বিষয় নং-০৮: কবর জিয়ারতে দোয়া প্রসঙ্গ।


আহলে হাদিসের গুরুঠাকুর নাসিরুদ্দীন আলবানী তার ‘দ্বঈফু সুনানে তিরমিযী’ গ্রন্থে নিম্নোক্ত গ্রহণযোগ্য হাদিসটিকে দ্বঈফ বলে আখ্যায়িত করেছেন। 


❏ ইমাম তিরমিযি (رحمة الله)সহ আরও অনেক ইমাম সংকলন করেন-


حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّلْتِ، عَنْ أَبِي كُدَيْنَةَ، عَنْ قَابُوسَ بْنِ أَبِي ظَبْيَانَ، عَنْ أَبِيهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ؓ قَالَ: مَرَّ رَسُولُ اللهِ ﷺ بِقُبُورِ الْمَدِينَةِ فَأَقْبَلَ عَلَيْهِمْ بِوَجْهِهِ، فَقَالَ: السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ يَا أَهْلَ القُبُورِ، يَغْفِرُ اللَّهُ لَنَا وَلَكُمْ، أَنْتُمْ سَلَفُنَا، وَنَحْنُ بِالأَثَرِ.


-‘‘হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি হুযূর (ﷺ) এর সাথে মদিনার একটি কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলাম, অতঃপর রাসূল (ﷺ) কবরের দিকে মুখ করলেন,  অতঃপর এই দোয়া করলেন, আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর,  ইয়াগ ফিরুল্লাহু লাকুম,  ওয়া আনতুম লানা সালাফুন,  নাহনু-বিলা আছার।’’  ২৫

➥{১.১. ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান, ২/৩৭৫ পৃ, কিতাবুয জানাইয, হা/১০৫৩

    ২.২. ইমাম তাবরানী, মুজামুল কাবীর, ১২/১০৭ পৃ.

    ৩.৩. ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি, শরহুস সূদুর, ২৭১ পৃ. মাকতাবাতুত তাওফিকিয়্যাহ, মিশর।

    ৪.৪. আল্লামা মুত্তাকী হিন্দীঃ কানযুল উম্মাল, ১৫/৬৪৭ পৃ. হা/৪২৫৬১

    ৫.৫. আহলে হাদিস আলবানীঃ দ্বঈফু সুনানে তিরমিযী, হা/১০৫৩

    ৬.৬. ইমাম খতিব তিবরিযী, মিশকাত, ১ম খণ্ড, ২৪২ পৃ. হা/১৭৬৫

    ৭.৭.  ইমাম যিয়া মুকাদ্দাসী, আল-মুখতার, ১/১৯২ পৃ.}



সনদ পর্যালোচনা


❏ এই হাদিসটির সনদ সহীহ। কিন্তু ইমাম তিরমিযি ‘হাসান’ বলেছেন। ২৬ 

➥{তিরমিযি, আস-সুনান, হাদিস/১০৫৩, খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ১/৫৫৩পৃ. হাদিস/১৭৬৫}



❏ কিন্তু আলবানী এই সনদটিকে অনেক গ্রন্থে যঈফ বলে দাবী করেছেন।  ২৭ 

➥{আলবানী, আহকামুল জানাইয, ১৯৭ পৃ.,যঈফু মিশকাত, হা/১৭৬৫}



❏ আহলে হাদিসদের মুহাদ্দিস মোবারকপুরী এর হাদিসের সনদের প্রত্যেকের গ্রহণযোগ্যতা আলোচনা করে তিনি শুধু রাবী কাবুস ইবনে আবি যাইইয়ান সম্পর্কে বলেছেন- الْكُوفِي فِيهِ لِينٌ -‘‘তিনি কুফার অধিবাসী ছিলেন এবং হাদিস বর্ণনায় কিছুটা নরম প্রকৃতির।’’ ২৮

➥{মোবারকপুরী, তুহফাতুল আহওয়াজী, ৪/১৩৪ পৃ. হাদিস/১০৫৩}



❏ আলবানীর দাবী হল ইমাম নাসাঈ (رحمة الله) বলেছেন তিনি এত শক্তিশালী রাবী নন। ইমাম ইবনে হিব্বান বলেছেন তার হেফ্যে ক্রটি ছিল। ২৯

