দুনিয়া পরকালের শষ্য ক্ষেত্র।
الدُّنْيَا مَزْرَعَةُ الْآخِرَةِ
-“দুনিয়া পরকালের শষ্য ক্ষেত্র।”

ইহা উল্লেখ করে বিশ্বনন্দিত মুহাদ্দিছ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন,
قَالَ السَّخَاوِيُّ لَمْ أَقِفْ عَلَيْهِ مَعَ إِيرَادِ الْغَزَالِيِّ لَهُ فِي الْإِحْيَاءِ قُلْتُ مَعْنَاهُ صَحِيحٌ يُقْتَبَسُ مِنْ قَوْلِهِ تَعَالَى {مَنْ كَانَ يُرِيدُ حَرْثَ الآخِرَةِ نَزِدْ لَهُ فِي حَرْثِهِ}
-“ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: আমি ইহা সম্পর্কে জ্ঞাত নই, ইমাম গাজ্জালী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার এহইয়া গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। আমি (আলী ক্বারী) বলি: এর মাআনা বা অর্থ ছহীহ্। আল্লাহ তা’আলার এই বাণী দ্বারা সমর্থন পাওয়া যায়: “যে পরকালের ফসলের আকাঙ্খি আমি তার ফসল বৃদ্ধি করে দেই।” (সূরা শুরা: ২০ নং আয়াত)
(ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারুল মারফুয়া, হাদিস নং ২০৫; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, ১৩২০ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;)

ইহার মাআনা বা অর্থ ছহীহ্ এই কারণেই আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তদীয় কিতাবে এভাবে উল্লেখ করেছেন:
كَمَا رُوِيَ أَنَّ الدُّنْيَا مَزْرَعَةُ الْآخِرَةِ، -“যেমনটি বর্ণিত আছে: দুনিয়া আখেরাতের শষ্য ক্ষেত্র।”(ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৪৯২৫ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;)

অন্যত্র এভাবে উল্লেখ করেছেন:
وَإِلَيْهِ الْإِشَارَةُ لِقَوْلِهِ: الدُّنْيَا مَزْرَعَةُ الْآخِرَةِ، -“এদিকেই ঈশারা করেছেন নবী ( ﷺ‎‎) এর বাণী: দুনিয়া আখেরাতের শষ্য ক্ষেত্র।”(ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৫১৭৬ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;)

আল্লামা আহমদ ইবনে আব্দুল কারিম আমেরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ১১৪৩ হিজরী বলেন,
قَالَ السَّخَاوِيُّ لَمْ أَقِفْ عَلَيْهِ مَعَ إِيرَادِ الْغَزَالِيِّ لَهُ فِي الإِحْيَاءِ وَفِي الْفِرْدَوْسِ بِلا سَنَدٍ
-“ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: আমি ইহা সম্পর্কে জ্ঞাত নই, ইমাম গাজ্জালী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার এহইয়া গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। আল ফেরদৌস গ্রন্থে সনদ বিহীন ইহা উল্লেখ আছে।”(জাদ্দিল হাছিছ ফি বায়ানি লাইছা বি’হাদিস, হাদিস নং ১৬৯;)

এই কথাটি একাধিক হাদিসের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ বিধায় ইহাকে ‘রেওয়ায়েত বিল মাআনা’ হিসেবে হাদিস বলা যাবে। যেমন সাদৃশ্যপূর্ণ হাদিস গুলো উল্লেখ করা হল। হাদিস শরীফে আছে,
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ بْنُ أَحْمَدَ، ثنا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، ثنا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسٍ، عَنْ جَرِيرٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ يُتَزَوَّدْ فِي الدُّنْيَا يَنْفَعْهُ فِي الْآخِرَةِ
-“হযরত জারির (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, নিশ্চয় আল্লাহর নবী ( ﷺ‎‎) বলেছেন: যারা দুনিয়াতে কঠোর পরিশ্রম করবে তারা আখেরাতে উপকার লাভ করবে।”
*ইমাম তাবারানী: মুজামুল কবীর, হাদিস নং ২২৭১;
*ইমাম বায়হাক্বী: আল আদাবু, হাদিস নং ৮১৩;
*ইমাম বায়হাক্বী: যুহুদুল কবীর, হাদিস নং ৪৬৬;
*ইমাম ছিয়তী: ফাতহুল কবীর, হাদিস নং ১২৪৩০;
*হাফিজ ইবনে কাছির: জামেউল মাসানিদ ওয়াস সুনান, হাদিস নং ১৭৮২;
*ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ৪৩০৫২;

