলেন।
আর ওলীগনের মর্যাদা আর ক্ষমতা উলামায়ে কেরাম থেকে অনেক বেশি।
♦এই হাদিসটার সনদ দিতে গিয়ে মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি (রহ) বলেন," হাশরের মাঠে পিয়ারা নবীর নির্দেশে নবীগণ তাদের উম্মতদের, আউলিয়াগণ তাদের মুরিদদের এবং শহীদগণ তাদের মা-বাবার জন্য সুপারিশ করবে।
(মসনদে গোয়ারভী শরীফ, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৩৬২)
♦অপর হাদিসে আছে :-
ﻭ ﺍﺫﺍ ﺭﺃﻭﺍ ﺍﻧﻬﻢ ﻗﺪ ﻧﺠﻮﺍ ﻓﻲ ﺍﺧﻮﺍﻧﻬﻢ ﻳﻘﻮﻟﻮﻥ ﺭﺑﻨﺎ ﺍﺧﻮﺍﻧﻨﺎ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻳﺼﻠﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭﻳﺼﻠﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭ ﻳﺼﻮﻣﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭ ﻳﻌﻤﻠﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻓﻴﻘﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﺍﺫﻫﺒﻮﺍ ﻓﻤﻦ ﻭﺟﺪﺗﻢ ﻓﻲ ﻗﻠﺒﻪ ﻣﺜﻘﺎﻝ ﺩﻳﻨﺎﺭ ﻣﻦ ﺍﻳﻤﺎﻥ ﻓﺎﺣﺮﺣﻮﻩ ﻭ ﻳﺤﺮﻡ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻮﺭﻫﻢ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﻓﻴﺎﺗﻮﻧﻬﻢ ﻭﺑﻌﻀﻬﻢ ﻗﺪ ﻏﺎﺏ ﻓﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﺍﻟﻲ ﻗﺪﻣﻪ ﻭ ﺍﻟﻲ ﺍﻧﺼﺎﻑ ﺳﺎﻗﻪ ﻓﻴﺨﺮﺟﻮﻥ ﻣﻦ ﻋﺮﻓﻮﺍ
যখন আল্লাহর অলীগণ দেখবে যে তারা মুক্তি পেয়ে গেল , তখন তাদের মুমীন ভাইদের জন্য তারা আল্লাহর কাছে আবেদন করবে "হে আমার প্রতিপালক এরা আমাদের ভাই, যাদেরকে তুমি জাহান্নামে নিক্ষেপ করেছ তারা আমাদের সাথে নামাজ পড়ত , আমাদের সাথে রোজা রাখত এবং আমাদের সাথে সত্কাজ করত "। তখন আল্লাহ বলবেন "যাদের অন্তরে শুধুমাত্র এক দিনার ওজন পরিমাণ ঈমান পাবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আস । তাদের মুখমন্ডল তথা আকৃতিকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দেওয়া হয়েছে " । অতঃপর তারা (অলীগণ) সেখানে জাহান্নামীদের নিকট যাবেন । এসে দেখবেন কেউ কেউ পা পর্যন্ত কেউ পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত আগুনে ডুবে আছে । এর মধ্যে যাদের তারা চিনবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আসবে ।
(সহীহ বুখারী , খন্ড ২ পৃষ্ঠা ১১০৭ । হাদীস নং ৭০০১)
♦ সহিহ হাদিসে বর্নিত :-
ﻓﻮﺍﻟﺬﻱ ﻧﻔﺴﻲ ﺑﻴﺪﻩ ﻣﺎ ﻣﻮﻛﻢ ﻣﻦ ﺍﺣﺪ ﺑﺎﺷﺪ ﻣﻨﺎﺷﺪﺓ ﻟﻠﻪ ﻓﻲ ﺍﺳﺘﻘﺼﺎﺀ ﺍﻟﺤﻖ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﻮﻣﻨﻴﻦ ﻟﻠﻪ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻻﺧﻮﺍﻧﻬﻢ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻓﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﻳﻘﻮﻟﻮﻥ ﺭﺑﻨﺎ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻳﺼﻮﻣﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭ ﻳﺼﻠﻮﻥ ﻭ ﻳﺤﺠﻮﻥ ﻓﻴﻘﺎﻝ ﻟﻬﻢ ﺍﺣﺮﺟﻮﺍ ﻣﻦ ﻋﺮﻓﺘﻢ
আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ (ওলীগন) তাদের ঐ সমস্ত মুমীন ভাইদের জন্য শুপারিস করবে যারা জাহান্নামে পড়ে থাকবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে ছাড়িয়ে আনার জন্য আল্লাহর দরবারে এমনভাবে আবদারের পর আবদার করতে থাকবে, যে রকম আবদার কোন ব্যক্তি তার নিজ হক আদায়ের জন্যও সাধারণত করে না । এবং তারা আল্লাহর দরবারে আবেদন করবেন হে আমাদের রব এ সমস্ত লোক আমাদের সাথে রোজা রাখত, নামাজ পড়ত, হজ্ব করত ।
(সহীহ মুসলিম । খন্ড ১
পৃষ্ঠা ১০৩ হাদিস ১৮৩)
♦আরো বর্নিত আছে :-
ﻋﻦ ﺍﻧﺲ ﺍﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﺭﺽ ﺍﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ ﻗﺎﻻﻥ ﻣﻦ ﺍﻣﺘﻲ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﻔﺌﺎﻡ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻭ ﻣﻨﻬﻢ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﻘﺒﻴﻠﺔ ﻭ ﻣﻨﻬﻢ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﻌﺼﺒﺔ ﻭ ﻣﻨﻬﻢ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﺮﺟﻞ ﺣﺘﻲ ﻳﺪﺧﻠﻮﺍ ﺍﻟﺠﻨﺔ
হযরত আবূ সাঈদ রঃ হতে বর্ণিত , রাসুল দঃ এরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু লোক আছেন যারা একটি বিরাট দল এর (বা তাদের সকল সমর্থক ও অনুসারীদের) জন্য সুপারিশ করবে । আর কিছু লোক আছেন যারা একটি দলের (বা আত্তীয় স্বজনদের) জন্য সুপারিশ করবে । আর কিছু লোক আছে যারা এক এক জনের জন্য সুপারিশ করবে । এভাবে তারা সকলেই জান্নাতে প্রবেশ করবে ।
[আল হাদিস, তিরমীযি খন্ড ২ পৃঃ ৬৭ , হাদিস ২৪৪০,
মিশকাত শরীফ ৫৩২৬]
হাফেজগনের সুপারিশ :-
ﻋﻦ ﻋﻠﻲ ﺑﻦ ﺍﺑﻲ ﻃﺎﻟﺐ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ ﻣﻦ ﻗﺮﺃ ﺍﻟﻘﺮﺍﻥ ﻭ ﺣﻔﻈﻪ ﺍﺩﺧﻠﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻭﺷﻔﻌﻪ ﻓﻲ ﻋﺸﺮﺓ ﻣﻦ ﺍﻫﻞ ﺑﻴﺘﻪ ﻛﻠﻬﻢ ﻗﺪ ﺍﺳﺘﻮﺟﺒﻮﺍ ﺍﻟﻨﺎﺭ
হযরত আলী ইবনে আবি তালিব রঃ হতে বর্ণিত , তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ দঃ এরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি কোরআন শরীফ পাঠ করল এবং মুখস্হ করল , আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং তাকে তার বংশধর হতে এমন দশজনকে সুপারিশ করতে পারবে যাদের উপর জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে গিয়েছিল ।
(আল হাদিস. তিরমীজি খন্ড ২ হাদিস ১১৪, ইবনে মাজাহ হাদিস ২১৬)
সহীহ হাদীস শরীফে আরো বর্নিত আছে :-
ﻣﻦ ﻗﺮﺃ ﺍﻟﻘﺮﺍﻥ ﻓﺎﺳﺘﻈﻬﺮﻩ ﻓﺎﺣﻞ ﺣﻼﻟﻪ ﻭ
ﺣﺤﺮﻡ ﺣﺮﺍﻣﻪ
ﺍﺩﺧﻠﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻭﺷﻔﻌﻪ ﻓﻲ ﻋﺸﺮﺓ ﻣﻦ
ﺍﻫﻞ ﺑﻴﺘﻪ ﻛﻠﻬﻢ
ﻗﺪ ﻭﺟﺒﺖ ﻟﻬﻢ ﺍﻟﻨﺎﺭ
অর্থ: যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ
পড়ে এবং উহাকে সমুন্নত রাখে আর
উহার মধ্যে বর্নিত হালালকে হালাল
এবং হারামকে হারাম জানে। আল্লাহ
পাক তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন
এবং তার পরিবারস্থ লোকদের
মধ্যে থেকে এমন দশজন
ব্যক্তি সম্পর্কে তার সুপারিশ কবুল
করবেন, যাদের জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব
হয়েছে।"
[তথ্যসূত্রঃ- মুসনাদে আহমদ,
সুনানে তিরমিযী শরীফ,
সুনানে ইবনে মাজাহ, মিশকাত শরীফ,
দারেমী]
শুধু তাই নয়, ★ কুরআন শরীফ
এবং ★রোজাও বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। হাদীস
শরীফে আছে -
♦আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই হওয়া সাল্লাম বলেছেন:
« الصِّيَامُ وَالْقُرْآنُ يَشْفَعَانِ لِلْعَبْدِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَقُولُ الصِّيَامُ أَىْ رَبِّ مَنَعْتُهُ الطَّعَامَ وَالشَّهَوَاتِ بِالنَّهَارِ فَشَفِّعْنِى فِيهِ. وَيَقُولُ الْقُرْآنُ مَنَعْتُهُ النَّوْمَ بِاللَّيْلِ فَشَفِّعْنِى فِيهِ. قَالَ فَيُشَفَّعَانِ
”রোযা এবং কুরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোযা বলবে, হে প্রভু, আমি তাকে দিনের বেলায় খাদ্য ও প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণে বাধা দিয়েছিলাম। অত:এব আপনি তার ব্যাপারে আমার শাফায়ত কবুল করুন। আর কুরআন বলবে, আমি তাকে রাতের বেলায় ঘুম থেকে বাধা দিয়েছিলাম। অতএব,তার ব্যাপারে আমার শাফায়ত কবুল করুন। অত:পর তাদের শাফায়াত কবুল করা হবে।”
[মুসনাদ আহমদ,
মুসনাদে আব্দুল্লাহ ইবনে আমর হাদীস নং ৬৭৮৫,
শামেলা, সনদ সহীহ
আল-মুস্তাদরাক, হাদীস নং ২০৩৬
তাবরানী শরীফ, সুনানুল কুবরা,
ইবনে আবিদ্দুনইয়া]
♦রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
اقْرَءُوا الْقُرْآنَ فَإِنَّهُ يَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ شَفِيعًا لِأَصْحَابِهِ
"তোমরা কুরআন পাঠ কর। কেননা,কুরআন কিয়ামতের দিন তার পাঠকদের জন্য সুপারিশ কারী হবে।"(সহীহ মুসলিম)।
♦সূরা মূলক বান্দার জন্য সুপারিশ
করবে। হাদীস শরীফে বর্নিত আছে -
ﺍﻥ ﺳﻮﺭﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﻘﺮﺍﻥ ﺛﻼ ﺛﻮﻥ ﺍﻳﺔ ﺷﻔﻌﺖ
ﻟﺮﺟﻞ ﺣﺘﻲ
ﻏﻔﺮﻟﻪ ﻭﻫﻲ ﺗﺒﺎﺭﻙ ﺍﻟﺬﻱ ﺑﻴﺪﻩ ﺍﻟﻤﻠﻚ
অর্থ: নিশ্চয়ই কুরআন শরীফে ত্রিশ
আয়াত বিশিষ্ট
একখানা সূরা আছে যা তার পাঠকারীর
জন্য সুপারিশ করবে। আর তা হচ্ছে-
সূরা মুলক।"
[তথ্যসূত্রঃ- মুসনাদে আহমদ,
সুনানে আবু দাউদ, সুনানে নাসাঈ,
সুনানে ইবনে মাজাহ,
মুস্তাদরেকে হাকেম]
★★ আরো কিছু আমলকারী যারা রাসুলুল্লাহ (সা) এর শাফায়াত লাভ করবে :-
♦আযানের দুয়া পাঠ করা: আলী ইবনু আইয়াশ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা:) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি আজান শোনার পর এ দোয়া পড়বে:
«اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ،آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ ، وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِى وَعَدْتَهُ، حَلَّتْ لَهُ شَفَاعَتِى يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
"হে আল্লাহ,এ পরিপূর্ণ আহবান এবং প্রতিষ্ঠিত সালাত এর প্রতিপালক, মুহাম্মদ কে ওসিলা ও শ্রেষ্ঠত্ব দান কর। প্রতিষ্ঠিত কর তাকে মাকামে মাহমুদে, যার ওয়াদা তাঁকে তুমি দিয়েছ।"
কিয়ামতের দিন তার জন্য আমার শাফায়াত অনিবার্য হয়ে যাবে।
এ হাদিসটি হামযা ইবনু আবদুল্লাহ তার পিতা থেকে,তিনি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন) (সহীহ বুখারি (ইফা),অধ্যায়: ৫২/ তাফসীর, হাদীস নাম্বার: 4360)
♦মদীনা মুনাওয়ারার কষ্টে ধৈর্য ধারণ করা ও সেখানে মৃত্যু বরণ করা:
عَنْ أَبِى سَعِيدٍ مَوْلَى الْمَهْرِىِّ أَنَّهُ جَاءَ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِىَّ لَيَالِىَ الْحَرَّةِ فَاسْتَشَارَهُ فِى الْجَلاَءِ مِنَ الْمَدِينَةِ وَشَكَا إِلَيْهِ أَسْعَارَهَا وَكَثْرَةَ عِيَالِهِ وَأَخْبَرَهُ أَنْ لاَ صَبْرَ لَهُ عَلَى جَهْدِ الْمَدِينَةِ وَلأْوَائِهَا. فَقَالَ لَهُ وَيْحَكَ لاَ آمُرُكَ بِذَلِكَ إِنِّى سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَقُولُ « لاَ يَصْبِرُ أَحَدٌ عَلَى لأْوَائِهَا فَيَمُوتَ إِلاَّ كُنْتُ لَهُ شَفِيعًا أَوْ شَهِيدًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِذَا كَانَ مُسْلِمًا ».
ঐতিহাসিক হাররার ঘটনার সময় আবু সাঈদ মাওলা আল মাহরী আবু সাঈদ খুদরীর রা. এর নিকট এসে মদীনা থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য পরামর্শ চাইলেন। তিনি অভিযোগ করলেন, মদীনার আসবাব-পত্র ও পণ্যের দাম বেশি এবং তার সন্তান-সন্ততির সংখ্যাও প্রচুর। এও বললেন, মদীনার এই দু:খ ও কষ্টে ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতা তার নেই। আবু সাঈদ খুদরী তাকে বললেন,আফসোস! তোমাকে এ পরামর্শ দিতে পারি না। কারণ, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি:
"যে ব্যক্তি মদীনার দু:খ-কষ্টে ধৈর্য ধারণ করে এবং সেখানেই মৃত্যু বরণ করে কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য শুপারিশকারী বা সাক্ষী হব যদি সে মুসলিম হয়।"
(সহীহ মুসলিম,অনুচ্ছেদ: মদীনায় বসবাস করা ও সেখানকার দু:খ কষ্টে ধৈর্য ধারণ করার ব্যাপারে উৎসাহ দান,হাদীস নং ৩৪০৫,শামেলা)
♦অধিক পরিমাণে সেজদা দেয়া তথা নফল সালাত আদায় করা:
كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِمَّا يَقُولُ لِلْخَادِمِ : أَلَكَ حَاجَةٌ ؟ قَالَ : حَتَّى كَانَ ذَاتَ يَوْمٍ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ ، حَاجَتِي قَالَ : وَمَا حَاجَتُكَ ؟ قَالَ : حَاجَتِي أَنْ تَشْفَعَ لِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ، قَالَ : وَمَنْ دَلَّكَ عَلَى هَذَا ؟ قَالَ : رَبِّي قَالَ : إِمَّا لاَ ، فَأَعِنِّي بِكَثْرَةِ السُّجُودِ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার খাদেমকে লক্ষ্য করে যে সব কথা বলতেন সেগুলোর মধ্যে একটি কথা হল, “তোমার কি কোন দরকার আছে?”
একদিন তিনি তার খাদেমকে এ কথাটি বললে-
খাদেম: হে আল্লাহর রাসূল,আমার একটি জিনিস দরকার।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: "তোমার কী জিনিস দরকার?"