➥{আলবানী, আহকামুল মায়্যিত, ১৯৭ পৃ.}



❏ তিনি ইমাম তিরমিজির সমাধান ভুল প্রমাণ করার অনেক অপচেষ্টা চালিয়েছেন। ইমাম তিরমিজি উক্ত রাবীর হাদিস সম্পূর্ন সুনানে ৭টি হাদিস সংকলন করেছেন। ৩০

➥{তিরমিজি, আস-সুনান, হাদিস নং ৬৩৩, হাদিস/৬৩৪, হাদিস/১০৫৩, হাদিস/২৯১৩, হাদিস/৩১৩৯, হাদিস/৩১৯৯, হাদিস/৩৯২৭}



❏ তিনি এক স্থানেও তার হাদিসকে যঈফ বলতে চাননি। ইমাম তিরমিজি তার বর্ণিত দু‘টি হাদিসকে হাসান, সহীহ বলেছেন। ৩১

➥{ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান, হাদিস/২৯১৩ এবং হাদিস/৩১৩৯}



তাই আমি বলবো তার সেই হাদিসগুলোকে সকল গ্রহণযোগ্য ইমাম ‘হাসান’, সহীহ বলে মেনে নিয়েছেন কিন্তু ঘড়ি মেকানিক আলবানীর এই তাহকীক এর ভাল লাগেনি।


সম্মনিত পাঠকবৃন্দ! এই কবর যিয়ারতের এই হাদিসকে ইমাম তিরমিযির ‘হাসান’ বলাকে ইমাম নববী (رحمة الله) গ্রহণ করে লিখেছেন-


قال الترمذي: حديث حسن.


-‘‘ইমাম তিরমিযি  (رحمة الله)  বলেন হাদিসটি ‘হাসান’। ৩২

➥{ইমাম নববী, কিতাবুল আযকার, ১৬৮ পৃ. হাদিস/৪৮৫, রিয়াযুস সালেহীন, ১৯৬পৃ. হাদিস নং ৬৮৪}



❏ কিন্তু আলবানী রিয়াজুস সালেহীনের টীকায় লিখেছেন-


قلت: بل إسناده ضعيف: وبيانه في (أحكام الجنائز ص ١٩٧)


-‘‘আমি বলি, বরং সনদটি যঈফ যেমনটি আমি আমার লিখিত আহকামুল জানায়েয গ্রন্থের ১৯৭ পৃষ্ঠায় আলোকপাত করেছি।’’ ৩৩

➥{আলবানী, (তাহকীক) রিয়াযুস সালেহীন, ১/২৬৫পৃ. হাদিস/৫৮৯, মাকতাবাতুল ইসলামী, বয়রুত, লেবানন।}



❏ বিখ্যাত ইমাম ইবনে হুমাম তকী উদ্দিন (ওফাত ৭৪৫হি) ইমাম তিরমিযির হাসান বলাকে গ্রহণ করেছেন। ৩৪

➥{তকী উদ্দিন, সিলাহুল মুমিনু ফি দোয়া, ৪৩৬ পৃ. হাদিস নং ৮১১, দারু ইবনে কাছির দামেস্ক, বয়রুত, প্রথম প্রকাশ ১৪১৪হি.}



❏ বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ইমাম ইবনে সালেহ শামী  (ওফাত ৯৪২ হি.) এই হাদিসটি সংকলন করার পূর্বেই লিখেন-


روى الإمام أحمد والترمذي، وحسنه، عن ابن عباس- رضي الله تعالى عنهما


-‘‘ইমাম আহমদ এবং ইমাম তিরমিযি (رحمة الله) ‘হাসান’ সনদে সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন।’’ ৩৫

➥{ইবনে সালেহ শামী, সবলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ৮/৩৮৫ পৃ.  দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।}



❏ ইমাম খতিব তিবরিযি  (ওফাত. ৭৪১হি.) এই হাদিসটি সংকলন করে ইমাম তিরমিযির হাসান বলা সমাধানকে মাথা পেতে মেনে নেন, কিন্তু ঘড়ি মেকানিক আলবানী যঈফ বলে ঘোষনা করেন। ৩৬

➥{আলবানী, তাহকীক মিশকাত, ১/৫৫৩ পৃ. হাদিস/১৭৬৫}



সৌদি আরবের ফাতওয়ার কিতাব (ফাতওয়ায়ে আল্লাজান্নাত দায়িমাহ) গ্রন্থের ১/৪৯৩ পৃষ্ঠাও হাদিসটির ‘হাসান’ হওয়াকে মেনে নিয়েছেন।


