কিতাবঃ অমূল্য রত্ন 
শায়খে তরিকত, আমীরে আহলে সুন্নাত দাওয়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা হযরত আল্লামা মাওলানা আবু বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদিরী দামাত বারাকাতুহুমুল আলীয়া 

 
প্রকাশনায় : মাকতাবাতুল মাদীনা। 
দাওয়াতে ইসলামী 

এই বইটি শায়খে তরিকত, আমীরে আহলে সুন্নাত, দাওয়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা হযরত আল্লামা মাওলানা আবু বিলাল মুহাম্মদ ইইয়াস আত্তার কাদিরী রযবী دَامَتۡ بَرَكَاتُهُمُ الۡعَالِيَه উর্দু ভাষায় লিখেছেন। দাওয়াতে ইসলামীর অনুবাদ মজলিশ এই বইটিকে বাংলাতে অনুবাদ করেছে। যদি অনুবাদ, কম্পােজ বা প্রিন্টিং এ কোন প্রকারের ভুলত্রুটি আপনার দৃষ্টিগােচর হয়, তাহলে অনুগ্রহ করে মজলিশকে লিখিতভাবে জানিয়ে প্রচুর সাওয়াব হাসিল করুন। (মৌখিকভাবে বলার চেয়ে লিখিতভাবে জানালে বেশ উপকৃত হয়।) এই ঠিকানায় পাঠিয়ে দিন। 


দাওয়াতে ইসলামী
মাকতাবাতুল মদীনা এর বিভিন্ন শাখা

ফয়যানে মাদীনা জামে মসজিদ, জনপথ মােড়, সায়দাবাদ, ঢাকা। ফোন নং-০১৯২০-০৭৮৫১৭ 

ফয়যানে মাদীনা জামে মসজিদ, নিয়ামতপুর, সৈয়দপুর, নীলফামারী। 
মােবাইল নং-০১৭১২-৬৭১৪৪৬ 

কে.এম-ভবন, দ্বিতীয় তলা ১১ আন্দরকিল্লা, চট্টগ্রাম । মােবাইল নং-০১৮১৩-৬৭১৫৭২ 

E-mail : bdtarajim@gmail.com maktaba@dawateislami.net web : www.dawateislami.net 


টেক্সট রেডি: মুহাম্মাদ আবদুল কাদির মাহী


اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِيۡنَ وَالصَّلٰوةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى سَيِّدِ الۡمُرۡسَلِيۡنَ اَمَّابَعۡدُ فَاَعُوۡذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيۡطٰنِ الرَّجِیۡم ط 
بِسۡمِ اللّٰهِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِيۡم ط 


কিতাব পাঠ করার দুআ 

শায়খে তরিকত, আমীরে আহলে সুন্নাত, দাওয়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা, হযরত আল্লামা মাওলানা আবু বিলাল মুহাম্মদ ইল্‌ইয়াস আত্তার কাদিরী রযবী دَامَتۡ بَرَكَاتُهُمُ الۡعَالِيَه বর্ণনা করেন ? যে ব্যক্তি ধর্মীয় কিতাবাদি পাঠ করার শুরুতে নিম্নে প্রদত্ত দুআটি পড়ে নেয়, তবে যা কিছু পাঠ করা হবে, তা স্মরণে থাকবে। اِنشَاءَ اللّٰهُ عَزَّ وَجَلَّ 

দুআটি নিম্নরূপ 

اَللّٰهُمَّ افۡتَحۡ عَلَيۡنَا حِكۡمَتَكَ وَانۡشُرۡ عَلَيۡنَا رَحۡمَتَكَ يَا ذَالۡجَلَالِ وَالۡاِكۡرَام 

অনুবাদ :- হে আল্লাহ! আমাদের জন্য আপনার জ্ঞান ও হিকমতের দরজা খুলে দিন এবং আমাদের উপর আপনার বিশেষ অনুগ্রহ নাযিল করুন। হে চির মহান! হে চির মহিমান্বিত। (আল মুস্তাতারাফ, খন্ড-১ম, পৃ-৪০, দারুল ফিকির, বৈরুত) । নােট :- দুআটি পড়ার আগে ও পরে একবার করে দুরূদ শরীফ পাঠ করুন। 

اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِيۡنَ وَالصَّلٰوةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى سَيِّدِ الۡمُرۡسَلِيۡنَ اَمَّابَعۡدُ فَاَعُوۡذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيۡطٰنِ الرَّجِیۡم ط 
بِسۡمِ اللّٰهِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِيۡم ط 

 শয়তান লাখাে অলসতা প্রদর্শন করুক, তারপরও আপনি এ রিসালাটি সম্পূর্ণ পাঠ করে নিন। اِنشَاءَ اللّٰهُ عَزَّ وَجَلَّ  এতে আপনি দ্বীন ও দুনিয়ার অসংখ্য কল্যাণ লাভ করতে পারবেন। 

দুরূদ শরীফের ফযীলত

আলা হযরত ইমামে আহলে সুন্নাত মাওলানা শাহ ইমাম আহমদ রেযা খান   رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ   ফাতাওয়ায়ে রযবীয়্যাহ শরীফ এর ২৩ তম খন্ডের ১২২ পৃষ্ঠাতে বর্ণনা করেন, হযরত আবুল মাওয়াহেব  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  বর্ণনা করেছেন, আমি স্বপ্নযােগে রাসূলুল্লাহ صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم এর সাক্ষাত পেলাম, তিনি আমাকে বলেন, “কিয়ামতের দিন তুমি এক লক্ষ মানুষের জন্য সুপারিশ করবে।” আমি আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসূল صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم আমি কিভাবে এ যােগ্যতা অর্জন করলাম? তিনি বললেন, “এ জন্যই যে, তুমি আমার উপর দুরূদ পাঠ করে এর সাওয়াব আমার জন্য মান্নত করে দিতে।” (সাআদাতুত দারাইন, খন্ড-১ম, পৃ-১৩২)। 
সাওয়াব মান্না করার নিয়ম হচ্ছে, দুরূদ শরীফ পাঠ করার সময় মনে মনে সাওয়াব মান্নাত করার নিয়ত করা অথবা পাঠ করার আগে বা পরে মুখে বলা যে এ দুরূদ শরীফের সাওয়াব আমি হুযুর صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم এর জন্য মান্নত করছি। 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب
صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

