স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের এবং হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মুবারক শানের খিলাফ- মোদ্দাকথা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সব অনুষঙ্গেই মিথ্যা, কুফরী ও জঘন্য সমালোচনার জাল বিস্তার করেছে মালানা মওদুদী।
তার সেই অসংখ্য কুফরী আক্বীদার মধ্য হতে মাত্র কয়েকটি কুফরী আক্বীদা ক্ষুদ্র প্রমাণস্বরূপ নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
১) মহান আল্লাহ পাক উনার সম্পর্কে মওদুদীর কুফরী আক্বীদা: “যে ক্ষেত্রে নর-নারীর অবাধ মেলামেশা, সেক্ষেত্রে জেনার (ব্যভিচারের) কারণে (আল্লাহ পাকের আদেশকৃত) রজম শাস্তি প্রয়োগ করা নিঃসন্দেহে যুলুম।” (নাঊযুবিল্লাহ)
(তাফহীমাত, ২য় খ-, ২৮১ পৃষ্ঠা)
২) হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে মওদুদীর কুফরী আক্বীদা: “মহানবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানবিক দুর্বলতা থেকে মুক্ত ছিলেন না।” (নাঊযুবিল্লাহ)
(তরজমানুস্ সুন্নাহ, ৩য় খ-, ৩০৫ পৃষ্ঠা)
৩) হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে মওদুদীর কুফরী আক্বীদা: “নবীগণ মা’ছূম নন। প্রত্যক নবী গুনাহ করেছেন।” (নাঊযুবিল্লাহ)
(তাফহীমাত, ২য় খ-, ৪৩ পৃষ্ঠা)
৪) হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে মওদুদীর কুফরী আক্বীদা: “ছাহাবাদিগকে সত্যের মাপকাঠি জানবে না।” (নাঊযুবিল্লাহ)
(দস্তরে জামাতে ইসলামী, ৭ পৃষ্ঠা)
৫) হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে মওদুদীর কুফরী আক্বীদা: “ফেরেশতা প্রায় ঐ জিনিস- যাকে গ্রীক, ভারত ইত্যাদি দেশের মুশরিকরা দেবী-দেবতা স্থির করেছে।” (নাঊযুবিল্লাহ)
(তাজদীদ ও ইহইয়ায়ে দ্বীন, ১০ পৃষ্ঠা)
(৬) হযরত আদম আলাইহিস সালাম মানবিক দুর্বলতায় আক্রান্ত ছিলেন।”
( তাহফীমুল কুরআন উর্দু ,৩/১২৩)
(৭) হযরত নূহ আলাইহিস সালাম চিন্তা ধারার দিক থেকে দীনের চাহিদা থেকে সরে গিয়েছিলেন।”
( তাহফীমুল কুরআন ২/৩৪৪, ৩য় সংস্করন ,১৯৬৪ ইং )
(৮) নবী হওয়ার পূর্বে হযরত মুসা আলাইহিস সালাম দ্বারা একটি কবীরা গুনাহ হয়েছিলো।”
( রাসায়েল ও মাসায়েল ১/৩১)
(৯) হযরত দাউদ আলাইহিসসালাম উনার কাজের মধ্যে নফস ও অভ্যন্তরীন কুপ্রবৃত্তির কিছুটা দখল ছিলো।”
( তাহফীমুল কুরআন উর্দু, ৪/৩২৭, সূরা রাদ এর তাফসীর , অক্টোবর ১৯৬৬, ১ম সংস্করণ )
(১০) হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম তৎকালীন যুগে ইসরাঈলী সোসাইটি দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়ে এক বিবাহীত যুবতীর উপর আসক্ত হয়ে তাকে বিবাহ করার জন্য তার স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন করেছিলেন।”
( তাহফিমাত ২/৪২, ২য় সংস্করণ , নির্বাচিত রচনাবলী ২/৭৩ , আধুনিক প্রকাশনী ১ম প্রকাশ ১৯৯১ ইং )
(১১) সাহাবায়ে কিরাম অনেকে মনগড়া হাদীস বর্ননা করেছেন।”
( তরজুমানুল কুরআন ,৩৫ সংখ্যা)
(১২) হযরত আবু বকর সিদ্দিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু খিলাফতের দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ অযোগ্য ছিলেন।”
( তাজদীদ ও এহহীয়ায়ে দীন ২২ পৃ )
(১৩) হযরত উসমান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার মাঝে স্বজন প্রীতীর বদগুন বিদ্যমান ছিলো।”
( খেলাফত ও মুলকিয়াত ৯৯ পৃ )
(১৪) হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু খেলাফত কালে এমন কিছু কাজ করেছেন যাকে অন্যায় বলা ছাড়া উপায় নাই !”