খাদেম: আপনি কিয়ামতের দিন আমার জন্য সুপারিশ করবেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: "কে তোমাকে এ বিষয়টির সন্ধান দিলো?"
খাদেম: আমার প্রতিপালক।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: "এটাই যদি তোমার চাওয়া হয় তবে অধিক পরিমাণ সেজদা করা তথা বেশি বেশি নফল সালাত আদায়ের মাধ্যমে আমাকে (এ ব্যাপারে) সাহায্য করো।"
(মুসনাদ আহমদ,হাদীস নং ১৬৫০২,শামেলা)
♦এ প্রসঙ্গে আরেকটি হাদীস:
------------------------
عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ كَعْبٍ الْأَسْلَمِيِّ -رضي الله عنه- قَالَ: كُنْتُ أَبِيتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ -صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- فَأَتَيْتُهُ بِوَضُوئِهِ وَحَاجَتِهِ فَقَالَ لِي: (سَلْ) فَقُلْتُ: أَسْأَلُكَ مُرَافَقَتَكَ فِي الْجَنَّةِ، قَالَ: (أَوْ غَيْرَ ذَلِكَ؟) قُلْتُ: هُوَ ذَاكَ، قَالَ: (فَأَعِنِّي عَلَى نَفْسِكَ بِكَثْرَةِ السُّجُودِ)
রাবীয়া বিন কা'ব আসলামী রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের (খেদমতের উদ্দেশ্যে) তাঁর সাথেই রাতে থাকতাম। (একদিন) আমি তার জন্য ওযুর পানি ও তার প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস নিয়ে তার নিকট হাজির হলে তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বললেন: চাও।
আমি: আমি জান্নাতে আপনার সাথে থাকতে চাই।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: এটা ছাড়া অন্য কিছু?
আমি: এটাই।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: "তোমার এ বিষয়ে আমাকে সাহায্য করো অধিক পরিমাণে সেজদা করার মাধ্যমে অর্থাৎ বেশি বেশি নফল সালাত আদায় করার মাধ্যমে।
(সহীহ মুসলিম, অনুচ্ছেদ: সেজদা করার মর্যাদা ও তাতে উদ্বুদ্ধ করণ, হাদীস নং ১১২২)
কাদের জন্য সুপারিশ করা হবে ?
♦আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
« أَسْعَدُ النَّاسِ بِشَفَاعَتِى يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ، خَالِصًا مِنْ قَلْبِهِ أَوْ نَفْسِهِ »
”কিয়ামতের দিন আমার শাফায়াত লাভে সেই ব্যক্তি সৌভাগ্য মণ্ডিত হবে, যে আন্তরিকভাবে বলবে: `লাইলাহা ইল্লাল্লাহ' তথা আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই।"(সহীহ বুখারী, অনুচ্ছেদ,হাদীসের প্রতি আগ্রহ,হাদীস নং ৯৯,শামেলা)
♦আবুযার গিফারী আল্লাহর রাসূল (স.) হতে বর্ণনা করেন:
أُعطيت الشفاعة و هی نائلةٌ من أمتی مَن لا يشرک بالله شيئاً
“আমার উম্মতের মধ্যে সেই ব্যক্তি আমার শাফায়াত পাবে যে আল্লাহকে কোনো কিছুর সঙ্গে শরিক করেনি।”
এই কথাটা কুরআন সুন্নাহ বিরোধী
★ ""আল্লাহতায়ালা শুধুমাত্র একজনকেই সুপারিশের
অনুমতি দেবেন।""
এই উক্তিটি কিছু মানুষের বানোয়াট কথা যারা ওলীগনের বিরোদ্ধে।
★ ""আসলে আয়াত হল : তোমাদের কে আছে আমার অনুমতি ছাড়া শাফায়াত করবে?
★ কুরআন হাদিসে অপর জায়গায় বুঝানো হয়েছে "
"সর্বপ্রথম শাফায়াত কারী হবেন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
অথবা রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সর্বপ্রথম শুপারিশের জন্য মাকামে মাহমুদ পাবে।
তারপর সহিহ হাদিসে আছে,
** আল্লাহর অলী আউলিয়াগন ,পীরগন।
** শহীদগন,
** ওয়াইছ করনী (রহ)
** হক্কানী উলামায়ে কেরাম (যারা আল্লাহর ওলী)
** হাফিজুল কুরআন &
** আল-কুরান,
** আল-কুরআনের সুরা মুলক ,
** রোজা ইত্যাদি ইত্যাদি শাফায়াত করে থাকবে।
তাহলে শুধুমাত্র ১জন কথাটা কি ঠিক? এটা ওহাবী-সালাফীদের বানানো কথা। কোন কুরআন হাদিসের কথা নয়।
আল-কোরআন থেকে শাফায়াত :
★ আল্লাহ বলেন :
ﻗُﻞ ﻟِّﻠَّﻪِ ﺍﻟﺸَّﻔَﺎﻋَﺔُ ﺟَﻤِﻴﻌًﺎ ﻟَّﻪُ ﻣُﻠْﻚُ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻭَﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﺛُﻢَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺗُﺮْﺟَﻌُﻮﻥَ
বলুন, সমস্ত সুপারিশ আল্লাহরই ক্ষমতাধীন, আসমান ও যমীনে তাঁরই সাম্রাজ্য। অতঃপর তাঁরই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। (সুরা যুমার ৪৪)
★ মুমিনদের সুপারিশ প্রসংগে আল্লাহপাক বলেন :
ﻭَﻟَﺎ ﻳَﺸْﻔَﻌُﻮﻥَ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻤَﻦِ ﺍﺭْﺗَﻀَﻰ ﻭَﻫُﻢ ﻣِّﻦْ ﺧَﺸْﻴَﺘِﻪِ ﻣُﺸْﻔِﻘُﻮﻥَ
তারা শুধু তাদের জন্যে সুপারিশ করে, যাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং তারা তাঁর ভয়ে ভীত।(সুরা আম্বিয়া ২৮)।
★ আল্লাহপাক আরো ইরশাদ করেন -
ﻳَﻮْﻣَﺌِﺬٍ ﻟَّﺎ ﺗَﻨﻔَﻊُ ﺍﻟﺸَّﻔَﺎﻋَﺔُ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﻦْ ﺃَﺫِﻥَ ﻟَﻪُ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦُ ﻭَﺭَﺿِﻲَ ﻟَﻪُ ﻗَﻮْﻟًﺎ
দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন এবং যার কথায় সন্তুষ্ট হবেন সে ছাড়া কারও সুপারিশ সেদিন কোন উপকারে আসবে না। (সূরা ত্বোয়া-হা ১০৯)
★ আল্লাহপাক আরো ইরশাদ করেন :
ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻨْﻔَﻊُ ﺍﻟﺸَّﻔَﺎﻋَﺔُ ﻋِﻨْﺪَﻩُ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻤَﻦْ ﺃَﺫِﻥَ ﻟَﻪُ
আর আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন সে ছাড়া তাঁর কাছে কোন সুপারিশ কারো উপকার করবে না।(সূরাঃ সাবা ২৩)
হাদিসের আলোকে :