কথিত আছে যে, একদা এক বাদশাহ তাঁর অনুচরদের নিয়ে বাগানের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি লক্ষ্য করলেন, বাগানের ভিতর থেকে এক ব্যক্তি ছােট ছােট পাথরের ঢিল নিক্ষেপ করছে। এমন কি একটি ঢিল বাদশাহর গায়েও এসে পড়ল। তিনি অনুচরদের বললেন, ঢিল নিক্ষেপকারীকে আমার নিকট ধরে নিয়ে আস। অনুচরেরা দ্রুত গিয়ে একজন বেদুঈনকে ধরে নিয়ে আসল। বাদশাহ বললেন, এ ছােট ছােট পাথরের টুকরাগুলাে তুমি কোথায় পেয়েছ? সে ভয়ে ভয়ে বলল, জাহাপনা! আমি বন জঙ্গলে ভ্রমণ করছিলাম। হঠাৎ এই সুন্দর সুন্দর পাথরের টুকরাগুলাের প্রতি আমার নজর পড়ল। আমি তা আমার থলেতে ভরে নিলাম। 
 
অতঃপর আমি ঘুরতে ঘুরতে এ বাগানে এসে পৌঁছি। গাছ থেকে ফল পাড়ার জন্যই এখন আমি এ কাঁকরগুলাে (ছােট ছােট পাথর) ছুড়ে মারছি। বাদশাহ বললেন, তুমি কী জান এ (পাথর গুলাের) মূল্য কত? সে বলল না। বাদশাহ বললেন, এ পাথরের টুকরাগুলাে আসলে ছিল এক একটি মূল্যবান হীরার খন্ড, যা তুমি অজ্ঞতাবসতঃ অযথা নষ্ট করে ফেললে। এতে সে আফসােস করতে লাগল। কিন্তু তার আফসােস করাটা অর্থহীন ছিল। কেননা ওই মূল্যবান হীরার খন্ডগুলাে তার হাত ছাড়া হয়ে গেছে। 

“দিনভর খেলো মে খাক উড়ায়ি 
লাজ্জ আয়ি না যাররোঁ কি হাঁসি ছে।” 

জীবনের প্রতিটি মুহুর্তই এক একটি মূল্যবান হীরা 

প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! অনুরূপ আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত, শ্বাস-প্রশ্বাসই এক একটি মূল্যবান হীরা। যদি আমরা তা অযথা নষ্ট করে দেই, তাহলে পরবর্তীতে আমাদের আক্ষেপ ও আফসােসের অন্ত থাকবে না। মহান আল্লাহ তাআলা মানুষকে একটা বিশেষ উদ্দেশ্যের একটি সীমিত সময়ের জন্য এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তিনি পবিত্র কুরআনের ১৮ তম পারার সূরা আল মুমিনুন এর ১১৫ নং আয়াতে ইরশাদ করেন, 
اَفَحَسِبۡتُمۡ اَنَّمَا خَلَقۡنٰكُمۡ  عَبَثًا وَّاَنَّكُمۡ اِلَيۡنَا لَا تُرۡجَعُوۡنَ ۞
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ : তবে তােমরা কি এ কথা মনে করছাে যে, আমি তােমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তােমাদেরকে আমার প্রতি প্রত্যাবর্তন করতে হবে না।
 তাফসীরে খাযায়েনুল ইরফানে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় উল্লেখ আছে, তােমাদের কি পরকালে কর্মফলের জন্য উঠানাে হবে না? বরং তােমাদেরকে ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে এবং তােমাদের উপর ইবাদত আবশ্যকও করা হয়েছে। পরকালে তােমাদেরকে আমার নিকট ফিরে আসতেই হবে। তখন তােমাদেরকে তােমাদের আমল সমূহের প্রতিদান দেয়া হবে। 
জীবন মৃত্যু সৃষ্টির রহস্য বর্ণনা করে মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনের ২৯ তম পারার সূরাতুল মূলক এর দ্বিতীয় আয়াতে ইরশাদ করেন, 

الَّذِیۡ خَلَقَ الۡمَوۡتَ وَالۡحَيٰوةَ، لِيَبۡلُوَكُمۡ اَيُّكُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ : তিনি, যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন, যাতে তােমাদের পরীক্ষা হয়ে যায় তােমাদের মধ্যে কার কর্ম অধিক উত্তম। 

জীবনকাল খুবই অল্প 

প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! উল্লেখিত দুইটি আয়াত ছাড়াও কুরআনুল কারীমের আরাে অসংখ্য আয়াতে মহান আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জাত মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য বর্ণনা করেছেন। এ ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে মানুষকে থাকতে হবে একেবারে স্বল্প সময়। কিন্তু এ স্বল্প সময়ের মধ্যেই তাকে প্রস্তুতি নিতে হবে কবর, হাশর ইত্যাদির সুদীর্ঘ জীবনের। প্রস্তুতি নিতে হবে পরকালের বিভীষিকাময় ও বিপদ সঙ্কুল অবস্থা হতে পরিত্রান লাভের। তাই মানুষের জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত খুবই মূল্যবান। সময় একটি দ্রুতগামী গাড়ির মত নিঃশব্দে চলে যাচ্ছে। কোন বাধা প্রদানকারী একে বাধা প্রদান করতে পারছে না, কেউ এর গতি রােধ করতে সক্ষম হচ্ছে না। যে নিঃশ্বাস আমরা একবার ত্যাগ করছি তা পুনরায় আমাদের নিকট আর ফিরে আসছে না। 