অর্থাৎ দুনিয়াতে কষ্ট করলে আখেরাতে ভাল ফল হবে আর এ কথাকেই অন্য ভাষায় বলা হয় দুনিয়া আখেরাতের শষ্য ক্ষেত্র। এ বিষয়ে আরেকটি হাদিস উল্লেখ করা যায়,
وفي الفردوس بلا سند عن ابن عمر مرفوعاً: الدُّنْيَا قَنْطَرَةُ الْآخِرَةِ، فَاعْبُرُوهَا.
-“আল ফেরদৌস গ্রন্থে হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) থেকে সনদ বিহীন মারফূরূপে আছে: দুনিয়া আখেরাতের সেতু, তোমরা ইহা অতিক্রম কর।”
*মুসনাদে ফেরদৌস, হাদিস নং ৩১০২;
*হাফিজ ইরাকী: তাখরিজু আহাদিসুল এহইয়া, হাদিস নং ৩;
*ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানাহ, হাদিস নং ৪৯৭; তাখরিজু আহাদিসে এহইয়ায়ে উলুমুদ্দিন, হাদিস নং ৭০;

আল্লামা আবু নুয়াইম ইস্পাহানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তদীয় কিতাবে আরেকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করেন,
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ: سَمِعْتُ الْحَسَنَ بْنَ مُحَمَّدٍ الرَّازِيَّ الْمُذَكِّرَ يَقُولُ: سَمِعْتُ أَبِي يَقُولُ: سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ مُعَاذٍ يَقُولُ: الدُّنْيَا أَمِيرٌ مَنْ طَلَبَهَا وَخَادِمُ مَنْ تَرَكَهَا،.. الدُّنْيَا قَنْطَرَةُ الْآخِرَةِ، فَاعْبُرُوهَا وَلَا تَعْمُرُوهَا،
-“ইয়াহইয়া ইবনে মুয়াজ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: দুনিয়া তাদের জন্য আমির যারা দুনিয়াকে তালাশ করে, আর তাদের জন্য খাদেম যারা দুনিয়াকে ত্যাগ করে। দুনিয়া আখেরাতের সেতু, তোমরা ইহা অতিক্রম কর।” (ইমাম আবু নুয়াইম: হিলিয়াতুল আউলিয়া, ১০ম খন্ড, ৫৩ পৃ:;)

এই হাদিস দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায়, أَنَّ الدُّنْيَا مَزْرَعَةُ الْآخِرَةِ، “দুনিয়া আখেরাতের শষ্য ক্ষেত্র”। এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করা যায়,
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ كَامِلٍ الْقَاضِي، ثَنَا جَعْفَرُ بْنُ أَبِي عُثْمَانَ الطَّيَالِسِيُّ، ثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، ثَنَا عَبْدُ الْجَبَّارِ بْنُ وَهْبٍ، أَنْبَأَ سَعْدُ بْنُ طَارِقٍ، عَنْ أَبِيهِ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: نِعْمَتِ الدَّارُ الدُّنْيَا لِمَنْ تَزَوَّدَ مِنْهَا لِآخِرَتِهِ حَتَّى يُرْضِىَ رَبَّهُ عَزَّ وَجَلَّ،
-“সাঈদ ইবনে তারেক তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: দুনিয়া তার জন্যই উত্তম স্থান, যে আখেরাতের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে, এমনকি আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি লাভ করে।”
*মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস নং ৭৮৭০;
*ইমাম উকাইলী: দোয়াফাউল কবীর, ৩য় খন্ড, ৮৯ পৃ:;
*ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানাহ, ৪৯৭ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;
*তাখরিজু আহাদিসু এহইয়া, ৩ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;
*হাফিজ ইবনে হাজার: ইত্তেহাফুল মিহরাত, ৬৬০১ নং হাদিস;
*ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ৬৩৪১; 
*ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, ১৩২০ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;