★★★ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর শাফায়াত :-
★ হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন :
ﺃَﻥ ﻳَﺒْﻌَﺜَﻚَ ﺭَﺑُّﻚَ ﻣَﻘَﺎﻣًﺎ ﻣَّﺤْﻤُﻮﺩًﺍ (সুরা বনী ইসরাঈল ৭৯)
আপনার প্রতিপালক অচিরেই সেইদিন আপনাকে ‘মাক্বামে মাহমূদে’ পৌঁছিয়ে দেবেন’। বিশ্বনবী হাবীবুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিয়ামতের দিন সায়্যিদুশ শুফাআ’ বা শাফাআতকারীদের সর্দার হবেন। এ সত্ত্বেও তিনি সিজদাবনত হবেন আল্লাহর দরবারে এ উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
ﺁﺗﻲ ﺗَﺤْﺖَ ﺍﻟْﻌَﺮْﺵِِ ﻓَﺄَﺧِﺮُّ ﺳَﺎﺟِﺪًﺍ
আমি আরশের নিচে আসব আর সিজদায় লুটিয়ে পড়ব।
★ হাদিস শরীফে আল্লার প্রিয় হাবীব ইরশাদ করেন :-
ﺟَﺎﺑِﺮُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ " ﺃُﻋْﻄِﻴﺖُ ﺧَﻤْﺴًﺎ ﻟَﻢْ ﻳُﻌْﻄَﻬُﻦَّ ﺃَﺣَﺪٌ ﻣِﻦَ ﺍﻷَﻧْﺒِﻴَﺎﺀِ ﻗَﺒْﻠِﻲ، ﻧُﺼِﺮْﺕُ ﺑِﺎﻟﺮُّﻋْﺐِ ﻣَﺴِﻴﺮَﺓَ ﺷَﻬْﺮٍ، ﻭَﺟُﻌِﻠَﺖْ ﻟِﻲَ ﺍﻷَﺭْﺽُ ﻣَﺴْﺠِﺪًﺍ ﻭَﻃَﻬُﻮﺭًﺍ، ﻭَﺃَﻳُّﻤَﺎ ﺭَﺟُﻞٍ ﻣِﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﺃَﺩْﺭَﻛَﺘْﻪُ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓُ ﻓَﻠْﻴُﺼَﻞِّ،ﻭَﺃُﺣِﻠَّﺖْ ﻟِﻲَ ﺍﻟْﻐَﻨَﺎﺋِﻢُ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﻳُﺒْﻌَﺚُ ﺇِﻟَﻰ ﻗَﻮْﻣِﻪِ ﺧَﺎﺻَّﺔً، ﻭَﺑُﻌِﺜْﺖُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻛَﺎﻓَّﺔً، ﻭَﺃُﻋْﻄِﻴﺖُ ﺍﻟﺸَّﻔَﺎﻋَﺔَ "
হযরত জাবির ইবনুূু আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: আমাকে এমন পাঁচটি বিষয় প্রদান করাহয়েছে, যা আমার আগে কোন নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেয়া হয়নি।
১। আমাকে এমন প্রভাব দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে যা একমাসের দূরত্ব পর্যন্ত অনুভূত হয়।
২। সমস্ত জমিন আমার জন্য সালাত (নামাজ) আদায়ের স্থান ও পবিত্রতা অর্জনের উপায় করা হয়েছে। কাজেই আমার উম্মতের যে কেউ যেখানে সালাত-এর ওয়াক্ত হয় (সেখানেই) যেন সালাত আদায় করে নেয়।
৩। আমার জন্য গণীমতের মাল হালাল করা হয়েছে যা ইতিপূর্বে কারো জন্যই হালাল ছিল না।
৪। প্রত্যেক নবী প্রেরিত হতেন কেবলমাত্র তার সম্প্রদায়ের জন্য, কিন্তু
আমি প্রেরিত হয়েছি সমগ্র মানব জাতির জন্য।”
৫। আমাকে (সর্ব প্রথম ও ব্যাপকভাবে) শাফায়াতের অধিকার প্রদান করা হয়েছে।(সহিহ বুখারী/৪২৫ইফা/আহমাদ ১৪২৬৮)
★ হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: প্রত্যেক নবী কে তাঁর উম্মাতের ব্যাপারে একটি করে এমন দু’আর অনুমতি দেয়া হয়েছে, যা অবশ্যই কবুল করা হবে। আমি সংকল্প করেছি, আমার দু’আটি পরে আমার উম্মাতের শাফাআতেরজন্য করব।(সহীহ মুসলিম/ইফা৩৮৯)
★ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন :-
ﺩَﻋْﻮَﺗِﻲ ﺷَﻔَﺎﻋَﺔً ﻟِﺄُﻣَّﺘِﻲ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ
আমি আমার দু‘আকে ক্বিয়ামাতের দিনে আমার উম্মাতের শাফা‘আতের জন্য রেখে দিয়েছি।
★ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :-
ﺃَﻧَﺎ ﺃَﻭَّﻝُ ﺷَﺎﻓِﻊٍ ﻭَ ﺃَﻭَّﻝُ ﻣُﺸَﻔَّﻊٍ (ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
“আমিই প্রথম সুপারিশকারী এবং আমার শাফাআতই প্রথম গ্রহণ করা হবে। (বুখারী, মুসলিম)
★ অপর হাদিসে আছে :
ﺃَﻧَﺎ ﺃَﻭَّﻝُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻳَﺸْﻔَﻊُ ﻓِﻰ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ﻭَﺃَﻧَﺎﺃَﻛْﺜَﺮُ ﺍﻷَﻧْﺒِﻴَﺎﺀِ ﺗَﺒَﻌًﺎ
হযরত আনাস ইবনু মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন জান্নাত সম্পর্কে আমই হবো সর্বপ্রথম সুপারিশকারী এবং এত অধিক সংখ্যক মানুষ আমার প্রতি ঈমান আনবে,যা অন্য কোন নবী র বেলায় হবে না। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দের কেউ কেউ তো এমতাবস্হায়ও আসবেন,যার প্রতি মাত্র এক ব্যাক্তিই ঈমান এনেছে। (সহীহ মুসলিম/ইফা ৩৮১ )
♦হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু
আনহুমা বলেন,নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামা ইরশাদ করেছেন...
ﺇﻥ ﺍﻟﺸﻤﺲ ﺗﺪﻧﻮ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﺣﺘﻰ ﻳﺒﻠﻎ ﺍﻟﻌﺮﻕ ﻧﺼﻒ
ﺍﻷﺫﻥ، ﻓﺒﻴﻨﺎ ﻫﻢ ﻛﺬﻟﻚ ﺍﺳﺘﻐﺎﺛﻮﺍ ﺑﺂﺩﻡ، ﺛﻢ ﺑﻤﻮﺳﻰ، ﺛﻢ ﺑﻤﺤﻤﺪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ )). ﻭﺯﺍﺩ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺣﺪﺛﻨﻲ ﺍﻟﻠﻴﺚ ﺣﺪﺛﻨﻲ ﺍﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺟﻌﻔﺮ: (( ﻓﻴﺸﻔﻊ
ﻟﻴﻘﻀﻰ ﺑﻴﻦ ﺍﻟﺨﻠﻖ، ﻓﻴﻤﺸﻲ ﺣﺘﻰ ﻳﺄﺧﺬ ﺑﺤﻠﻘﺔ ﺍﻟﺒﺎﺏ، ﻓﻴﻮﻣﺌﺬ ﻳﺒﻌﺜﻪ ﺍﻟﻠﻪ
ﻣﻘﺎﻣﺎ ﻣﺤﻤﻮﺩﺍ، ﻳﺤﻤﺪﻩ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺠﻤﻊ ﻛﻠﻬﻢ
অবশ্যই কিয়ামতের দিন সূর্য মানুষের কাছেই
চলে আসবে।তাদের শরীর থেকে এতবেশি ঘাম বের
হবে যা কান পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।এমন কঠিন
মুহুর্তে তারা প্রথমে হযরত আদম আলাইহিস সালাম
এর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে।তারপর হযরত
মুসা আলাইহিস সালাম এর কাছে সাহায্য
প্রার্থনা করবে।(এভাবে একেক নবী আলাইহিস
সালাম এর কাছে সাহায্য
প্রার্থনা করতে করতে অবশেষে) নবীদের
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা এর
কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে।সুবহানাল্লাহ!
