বিষয় নং- ০২. কোনো মুহাদ্দিসের উক্তি হাদিসটি لَمْ يَصِح ‘ছহীহ্ নয়’ বলতে কী বুঝায়?

‘হাদীসের নামে জালিয়াতি’ গ্রন্থের ১৮৯ পৃষ্ঠায় লেখক ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর কোন প্রমাণ ছাড়াই মুহাদ্দিছদের উক্তি ‘হাদিসটি ছহীহ্ নয়’ বলতে জাল হাদিস বুঝায় বলে উল্লেখ করেছে। তার কাছে আমার প্রশ্ন যে, হাদিস শাস্ত্রের ভূয়া এই নীতিমালা কোন মুহাদ্দিছের? অবশ্যই কোন মুহাদ্দিছের নয়। তা না হলে তিনি কেন উসূল বয়ান করলেন কিন্তু নির্ভরযোগ্য উসূলে হাদিসবিদ মুহাদ্দিছদের অভিমত উল্লেখ করলেন না কেন? ইহার দ্বারাই প্রমাণিত হয় যে, এটা কোন হক্কানী মুহাদ্দিছের মন্তব্য নয়; বরং তার নিজের মনগড়া বক্তব্য। অপরদিকে কওমী আলেম, জনাব জুনায়েদ বাবুনগরী সম্পাদিত আরেকটি বিভ্রান্তিকর বই ‘প্রচলিত জাল হাদীস” এর ৪৯ পৃষ্ঠায় প্রমাণহীনভাবে কোন মুহাদ্দিছদের উক্তি ‘হাদিসটি ছহীহ্ নয়’ বলতে জাল হাদিস বুঝায় বলে বুঝানোর অপচেষ্টা চালিয়েছেন। পাশাপাশি কওমী আলেম জনাব আব্দুল মালেক সাহেবের তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় লিখিত ‘প্রচলিত জাল হাদীস’ বইয়েও এরুপ বহু বিভ্রান্তিকর ও ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। তাই আমি উক্ত হাদিসের নীতিমালার জন্য অনেক কষ্ট করে তথ্য সংগ্রহ করলাম এবং নিম্নে উপস্থাপন করলাম।

হাদিস তিন প্রকার

হাদিস তিন প্রকার। ১.ছহীহ্,  ২.হাছান,  ও ৩.দ্বায়িফ। এগুলো হাদিসেরই অন্তর্ভূক্ত। বর্ণনার সূত্রানুসারে এভাবে হাদিস-বিশারদগণ হাদিসের প্রকারভেদ করেছেন। আমাদের দেশে বা বিভিন্ন অঞ্চলে এক শ্রেণীর নামধারী আলিম মনগড়াভাবে হাদিস শাস্ত্রের মূলনীতিকে সম্পূর্ণরুপে উপেক্ষা করে হাদিস-ই-দ্বায়িফকে হাদিস বলেই স্বীকার করতে রাজি নয়।

অথবা দলিল হিসেবে এক পর্যায়ের হাদিসকে অগ্রহণযোগ্য বলার অপপ্রয়াস চালায়। অথচ হাদিস বিশারদদের মতে দ্বায়িফ সনদও হাদিস হিসেবে গণ্য। সনদের দিক দিয়ে দুর্বল হবার কারণে, এ পর্যায়ের হাদিস দিয়ে কোন আমল ওয়াজিব বা সুন্নাত প্রমাণ করা না গেলেও, এমন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত বাক্য সওয়াবদায়ক হওয়াতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। যা সামনে বিস্তারিত আলোকপাত করা হবে। অনুরূপ কোন হাদিসের ব্যাপারে যদি কোন মুহাদ্দিছ ‘হাদিস ছহীহ্ নয়’ বলে মন্তব্য করেন, তবে এতদ্বভিত্তিতে ওই হাদিসকে অসত্য ও বানোয়াট হাদিস হিসেবে বিবেচনা করার সুযোগ নেই। কারণ ছহীহ্ না হলে হাছান বা দ্বায়িফ পর্যায়েরও হতে পারে।

ছহীহ্ হাদিস হল হাদিসের বচন ও সূত্রের মধ্যে কোনরূপ ত্রুটিবিচ্যুতির উর্ধ্বে, এমন হাদিস। সুতরাং কোন হাদিস ছহীহ্ নয় বলে মন্তব্যকে পুঁজি করে, ওই হাদিসকে মিথ্যা হাদিস (মাওদ্বু) বলার সুযোগ নেই। এ নীতিমালাটির নির্ভরযোগ্যতার প্রমাণের জন্য এবং এ নীতিমালা অপব্যাখ্যাকারীদের জবাবে আমি গ্রহণযোগ্য মুহাদ্দিছদের ভাষ্য নিম্নে তুলে ধরলাম, পাঠকবৃন্দ! পড়ে আপনারাই বিবেচনা করবেন কাদের বক্তব্য সঠিক।