ইমাম হাকেম ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাদিসটিকে صَحِيحُ ছহীহ্ বলেছেন। অতএব, এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, أَنَّ الدُّنْيَا مَزْرَعَةُ الْآخِرَةِ، 
“দুনিয়া আখেরাতের শষ্য ক্ষেত্র”। 
অর্থাৎ ইহা ‘রেওয়ায়েত বিল মাআনা’ হিসেবে হাদিস।

আল্লামা মানাভী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন:
 وَأَن أهل الْمَعْرُوف فِي الدُّنْيَا هم أهل الْمَعْرُوف فِي الْآخِرَة وَأَن أهل الْمُنكر فِي الدُّنْيَا هم أهل الْمُنكر فِي الْآخِرَة فَإِن الدُّنْيَا مزرعة الْآخِرَة (طب عَن سعيد بن الْمسيب مُرْسلا) بِإِسْنَاد ضَعِيف وَقَالَ ابْن الْجَوْزِيّ متن مُنكر 
-“নিশ্চয় যারা দুনিয়াতে কল্যাণকামী তারা আখেরাতেও কল্যাণী হবে এবং যারা দুনিয়াতে মন্দকামী হবে তারা আখেরাতেও মন্দকামী হবে। কেননা দুনিয়া আখেরাতের শষ্য ক্ষেত্র। সাঈদ ইবনে মুসাইব ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে মুরছাল রূপে দ্বায়িফ সনদে বর্ণিত আছে। ইবনে জাওযী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: এর মতন মুনকার।” (আল্লামা মানাভী: আত তাইছির বি’শরহে জামেইছ ছাগীর, ২য় খন্ড, ২৪ পৃ:; আল্লামা মানাভী: ফায়জুল কাদীর, ৪৩৬৯ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;) 

সনদসহ হযরত সাঈদ ইবনে মুছাইব (رضي الله عنه) থেকে হাদিসটি নিম্নরূপ,
أَخْبَرَنَا أَبُو الْحُسَيْنِ بْنُ بِشْرَانَ بِبَغْدَادَ، أنبأ أَبُو جَعْفَرٍ مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو الرَّزَّازُ، أنبأ يَحْيَى بْنُ جَعْفَرِ بْنِ الزِّبْرِقَانِ ثنا زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ أنبأ أَشْعَثُ أنبأ عَلِيُّ بْنُ زَيْدٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيِّبِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:.. وَإِنَّ أَهْلَ الْمَعْرُوفِ فِي الدُّنْيَا هُمْ أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الْآخِرَةِ
-“হযরত সাঈদ ইবনে মুছাইব ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: নিশ্চয় যারা দুনিয়াতে কল্যাণকামী তারা আখেরাতেও কল্যাণী হবে এবং যারা দুনিয়াতে মন্দকামী হবে তারা আখেরাতেও মন্দকামী হবে।”
(ইমাম বায়হাক্বী: সুনানে কুবরা, হাদিস নং ২০৩০৬; ইমাম বায়হাক্বী: শুয়াইবুল ঈমান, হাদিস নং ৮৬৩৬;)  

আমি তালাশ করে দেখেছি সাঈদ ইবনে মুছাইব ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর মুরছাল রেওয়ায়েতটি ছাড়াও ইহা একাধিক সূত্রে একাধিক সাহাবী থেকে মারফু রূপে বর্ণিত আছে। যেমন সনদসহ মারফ‚ হাদিস গুলো লক্ষ্য করুন:-
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ خَالِدِ بْنِ حَيَّانَ الرَّقِّيُّ قَالَ: نا أَبِي قَالَ: نا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الدُّنْيَا أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الْآخِرَةِ، وَأَهْلُ الْمُنْكَرِ فِي الدُّنْيَا أَهْلُ الْمُنْكَرِ فِي الْآخِرَةِ 
-“হাছান বছরী বর্ণনা করেছেন হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে, তিনি বলেন রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: নিশ্চয় যারা দুনিয়াতে কল্যাণকামী তারা আখেরাতেও কল্যাণী হবে এবং যারা দুনিয়াতে মন্দকামী হবে তারা আখেরাতেও মন্দকামী হবে।” (ইমাম তাবারানী: মুজামুল আওছাত, হাদিস নং ১৫৬;)
 