সূত্র:সহীহুল বুখারী
কিতাব:কিতাবুয যাকাত
বাব:বাবু মান সায়ালান নাসু তাকসুরান
★ হজরত ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
আমরা নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে এক যিয়াফতে উপস্থিত ছিলাম। তাঁর সামনে (রান্না করা) ছাগলের বাহু পেশ করা হল, এটা তাঁর কাছে পছন্দনীয় ছিল। তিনি সেখান থেকে এক টুকরা খেলেন এবং বললেন, আমি কিয়ামতের দিন সমগ্র মানব জাতির সরদার হব। তোমরা কি জানো? আল্লাহ কিভাবে (কিয়ামতের দিন)একই সমতলে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল মানুষকে একত্রিত করবেন? যেন একজন দর্শক তাদের সবাইকে দেখতে পায় এবং একজন আহ্বানকারীকে ডাক সবার কাছে পোঁচছায়। সূর্য তাদের অতি নিকটে এশে যাবে। তখন কোন কোন মানুষ বলবে, তোমরা কি লক্ষ্য করনি, তোমরা কি অবস্তায় আছে এবং কি পরিস্তিতির সম্মুখীন হয়েছে। তোমরা কি এমন ব্যাক্তিকে খুঁজে বের করবে না, যিনি তোমাদের জন্য তোমাদের রবের নিকট সুপারিশ করবেন? তখন কিচু লোক বলবে, তোমাদের আদম পিতা আদম আলাইহি ওয়া সাল্লাম আছেন। (চল তাঁর কাছে যাই)। তখন সকলে তাঁর কাছে যাবে এবং বলবে, হে আদম! আপনি সমস্ত মানব জাতির পিতা। আল্লাহ আপনাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন এবং তার পক্ষ থেকে রূহআপনার মধ্যে ফুঁকেছেন। তিনি ফিরিশ্তাদেরকে (আপনার সম্মানের) নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী সকলে আপনাকে সিজ্দাও করেছেন এবং তিনি আপনাকে জান্নাতে বসবাস করতে দিয়েছেন। আপনি কি আমাদের জন্য রবের নিকট সুপারিশ করবেন না? আপনি দেখেন না আমরা কি অবশ্তায় আছি এবং কি কষ্টের সম্মুখীন হয়েছি? তখন তিনি বলবেন,আমার রব আজ এমন রাগান্বিত হয়েছেন, এর পূর্বে এমন রাগান্বিত হননি আর পরেও এমন রাগান্বিত হবেন না। আর তিনি আমাকে বৃক্ষটি থকে (ফল খেতে) নিষেধ করেছিলেন। তখনআমি ভুল করেছি। এখন আমি নিজের চিন্তায় ব্যস্ত। তোমরা আমি ব্যতিত অন্য কার কাছেযাও। তোমরা নূহের কাছে চলে যাও। তখন তারা নূহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আসবেএবং বলবে, হে নূহ! পৃথিবীবাসীদের নিকট আপনিই প্রথম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং আল্লাহ আপনার নাম রেখেছেন কৃতজ্ঞ বান্দা। আপনি কি লক্ষ্য করেছেন না, আমরা কি ভয়াবহ অবশ্তায় পরে আছি? আপনি দেখছেন না আমরা কতইনা দুঃখ কষ্টের সম্মুখীন হয়ে আছি? আপনি কি আমাদের জন্য আপনার রবের কাছে সুপারিশ করবেননা? তখন তিনি বলবেন, আমার রব আজ এমন রাগান্বিত হয়ে আছেন, যা ইতিপূর্বে হন নাই এবং এমন রাগান্বিত পরেও হবেন না। এখন আমি নিজের চিন্তায় ব্যস্ত। তোমরা নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মুহাম্মদ)–এর কাছে চলে যাও। তখন তারা আমার কাছে আসবে আর আমি আরশের নীচে সিজ্দায় পড়ে যাবে।তখন বলা হবে, হে মুহাম্মদ! আপনার মাথা উঠান এবং '''সুপারিশ করুন। আপনার সুপারিশ গ্রহন করা হবে আর আপনি যা চান, আপনাকে তাই দেওয়া হবে।````
( অধ্যায় : আম্বিয়া কিরাম সহীহ বুখারি/ ইফা ৩১০৪)
♦সহীহ বুখারী শরীফে বর্নিত আছে-
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
ইরশাদ মুবারক করেন, "
কিয়ামতের দিন হাশরবাসীগন
বিক্ষিপ্ত ভাবে ছোটাছুটি করে একজন
অন্যজনের নিকট চলে যাবে। অতঃপর
তারা হযরত আদম আলাইহিস সালাম
উনার নিকট এসে বলবে, আপনি আপনার রবের
নিকট আমাদের জন্য সুপারিশ করুন।
তখন তিনি বলবেন, আমি এখন
একাজে উপযুক্ত
নই। তোমাদের এ ব্যাপারে ইব্রাহিম
আলাইহিস সালাম উনার নিকট
যাওয়া উচিত। কেননা তিনি হচ্ছেন পরম
করুনাময় আল্লাহ পাক উনার খলীল।
সূতরাং তারা হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস
সালাম উনার নিকট এসে সুপারিশ
প্রর্থনা করবে। তিনিও বলবেন,
আমি একাজে সক্ষম নই। সুপারিশের
জন্য
তোমরা হযরত মুসা আলাইহিস সালাম
উনার
কাছে যাও। কেননা তিনি আল্লাহ পাক
উনার সাথে কথা বলেছিলেন। অতপর
তারা মুসা আলাইহিস সালাম উনার নিকট
আসবে এবং সুপারিশ প্রার্থনা করবে।
তিনি বলবেন আমিও সক্ষম নই।
তবে তোমাদের হযরত ঈসা আলাইহিস
সালাম উনার কাছে যাওয়া উচিত।
কেননা তিনি হচ্ছেন, রুহুল্লাহ। তখন
তারা ঈসা আলাইহিস সালামের
কাছে আসবে এবং সুপারিশ
প্রার্থনা করবে। তিনিও বলবেন আমি এ
ব্যাপারে সক্ষম নই। তবে তোমাদের
হযরত সাইয়্যিদুনা মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এর নিকট যাওয়া উচিত।
তখন তারা আমার নিকট আসবে,
আর আমি তাদের আশ্বস্ত
করে বলবো, আমিই এ ব্যাপারে সক্ষম।
তখন আমি আমার প্রতিপালকের নিকট
অনুমতি প্রার্থনা করবো।"
[তথ্যসূত্রঃ- সহীহ বুখারী শরীফ]
♦এ প্রসঙ্গে হাসীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে :-
ﻗﺎﻝ ﻛﺎﻥ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻛﻨﺖ ﺍﻣﺎﻡ ﺍﻟﻨﺒﻴﻴﻦ ﻭ
ﺧﻄﻴﺒﻬﻢ ﻭ
ﺻﺎﺣﺐ ﺷﻔﺎﻋﺘﻬﻢ ﻏﻴﺮ ﻓﺨﺮ
অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক
করেন, কিয়ামতের দিন আমিই
হবো সমস্ত
নবী রসূল আলাইহিমুস সালামগনের ইমাম
ও তাদের খতীব এবং আমিই হবো তাঁদের
ছহিবে শাফায়াত এতে আমার কোন অহংকার
নেই।"
[তথ্যসূত্রঃ- সুনানে তিরমিযী শরীফ,
মিশকাত শরীফ ৫১৪ পৃষ্ঠা]
♦সহিহ হাদিস মতে আল্লাহর তাবেয়ী, প্রিয় ওলীগন ও অন্যান্য বান্দাগনের সুপারিশ:-
♦তাপস্যকুল শিরোমণি বিখ্যাত ওলী ও আশিকে রাসুল (সা) হযরত উয়ায়স করনীর শ্রেষ্টত্ব সম্বন্ধে আল্লাহর রাসুলের হাদীসের কয়েকটি হাদিসের তরজমা করা হইল :-
♦হযরত ওমর (রা.) বলিয়াছেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺকে বলিতে শুনিয়াছি, নিশ্চয়ই , অনুগতদিগের (খায়রুত্তাবেয়ীন) মধ্যে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি যাহার নাম উয়ায়ছ। তাহার মা আছে এবং তাহার শরীরে একটি শ্বেত চিহ্ন আছে। তোমরা (তাহার সংগে দেখা করিয়া) অনুরোধ করিবে যেন সে তোমাদের ক্ষমার জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে।
(মুসলিম শরীফ ৬২৬০/ মিশকাত ৬০০৬)
♦হযরত উমর বিন খাত্তাব হইতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূলﷺ বলিয়াছেন, “নিশ্চয়ই ইয়েমেন হইতে তোমাদের নিকট এক লোক আসিবে যে উয়ায়ছ নামে অবিহীত। সে তাহার মাতার জন্য ইয়েমেন ত্যাগ করিতে পারে না। তাহার শরীরে শ্বেত রোগ ছিল। সে আল্লাকে ডাকিল, তাহার শ্বেত রোগ এক দিরহাম পর্যন্ত ব্যতীত দূর হইয়া গেল। তোমাদের মধ্যে যে কেহ তাহার সাক্ষাত পাও তাহাকে অনুরোধ করিবে যেন সে তোমাদের মাগফিরাতের জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে ।