নিঃশ্বাসের মালা 

হযরত সায়্যিদুনা হাসান বসরী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ বলেছেন, তাড়াতাড়ি করাে! তাড়াতাড়ি করাে!! তােমাদের জীবনটা প্রকৃতপক্ষে কী? জীবন হচ্ছে কয়েকটি নিঃশ্বাসের সমষ্টি মাত্র। যদি তা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে তােমাদের সে আমল সমূহের ধারাও বন্ধ হয়ে যাবে, যা দ্বারা তােমরা আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ কর। আল্লাহ তাআলা সে ব্যক্তির প্রতি সদয় হন যে নিজের হিসাব নিকাশ নিজেই নিয়েছে এবং নিজের কৃত পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়ে কয়েক ফোটা অশ্রু প্রবাহিত করেছে। এটা বলার পর তিনি পবিত্র কুরআনের ১৬ পারার সূরা মরিয়মের ৮৪ নং আয়াতটি তিলাওয়াত করেন। 
اِنَّمَا نَعُدُّلَهُمۡ عَدًا 
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ : আমি তাে তাদের গননা পূর্ণ করছি। 
হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত সায়্যিদুনা ইমাম মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ গাজ্জালী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ বলেন, উপরােক্ত আয়াতে গণনা দ্বারা শ্বাস প্রশ্বাসের গণনাই উদ্দেশ্য। (ইহইয়াউল উলুম, খন্ড-৪, পৃ-২০৫, দারে সাদির, বৈরুত)।

“ইয়ে শ্বাস কি মালা আব বছ টুটনে ওয়ালী হে, গাফলত ছে মগর দিল কিউ বেদার নিহি হােতা।” 

দিনের ঘােষণা 

হযরত সায়্যিদুনা ইমাম বায়হাকী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ শুআবুল ঈমান নামক গ্রন্থে বর্ণনা করেন, তাজদারে মাদীনা صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন, প্রতিদিন সকালে যখন সূর্য উদিত হয়, তখন দিন ঘােষনা করে, যদি কেউ আজ কোন ভাল কাজ করতে চায় , তাহলে সে যেন তা করে নেয়। কেননা আজকের পর আমি আর পুনরায় ফিরে আসব না। (শুআবুল ঈমান, খন্ড-৩য়, পৃ-৩৮৪, হাদীস নং-৩৮৪০, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত)।

“গিয়া ওয়াক্ত ফের হাত আতা নেহী,” 

জনাব না মরহুম 

প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! জীবনের যে দিনটি আজ আপনার ভাগ্যে জুটল তাকে গনিমত মনে করে আপনি যতটুকু পারেন ভাল ভাল কাজ করে নিন। এটাই হবে আপনার জন্য মঙ্গলজনক। কেননা আমরা জানিনা আগামীকাল যেদিনটি আমাদের নিকট আসবে তাতে লােকেরা আমাদেরকে কি “জনাব” বলে সম্বােধন করবে না “মরহুম” বলে সম্বােধন করবে। আমাদের অনুভূতি হােক বা না হােক, এটা দিনের মত সত্য যে, আমরা মৃত্যুর দিকে খুব দ্রুততার সাথে এগিয়ে যাচ্ছি। মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনের ৩০ পারার সূরা ইনশিকাক এর ৬ নং আয়াতে ইরশাদ করেন, 
يٰاَيُّهَا الۡاِنۡسَانُ اِنَّكَ كَادِحٌ اِلٰی رَبِّكَ كَدۡحًا فَمُلٰقِيۡهِ ۞
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ : হে মানব! নিশ্চয় তােমাকে আপন রবের প্রতি দৌঁড়াতে হবে। অতঃপর তার সাথে সাক্ষাত করতে হবে

মরতে যাতে হ্যাঁয় হাজারাে আদমি, আকেল অ নাদান আখের মওত হেয়। 

হঠাৎ মৃত্যু চলে আসে

নিজেদের সময়কে অযথা অপচয়কারীগণ! একটু ভেবে দেখুন, জীবন কতই দ্রুততার সাথে চলে যাচ্ছে। হয়ত অনেকবার আপনারা দেখেছেন সুস্থ, সবল ও সুঠাম দেহের অধিকারী ব্যক্তিও হঠাৎ মৃত্যুর 
কোলে ঢলে পড়ে। মৃত্যুর পর কবরে তার ওপর কি ঘটছে তা আমরা জানতে পারি না। তবে এ কথা সত্য যে, মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তির নিকট তার গােটা জীবনের ইতিবৃত্ত ভেসে ওঠবেই। 

“কেতনি বে এতেবার হে দুনিয়া,
 মওত কা ইনতেজার হে দুনিয়া। 
গরচে জাহের মে সুরতে গুল হে। 
পর হাকিকত মে খার হে দুনিয়া।” 

হে পার্থিব সম্পদের লােভিগণ! দুনিয়ার অর্থ অর্জনকেই জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য বিবেচনাকারীগণ! তাড়াতাড়ি পরকালের প্রস্তুতি গ্রহণ করাে। এমন যেন না হয় যে, রাতে সুস্থ সবল অবস্থায় শােয়ার পর সকালে তােমাকে অন্ধকার কবরে রেখে দেওয়া হয়। আল্লাহর ওয়াস্তে অলসতার নিদ্রা থেকে জাগ্রত হও। মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনের ১৭ পারার সূরাতুল আম্বিয়ার প্রথম আয়াতে ইরশাদ করেন, 

اِقۡتَرَبَ لِلنَّاسِ حِسَابُهُمۡ وَهُمۡ فِیۡ غَفۡلَةٍ مُّعۡرِضُوۡنَ ۞ 

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ : মানুষের হিসাব নিকাশের সময় আসন্ন, কিন্তু তারা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে আছে। 

“এক ঝোঁকে মে হায় ইধার ছে উধর, 
চার দিন কি বাহার হায় দুনিয়া।” 

জান্নাতেও আফসােস

প্রিয় প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! সময়ের মূল্যের প্রতি গুরুত্ব দেয়া আমাদের জন্য একান্ত অপরিহার্য। অযথা সময় নষ্ট করা কতই যে ক্ষতিকর তা এ হাদীস থেকে বুঝে নিন। তাজেদারে মাদীনা হযরত মুহাম্মদ صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  ইরশাদ করেছেন, জান্নাতবাসীরা কোন জিনিসের জন্য আফসােস করবে না, তবে আফসােস সে সময়ের জন্য যা তারা দুনিয়াতে আল্লাহর স্মরণ ব্যতীত অতিবাহিত করেছিল। (আল মুজামুল কাবীর, খন্ড-২০শ, পৃ-৯৩, ৯৪, হাদীস নং-১৭২, দারে ইহইয়াত্তারাসিল। আরবী, বৈরুত)।