হাদিসটি আরেকটি সূত্রে বর্ণিত আছে যেমন,
حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ جَعْفَرٍ الْمِصْرِيُّ قَالَ: نَا الْمُسَيِّبُ بْنُ وَاضِحٍ قَالَ: نَا عَلِيُّ بْنُ بَكَّارٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الدُّنْيَا أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الْآخِرَةِ، وَأَهْلُ الْمُنْكَرِ فِي الدُّنْيَا أَهْلُ الْمُنْكَرِ فِي الْآخِرَةِ
-“মুহাম্মদ ইবনে সিরীন বর্ণনা করেছেন হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে, তিনি বলেন রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: নিশ্চয় যারা দুনিয়াতে কল্যাণকামী তারা আখেরাতেও কল্যাণী হবে এবং যারা দুনিয়াতে মন্দকামী হবে তারা আখেরাতেও মন্দকামী হবে।”(ইমাম তাবারানী: মুজামুল আওছাত, হাদিস নং ৪৯৩১;)  

অন্য একজন সাহাবী থেকেও হাদিসটি বর্ণিত আছে,
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِسْحَاقَ، ثَنَا يَحْيَى بْنُ رَجَاءٍ الْحَرَّانِيُّ، نَا مُوسَى بْنُ أَعْيَنَ، عَنْ لَيْثٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الدُّنْيَا أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الْآخِرَةِ
-“হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: নিশ্চয় যারা দুনিয়াতে কল্যাণকামী তারা আখেরাতেও কল্যাণী হবে এবং যারা দুনিয়াতে মন্দকামী হবে তারা আখেরাতেও মন্দকামী হবে।” (ইমাম তাবারানী: মুজামুল আওছাত, হাদিস নং ৯৪৪৭;) 

অন্য একজন সাহাবী থেকেও হাদিসটি বর্ণিত আছে,
حَدَّثَنَا أَبُو عَبْدِ اللَّهِ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الصَّفَّارُ، ثنا سَمْعَانُ بْنُ بَحْرٍ الْعَسْكَرِيُّ أَبُو عَلِيٍّ، ثنا إِسْحَاقُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ الْعَمِّيُّ، ثنا أَبِي، عَنْ يُونُسَ بْنِ عُبَيْدٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:.. وَأَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الدُّنْيَا هُمْ أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الْآخِرَةِ
-“হযরত আনাস ইবনে মালেক (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: নিশ্চয় যারা দুনিয়াতে কল্যাণকামী তারা আখেরাতেও কল্যাণী হবে এবং যারা দুনিয়াতে মন্দকামী হবে তারা আখেরাতেও মন্দকামী হবে।”(মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস নং ৪২৯;)  

অন্য একজন সাহাবী থেকেও হাদিসটি বর্ণিত আছে,
حَدَّثَنَا أَبُو الطَّيِّبِ أَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ الْوَهَّابِ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ شَيْبَانَ الرَّمْلِيُّ، حَدَّثَنَا مُؤَمَّلُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ، عَنْ عَاصِمٍ الْأَحْوَلِ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، عَنْ أَبِي مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ: أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الدُّنْيَا أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الْآخِرَةِ , وَأَهْلُ الْمُنْكَرِ فِي الدُّنْيَا أَهْلُ الْمُنْكَرِ فِي الْآخِرَةِ
-“হযরত আবু মুসা আশয়ারী (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: নিশ্চয় যারা দুনিয়াতে কল্যাণকামী তারা আখেরাতেও কল্যাণী হবে এবং যারা দুনিয়াতে মন্দকামী হবে তারা আখেরাতেও মন্দকামী হবে।” (ইমাম তাবারানী: মুজামে ছাগীর, হাদিস নং ১৯৯;) 