(মুসলিম শরীফ ৬২৫৯/ মিশকাত শরীফ ৬০০৬)
♦রাসূলল্লাহ হযরত ওমরকে বলিলেন, উয়ায়ছ ইবনে আমর মুজাহিদগণের সাহায্যার্থে আগমনকারী ইয়েমেনবাসীদের সহিত তোমাদের নিকট আসিবে। সে মুজার গোত্রের কারণ শাখার অন্তর্ভুক্ত। তাহার ধবল রোগ ছিল। (আল্লাহর নিকট দোয়া করিবার কারণে) এক দিরহাম পরিমান স্থান ব্যতীত সে উহা হইতে আরোগ্য লাভ করে। তাহার মাতা আছে। সে তাহার মাতার সহিত সদ্ব্যবহার করে। সে আল্লাহর নিকট শপথ করিলে, আল্লাহ তাহা পূরণ করে। তাহার দ্বারা তোমাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা করাইতে সক্ষম হইলে তাহা করাইবে।
(মিশকাত শরীফ)
♦ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের
এক বিশেষ ওলী আল্লাহর সুপারিশ
করা সম্পর্কে ইরশাদ করেন,
"হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবুল
জাদয়া রদ্বিয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্নিত, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে বলতে শুনেছি, আমার উম্মতের
এক ব্যক্তির সুপারিশে বনী তামীম
গোত্রের লোক সংখ্যা হতেও অধিক
লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
[তথ্যসূত্রঃ- সুনানে তিরমিযী শরীফ,
সুনানে ইবনে মাজাহ, মিশকাত শরীফ
৫৩৬১, সুনানে দারেমী]
নোট : এই হাদিসটি অনেক উলামায়ে কেরাম ""আশিকে রাসুল (সা) বিখ্যাত তাবেযী ওয়াইস করনী (রহ) এর কথা বলে উল্লেখ করেছেন। নিচে বর্নিত হয়েছেন।
♦রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন," হযরত উয়ায়ছ করণীর শাফায়াতে রাবী ও মুজার গোত্রের মেষের পশম সমপরিমান লোক বেহেশতে যাইবে।
(মিশকাত শরীফ)
♦হযরত আবি মাসউদ-উল-আনসারী হতে বর্নিতঃ রাসূল ﷺ বলেছেন,
“আমার উম্মতের ভিতর এক ব্যক্তি, যাহাকে লোকে উয়ায়েছ ইবনে আবদুল্লাহ্ করণী বলে, তাহার প্রার্থনায় অবশ্যই রাবিয়া ও মুজার এই দুই গোত্রের বকরীর পশমের সংখ্যক গুনাহ্গার উম্মতের গুনাহ্ মাফ হইবে।”
(শওয়াহেদুন-নবুওয়াত/মছনবী রহীম)
♦ হযরত আনাস (রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে বর্ণিত, হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) ফরমায়েছেন,
ﻳﺸﻔﻊ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﺛﻼﺛﺔ ﺍﻻﻧﺒﻴﺎﺀ ﺛﻢ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ
ﺛﻢ ﺍﻟﺸﻬﺪﺍﺀ
অর্থ: কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণীর
লোক সুপারিশ করবে।
(১) নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম ।
(২) উলামায়ে কিরাম (বা আউলিয়া কেরাম)
রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
(৩) শহীদ গন।"
[সুনানে ইবনে মাজাহ
শরীফ, মিশকাত শরীফ ৫৩৭০]
নোট: পুর্ববর্তী হক্কানী উলামায়ে কেরাম (রহ) গন সব আল্লাহর ওলী ছিলেন।
আর ওলীগনের মর্যাদা আর ক্ষমতা উলামায়ে কেরাম থেকে অনেক বেশি।
♦এই হাদিসটার সনদ দিতে গিয়ে মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি (রহ) বলেন," হাশরের মাঠে পিয়ারা নবীর নির্দেশে নবীগণ তাদের উম্মতদের, আউলিয়াগণ তাদের মুরিদদের এবং শহীদগণ তাদের মা-বাবার জন্য সুপারিশ করবে।
(মসনদে গোয়ারভী শরীফ, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৩৬২)
♦অপর হাদিসে আছে :-
ﻭ ﺍﺫﺍ ﺭﺃﻭﺍ ﺍﻧﻬﻢ ﻗﺪ ﻧﺠﻮﺍ ﻓﻲ ﺍﺧﻮﺍﻧﻬﻢ ﻳﻘﻮﻟﻮﻥ ﺭﺑﻨﺎ ﺍﺧﻮﺍﻧﻨﺎ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻳﺼﻠﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭﻳﺼﻠﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭ ﻳﺼﻮﻣﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭ ﻳﻌﻤﻠﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻓﻴﻘﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﺍﺫﻫﺒﻮﺍ ﻓﻤﻦ ﻭﺟﺪﺗﻢ ﻓﻲ ﻗﻠﺒﻪ ﻣﺜﻘﺎﻝ ﺩﻳﻨﺎﺭ ﻣﻦ ﺍﻳﻤﺎﻥ ﻓﺎﺣﺮﺣﻮﻩ ﻭ ﻳﺤﺮﻡ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻮﺭﻫﻢ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﻓﻴﺎﺗﻮﻧﻬﻢ ﻭﺑﻌﻀﻬﻢ ﻗﺪ ﻏﺎﺏ ﻓﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﺍﻟﻲ ﻗﺪﻣﻪ ﻭ ﺍﻟﻲ ﺍﻧﺼﺎﻑ ﺳﺎﻗﻪ ﻓﻴﺨﺮﺟﻮﻥ ﻣﻦ ﻋﺮﻓﻮﺍ
যখন আল্লাহর অলীগণ দেখবে যে তারা মুক্তি পেয়ে গেল , তখন তাদের মুমীন ভাইদের জন্য তারা আল্লাহর কাছে আবেদন করবে "হে আমার প্রতিপালক এরা আমাদের ভাই, যাদেরকে তুমি জাহান্নামে নিক্ষেপ করেছ তারা আমাদের সাথে নামাজ পড়ত , আমাদের সাথে রোজা রাখত এবং আমাদের সাথে সত্কাজ করত "। তখন আল্লাহ বলবেন "যাদের অন্তরে শুধুমাত্র এক দিনার ওজন পরিমাণ ঈমান পাবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আস । তাদের মুখমন্ডল তথা আকৃতিকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দেওয়া হয়েছে " । অতঃপর তারা (অলীগণ) সেখানে জাহান্নামীদের নিকট যাবেন । এসে দেখবেন কেউ কেউ পা পর্যন্ত কেউ পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত আগুনে ডুবে আছে । এর মধ্যে যাদের তারা চিনবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আসবে ।
(সহীহ বুখারী , খন্ড ২ পৃষ্ঠা ১১০৭ । হাদীস নং ৭০০১)
♦ সহিহ হাদিসে বর্নিত :-
ﻓﻮﺍﻟﺬﻱ ﻧﻔﺴﻲ ﺑﻴﺪﻩ ﻣﺎ ﻣﻮﻛﻢ ﻣﻦ ﺍﺣﺪ ﺑﺎﺷﺪ ﻣﻨﺎﺷﺪﺓ ﻟﻠﻪ ﻓﻲ ﺍﺳﺘﻘﺼﺎﺀ ﺍﻟﺤﻖ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﻮﻣﻨﻴﻦ ﻟﻠﻪ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻻﺧﻮﺍﻧﻬﻢ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻓﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﻳﻘﻮﻟﻮﻥ ﺭﺑﻨﺎ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻳﺼﻮﻣﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭ ﻳﺼﻠﻮﻥ ﻭ ﻳﺤﺠﻮﻥ ﻓﻴﻘﺎﻝ ﻟﻬﻢ ﺍﺣﺮﺟﻮﺍ ﻣﻦ ﻋﺮﻓﺘﻢ
আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ (ওলীগন) তাদের ঐ সমস্ত মুমীন ভাইদের জন্য শুপারিস করবে যারা জাহান্নামে পড়ে থাকবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে ছাড়িয়ে আনার জন্য আল্লাহর দরবারে এমনভাবে আবদারের পর আবদার করতে থাকবে, যে রকম আবদার কোন ব্যক্তি তার নিজ হক আদায়ের জন্যও সাধারণত করে না । এবং তারা আল্লাহর দরবারে আবেদন করবেন হে আমাদের রব এ সমস্ত লোক আমাদের সাথে রোজা রাখত, নামাজ পড়ত, হজ্ব করত ।