( খেলাফত এ মুলকিয়াত ১৪৬ পৃ)
(১৫) হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু আনহু স্বর্থবাদী , গনিমতের মাল আত্বসাৎকারী , মিথ্যা সাক্ষ্য গ্রহনকারী ও অত্যাচারী ছিলেন।”
( খেলাফত ও মুলকিয়াত ১৭৩ পৃ)
(১৬) কুরআন শরীফ হেদায়েতর জন্য যথেষ্ট কিন্তু নাজাত বা মুক্তির জন্য নয়।'”
( তাহফিমাত ১/৩১২)
(১৭) হাদীস শরীফ কিছু লোক থেকে কিছু লোক পর্যন্ত মুখে মুখে বর্নিত হয়েছে , এসব বড়জোর সঠিক বলে ধারনা করা যেতে পারে কিন্তু দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করার কোন অবকাশ নাই। ”
( রাসায়েল ও মাসায়েল ৬৭ পৃ)
শুধু তাই নয়, স্বয়ং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে এই কাফেরটা কি বলেছে দেখুন —
(১৮) “মহানবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানবিক দুর্বলতা থেকে মুক্ত ছিলেন না। অথাৎ তিনি মানবিক দুর্বলতার বশিভুত হয়ে গুনাহ করেছিলেন।
( তরজমানুল কুরআন , ৮৫ সংখ্যা , ২৩০ পৃষ্ঠা , তরজমানুস সুন্নাহ ৩/৩০৫ )
(১৯) ” মহানবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রিসালতের দায়িত্ব পালনে ত্রুটি করেছেন , তাকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে ”
( তাহফীমুল কুরআন , সূরা নসরের তাফসীর)
উল্লেখ্য, সব হক্কানী-রব্বানী আলিম ও মুফতীগণ উনাদের ইজমা তথা ঐকমত্যে উপরোক্ত আক্বীদাধারী ব্যক্তি মুসলমান নয়; বরং মুরতাদ।
আরো উল্লেখ্য যে, মওদুদীর মৃত্যুর পর শিয়া সম্প্রদায়ের একটি মুখপত্রে বলা হয়েছিল, “মরহুম (মওদুদী) তার ভিন্ন আঙ্গিকে শিয়া মতবাদ প্রচলনেও সহায়তা করেছে।”
(সাপ্তাহিক শিয়া, লাহোর, ১৯৭৯ ইং, ৫৭ সংখ্যা ৪০/৪১; খোমেনী ও মওদুদী দু’ভাই, পৃষ্ঠা ১২)
আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে অপছন্দ করেন তার পরিণাম কি ভয়াবহ হতে পারে তা কল্পনাতীত! দুনিয়াতেও তার লাঞ্ছনা-গঞ্জনার শেষ নেই। মওদুদীকে মানুষের কাছে লাঞ্ছিত করার জন্যই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত প্রকাশ পেয়েছে সাবেক সোভিয়েত গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি’র কর্মকর্তা ভ্যাসিলি মিত্রোখিনের সংগৃহীত নথি-তথ্যের ভিত্তিতে ব্রিটিশ অধ্যাপক ক্রিস্টোফার এন্ড্রু’র রচনায়।
“…..ইন্টারনেটে বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ভ্যাসিলি নিকোতিচ মিত্রোখিন ১৯২২ সালে মধ্য রাশিয়ায় জন্মগ্রহণ করে। কাজাখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক মিত্রোখিন ইউক্রেনের মিলিটারি প্রসিকিউটর পদে যোগ দিয়েছিলো। সে ১৯৪৮ সালে তৎকালীন রুশ গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি’র ফরেন ইন্টিলিজেন্স অফিসার হিসেবে যোগদান করে। কয়েকটি অপারেশনে ব্যর্থতার পর তাকে কেজিবি’র নবগঠিত আর্কাইভ শাখার প্রধান পদে সরিয়ে নেয়া হয়। ১৯৭২ থেকে ১৯৮৪ সালের মধ্যে তার তত্ত্বাবধানেই ‘কেজিবি আর্কাইভের’ সব গোপন নথিপত্র লুবিয়াংকের কার্যালয় থেকে ইয়াসেনেভোস্থ কেজিবি’র প্রধান কার্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। এই সময়ের ভিতর জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সে বিভিন্ন গোপন দলীলের কপি সংগ্রহ করে। ১৯৮৫ সালে অবসর নেয় মিত্রোখিন। আর ১৯৯২ সালে মিত্রোখিন ও তার পরিবারের সাথে ৬ ট্রাংক ভর্তি ২৫ হাজার পৃষ্ঠার নথিপত্র যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়া হয়।
১৯৯৯ সালে লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয় ভ্যাসিলি মিত্রোখিন ও অধ্যাপক ক্রিস্টোফার এন্ড্রু’র লেখা ‘দ্য মিত্রোখিন আর্কাইভ’ ‘দ্য কেজিবি এন্ড ইউরোপ এন্ড দ্য ওয়েস্ট’। আর একই বছর নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত হয় ‘দ্য সোর্ড অব দ্য শিল্ড’ ‘দ্য মিত্রোখিন আর্কাইভ এন্ড দ্য সিক্রেট হিস্ট্রি অব কেজিবি’। এসব তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়ায় রাশিয়ার রোষানলে পড়ে মিত্রখিন। তাকে গোপনে বিষ প্রয়োগে হত্যা
করে রাশিয়া। ২০০৪ সালের ২৩ জানুয়ারি মিত্রোখিন বিষক্রিয়ায় মারা যায়। মৃত্যুর দেড় বছরের মাথায় ‘মিত্রোখিন আর্কাইভ’-এর দ্বিতীয় খ- প্রকাশিত হওয়ার মাধ্যমে আবারো আলোচনায় ফিরে আসে সে। মিত্রোখিনের এসব তথ্যের ভিত্তিতে লেখা বই নিয়ে প্রথমে তোলপাড় শুরু হয় ভারতে। কেননা মিত্রোখিনের সংগ্রহ করা তথ্যমতে, ১৯৭০-এর দশকে ভারতের ইন্দিরা গান্ধী সরকারকে ঘুষ দিয়ে হাতের মুঠোয় নিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন।
বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অনেক আগেই রাশিয়ার নজরে পড়ে গিয়েছিলো ইন্দিরা গান্ধী। …..কেজিবি’র নথিপত্রের তথ্য উল্লেখ করে এন্ড্রু’র বই জানাচ্ছে, ১৯৭৩ সালের মধ্যে অন্তত ১০টি ভারতীয় সংবাদপত্র ও ১টি সংবাদ সংস্থাকে নিয়মিত অর্থ যুগিয়েছে তারা। শুধু ১৯৭২ সালেই ওই সংবাদপত্রগুলোতে কেজিবি’র ফরমায়েশ অনুযায়ী ৩ হাজার ৭৮৯টি প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে।
…..পাকিস্তানের রাজনীতিতে কেজিবি’র ভূমিকা নিয়ে আছে নানা তথ্য। ১৯৭৭ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে জেনারেল জিয়াউল হক্ব। মিত্রোখিনের তথ্য অনুযায়ী, এ সময় থেকেই কেজিবি তাদের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নেয় ভুট্টোর ছেলে মুর্তাজাকে। “আফগান গোয়েন্দা সংস্থা ‘খাদ’-এর প্রধান মুহম্মদ নাজিবুল্লাহর সাথে ঘনিষ্ঠতা ছিল মুর্তাজার। ‘খাদ’-এর মাধ্যমেই মুর্তাজার সাথে যোগাযোগ করে কেজিবি।…. ১৯৮২ সালে নাজিবুল্লাহর সহায়তায় জিয়াকে হত্যার দুটি ষড়যন্ত্র করে মুর্তাজা। কিন্তু দুটিই ব্যর্থ হয় পাকী সন্ত্রাসীদের সোভিয়েত অস্ত্র ব্যবহারে অনভিজ্ঞতার কারণে। ….”