অভিমত

অভিমত নং- ১. বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও ইমাম, হাফিজুল হাদিস, ইমাম ইবনু হাজার আস্কালানীর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) রচিত “আল ক্বওলুল মুসাদ্দাদ ফিয যুব্বি আন মুসনাদি আহমদ” নামক কিতাবে উল্লেখ করেছেন যে,

وَلا يَلْزَمُ مِنْ كَوْنِ الْحَدِيثِ لَمْ يَصِحَّ أَنْ يَكُونَ مَوْضُوعًا -الحديث السابع

-“হাদিসটি ‘ছহীহ্ নয়’ বললে সেটা মাওদ্বু বা বানোয়াট হাদিস হওয়া অপরিহার্য নয়।”  ৬৬ আল ক্বওলুল মুসাদ্দাদ ফিয যুব্বি আন মুসনাদি আহমদ, ১/৩৭ পৃষ্ঠা,  মাকতাবায়ে ইবনে তাইমিয়া,  কায়রু,  মিশর।

অভিমত নং- ২: বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও হাফিজুল হাদিস, আল্লামা ইমাম আবদুর রহমান জালালুদ্দীন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার লিখিত “তা‘কিবাত আলাল মাওদুআত” গ্রন্থে বলেন-

اكثر ما حكم الذهبى على هذا الحديث انه قال متن ليس بصحيح وهذا صادق بضعفه-التعقبات على الموضوعات باب: بدء الخلق والانبياء. 

-“এ হাদিস সম্পর্কে ইমাম শামছুদ্দিন যাহাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) সর্বোপরি এ মন্তব্য করেছেন যে, হাদিসের বচনগুলো বা (মতন) ছহীহ্ নয়। এ কথা দ্বারা বুঝা যায়,  হাদিসটি দ্বায়িফ বা দুর্বল পর্যায়ের (সূত্রের বা বচনের দিক দিয়ে)।” ৭ ৭. ইমাম জালালুদ্দীন ছিয়তী: তা‘কিবাত আলাল মাওদ্বূআত, পৃ-২৪৫


অভিমত নং- ৩: বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও ফকীহ, আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এ প্রসঙ্গে লিখেন- 

قَالَ الْإِمَامُ أَحْمَدُ لَا يَصِحُّ هَذَا الْحَدِيثُ قُلْتُ لَا يَلْزَمُ مِنْ عَدَمِ صِحَّتِهِ ثُبُوتُ وَضْعِهِ وَغَايَتُهُ أَنَّهُ ضَعِيفٌ 

-“ইমাম আহমদ (رضي الله عنه) বলেছেন, এই হাদিস ছহীহ্ নয়। আমি (মোল্লা আলী ক্বারী) বলি: এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই যে, কোন মুহাদ্দিছ ‘হাদিসটি ছহীহ্ নয়’ বললে সেটার দ্বারা হাদিসটি বানোওয়াট হওয়া অপরিহার্য হবে না। নিশ্চয় ইহা দ্বায়িফ হবে।” ৮৮. মোল্লা আলী ক্বারী, আসরারুল মারফূআত, পৃ-১/১০৮ পৃ. হাদিস:৮৫, মুয়াস্সাতুর রিসালা, বয়রুত, লেবানন।

অভিমত নং- ৪: বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও ইমাম, হাফিজুল হাদিস, আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিখেন, 

ان لفظ لا يثبت لا يلزم منه ان يكون موضوعات فإن الثابت يشمل الصحيح فقط والضعيف دونه كذا فى تذكرة الموضوعات –المبحث: الثانى فى اقسام الواضعين.