(সহীহ মুসলিম । খন্ড ১
পৃষ্ঠা ১০৩ হাদিস ১৮৩)
♦আরো বর্নিত আছে :-
ﻋﻦ ﺍﻧﺲ ﺍﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﺭﺽ ﺍﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ ﻗﺎﻻﻥ ﻣﻦ ﺍﻣﺘﻲ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﻔﺌﺎﻡ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻭ ﻣﻨﻬﻢ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﻘﺒﻴﻠﺔ ﻭ ﻣﻨﻬﻢ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﻌﺼﺒﺔ ﻭ ﻣﻨﻬﻢ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﺮﺟﻞ ﺣﺘﻲ ﻳﺪﺧﻠﻮﺍ ﺍﻟﺠﻨﺔ
হযরত আবূ সাঈদ রঃ হতে বর্ণিত , রাসুল দঃ এরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু লোক আছেন যারা একটি বিরাট দল এর (বা তাদের সকল সমর্থক ও অনুসারীদের) জন্য সুপারিশ করবে । আর কিছু লোক আছেন যারা একটি দলের (বা আত্তীয় স্বজনদের) জন্য সুপারিশ করবে । আর কিছু লোক আছে যারা এক এক জনের জন্য সুপারিশ করবে । এভাবে তারা সকলেই জান্নাতে প্রবেশ করবে ।
[আল হাদিস, তিরমীযি খন্ড ২ পৃঃ ৬৭ , হাদিস ২৪৪০,
মিশকাত শরীফ ৫৩২৬]
♦সিহাহ সিত্তার অন্যতম কিতাব
সুনানে ইবনে মাজাহ
শরীফে আরো একটি বিশুদ্ধ হাদীস
শরীফ বর্নিত হয়েছে -
ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ
ﻳﺼﻒ ﺍﻫﻞ ﺍﻟﻨﺎﺭ
ﻓﻴﻤﺮﺑﻬﻢ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﻣﻦ ﺍﻟﻬﻞ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻓﻴﻘﻮﻝ
ﺍﻟﺮﺟﻞ ﻣﻨﻬﻢ ﻳﺎ
ﻓﻼﻥ ﺍﻣﺎ ﺗﻌﺮﻓﻨﻲ ﺍﻧﺎ ﺍﻟﺬﻱ ﺳﻘﻴﺘﻚ ﺷﺮﺑﺔ
ﻗﺎﻝ ﺑﻌﻀﻬﻢ ﺍﻧﺎ
ﺍﻟﺬﻱ ﻭﻫﺒﺖ ﻟﻚ ﻭﺿﻮﺀ ﻓﻴﺸﻔﻊ ﻟﻪ ﻓﻴﺪﺧﻠﻪ
ﺍﻟﺠﻨﺔ
অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু
থেকে বর্নিত, হুজুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
ইরশাদ মুবারক করেন, জাহান্নামীদের
সাড়ি বদ্ধ ভাবে দাঁড় করানো হবে।
অতঃপর জান্নাতবাসীদের
মধ্যে হতে এক ব্যক্তি তাদের নিকট
দিয়ে অতিক্রম করবেন।
ফলে জাহান্নামীদের এক
ব্যক্তি তাকে বলবে, হে ব্যক্তি !
আপনি কি আমাকে চিনতে পারছেন না?
আমি ঐ ব্যক্তি, যে (তৃষ্ণার সময়)
আপনাকে পানি পান করিয়েছিলাম
এবং তাদের মধ্যে হতে অন্য এক
ব্যক্তি বলবে আমি ঐ ব্যক্তি , যে ওযু
করার জন্য আপনাকে পানির পাত্র
দিয়েছিলাম। ফলে তার জন্য সুপারিশ
করা হবে, অতঃপর
তাকে জান্নাতে প্রবেশ
করানো হবে।"
[তথ্যসূত্রঃ- সুনানে ইবনে মাজাহ,
মিশকাত শরীফ ৫৩৬৪]
হাফেজগনের সুপারিশ :-
ﻋﻦ ﻋﻠﻲ ﺑﻦ ﺍﺑﻲ ﻃﺎﻟﺐ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ ﻣﻦ ﻗﺮﺃ ﺍﻟﻘﺮﺍﻥ ﻭ ﺣﻔﻈﻪ ﺍﺩﺧﻠﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻭﺷﻔﻌﻪ ﻓﻲ ﻋﺸﺮﺓ ﻣﻦ ﺍﻫﻞ ﺑﻴﺘﻪ ﻛﻠﻬﻢ ﻗﺪ ﺍﺳﺘﻮﺟﺒﻮﺍ ﺍﻟﻨﺎﺭ
হযরত আলী ইবনে আবি তালিব রঃ হতে বর্ণিত , তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ দঃ এরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি কোরআন শরীফ পাঠ করল এবং মুখস্হ করল , আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং তাকে তার বংশধর হতে এমন দশজনকে সুপারিশ করতে পারবে যাদের উপর জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে গিয়েছিল ।
(আল হাদিস. তিরমীজি খন্ড ২ হাদিস ১১৪, ইবনে মাজাহ হাদিস ২১৬)
সহীহ হাদীস শরীফে আরো বর্নিত আছে :-
ﻣﻦ ﻗﺮﺃ ﺍﻟﻘﺮﺍﻥ ﻓﺎﺳﺘﻈﻬﺮﻩ ﻓﺎﺣﻞ ﺣﻼﻟﻪ ﻭ
ﺣﺤﺮﻡ ﺣﺮﺍﻣﻪ
ﺍﺩﺧﻠﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻭﺷﻔﻌﻪ ﻓﻲ ﻋﺸﺮﺓ ﻣﻦ
ﺍﻫﻞ ﺑﻴﺘﻪ ﻛﻠﻬﻢ
ﻗﺪ ﻭﺟﺒﺖ ﻟﻬﻢ ﺍﻟﻨﺎﺭ
অর্থ: যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ
পড়ে এবং উহাকে সমুন্নত রাখে আর
উহার মধ্যে বর্নিত হালালকে হালাল
এবং হারামকে হারাম জানে। আল্লাহ
পাক তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন
এবং তার পরিবারস্থ লোকদের
মধ্যে থেকে এমন দশজন
ব্যক্তি সম্পর্কে তার সুপারিশ কবুল
করবেন, যাদের জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব
হয়েছে।"
[তথ্যসূত্রঃ- মুসনাদে আহমদ,
সুনানে তিরমিযী শরীফ,
সুনানে ইবনে মাজাহ, মিশকাত শরীফ,
দারেমী]
শুধু তাই নয়, ★ কুরআন শরীফ
এবং ★রোজাও বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। হাদীস
শরীফে আছে -
♦আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই হওয়া সাল্লাম বলেছেন:
« الصِّيَامُ وَالْقُرْآنُ يَشْفَعَانِ لِلْعَبْدِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَقُولُ الصِّيَامُ أَىْ رَبِّ مَنَعْتُهُ الطَّعَامَ وَالشَّهَوَاتِ بِالنَّهَارِ فَشَفِّعْنِى فِيهِ. وَيَقُولُ الْقُرْآنُ مَنَعْتُهُ النَّوْمَ بِاللَّيْلِ فَشَفِّعْنِى فِيهِ. قَالَ فَيُشَفَّعَانِ
”রোযা এবং কুরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোযা বলবে, হে প্রভু, আমি তাকে দিনের বেলায় খাদ্য ও প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণে বাধা দিয়েছিলাম। অত:এব আপনি তার ব্যাপারে আমার শাফায়ত কবুল করুন। আর কুরআন বলবে, আমি তাকে রাতের বেলায় ঘুম থেকে বাধা দিয়েছিলাম। অতএব,তার ব্যাপারে আমার শাফায়ত কবুল করুন। অত:পর তাদের শাফায়াত কবুল করা হবে।”
[মুসনাদ আহমদ,
মুসনাদে আব্দুল্লাহ ইবনে আমর হাদীস নং ৬৭৮৫,
শামেলা, সনদ সহীহ
আল-মুস্তাদরাক, হাদীস নং ২০৩৬
তাবরানী শরীফ, সুনানুল কুবরা,
ইবনে আবিদ্দুনইয়া]
♦রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
اقْرَءُوا الْقُرْآنَ فَإِنَّهُ يَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ شَفِيعًا لِأَصْحَابِهِ
"তোমরা কুরআন পাঠ কর। কেননা,কুরআন কিয়ামতের দিন তার পাঠকদের জন্য সুপারিশ কারী হবে।"(সহীহ মুসলিম)।
♦সূরা মূলক বান্দার জন্য সুপারিশ
করবে। হাদীস শরীফে বর্নিত আছে -
ﺍﻥ ﺳﻮﺭﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﻘﺮﺍﻥ ﺛﻼ ﺛﻮﻥ ﺍﻳﺔ ﺷﻔﻌﺖ
ﻟﺮﺟﻞ ﺣﺘﻲ
ﻏﻔﺮﻟﻪ ﻭﻫﻲ ﺗﺒﺎﺭﻙ ﺍﻟﺬﻱ ﺑﻴﺪﻩ ﺍﻟﻤﻠﻚ
অর্থ: নিশ্চয়ই কুরআন শরীফে ত্রিশ
আয়াত বিশিষ্ট
একখানা সূরা আছে যা তার পাঠকারীর
জন্য সুপারিশ করবে। আর তা হচ্ছে-
সূরা মুলক।"
[তথ্যসূত্রঃ- মুসনাদে আহমদ,
সুনানে আবু দাউদ, সুনানে নাসাঈ,
সুনানে ইবনে মাজাহ,
মুস্তাদরেকে হাকেম]
★★ আরো কিছু আমলকারী যারা রাসুলুল্লাহ (সা) এর শাফায়াত লাভ করবে :-