কলম চাঁছা

হাফেজ ইবনে আসাকের “তাবইনুল কাযিবিল মুফতারি নামক কিতাবে বর্ণনা করেন, হিজরী পঞ্চম শতাব্দীর স্বনামধন্য বুজুর্গ হযরত সায়্যিদুনা  সুলাইম রাযী  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  এর কলম যখন লিখতে লিখতে ক্ষয় হয়ে যেত, তখন তিনি কলম চাঁছার সময় আল্লাহর যিকির শুরু করে দিতেন, যাতে সে সময়টাও বৃথা না যায়। যদিও ধর্মীয় বিষয়াদি লিখার জন্য কলম চাঁছাটাও একটি সাওয়াবের কাজ। তারপরও এক ঢিলে দুই পাখি মারার উদ্দেশ্যে তিনি কলম চাঁছার সময়টাও আল্লাহর জিকিরে ব্যয় করতেন, যাতে সে সময়টা শুধুমাত্র কলম ছাঁচার কাজে ব্যয় না হয়। 

জান্নাতে বৃক্ষ রােপন করুন

আপনি যদি চান, তাহলে এ দুনিয়াতে থাকাকালীন সময়েই আপনি প্রতি সেকেন্ডেই জান্নাতে এক একটি বৃক্ষ রােপ করতে পারেন। 
জান্নাতে বৃক্ষ রােপন করার পন্থাও খুবই সহজ। ইবনে মাযাহ শরীফের  হাদীসে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি নিম্নোক্ত চারটি শব্দ হতে যে কোন একটি শব্দ পাঠ করবে তার জন্য জান্নাতে একটি বৃক্ষ রােপন করা হবে। সে চারটি শব্দ হচ্ছে যথা (১) سُبۡحٰنَ اللّٰه  (২) اَلۡحَمۡدُ لِلّٰه  (৩)   لَا اِلٰهَ اِلَّا اللّٰهُ (৪) اَللّٰهُ اَكۡبَرُ (সুনানে ইবনে মাযাহ, খন্ড-৪র্থ, পৃ-২৫২, হাদীস নং ৩৮০৭, দারুল মারেফাত, বৈরুত) সুতরাং বুঝা যায় যে, সময় অতি মূল্যবান। । 

দুরূদ শরীফের ফযীলত 

প্রিয় প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আপনারা শুনলেনতাে! জান্নাতে বৃক্ষ রােপন করা কতই সহজ। যদি বর্ণিত চারটি শব্দ থেকে যে কোন একটি আপনি পাঠ করেন তাহলে একটি, আর যদি চারটি শব্দই পাঠ  করেন তাহলে জান্নাতে আপনার জন্য চারটি বৃক্ষ রােপিত হবে। এখন আপনি নিজেই ভেবে দেখুন, সময় কতই মূল্যবান। জিহ্বার সামান্য নাড়াচাড়া দ্বারা যদি জান্নাতে বৃক্ষ রােপন করা সম্ভবপর হয়, তাহলে ফালতু কথাবার্তার স্থানে  سُبۡحٰنَ اللّٰه : জপে জপে আমরা জান্নাতে  অগনিত বৃক্ষ রােপন করতে পারি। উঠা-বসা, চলা-ফেরা, শয়নে স্বপনে, কাজের অবসরে আমরা দুরূদ শরীফও পাঠ করতে পারি। 

কেননা এর সাওয়াবও অসীম। হুযুর صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দুরূদ শরীফ পাঠ করে, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি দশটি রহমত নাজিল করেন, তার দশটি গুনাহ ক্ষমা করে দেন এবং তার দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। (সুনানে নাসায়ী, পৃ-২২২, হাদীস নং-১২৯৪, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত) 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب
صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

স্মরণ রাখবেন! শুয়ে শুয়ে কোন কিছু পড়ার সময় পা গুটিয়ে রাখতে হয়। 

প্রিয় প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! কোন কিছু বলার আগে আপনি ভেবে দেখবেন, যে কথাটি আপনি বলতে চাচ্ছেন তার মধ্যে ইহলৌকিক কিংবা পরলৌকিক কোন কল্যাণ আছে কিনা? যদি আপনার নিকট আপনার সে কথাটি অযথা মনে হয় তাহলে তা না বলে এর পরিবর্তে দুরূদ শরীফ পাঠ করা কিংবা আল্লাহর জিকির করাটাই আপনার জন্য কল্যাণকর হবে। কেননা এতে আপনি অগনিত সাওয়াব অর্জন করতে পারবেন। অথবা : سُبۡحٰنَ اللّٰهِ বা  اَلۡحَمۡدُ لِلّٰه  বা لَا اِلٰهَ اِلَّا اللّٰهُ বা اَللّٰهُ اَكۡبَرُ  জিকির করে জান্নাতে বৃক্ষ রােপন করার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারবেন। 

“জিকরাে দুরূদ হর ঘড়ি বিরদে জবান রহে, মেরি ফুজুল গুঁয়ি কি আদাত নিকাল দো।” 


ষাট বছরের ইবাদতের চেয়েও উত্তম

যদি কিছু পাঠ করতে আপনার মন না চায়, বরং চুপচাপ বসে থাকতেই আপনার ভাল লাগে, তাহলে এর মধ্যেও সাওয়াব অর্জন করার অনেক পন্থা রয়েছে। যেমন আপনি আজে বাজে কল্পনাতে মগ্ন না হয়ে আল্লাহ তাআলার ধ্যান কিংবা মাদীনা ও শাহে মাদীনা صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  এর ধ্যানে মগ্ন হয়ে পড়েন। অথবা ইলমে দ্বীন সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করতে থাকবেন অথবা মৃত্যুর ভয়াবহতা, কবরের একাকীত্ব জীবনের ভয়ানকতা, হাশরের ময়দানের হৃদয় বিদারক দৃশ্যের কল্পনাতে আপনি বিভাের হয়ে পড়েন। এভাবে মগ্ন থাকলে আপনার সময় বৃথা যাবে না। বরং আপনার প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাস اِنشَاءَ اللّٰهُ عَزَّ وَجَلَّ  ইবাদাতের মধ্যেই গণ্য হবে।