-“কোন হাদিসের ব্যাপারে মুহাদ্দিছদের বক্তব্য لا يثبت (এ হাদিসটি সুদৃঢ় নয়) বললে,  হাদিসটি মাওদ্বু বা বানোওয়াট বলে প্রমাণিত হয় না। কারণ সাবিত বা প্রমাণিত শব্দ দ্বারা শুধু ছহীহ্ হাদিসই বুঝায় এর নিম্ন পর্যায়ের হাদিসের মধ্যে দ্বায়িফও রয়েছে।” ৯৯. আল্লামা তাহের পাটনী: তাযকিরাতুল মওদ্বুআত, ৭৫ পৃষ্ঠা

অভিমত নং ৫-৬: শুধু তাই নয় দেওবন্দীদের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি মাওলানা আব্দুল হাই লাখনৌভী লিখেন-

لَا يلْزم من قَول أَحْمد فِي حَدِيث التَّوسعَة أَنه لَا يَصح أَن يكون بَاطِلا فقد يكون غير صَحِيح وَهُوَ صَالح للاحتجاج بِهِ إِذْ الْحسن رتبته بَين الصَّحِيح والضعيف. انْتهى. 

-“ইমাম আহমদ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎)‘র হাদিসে তাউছিয়া’ সম্পর্কে উক্তি হাদিসটি 

لَا يَصح ‘ছহীহ্ নয়’ বলার দ্বারা হাদিসটি বাতিল বা জাল হওয়া অপরিহার্য নয়। ইহা গাইরে ছহীহ্ পর্যায়ের গ্রহণযোগ্য হাদিস হবে যা উপর নির্ভর করা যায়, যেন হাছান মর্তবা যা ছহীহ্ ও দ্বঈফের মাঝামাঝি পর্যায়ের।” ১০১০. আব্দুল হাই লাখনভী: আসারুল মারফু‘আ, ১০১ পৃ.

শুধু তাই নয় দেওবন্দী আলেম মাওলানা সরফরায খাঁন সফদর ‘নূর আওর বাশার’ গ্রন্থের ৫৪ পৃষ্ঠায়ও তাঁর এ ইবারতটি সংকলন করেছেন।

অভিমত নং-৭: একটি হাদিস শরীফ ইহাও রয়েছে যে, 

الْبِطِّيخُ قَبْلَ الطَّعَامِ يَغْسِلُ الْبَطْنَ غَسْلًا وَيَذْهَبُ بِالدَّاءِ أَصْلًا-

-“খাওয়ার পূর্বে তরমুজ খেলে তা পেটকে একেবারেই পরিষ্কার করে দেয় এবং রোগ ব্যাধিকে সমূলে দূরীভূত করে দেয়।” এ হাদিসের ব্যাপারে ইমাম ইবনে আসাকীর ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন, شَاذٌّ لَا يَصِحُّ (এটি শায বা বিরল পর্যায়ের, যা ছহীহ্ নয়) আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) আলোচ্য হাদিস সম্পর্কে উপরোক্ত মন্তব্য সম্পর্কে লিখেছেন, 

وَهُوَ يُفِيدُ أَنَّهُ غَيْرُ مَوْضُوعٍ كَمَا لَا يَخْفَى -“এ কথা স্পষ্ট যে,  ইমাম ইবনে আসাকিরের উলি¬খিত মন্তব্য দ্বারা হাদিসটি মাওদ্বু বা বানোওয়াট নয় বলে বুঝা যায়।” ১১১১. আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারুল মারফূআ,: ১/৪৮৬ পৃষ্ঠা, আলামা আজলুনী: কাশফুল খাফা: ১/২৫৬ পৃ. হা/৯০৮

অভিমত নং- ০৮: ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন-

وَقَالَ ابْنُ الْهُمَّامِ: وَقَوْلُ مَنْ يَقُولُ فِي حَدِيثٍ أَنَّهُ لَمْ يَصِحَّ إِنْ سَلِمَ لَمْ يُقْدَحْ ; لِأَنَّ الْحُجَّةَ لَا تَتَوَقَّفُ عَلَى الصِّحَّةِ، بَلِ الْحَسَنُ كَافٍ– فصل الثانى من باب: ما يجوز من العمل فى الصلاة.

-“ইমাম কামালুদ্দীন মুহাম্মদ বিন হুমাম ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, কোন হাদিস সম্পর্কে কোন মুহাদ্দিছ বলেছেন যে এ ‘হাদিসটি ছহীহ্ (বিশুদ্ধ) নয়’,  তাদের কথা সত্য বলে মান্য করা হলেও কোন অসুবিধা নেই, যেহেতু (শরীয়তের) দলীল বা প্রমাণ হিসেবে সাব্যস্ত হওয়ার জন্য শুধু (হাদিস) ছহীহ্ বা বিশুদ্ধ হওয়া নির্ভরশীল নয়। সনদ বা সূত্রের দিক দিয়ে ‘হাছান’ হলেও (হাদিসটি শরীয়তের দলীল হিসেবে সাব্যস্ত হওয়ার জন্য) যথেষ্ট।”  ১২১২ . আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী: মিরকাত: ৩/৭৭ পৃ. হা/১০৮