অন্য একজন সাহাবী থেকেও হাদিসটি বর্ণিত আছে,
أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ عَبْدَانَ، أَنَا أَحْمَدُ بْنُ عُبَيْدٍ، ثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلَ، حَدَّثَنِي أَبِي، ثَنَا هِشَامُ بْنُ لَاحِقٍ أَبُو عُثْمَانَ الْمَدَائِنِيُّ، سَنَةَ خَمْسٍ وَثَمَانِينَ وَمِائَةٍ، ثَنَا عَاصِمٌ الْأَحْوَلُ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، عَنْ سَلْمَانَ الْفَارِسِيِّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ أَهْلَ الْمَعْرُوفِ فِي الدُّنْيَا هُمْ أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الْآخِرَةِ، وَإِنَّ أَهْلَ الْمُنْكَرِ فِي الدُّنْيَا هُمْ أَهْلُ الْمُنْكَرِ فِي الْآخِرَةِ
-“হযরত সালমান ফারছী (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: নিশ্চয় যারা দুনিয়াতে কল্যাণকামী তারা আখেরাতেও কল্যাণী হবে এবং যারা দুনিয়াতে মন্দকামী হবে তারা আখেরাতেও মন্দকামী হবে।”(ইমাম বায়হাক্বী: শুয়াইবুল ঈমান,হাদিস নং ১০৬৬৭;)
  
অন্য একজন সাহাবী থেকেও হাদিসটি বর্ণিত আছে,
حَدَّثَنَا أَبُو حَازِمٍ عُمَرُ بْنُ أَحْمَدَ الْحَافِظُ، أَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ قُرَيْشٍ، أَنَا الْحَسَنُ بْنُ سُفْيَانَ، قَالَ: ثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، ثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، عَنْ عَاصِمٍ الْأَحْوَلِ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الدُّنْيَا هُمْ أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الْآخِرَةِ
-“হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: নিশ্চয় যারা দুনিয়াতে কল্যাণকামী তারা আখেরাতেও কল্যাণী হবে এবং যারা দুনিয়াতে মন্দকামী হবে তারা আখেরাতেও মন্দকামী হবে।” (ইমাম বায়হাক্বী: শুয়াইবুল ঈমান,হাদিস নং ১০৬৬৮;) 

অন্য একজন সাহাবী থেকেও হাদিসটি বর্ণিত আছে,
حَدَّثنا نصر بن علي، حَدَّثنا خازم أَبُو مُحَمد الكوفي، حَدَّثنا عَطَاءُ بْنُ السَّائِبِ، عَن نافعٍ، عَن ابْنِ عُمَر؛ أَن النَّبِيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيه وَسَلَّم قَالَ: أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الدُّنْيَا هُمْ أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الآخِرَةِ.
-“হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: নিশ্চয় যারা দুনিয়াতে কল্যাণকামী তারা আখেরাতেও কল্যাণী হবে এবং যারা দুনিয়াতে মন্দকামী হবে তারা আখেরাতেও মন্দকামী হবে।” (মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস নং ৫৯৭৯;) 

অন্য একজন সাহাবী থেকেও হাদিসটি বর্ণিত আছে,
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُحَمَّدٍ الْحِنَّائِيُّ، ثنا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، ثنا عِيسَى بْنُ شُعَيْبٍ، عَنْ حَفْصِ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ أَهْلَ الْمَعْرُوفِ فِي الدُّنْيَا هُمْ أَهْلُ الْمَعْرُوفِ فِي الْآخِرَةِ،
-“হযরত আবু উমামা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: নিশ্চয় যারা দুনিয়াতে কল্যাণকামী তারা আখেরাতেও কল্যাণী হবে এবং যারা দুনিয়াতে মন্দকামী হবে তারা আখেরাতেও মন্দকামী হবে।”(ইমাম তাবারানী: মুজামুল কবীর, হাদিস নং ৮০১৫;)  

মোট ৮ জন সাহাবী থেকে মারফু সূত্রে হাদিসটি বর্ণিত আছে বিধায় অবশ্যই ইহা অনেক শক্তিশালী রেওয়ায়েত যা 
أَنَّ الدُّنْيَا مَزْرَعَةُ الْآخِرَةِ، 
“দুনিয়া আখেরাতের শষ্য ক্ষেত্র” এর মাআনাকে প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ঠ।
-----------------------------
ú
Top