“জামেউস সাগীর” কিতাবে বর্ণিত আছে, মাদীনার তাজেদার, হযরত মুহাম্মদ صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  ইরশাদ করেছেন, আখেরাতের বিষয় নিয়ে সামান্য চিন্তা ভাবনা করা ষাট বছরের ইবাদাতের চেয়েও উত্তম। (আল জামেউস সাগীর, লিস সুয়ুতী, পৃ-৩৬৫, হাদীস নং-৮৯৭, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত)। 

“উন কি ইয়াদা মে খাে যাইয়ে, মােস্তফা মােস্তফা কি জিয়ে।” 


পাঁচটির আগে পাঁচটি

প্রিয় প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! নিঃসন্দেহে আমাদের জীবন একেবারে ক্ষণস্থায়ী। যে সময়টা আমরা পেয়েছি তা আমাদের জন্য ছিল গণিমত ও অপ্রতুল। আগামীতে সময় পাওয়ার আশা করা নিতান্ত বােকামী ও ধােকা ছাড়া আর কিছুই নয়। আগামী কাল আমরা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারি। 

রহমতে আলম صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন, 

اِغۡتَنِمۡ خَمۡسًا قَبۡلَ خَمۡسٍ: شَبَابَكَ قَبۡلَ هَرَمَكَ وَصِحَّتَكَ قَبۡلَ سَقَمِكَ وَغِنَاكَ قَبۡلَ فَقۡرِكَ وَفَرَاغَكَ قَبۡلَ شُغۡلِكَ وَحَيَاتَكَ قَبۡلَ مَوۡتِكَ۞ 

অর্থাৎ পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি জিনিসের পূর্বে গণিমত মনে করাে, 
(১) যৌবনকে বার্ধক্যের পূর্বে, 
(২) সুস্থতাকে অসুস্থতার পূর্বে, 
(৩) ধনাঢ্যতাকে দারিদ্রতার পূর্বে, 
(৪) অবসরতাকে ব্যস্ততার পূর্বে, 
(৫) জীবনকে মৃত্যুর পূর্বে। 
(আল মুস্তাদরাক, খন্ড-৫ম, পৃ-৪৩৫, হাদীস নং-৭৯১৬, দারুল মারেফাত, বৈরুত)। 

“গাফেল তুঝে ঘড়িয়াল ইয়ে দেতা হে মুনাদি, কুদরত নে ঘড়ি ওমর কি এক আওর ঘটাদি।” 

দুটি নিয়ামত

 মাদিনার তাজেদার, হযরত মুহাম্মদ صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  ইরশাদ করেছেন, দুইটি নিয়ামত এমন যে, যা নিয়ে অনেক লােক বিভ্রান্তিতে পতিত হয়। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে সুস্থতা এবং অপরটি হচ্ছে অবসর। (সহীহ বুখারী, খন্ড-৪র্থ, পৃ-২২২, হাদীস নং-৬৪১২, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ,বৈরুত)। 

প্রিয় প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! বাস্তবেই অসুস্থতা দ্বারা সুস্থতার গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায় এবং সময়ের মূল্য তারাই উপলব্ধি করতে পারেন, যারা কাজ নিয়ে সর্বদা ব্যস্ত থাকেন। কেননা যারা বেকার তারা কখনাে সময়ের গুরুত্ব বুঝাতে পারে না। সুতরাং সময়ের গুরুত্ব অনুধাবন করুন। বাজে কথাবার্তা বাজে কাজ এবং দলবদ্ধ হয়ে আমােদ ফুর্তি করা থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করুন।

ইসলামের সৌন্দর্য 

তিরমিযী শরীফে বর্ণিত আছে, মাদীনার তাজেদার হযরত মুহাম্মদ صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন, কোন ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্য এই যে, সে যেন অনর্থক কাজ ত্যাগ করে দেয়। (সুনানে তিরমিযী, খন্ড-৪র্থ, পৃ-১৪২, হাদীস নং-২৩৪৪, দারুল ফিকির, বৈরুত)। 

প্রতিটি মূল্যবান মুহুর্তের গুরুত্ব

প্রিয় প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! জীবনের প্রতিটি দিন কয়েকটি ঘন্টার এবং প্রতিটি ঘন্টা কয়েকটি মুহুর্তেরই সমষ্টি। আমাদের জীবনের প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাস এক একটি মূল্যবান হীরার সমতুল্য। তাই প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসের গুরুত্ব উপলব্ধি করা আমাদের একান্ত প্রয়ােজন। যাতে আমাদের কোন শ্বাস-প্রশ্বাসই বৃথা না যায় এবং কিয়ামতের দিনে জীবনের ভান্ডারকে নেকিশূন্য পেয়ে আমাদের লজ্জার অশ্রু বিসর্জন করতে না হয়। আমাদের শতকোটি প্রচেষ্টা হােক আমরা যেন আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহুর্তের হিসাব করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারি। কোন সময় কিভাবে অতিবাহিত করেছি তা যেন আমাদের স্মৃতির আয়নায় চির ভাস্বর থাকে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমাদের ভাগ্য কতই প্রসন্ন হত! যদি আমরা আমাদের জীবনের প্রতিটি ঘন্টাকে কল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করতে পারতাম। কিয়ামতের দিন জীবনের মূল্যবান সময়কে অনর্থক কথাবার্তা, খােশগল্প ইত্যাদিতে কাটানাের দায়ে আমাদের যেন আক্ষেপ করতে না হয়। 

সময়ের প্রতি মর্যাদাবান ব্যক্তিগণের মূল্যবান বানী সমূহ

(১) আমিরুল মুমিনীন শেরে খােদা আলী رَضِیَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ ইরশাদ করেন, “এ দিন সমূহ তােমাদের জীবনের পাতা স্বরূপ। তাই উত্তম আমল দ্বারা তােমরা এ পাতা সমূহকে সাজিয়ে নাও।