অভিমত নং-০৯: আল্লামা হাফিজ ইবনে হাজার মক্কী হায়তামী শাফেয়ী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন-

وَقَول أَحْمد إِنَّه حَدِيث لَا يَصح أَي لذاته فَلَا يَنْفِي كَونه حسنا لغيره وَالْحسن لغيره يحْتَج بِهِ كَمَا بَين فِي علم الحَدِيث- (اَلصواعق المحرقه :  خاتمة الفصل الاول من الباب: الحادى عشر:২২৮)

-“ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)‘র বক্তব্য হাদিসটি  لَايَصِحٌ বিশুদ্ধ নয় এর অর্থ হবে ছহীহ্ লি’জাতিহী তথা জাতি বা প্রকৃত অর্থে ছহীহ্ নয়, উক্ত হাদিসটি (সনদের দিক দিয়ে) ‘হাছান লিগায়রিহী’ হওয়াকে মানা (নিষেধ) করে না। আর হাছান লিগায়রিহীও (শরিয়তের) প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা যায়। যা ইলমে হাদিস তথা হাদিস শাস্ত্র হতে জানা যায়।” ১৩১৩. ইবনে হাজার মক্কী: আস-সাওয়ায়েকুল মুহরিকা, ২য় খন্ড,, পৃ-৫৩৬,  মুয়াস্সাতুর রিসালা,  বয়রুত,  লেবানন।

এটাও মনে রাখতে হবে হাছান হাদিসও ছহীহ্ হাদিসেরই প্রকারের অর্ন্তভুক্ত। ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার বিখ্যাত উসূলে হাদিসের কিতাবে লিখেন-

وهذا القِسمُ مِنَ الْحَسَنِ مشاركٌ للصحيح في الاحتجاج به، وإِنْ كان دُونَهُ، 

-“হাদিসে ‘হাছান’ শরিয়তের দলিল রূপে গ্রহণযোগ্য হওয়ার ক্ষেত্রে ছহীহ্ হাদিসের সাদৃশ্য,  যদিও মর্তবায় (কিছুটা) কম।  ১৪১৪ . ইবনে হাজার আসকালানী: নুযহাতুল নযর ফি তাওদিহে নুখবাতিল ফিকির, প্রথম খন্ড,  পৃ ৭৮,  মাতবাআতে সাফির বিল রিয়াদ, সৌদি আরব।

অভিমত নং-১০: আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এ নীতিমালাটিকে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে লিখেন-

قَوْلَ السَّخَاوِيِّ لَا يَصِحُّ لَا يُنَافِي الضَّعْفَ وَالْحُسْنَ إِلَّا أَنْ يُرِيدَ بِهِ أَنَّهُ لَا يَثْبُتُ وَكَانَ الْمُنُوفِي فَهِمَ هَذَا الْمَعْنَى حَتَّى قَالَ فِي مُخْتَصَرِهِ إِنَّهُ بَاطِلٌ لَا أَصْلَ لَهُ 

-“ইমাম ছাখাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)‘র বক্তব্য হাদিসটি ‘ছহীহ্ নয়’ (তিনি বলেন) তার ছহীহ্ হওয়ার নিষেধ দ্বারা হাদিসটি ‘হাছান’ ও দ্বায়িফ হওয়াকে নিষেধ করে না। তবে যদি ইহার মধ্যে এরুপ উদ্দেশ্য হয় যে, ইহার কোনভাবেই প্রমাণিত না তখন সংক্ষেপে এভাবে বলেছেন, إِنَّهُ بَاطِلٌ নিশ্চয় ইহা বাতিল, لَا أَصْلَ لَهُ ইহার কোন ভিত্তি নেই।” ১৫১৫. আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী, আসরারূল মারফ‚আ, ১/৩৪৯ পৃ. হা/৫০২, লাখনভী, রাফউ ওয়া তাকমীল, ১৯৫ পৃ.