❏ এমনকি আহলে হাদিসদের ইমাম ইবনে তাইমিয়া (ওফাত ৭২৮ হি.) এই হাদিসটি কে ‘হাসান’ বলে মেনে নিয়েছেন। ৩৭

➥{ইবনে তাইমিয়া, ইখনাইয়্যাত, ১/৯০ পৃ.}



রাবী নিয়ে আপত্তির জবাবঃ-


❏ আলবানী এই সনদের রাবী কাবুস কে নিয়ে আপত্তি তুলেছেন ইমাম নাসাঈ   তার সম্পর্কে বলেছেন-


وقال النسائي: ليس بالقوي.


-‘‘তিনি শক্তিশালী বর্ণনাকারী নয়।’’ ৩৮

➥{যাহাবী, মিযানুল ইতিদাল, ৩/৩৬৭ পৃ. ক্রমিক. ৬৭৮৮}



সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! ইমাম নাসাঈ  অনেক বুখারী মুসলিমের রাবীকে এ ধরনের অভিমত পেশ করেছেন। 


অনেক মুহাদ্দিস তার এই উক্তি দ্বারা ‘হাসান’ পর্যায়ের হাদিস বুঝায় বলে উল্লেখ করেছেন। 


❏ বিখ্যাত আসমাউর রিজালবিদ ইমাম ইবনে আদি (رحمة الله)  তার সম্পর্কে বলেন-


أحاديثه متقاربة وأرجو انه لا بأس به.


-‘‘তাঁর হাদিস আমাদের জন্য গ্রহনের নিকটবর্তী আমি আশাবাদী তার হাদিস গ্রহন করতে কোন অসুবিধা নেই।’’ ৩৯ 

➥{ইমাম হাইছামী, মাযমাউয যাওয়াইদ, ১/১২৫পৃ. হাদিস/৫১৭, যাহাবী, মিযানুল ইতিদাল, ৩/৩৬৭ ক্রমিক. ৬৭৮৮, ইমাম ইবনে আদি, আল কামিল, ৭/১৭৬ ক্রমিক ১৫৮৯, ইমাম মিযযী, তাহজিবুল কামাল, ২৩/৩২৮পৃ. ক্রমিক. ৪৭৭৭}



❏ বিখ্যাত ইমাম আদি  তার জীবনীতে আরও উল্লেখ করেন-


حَدَّثَنا ابن أَبِي مريم سَمِعْتُ يَحْيى بْن مَعِين يقول قابوس بن أَبِي ظبيان ثقة جائز الحديث


-‘‘ইমাম ইবনে আবি মারিয়াম বলেন আমি ইমাম ইবনে মাঈন  কে রাবী কাবুস সম্পর্কে বলেন তিনি সিকাহ বা বিশ্বস্ত তার হাদিস গ্রহণ করা বৈধ।’’ ৪০

➥{ইমাম ইবনে আদি, আল কামিল ৭/১৭২পৃ. ক্রমিক ১৫৮৯, ইমাম মিয্যী, তাহজিবুল কামাল, ২৩/৩২৯পৃ. ক্রমিক. ৪৭৭৭}



❏ ইমাম যাহাবী  তার জীবনীতে উল্লেখ করেন-


قَالَ أَبُو حَاتِمٍ: يُكْتَبُ حَدِيثُهُ.


-‘‘ইমাম আবু হাতেম  বলেন, আমরা তার হাদিস আমরা লিপিবদ্ধ করতাম।’’  ৪১

➥{যাহাবী, তারিখুল ইসলাম, ৩/৯৫১পৃ. ক্রমিক. ৩৫৭, ইমাম আবু হাতেম, র্জারাহ ওয়া তাদীল, ৭তম খণ্ড, ক্রমিক. ৮০৮}