(২) হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ বিন মাসউদ رَضِیَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  বলেছেন, “আমি আমার অতীত জীবনের সেসব দিনের জন্য বেশী অনুতাপ বােধ করি, যেসব দিনে আমার আমলনামাতে আমি সাওয়াব অর্জন করতে পারিনি।” 

(৩) হযরত সায়্যিদুনা ওমর বিন আবদুল আজিজ رَضِیَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ  বলেছেন, দৈনন্দিন তােমাদের বয়স কমে যাচ্ছে। সুতরাং তােমরা সৎ কাজ করতে কেন অবহেলা করছ? একদা কেউ তাঁকে বলল, হে আমিরুল মুমিনীন! এ কাজটি আপনি আগামী কালের জন্য রেখে দিন। জবাবে তিনি বললেন, “দিনের কাজ দিনে অনেক কষ্ট করে শেষ করি যদি আমি আজকের কাজও আগামী দিনের জন্য রেখে দিই, তাহলে দুইদিনের কাজ কিভাবে একদিনে শেষ করতে পারব? আজকের কাজ আগামী কালের জন্য রেখে দিও না। আগামী কাল আরেকটি কাজ করতে হবে। 

(৪) হযরত সায়্যিদুনা হাসান বসরী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ বলেছেন, হে মানুষ! তুমি কয়েকটি দিনের সমষ্টি মাত্র। যদি তােমার জীবন থেকে একটি দিন চলে যায়, তবে মনে রেখাে, তােমার জীবনের একটা  অংশও চলে গেল। (আত্ তাবকাতুল কুবরা লিল মুনাবি, খন্ড-১১, পৃ-২৫৯, দারে সাদির, বৈরুত)।

(৫) হযরত সায়্যিদুনা ইমাম শাফেয়ী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  বলেছেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ আহলুল্লাহদের সহবতে ছিলাম। তাঁদের সােহবতে থেকে আমি দুটি মূল্যবান বিষয় শিখতে পেরেছি। (১) সময় তরবারীর ন্যায়। সুতরাং নেক আমল দ্বারা তােমরা তাকে কর্তন করাে। অন্যথা অনর্থক কাজে ব্যস্ত রেখে তা তােমাদের কর্তন করবে, (২) তােমরা স্বীয় নফসের হিফাজত করাে, তােমরা যদি নফসকে ভাল কাজে ব্যস্ত না রাখ তাহলে তা তােমাদেরকে মন্দ কাজে ব্যস্ত রাখবে। 

(৬) ইমাম রাযী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  বলেছেন, “আল্লাহর শপথ! আহারের সময় আমার জ্ঞান চর্চা বন্ধ থাকলে আমার বেশী আফসােস লাগে। কেননা সময় অতি মূল্যবান সম্পদ।” 

জীবনে সময়ের মূল্য বুঝা 

(৭) অষ্টম শতাব্দীর প্রখ্যাত শাফেয়ী মাজহাবের আলেম সায়্যিদুনা শামসুদ্দিন আসবাহানী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ সম্পর্কে হাফেজ ইবনে হাজর رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  লিখেছেন, তিনি এ ভয়ে পানাহার কম করতেন যে, বেশী খেলে হয়ত ঘন ঘন প্রস্রাব পায়খানার প্রয়ােজন দেখা দিতে পারে। ফলে বারবার শৌচাগারে গেলে সময় নষ্ট হতে পারে। (আদ দুরারুল কামেনা লিল আসলানী, খন্ড-৪র্থ, পৃ-৩২৮, দারে ইহইয়ায়িত্তারাসীল আরবী, বৈরুত)। 

(৮) হযরত আল্লামা যাহবী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  তাযকিরাতুল হুফফাজ কিতাবে খতিবে বাগদাদী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  সম্পর্কে লিখেছেন, তিনি পথ চলার সময়ও কিতাবাদি পাঠ করতেন। যাতে আসা যাওয়ার সময়ও অযথা নষ্ট না হয়। (তাযকিরাতুল হুফফাজ, খন্ড-৩য়, পৃ-২২৪, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত)।

(৯) হযরত সায়্যিদুনা জুনাইদ বাগদাদী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  মুমূর্ষ অবস্থায় কুরআন শরীফ পাঠ করছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, আপনি এ মুমুর্ষ অবস্থায় কুরআন শরীফ পাঠ করছেন? তিনি বললেন, আমার আমল নামা চিরতরে বন্ধ হতে যাচ্ছে। তাই আমি তাড়াতাড়ি তাতে কিছু সংযােজন করতে চাচ্ছি। (সায়দুল খাতির লে ইবনে যওযী, পৃ-২২৭, মাকতাবায়ে নজার মােস্তফা আল বাজ)। 


দিনের সময় সূচী বানিয়ে নিন

প্রিয় প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! সম্ভবপর হলে নিজের দৈনন্দিন জীবনের সময়সূচি বানিয়ে নিন। ইশার নামায আদায় করার পর দুই ঘন্টার মধ্যেই শুয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। রাত্রিবেলায় অনর্থক আড্ডা দেয়া, গল্প গুজবে হােটেল রেস্তোরা সরগরম করে তােলা, শরয়ী প্রয়ােজন ছাড়া বন্ধু বান্ধবদের মজলিসে সময় নষ্ট করা খুবই ক্ষতিকারক। তাফসীরে রূহুল বয়ান ৪র্থ খন্ডের ১৬৬ পৃষ্ঠাতে উল্লেখ আছে, লুত   عَلٰی نَبِيِّنَا وَعَلَيۡهِ الصَّلٰوةُ والسَّلَامُ এর জাতির ধ্বংস হওয়ার কারণ এটিও একটি ছিল যে, তারা চৌরাস্তায় বসে লােকদের সাথে ঠাট্টা মশকরা করত।