অভিমত নং-১১: শায়খুল মুহাদ্দিছীন, আল্লামা আবদুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিখেন,  

حکم عدم صحت کردن بحسب اصطلاح محدشن غرابت ندارد  چہ صحت در حدیث چنانچہ در مقدمہ معلوم ثد در جهه اعلی ست دائرہ آن تنگ تر جمیح احاادیث کہ در کتب مذکوراست  حتی دریں شش کتاب كحا انرا صحاح ستہ گویندہم  باصطلاح الیشان صحیح نیست بالک۔ تسمیہ انہا صحاح باعتِبار تغلیب است (الطريق القويم شرح صراط مستقیم : ۵۰۲خاتمة الكتاب)

-“মুহাদ্দিছীনের পরিভাষায় عدم صحيح বলতে হাদিস গরীব হওয়াকে বুঝায় না। বরং হাদিস ছহীহ্ হওয়া তার উচ্চ স্তরের দরজাকে বুঝায়। যেমন আমি আমার মুকাদ্দামায় উল্লেখ করেছি এবং তাহার পরিধি অত্যন্ত সংকীর্ণ। সমস্থ হাদিসের কিতাবে উল্লেখ আছে এমনকি ছয় কিতাব যাহাকে صحاح ست (সিহাহ সিত্তাহ) নামে অভিহিত করা হইয়াছে মুহাদ্দিসিনের পরিভাষায় ছহীহ্ নয়; বরং প্রাধান্য তার দিক দিয়ে ছহীহ্ বলা হয়েছে। মুহাদ্দিসিনের বিস্তারিত বর্ণনায় এই কথাটি দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়েছে এই হাদিস ছহীহ্ নয় এই কথা বলার উদ্দেশ্য উচ্চ স্তরের ছহীহ্ নয়।” ১৬ ১৬. আল্লামা আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী, শরহে সিরাতুম মুস্তাকিম, ৫০২ পৃ.

অভিমত নং-১২: মাওলানা আবদুল হাই লাখনভী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) সুপ্রসিদ্ধ কিতাব (بنتائج الافكار) এর উদ্ধিৃতি দিয়ে লিখেন-

لَا يلْزم من نفي الثُّبُوت ثُبُوت الضعْف لاحْتِمَال ان يُرَاد بالثبوت- الصِّحَّة فَلَا يَنْتَفِي الْحسن

-“হাদিসটি ثبت নয় বা দৃঢ় নয় দ্বারা দ্বায়িফ হওয়া অপরিহার্য নয়। বরং এ ধরনের শব্দ দ্বারা এর কোনো স্তরের হওয়ারও সম্ভবনা রাখে। তাই (ছহীহ্ নয়) বলে ‘হাছান’ হওয়াকে নিষেধ করে না।”  ১৭১৭ সিমাউল মাওতা,  পৃ.২৩৪-২৩৫, লাখনভী, রাফউ ওয়া তাকমীল, ১৯৭ পৃ.;

অভিমত নং-১৩: আল্লামা ইমাম যুরকানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার বিখ্যাত একটি গ্রন্থে লিখেন- نَفِي الصحة لَا يُنَافِي أَنَّهُ حَسَنٌ كَمَا علم -“কোনো হাদিসকে মুহাদ্দিছগণ ছহীহ্ হওয়াকে নিষেধ করা দ্বারা হাছান হওয়াকে নিষেধ করে না, যেমনটি ইলমে হাদিস বা হাদিস শাস্ত্রের মূলনীতিমালার কিতাবে রয়েছে।”  ১৮১৮ যুরকানী, শারহুল মাওয়াহেব, ৫/৫৫ পৃ., লাখনভী, রাফউ ওয়া তাকমীল, ১৯৭ পৃ.;

অভিমত নং-১৪: মাওলানা আবদুল হাই লাখনভী উল্লেখ করেন-

وَقَالَ مُحَمَّد بن عبد الْبَاقِي الزّرْقَانِيّ فِي شرح الْمَوَاهِب اللدنية للقسطلاني عِنْد ذكر حَدِيث يطلع الله لَيْلَة النّصْف من شعْبَان فَيغْفر لجَمِيع خلقه الا لمشترك اَوْ مُشَاحِن وَنقل الْقُسْطَلَانِيّ عَن ابْن رَجَب ان ابْن حبان صَححهُ فِيهِ رد على قَول ابْن دحْيَة لم يَصح فِي لَيْلَة نصف شعْبَان شَيْء الا ان يُرِيد نفي الصِّحَّة الاصطلاحية فان حَدِيث معَاذ هَذَا حسن لَا صَحِيح