♦আযানের দুয়া পাঠ করা: আলী ইবনু আইয়াশ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা:) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি আজান শোনার পর এ দোয়া পড়বে:
«اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ،آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ ، وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِى وَعَدْتَهُ، حَلَّتْ لَهُ شَفَاعَتِى يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
"হে আল্লাহ,এ পরিপূর্ণ আহবান এবং প্রতিষ্ঠিত সালাত এর প্রতিপালক, মুহাম্মদ কে ওসিলা ও শ্রেষ্ঠত্ব দান কর। প্রতিষ্ঠিত কর তাকে মাকামে মাহমুদে, যার ওয়াদা তাঁকে তুমি দিয়েছ।"
কিয়ামতের দিন তার জন্য আমার শাফায়াত অনিবার্য হয়ে যাবে।
এ হাদিসটি হামযা ইবনু আবদুল্লাহ তার পিতা থেকে,তিনি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন) (সহীহ বুখারি (ইফা),অধ্যায়: ৫২/ তাফসীর, হাদীস নাম্বার: 4360)
♦মদীনা মুনাওয়ারার কষ্টে ধৈর্য ধারণ করা ও সেখানে মৃত্যু বরণ করা:
عَنْ أَبِى سَعِيدٍ مَوْلَى الْمَهْرِىِّ أَنَّهُ جَاءَ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِىَّ لَيَالِىَ الْحَرَّةِ فَاسْتَشَارَهُ فِى الْجَلاَءِ مِنَ الْمَدِينَةِ وَشَكَا إِلَيْهِ أَسْعَارَهَا وَكَثْرَةَ عِيَالِهِ وَأَخْبَرَهُ أَنْ لاَ صَبْرَ لَهُ عَلَى جَهْدِ الْمَدِينَةِ وَلأْوَائِهَا. فَقَالَ لَهُ وَيْحَكَ لاَ آمُرُكَ بِذَلِكَ إِنِّى سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَقُولُ « لاَ يَصْبِرُ أَحَدٌ عَلَى لأْوَائِهَا فَيَمُوتَ إِلاَّ كُنْتُ لَهُ شَفِيعًا أَوْ شَهِيدًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِذَا كَانَ مُسْلِمًا ».
ঐতিহাসিক হাররার ঘটনার সময় আবু সাঈদ মাওলা আল মাহরী আবু সাঈদ খুদরীর রা. এর নিকট এসে মদীনা থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য পরামর্শ চাইলেন। তিনি অভিযোগ করলেন, মদীনার আসবাব-পত্র ও পণ্যের দাম বেশি এবং তার সন্তান-সন্ততির সংখ্যাও প্রচুর। এও বললেন, মদীনার এই দু:খ ও কষ্টে ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতা তার নেই। আবু সাঈদ খুদরী তাকে বললেন,আফসোস! তোমাকে এ পরামর্শ দিতে পারি না। কারণ, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি:
"যে ব্যক্তি মদীনার দু:খ-কষ্টে ধৈর্য ধারণ করে এবং সেখানেই মৃত্যু বরণ করে কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য শুপারিশকারী বা সাক্ষী হব যদি সে মুসলিম হয়।"
(সহীহ মুসলিম,অনুচ্ছেদ: মদীনায় বসবাস করা ও সেখানকার দু:খ কষ্টে ধৈর্য ধারণ করার ব্যাপারে উৎসাহ দান,হাদীস নং ৩৪০৫,শামেলা)
♦অধিক পরিমাণে সেজদা দেয়া তথা নফল সালাত আদায় করা:
كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِمَّا يَقُولُ لِلْخَادِمِ : أَلَكَ حَاجَةٌ ؟ قَالَ : حَتَّى كَانَ ذَاتَ يَوْمٍ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ ، حَاجَتِي قَالَ : وَمَا حَاجَتُكَ ؟ قَالَ : حَاجَتِي أَنْ تَشْفَعَ لِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ، قَالَ : وَمَنْ دَلَّكَ عَلَى هَذَا ؟ قَالَ : رَبِّي قَالَ : إِمَّا لاَ ، فَأَعِنِّي بِكَثْرَةِ السُّجُودِ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার খাদেমকে লক্ষ্য করে যে সব কথা বলতেন সেগুলোর মধ্যে একটি কথা হল, “তোমার কি কোন দরকার আছে?”
একদিন তিনি তার খাদেমকে এ কথাটি বললে-
খাদেম: হে আল্লাহর রাসূল,আমার একটি জিনিস দরকার।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: "তোমার কী জিনিস দরকার?"
খাদেম: আপনি কিয়ামতের দিন আমার জন্য সুপারিশ করবেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: "কে তোমাকে এ বিষয়টির সন্ধান দিলো?"
খাদেম: আমার প্রতিপালক।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: "এটাই যদি তোমার চাওয়া হয় তবে অধিক পরিমাণ সেজদা করা তথা বেশি বেশি নফল সালাত আদায়ের মাধ্যমে আমাকে (এ ব্যাপারে) সাহায্য করো।"
(মুসনাদ আহমদ,হাদীস নং ১৬৫০২,শামেলা)
♦এ প্রসঙ্গে আরেকটি হাদীস:
------------------------
عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ كَعْبٍ الْأَسْلَمِيِّ -رضي الله عنه- قَالَ: كُنْتُ أَبِيتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ -صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- فَأَتَيْتُهُ بِوَضُوئِهِ وَحَاجَتِهِ فَقَالَ لِي: (سَلْ) فَقُلْتُ: أَسْأَلُكَ مُرَافَقَتَكَ فِي الْجَنَّةِ، قَالَ: (أَوْ غَيْرَ ذَلِكَ؟) قُلْتُ: هُوَ ذَاكَ، قَالَ: (فَأَعِنِّي عَلَى نَفْسِكَ بِكَثْرَةِ السُّجُودِ)
রাবীয়া বিন কা'ব আসলামী রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের (খেদমতের উদ্দেশ্যে) তাঁর সাথেই রাতে থাকতাম। (একদিন) আমি তার জন্য ওযুর পানি ও তার প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস নিয়ে তার নিকট হাজির হলে তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বললেন: চাও।
আমি: আমি জান্নাতে আপনার সাথে থাকতে চাই।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: এটা ছাড়া অন্য কিছু?
আমি: এটাই।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: "তোমার এ বিষয়ে আমাকে সাহায্য করো অধিক পরিমাণে সেজদা করার মাধ্যমে অর্থাৎ বেশি বেশি নফল সালাত আদায় করার মাধ্যমে।
(সহীহ মুসলিম, অনুচ্ছেদ: সেজদা করার মর্যাদা ও তাতে উদ্বুদ্ধ করণ, হাদীস নং ১১২২)
কাদের জন্য সুপারিশ করা হবে ?
♦আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
« أَسْعَدُ النَّاسِ بِشَفَاعَتِى يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ، خَالِصًا مِنْ قَلْبِهِ أَوْ نَفْسِهِ »
”কিয়ামতের দিন আমার শাফায়াত লাভে সেই ব্যক্তি সৌভাগ্য মণ্ডিত হবে, যে আন্তরিকভাবে বলবে: `লাইলাহা ইল্লাল্লাহ' তথা আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই।"(সহীহ বুখারী, অনুচ্ছেদ,হাদীসের প্রতি আগ্রহ,হাদীস নং ৯৯,শামেলা)
♦আবুযার গিফারী আল্লাহর রাসূল (স.) হতে বর্ণনা করেন:
أُعطيت الشفاعة و هی نائلةٌ من أمتی مَن لا يشرک بالله شيئاً
“আমার উম্মতের মধ্যে সেই ব্যক্তি আমার শাফায়াত পাবে যে আল্লাহকে কোনো কিছুর সঙ্গে শরিক করেনি।”