এরপর এন্ড্রু ও ভ্যাসিলি মিত্রোখিনের লেখা এবং ব্রিটেন থেকে প্রকাশিত ‘দ্য মিত্রোখিন আর্কাইভ’ নামক ওই বইয়ের ভলিয়্যুম-২এ যে বোমা ফাটানো হয়েছে তাহলো- “ধর্মব্যবসায়ী দল জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মালানা আবুল আলা মওদুদী ছিলো সিআইএ’র এজেন্ট।”
তার এই কুকর্মের আরেকটি সাক্ষী সে সময়কার করাচীর ‘শিহাব’ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক এবং জামাতের প্রাক্তন আমীর মালানা কাউসার নিয়াজী। সে জামাত ও মওদুদীর তীব্র সমালোচনা করে এই তথ্য ফাঁস করে দেয় যে, “জামাত আরবের দেশগুলোতে অবস্থিত বিভিন্ন বিদেশী তেল কোম্পানির কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ সাহায্য লাভ করে আসছে।”
(দৈনিক পূর্বদেশ, ২৩ ডিসেম্বর ১৯৬৯ ঈসায়ী)
“সত্যই মওদুদীর মৃত্যুর পর তখনকার দিনে (অর্থাৎ ১৯৭৯ ঈ. সালে) ব্যাংকে তার নামে নগদ অর্থ যা গচ্ছিত ছিলো তার পরিমাণ ছিলো ১০,৩৭০০০ (দশ লক্ষ সাইত্রিশ হাজার) টাকা।”
(খোমেনী ও মওদুদী দু’ভাই, পৃষ্ঠা ৪৮)
একই সময় মালানা গোলাম গাওস হাজারভী বলেছিল, “মওদুদী আমেরিকার স্বার্থে কাজ করছে। মওদুদী আমেরিকার এজেন্ট। তার মৃত্যু সেখানেই হবে যাদের স্বার্থে সে কাজ করছে।”
মহান আল্লাহ পাক উনার কি অপার মহিমা! তাই-ই হয়েছে। মিস্টার মওদুদী ১৯৭৯ সালে আমেরিকায় তার প্রভুদের কোলেই মৃত্যুবরণ করে।”
এই হলো জামাতের প্রতিষ্ঠাতা আবুল কালা মওদূদীর ইতিহাস। এখন যারা এই মওদূদী জামায়াতের মাধ্যমে ইসলাম কায়েম করতে চায় তারা কি প্রকৃতপক্ষে কি মিশন বাস্তবায়ন করতে চায় ?
তারা মূলত আমেরিকার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। দেশটাকে ধ্বংসস্তুপ বানাতে চায়। তারা চায় সহজ সরল মানুষদের গোমরাহ ও পথভ্রষ্ট করে জাহান্নামে পাঠাতে।