-“আল্লামা মুহাম্মদ বিন আবদুল বাক্বী যুরকানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার শারহুল মাওয়াহিব গ্রন্থে  শবে বরাত সম্পর্কিত হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল (رضي الله عنه) এর হাদিস যেখানে রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, শবে বরাতে মুশরিক এবং হিংসুক ব্যতিত সবাইকে ক্ষমা করে দেন। ......প্রসঙ্গে আল্লামা ইবনে দাহিয়াহ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন শবে বরাত সম্পর্কিত ‘কোনো হাদিসই ছহীহ্ নয়’ (আল্লামা যুরকানী বলেন), নিশ্চয়ই ছহীহ্ হওয়া নিষেধ দ্বারা উসূলে হাদিসের পারিভাষায় হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)-এর হাদিসটি ‘হাছান’ হওয়া প্রমাণিত, তবে (ছহীহ্ নয় শব্দ দ্বারা) ছহীহ্ লি’জাতিহী নয় (উদ্দেশ্য)।”  ১৯১৯  লাখনভী, রাফউ ওয়া তাকমীল, ১৯৭ পৃ., আল্লামা যুরকানী, শারহুল মাওয়াহেব, ১০/৫৬১ পৃ.;

ইমাম যুরকানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)-এর এ অভিমত থেকে সুস্পষ্ট বুঝা গেল যে, হাদিসটি ছহীহ্ নয় বলতে ‘হাছান’ হওয়া বুঝায়।


অভিমত নং-১৫: মাওলানা আবদুল হাই লাখনভী একটি হাদিসের বিষয়ে ইমাম ছামহুদী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)-এর (جَوَاهِر الْعقْدَيْنِ فِي فضلالشرفين) কিতাবের উদ্ধিৃতি দিয়ে তাঁর বক্তব্য লিখেন-

غير صَحِيح وَهُوَ صَالح للاحتجاج بِهِ اذ الْحسن رتبه بَين الصَّحِيح والضعيف

-“মুহাদ্দিছদের উক্তি এ হাদিসটি ‘ছহীহ্ নয়’ বলা দ্বারা সনদটি সঠিক (এ ধরনের শব্দ দ্বারা মুহাদ্দিছগণ ‘হাছান’ স্তরের বুঝে থাকেন) এবং এর দ্বারা দলিল সাব্যস্ত করা যাবে, বরং তার মর্যাদা হবে ‘হাছান’ যা ছহীহ্ এবং যঈফের মধ্যবর্তী স্থানের মর্যাদার অধিকারী।”  ২০২০ লাখনভী, রাফউ ওয়া তাকমীল, ১৯৫ পৃ.;

অভিমত নং-১৬: আহলে হাদিসদের অন্যতম আলেম মাওলানা মুহাম্মদ শামসুল হক আযীমাবাদী (মৃত্যু ১৩২৯ হি.) বলেন,  

لا يلزم من نفى الثبوت ثبوت الضعف لاحتمال ان يراد بالثبوت الصحة فلا ينتقى الحسن وعلى التنزل لا يلزم من نفى الثبوت عن كل فرد (اى عن صحيح والحسن) تيه عن المجموع (اى الصحيح والحسن والضعيف) انتهى كلامه رسالة غنية الالمعى مع طبرانى ٢/١٥٨ مطبوعه دار الكتب العلمية بيروت- 

-“হাদিসটি দৃঢ় নয় বা ছহীহ্ নয় বক্তব্য দ্বারা হাদিসটি দুর্বল হওয়া অপরিহার্য নয়। তাই হাদিসটি ثبت বা দৃঢ় এর দ্বারা ছহীহ্ (উচ্চ পর্যায়ের বিশুদ্ধ) বুঝানো হয়েছে, তাই বলে ‘হাছান’ হওয়াকে নিষেধ করে না। তারপর আর একটু নিচে গেলেও ثبت নয় শব্দ দ্বারা একক ছহীহ্ অথবা হাছান হওয়াকে নিষেধ করা হয় বলে, ছহীহ্, হাছান, দ্বায়িফ (সবগুলোকে) নিষেধ করা হয়নি।”

অভিমত নং-১৭: দেওবন্দীদের শাইখুল হাদিস তকী উদ্দিন নদভী সাহবে তার ‘ফান্ন আসমাউর রিযাল’ গ্রন্থে বলেন-

جب كسى حديث كے بارے ميں "لا يصح" يا "لا يثبت" كها جاتى تو اس سے يه لازم  نهيں اتا كه وه حديث موضوع  هے يا  ضعيف هے ، ملا على قارى رحمة الله   عليه فرماتے هيں كه عدم ثبوت سے حديث كا موضوع هونا لازم نهيں اتا- حافظ  ابن حجر عسقلانى رحمة الله عليه فرماتے هيں حديث كو "لا يصح" كهنے  سے اس كا موضوع هونا لازم نهيں اتا- ممكن هے وه  حديث حسن ياحسن لغيره هو- كذا فن  اسماء الرجال- صفحة৭৬  