প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আল্লাহর ভয়ে প্রকম্পিত হােন। বন্ধু যতই অন্তরঙ্গ হােক না কেন, তার সঙ্গ পরিহার করুন। আল্লাহর স্মরণ থেকে বিরত রাখে এরূপ মজলিস বর্জন করুন। রাত্রিবেলায় ধর্মীয় কার্যাবলী সেরে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ুন। কেননা রাত্রি বেলার বিশ্রাম দিনের বেলার বিশ্রামের তুলনায় স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এবং জীবনের স্বভাবগত চাহিদাও তা।
 মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনের ২০ পারার সূরাতুল কাসাস এর ৭৩ নং আয়াতে ইরশাদ করেন, 

وَ مِنۡ رَّحۡمَتَهٖ جَعَلَ لَكُمُ الَّيۡلَ وَ النَّهَارَ لِتَسۡكُنُوۡا فِيۡهِ
وَلِتَبۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِهٖ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُوۡنَ۞ 

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ : এবং তিনি নিজ করুনায় তােমাদের জন্য রাত ও দিন সৃষ্টি করেছেন যেন রাতে আরাম করাে এবং দিনে তার অনুগ্রহ তালাশ করাে। (অর্থাৎ জীবিকা অর্জন করাে) আর এজন্য যে তােমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। 

প্রখ্যাত মুফাসসির, হাকিমুল উম্মত, হযরত মুফতী আহমদ ইয়ার খান رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  তাফসীরে নুরুল ইরফানে ৬২৯ পৃষ্ঠায় এ আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন। এ থেকে বুঝা যায় যে, রােজগারের জন্য দিন আর আরামের জন্য রাতকে নির্ধারিত করা উত্তম। রাতে বিনা কারণে জাগ্রত থাকবে না আর দিনে বেকার থাকবে না। যদি কোন সমস্যার কারণে দিনের বেলায় ঘুমায় আর রাতের বেলায় রােজগার করে তবে ক্ষতি নেই। যেমন রাতের বেলায় চাকুরীরত চাকুরে ইত্যাদি। 


সকাল বেলার ফযীলত

সময় সূচি নির্ধারণের সময় কাজের ধরনও প্রকৃতির প্রতি লক্ষ্য রাখবেন। যেমন যে ইসলামী ভাই রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে যান সকাল বেলায় তার মন মস্তিষ্ক সতেজ থাকে। তাই জ্ঞান চর্চার জন্য সকাল বেলার সময়ই যথােপযুক্ত।
 
সকাল বেলার ফযীলত সম্পর্কে রাসূল صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم এর একটি দুআ ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করেন, রাসূল صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم আল্লাহ তাআলার নিকট দুআ করে বলেন, হে প্রভু! আমার উম্মতের জন্য সকাল বেলার সময়ে বরকত দান করুন। (তিরমিযী, খন্ড-৩য়, পৃ-০৬, হাদীস নং-১২১৬)। 

প্রখ্যাত মুফাসসির, হাকিমুল উম্মত, হযরত মুফতী আহমদ ইয়ার খান رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ   আলােচ্য হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেন, আলােচ্য হাদীসের মর্ম হচ্ছে, হে মালিক! আমার উম্মতের সে সব দ্বীনি ও দুনিয়াবী কাজে বরকত দান করুন যা তারা সকাল বেলায় সম্পাদন করে থাকে। যেমন সফর, জ্ঞানার্জন, ব্যবসা বাণিজ্য ইত্যাদি। (মেরাতুল মানাজিহ, খন্ড-৫ম, পৃ-৪৯১)। 

সকালে ঘুম থেকে উঠার পর থেকে রাতে শােয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিটি কাজের সময় নির্ধারণ করে সে নির্ধারিত সময় মােতাবেকই সব কাজ সম্পাদন করার চেষ্টা করবেন। যেমন তাহাজ্জুদ, জ্ঞান চর্চা, মসজিদে প্রথম তাকবীরের সাথে জামাআত সহকারে ফজরের নামায আদায়, (অনুরূপ অন্যান্য নামাযও) ইশরাক, চাশত, নাশতা, জীবিকা উপার্জন, দুপুরের আহার, পারিবারিক কাজ, সান্ধ্যকালীন কাজ, সংসর্গ, (যদি তা সম্ভবপর না হয় তবে নিঃসঙ্গতাই শ্রেয়) ধর্মীয় প্রয়ােজনে ইসলামী ভাইদের সাথে যােগাযােগ ইত্যাদি কাজের জন্য সময় নির্ধারণ করে সে সময় মােতাবেকই সব কাজ করার চেষ্টা করবেন। আর যারা নির্ধারিত সময় মােতাবেক কাজ করার অভ্যস্ত নন। তাদের রুটিন মােতাবেক কাজ করতে প্রথম প্রথম একটু কষ্ট হতে পারে, কিন্তু যখন তারা রুটিন মােতাবেক কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলবেন, তখন এর সুফল তারা নিজেরাই দেখতে পাবেন। 

“দিন লহু মে খােনা তুঝে শবে সুবহে তক ছােনা তুঝে, 
শরমে নবী, খওফে খােদা ইয়ে ভি নিহি ওহ ভি নিহি
 রিযকে খােদা খায়া কিয়া ফরমানে হক টালা কিয়া
 শুকরে করম তারাছে যা ইয়ে ভি নিহি ওহ ভি নিহি।” 
(হাদায়েখে বখশিশ)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب
صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

প্রিয় প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! সুন্নাতের ফযীলত এবং কয়েকটি সুন্নাত ও আদাব বর্ণনা করে রিসালা শেষ করার চেষ্টা করছি। 

তাজদারে রিসালাত صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  ইরশাদ করেছেন, যে আমার সুন্নাতকে ভালবাসল সে আমাকে ভালবাসল, আর যে আমাকে ভালবাসল সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে। (মিশকাতুল মাসাবিহ, খন্ড ১ম, পৃ-৫৫, হাদীস নং-১৭৫, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত)। 

“সুন্নাত আম করে দ্বীনা কা হাম কাম করে, নেক হাে যাঁয়ে মুসলমান মদীনে ওয়ালে।”

 صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب
صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد

