দুরবস্তু দৃশ্যমান হওয়া 

মক্কা থেকে বায়তুল মােকাদ্দাস দর্শনঃ 

❏ ইমাম মুসলিম (رحمة الله) হযরত আবু হােরাইরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, নবী করিম রে এরশাদ করেন- আমি হাতিমে কাবায় দন্ডায়মান ছিলাম আর কুরাইশ বংশের লােকেরা আমার কাছে মেরাজের ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছে। তারা বায়তুল মােকাদ্দাস এর এমন কিছু নিদর্শন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছে যা আমার মনে ছিলনা। ফলে 
আমি খুবই চিন্তিত ছিলাম। অতএব, আল্লাহ তায়ালা বায়তুল মােকাদ্দাসকে আমার চোখের সামনে এমনভাবে বিদ্যমান করে দিয়েছেন যে, আমি নিজের চোখে বায়তুল মােকাদ্দাস দেখতে পাচ্ছি। এখন কুরাইশ যে বিষয়ে প্রশ্ন করে আমি দেখে দেখে তার উত্তর দিচ্ছি। ●৪০৮
_____________________________
৪০৮.[আল্লামা ইউসুফ নাবহানী (رحمة الله) (১৩৫০হি.), হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামীন, উর্দু, পৃ:৬০১]

মদীনা থেকে মুতার যুদ্ধ দেখা 

❏ ওয়াকেদী (رحمة الله) বলেন- মুতার যুদ্ধে যখন মুসলমান ও কাফের উভয় দল মুখােমুখি হয় তখন রাসূল (ﷺ) মদীনায় মুনাওরায় মিম্বরে তাশরীফ রাখেন এবং মিম্বর থেকে যুদ্ধের যাবতীয় পরিস্থিতি স্বচক্ষে অবলােকন করেন এবং যুদ্ধের বর্ণনা দেন। তিনি মিম্বরে বসে যায়েদ বিন হারেসা (رضي الله عنه), জাফর ইবনে আবি তালেব (رضي الله عنه) ও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (رضي الله عنه) কখন কিভাবে পতাকা উত্তোলন করেন শয়তান তাঁদেরকে কিভাবে প্রতারণা করার প্রচেষ্টা চালায় এবং কিভাবে তাঁরা যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন পুঙ্খানুপুঙ্খরুপে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। শুধু তা নয় তিনি শাহাদাত প্রাপ্ত সেনাপতিগণের নামাযে জানাযাও পড়েছেন মদীনা শরীফে। ●৪০৯
_____________________________
৪০৯.আবু নঈম ইস্পাহানী (رحمة الله) (৪৩০হি.), দালায়েলুন নবুয়ত, উর্দু, পৃ:৪৭৯। 

জান্নাতি-জাহান্নামিদের দর্শন


❏ হযরত উসামা ইবনে যায়িদ (رضي الله عنه)'র সূত্রে নবী করিম (ﷺ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জান্নাতের দরজায় দাঁড়ালাম, (এরপর দেখতে পেলাম যে,) তথায় যারা প্রবেশ করেছে তারা অধিকাংশই নিঃস্ব। আর ধনাঢ্য ব্যক্তিরা আবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। আর জাহান্নামীদেরকে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার হুকুম দেওয়া হয়েছে। এরপর আমি জাহান্নামের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন (দেখতে পেলাম যে,) এখানে প্রবেশকারীদের অধিকাংশই হচ্ছে নারী। ●৪১০
_____________________________
৪১০.[ইমাম বুখারী, মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল (رحمة الله), সহীহ বুখারী শরীফ, আরবী, ইউপি, ইন্ডিয়া, পৃ:৯৬৯, হাদিস নং ৬১০৪]

জান্নাত-জাহান্নাম দর্শন 

❏ হযরত আনাস ইবনে মালিক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, একদা দ্বিপ্রহরের পর নবী করিম (ﷺ) বেরিয়ে এসে যোহরের নামাজ আদায় করলেন। সালাম ফিরানাের পর তিনি মিম্বরে উঠে দাঁড়ালেন এবং কিয়ামত সম্পর্কে আলােচনা করলেন। তিনি উল্লেখ করলেন যে, কিয়ামতের পূর্বে অনেক বড় বড় ঘটনা সংঘটিত হবে। তারপর বললেন, কেউ যদি আমাকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে চায় তাহলে করতে পারবে। খােদার কসম! আমি এখানে অবস্থান করা পর্যন্ত তােমরা আমাকে যে সব প্রশ্ন করবে আমি তােমাদের উত্তর দেবাে। আনাস (رحمة الله) বলেন, এতে উপস্থিত লােকেরা খুব কাঁদতে লাগল। আর রাসূল " খুব বলতে লাগলেন, তােমরা আমার কাছে প্রশ্ন কর। হযরত আনাস (رحمة الله) বলেন, তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার অশ্রয়স্থল কোথায়? তিনি বললেন, জাহান্নাম। তারপর আব্দুল্লাহ ইবনে হু্যাফা উঠে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা কে? তিনি বললেন, তােমার পিতা হু্যাফা। হযরত আনাস (رضي الله عنه) বলেন, তারপর তিনি বার বার বলতে বলতে লাগলেন, 
তােমরা আমার কাছে প্রশ্ন কর, তােমরা আমার কাছে প্রশ্ন কর। এতে হযরত ওমর (رضي الله عنه) হাঁটু গেড়ে বসে বললেন, আমরা আল্লাহকে রব হিসেবে মেনে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে গ্রহণ করে এবং মুহাম্মদ কে রাসূল হিসাবে বিশ্বাস করে সন্তুষ্ট আছি। হযরত আনাস (رضي الله عنه) বলেন, হযরত ওমর (رضي الله عنه) যখন এ কথা বললেন, তখন রাসূল নীরব হয়ে গেলেন। তারপর নবী করিম বললেন, উত্তম, যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম করে বলছি, এইমাত্র আমি যখন নামাযে ছিলাম তখন এই দেয়ালের প্রস্থে জান্নাত ও জাহান্নাম আমার সম্মুখে পেশ করা হয়েছিল। আজাবের ন্যায় এমন কল্যাণ ও অকল্যাণ আমি আর দেখিনি। ●৪১১
_____________________________
৪১১.ইমাম বুখারী, মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল (رحمة الله), সহীহ বুখারী শরীফ, আরবী, ইউপি, ইন্ডিয়া, পৃ:১০৮, হাদিস নং ৬৭৯৬
Top