-“কোন মুহাদ্দিসের বক্তব্য হাদিসটি ‘ছহীহ্ নয়’ অথবা ‘দৃঢ় নয়’ বক্তব্য দ্বারা হাদিসটি মওদ্বু বা জাল অথবা দ্বায়িফ হওয়া অপরিহার্য নয়। কমপক্ষে সর্বনিম্ন দুর্বল বলা যেতে পারে। আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন হাদিসটি ছহীহ্ নয় (ছহীহ্ হওয়াকে নিষেধ) বলতে মওদ্বু বা জাল হওয়া অপরিহার্য নয়। আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন,  হাদিসটি لا يصح অর্থাৎ ‘ছহীহ্ নয়’ কারও বক্তব্য দ্বারা মওদ্বু বা জাল হওয়া অপরিহার্য নয়। কমপক্ষে ‘হাছান লিগাইরিহী’ হাদিস বলা যেতে পারে।” (৭৬ পৃ.)

অভিমত নং-১৮: প্রসিদ্ধ একটি হাদিস আব্দুল্লাহহ ইবনে আব্বাস (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হতে বর্ণিত। أَنَا مَدِينَةُ الْعِلْمِ وَعَلِيٌّ بَابُهَا -“আমি ইলমের শহর আর হযরত আলী তার দরজা।” উক্ত হাদিসটি সম্পর্কে আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, 

وَسُئِلَ عَنْهُ الْحَافِظُ الْعَسْقَلَانِيُّ فَأَجَابَ بِأَنَّهُ حَسَنٌ لَا صَحِيحٌ كَمَا قَالَ الْحَاكِمُ وَلَا مَوْضُوعٌ-

-“ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কে উক্ত হাদিস সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,  উক্ত হাদিসটি ছহীহ্ নয়, ‘হাছান’ পর্যায়ের হাদিস। ইমাম হাকিম (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন হাদিসটি জাল বা বানোওয়াট নয়।”  ২১২১ . মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারুল মারফূআ: ১/১১৮ পৃ. হাদিস:৭১, মোবারকপুরী: তুহফাতুল আহওয়াজি: ১০/২২৬ পৃ. হা/৩৭২৩, আজলুনী: কাশফুল খাফা, ১/১৮৪-৮৫ পৃ. হা/৬১৮, ইমাম ছাখাবী: মাকাসিদুল হাছানা: ১২১ পৃ. হা/১৮৯, মোল্লা আলী ক্বারী: মিরকাতুল মাফাতিহ: ১১/২৫৩, হা/৬০৯৬

তাই সুস্পষ্ট বুঝা যায় হাদিসটি ছহীহ্ নয় বলতে “হাছান” হওয়াকে বুঝায়। 

অভিমত নং-১৯: একটি হাদিস أَنَا مَدِينَةُ الْعِلْمِ وَعَلِيٌّ بَابُهَا- উক্ত হাদিস সম্পর্কে ইমাম আজলুনী ও ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বর্ণনা করেন-

قَالَ فِي الدُّرر نَقْلًا وَقَالَ الْحَافِظُ أَبُو سَعِيدٍ الْعَلَائِيُّ الصَّوَابُ أَنَّهُ حَسَنٌ بِاعْتِبَارِ طُرُقِهِ لَا صَحِيحٌ وَلَا ضَعِيفٌ

-“ইমাম জালালুদ্দীন ছিয়তী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার ‘আদ-দুররুল মুনতাসিরাহ ফি আহাদিসিল মুশতাহিরাহ’ এ ইমাম আবুল সাঈদ আ’লায়ী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, উক্ত হাদিসটি একাধিক তরীকায় বর্ণিত হওয়ার কারণে ‘হাছান’ হাদিস,  তাই হাদিসটি ছহীহ্ও নয় এবং দ্বায়িফও নয়।” ২২২২ . আল্লামা আজলুনী: কাশফুল খাফা: ১/২০৪: হা/৬১৮, মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারুল মারফূআ: ১/১১৯ পৃ. হাদিস:৭১

দিবালোকের ন্যায় পরিষ্কার হয়ে গেল হাদিসটি ‘ছহীহ্ নয়’ বলতে ‘হাছান’ পর্যায়ের হাদিস বুঝায়, মাওদ্বু নয়।