(১) শােয়ার আগে বিছানা ভালভাবে ঝেড়ে নিন, যাতে বিছানাতে কোন বিষাক্ত কীট পতঙ্গ থাকলে তা বের হয়ে যায়।
(২) শােয়ার পূর্বে এ দোয়াটি পড়ে নেবেন।
اَللّٰهُمَّ بِاسۡمِكَ اَمُوتُ وَاَحۡیٰ
হে আল্লাহ! আমি আপনার নাম নিয়েই মরি এবং জীবিত হই। (অর্থাৎ ঘুমাই এবং জাগ্রত হই) (বুখারী, খন্ড-৪র্থ, পৃ-১৯৬, হাদীস নং-৬৩২৫) । 
(৩) আসরের পর ঘুমাবেন না। কেননা এতে জ্ঞান লােপ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাসূলুল্লাহ  صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আসরের পর ঘুমায়, ফলে তার জ্ঞান লােপ পায়, তখন সে নিজকেই দোষারােপ করে। (মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস নং-৪৮৯৭, খন্ড ৪র্থ, পৃ-২৭৮)।
(৪) দুপুরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়া মুস্তাহাব। (আলমগীরী, খন্ড-৫ম, পৃ ৩৭৬) 
সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আজমী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  বলেন, যারা রাত্রি বেলায় ইবাদতের জন্য জাগ্রত থাকে, রাত্রে নামায পড়ে, আল্লাহর জিকির করে। অথবা ধর্মীয় কিতাবাদি অধ্যায়নে রত থাকে, তাদেরই দুপুরে বিশ্রাম নেয়া উচিত। যাতে রাত্রি জাগরনের কারণে যে দূর্বলতা সৃষ্টি হয়, বিশ্রামের দ্বারা তা দূরীভূত হয়ে যায়। (বাহারে শরীয়ত, খন্ড ১৬শ, পৃ-৭৯, মাকতাবাতুল মাদীনা)।
(৫) দিনের প্রথম প্রহরে কিংবা মাগরিব ও ইশার মধ্যবর্তী সময়ে ঘুমানাে মাকরূহ। (আলমগীরী, খন্ড-৫ম, পৃ-৩৭৬)।
(৬) পবিত্রতা ওযু সহকারে ঘুমানাে মুস্তাহাব। 
(৭) ডান হাতকে গালের নিচে রেখে  কিবলামুখী হয়ে ডান কাতে ঘুমাবেন অতঃপর বাম কাতে ঘুমাবেন। (প্রাগুক্ত)
(৮) শােয়ার সময় কবরে শােয়ার কথা স্মরণ করবেন। কেননা সেখানে একাকী শয়ন করতে হবে। নিজের আমল ছাড়া অন্য কিছু  সেখানে আপনার সাথে থাকবে না।
(৯) শােয়ার সময় আল্লাহ তাআলার স্মরণে মগ্ন থাকবেন এবং ঘুম না আসা পর্যন্ত তাহলিল, তাসবিহ ও তাহমিদ তথা سُبۡحٰنَ اللّٰهِ বা  اَلۡحَمۡدُ لِلّٰه  বা لَا اِلٰهَ اِلَّا اللّٰهُ বা اَللّٰهُ اَكۡبَرُ কেননা যে অবস্থাতে মানুষ ঘুমায় সে অবস্থাতেই সে ঘুম থেকে ওঠে। আর যে অবস্থাতে মানুষ মৃত্যুবরণ করে সে অবস্থাতেই সে কিয়ামত দিবসে পুনরুজ্জীবিত হবে। (প্রাগুক্ত)। 
(১০) ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর এ দুআটি পাঠ করবেন। اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ الَّذِیۡ اَحۡيَانَا بَعۡدَمَا اَمَاتَنَا وَاِلَیۡهِ النُّشُوۡرُ অর্থাৎ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আমাদেরকে মৃত্যু দেয়ার পর জীবন দান করেছেন এবং তারই নিকট আমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে। (বুখারী, খন্ড-৪র্থ, পৃ ; ১৯৬, হাদীস নং-৬৩২৫)। 
(১১) ঘুম থেকে উঠার পর সারাদিন তাকওয়া পরহেজগারী অবলম্বন করার এবং কাউকে কষ্ট না দেয়ার দৃঢ় সংকল্প করে নেবেন। (ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী, খন্ড-৫ম, পৃ-৩৭৬)। 
(১২) ছেলে মেয়েদের বয়স যখন দশ বছরে উপনীত হবে তখন তাদের পৃথক পৃথক শােয়ানাের ব্যবস্থা করবেন। বরং দশ বছরের ছেলেকে তার সমবয়সী ছেলের সাথে কিংবা তার চেয়ে বয়সে বড় পুরুষের সাথেও শয়ন করতে দেবেন না। (দুররে মুখতার, রদ্দুল মুহতার, খন্ড-৯ম, পৃ-৬২৯)।
(১৩) স্বামী স্ত্রী যখন খাটে ঘুমায় তখন ১০ বছরের সন্তানকে একসাথে শােয়াবেন না। ছেলে যখন বালেগ হয়ে যায় তখন প্রাপ্তবয়স্কের হুকুমের আওতায় চলে আসে।
(১৪) ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর মিসওয়াক করবেন।
(১৫) রাতে ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে তাহাজ্জুদ আদায় করা বড়ই সৌভাগ্যের বিষয়।
সায়্যিদুল মুবাল্লেগীন হযরত মুহাম্মদ  صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন, ফরজ নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হচ্ছে তাহাজ্জুদের নামায। (সহীহ মুসলিম, পৃ-৫৯১, হাদীস নং-১১৬৩)। 



মাদীনা

এ বয়ানটি আমীরে আহলে সুন্নাত কুরআন ও সুন্নাত প্রচারে বিশ্বব্যাপী আলােড়ন সৃষ্টিকারী অরাজনৈতিক সংগঠন দাওয়াতে ইসলামীর তিনদিন ব্যাপী সুন্নাতে ভরা ইজতিমা ২৫শে সফর ১৪৩০ হিজরী মােতাবেক ২০০৯ ইংরেজী সাহারায়ে মাদীনা বাবুল মাদীনা করাচীতে করেছিলেন। প্রয়ােজনীয় পরিবর্ধন ও পরিবর্তন সহ লিখিত আকারে প্রকাশ করা হলাে। 




Next
This is the most recent post.
Previous
Older Post
Top