মোটকথা, হাদিস মাওদ্বু বা বানোয়াট বুঝানোর জন্য তারা হাদিসটি بَاطِل (বাতিল),  كذب (মিথ্যা),  مَوْضُوع (বানোয়াট), مُفْتَرَى (সত্যায়নযোগ্য নয় ও مُخْتَلَقٌ (মনগড়া বানানো) ইত্যাদি শব্দ বলতেন। ছহীহ্ হওয়াকে অস্বীকার করা মানে বিশুদ্ধ সনদ হিসেবে শীর্ষ পর্যায়ের নয় বরং কিছুটা ত্রুটিপূর্ণ পন্থায় বর্ণিত হাদিস। 

আলোচ্য বক্তব্য থেকে এ কথা স্পষ্ট হয়েছে, হাদিস বুঝাতে হলে শুধু বাহ্যিক শব্দ ও অনুবাদ বুঝা যথেষ্ট নয়, এক্ষেত্রে হাদিস বিশারদগণের পরিভাষা,  তাঁদের উপস্থাপনা পদ্ধতি বাচনভঙ্গি, সূত্র বর্ণনার নিয়ম-কানুন,  গ্রহণীয়-বর্জনীয় হওয়ার হুকুম ব্যক্তকরণ পদ্বতি ইত্যাদি বুঝাও পূর্বশর্ত। কিতাব থেকে অনুবাদ পড়ে হাদিস বুঝা আদৌ সম্ভব নয়।

শুধু অনুবাদ বুঝা নয়, হাদিসের মর্মার্থ বুঝাই হল মূল জিনিস। কোন হাদিস ছহীহ্ নয় মানে মাথা গরম করে জাল বলা যাবে না। হাদিস ছহীহ্ নয় মানে হাদিস বিশারদগণের পরিভাষায়, তিন প্রকারের হাদিসের মধ্যে ছহীহ্ ছাড়া তো ‘হাছান’ ও দ্বায়িফ পর্যায়ের দুটি প্রকারের মধ্যে যে কোন একটিও তো হতে পারে। ন্যূনতম দ্বায়িফ বা দুর্বল সনদ বিশিষ্ট হতে পারে। মওদ্বু বা বানোয়াট হলে সরাসরি বলা হতো هذا حديث موضوع তথা উক্ত হাদিসটি মাওদ্বু বা জাল। 

মুহাদ্দিছগণের মন্তব্য কোন হাদিস প্রসঙ্গে ‘ছহীহ্ নয়’ বললে, তার অর্থ এটা নয় যে, হাদিসটি ভুল বা বাতিল। বরং তাদের পরিভাষা মোতাবেক এর অর্থ হলো, হাদিসটি ছহীহ্ পর্যায়ের হাদিসের মতো সনদ বিশিষ্ট নয়। কারণ “ছহীহ্” হাদিসের কতিপয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে, ঐ বৈশিষ্ট্য গুলো যাতে বিদ্যমান তা-ই ‘ছহীহ্’। সে পর্যায়ের হাদিস খুঁজতে গেলে ‘সিহাহ সিত্তাহ’ বা হাদিসের বিখ্যাত ছয়টি হাদিসের কিতাব ইত্যাদি থেকে খুঁজতে হয়। তবে ছয়টি ব্যতীত আরো ছহীহ্ হাদিসের অনেক কিতাব রয়েছে।

এগুলোর মধ্যেও কোন কোন গ্রন্থে কিছু কিছু হাদিসকে ছহীহ্ বলার ক্ষেত্রে দ্বিমত দেখা যায়। কারণ, যারা বিরোধীতা করেন তারা কোন কোন হাদিসকে “হাছান” পর্যায়ের কিংবা স্থান বিশেষে দ্বায়িফও বলেছেন। স্বয়ং গ্রন্থকারও ঐ মুষ্টিমেয় কিছু হাদিসকে চিহ্নিত করে দিয়েছেন। ঐ কিছু বাদ দিয়ে বাকী সব হাদিস ‘ছহীহ্’ হবার কারণে ঐ গ্রন্থগুলোকে ‘ছহীহ্’ বলা হয়। তবে এ কথা নিশ্চিত যে,  ঐ সব কিতাবে কোন মওদ্বু বা বানোয়াট হাদিস নেই। তাই বলে দ্বায়িফ বা দুর্বল হাদিসকে হাদিস নয় বলার কোন সুযোগ নেই। সে অনুসারে আমল করলে নি:সন্দেহে সাওয়াব পাওয়া যাবে।   


ú
Top