❏ ইমাম ইবনে শাহীন (رحمة الله) তাকে সিকাহ রাবীর তালিকায় তাকে স্থান দিয়েছেন। ৪২

➥{ইমাম ইবনে শাহীন, কিতাবুস সিকাত, ক্রমিক. ১১৬৯}



❏ ইমাম ইবনে হিব্বান  তাকে ও তার পিতাকে সিকাহ রাবীর তালিকায় স্থান দিয়েছেন। ৪৩

➥{ইমাম ইবনে হিব্বান, কিতাবুস-সিকাত, ৪/১৫৬ পৃ. ক্রমিক. ২২৫৬}



❏ ইমাম ইজলী (ওফাত. ২৬১হি.) তার গ্রন্থে লিখেন-


كوفى لَا بَأْس بِهِ


-‘‘তিনি কুফার অধিবাসী মুহাদ্দিস ছিলেন, তার হাদিস গ্রহণ করতে কোন অসুবিধা নেই।’’ ৪৪

➥{ইমাম ইজলী, তারিখুস সিকাত, ২/২০৯ পৃ. ক্রমিক. ১৪৯৩, ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত-তাহযিব, ৮/৩০৬ পৃ. ক্রমিক.৫৫৫  }



❏ ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী উল্লেখ করেন-


وقال بن عدي أرجو أنه لا بأس به قلت وقال يعقوب بن سفيان ثقة


-‘‘ইমাম ইবনে আদি  বলেন, আমি আশা রাখি তার হাদিস গ্রহণ করতে কোন অসুবিধা নেই। আমি (ইবনে হাজার) বলি, মুহাদ্দিস ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান তাকে সিকাহ বা বিশ্বস্ত বলেছেন।’’ ৪৫

➥{ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত-তাহযিব, ৮/৩০৬ পৃ. ক্রমিক.৫৫৫}



❏ বিখ্যাত হাদিসের ইমাম আবু দাউদ  বলেন-


قال وبلغني إن يحيى بن مَعِين، قال: إنه ثقة.


-‘‘আমাদের কাছে পৌঁছেছে নিশ্চয় ইমাম ইবনে মাঈন  তার সম্পর্কে বলেছেন নিঃসন্দেহে তিনি সিকাহ বা বিশ্বস্ত।’’  ৪৬

➥{ইমাম মিয্যী, তাহযিবুল কামাল, ২৩/৩২৮ পৃ. ক্রমিক. ৪৭৭৭, ইমাম দাওরী, তারিখে ইবনে মাঈন ২/৪৭৯পৃ.}



❏ ইমাম ইবনে তুহমান  ও ইমাম ইবনে মাঈন থেকে এমনটি উল্লেখ করেছেন।  ৪৭

➥{মিয্যী, তাহজিবুল কামাল, ২৩/৩২৯ পৃ. টীকা নং.০৪, মুয়াস্সাতুর রিসালা, বয়রুত, লেবানন।}



সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! বুঝা গেল ইমাম নাসাঈ  ইমাম আহমদ ছাড়া সকলেই তার হাদিস গ্রহণযোগ্য বলে বক্তব্য পেশ করেছেন। যার দ্বারা প্রমাণিত হয় এই হাদিসের সনদ সহীহ। 


❏ ইমাম ইবনে হাজার  তার হাদিসকে হাসান বুঝতে তার জীবনীতে লিখেন- الكوفي فيه لين -‘‘তিনি কুফার অধিবাসী। নরম প্রকৃতির হাদিস বর্ণনাকারী।’’  ৪৮

➥{ইবনে হাজার, তাক্বরীবুত তাহযিব, ১/৪৪৪৯ পৃ. ক্রমিক. ৫৪৪৫}


আলবানী ছাড়া পৃথিবীর কোন মুহাদ্দিস সরাসরি তার হাদিসকে যঈফ বলে ঘোষনা করেননি। 


❏ ইমাম হাইছামী (رحمة الله) তার এক হাদিস প্রসঙ্গে লিখেছেন-


رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ فِي الْكَبِيرِ، وَفِيهِ [قَابُوسُ بْنُ أَبِي ظَبْيَانَ وَفِيهِ] كَلَامٌ، وَقَدْ وُثِّقَ.


-‘‘ইমাম তাবরানী তার হাদিস মুজামুল কাবীর গ্রন্থে সংকলন করেছেন আর এর সনদে কাবুস নামক রাবী রয়েছেন তার বিষয়ে অনেক কথা বার্তা আছে। তবে তিনি সিকাহ বা বিশ্বস্ত।’’ ৪৯

➥{ইমাম হাইছামী, মাযমাউয-যাওয়াইদ, ৩/১৭৮পৃ. হাদিস/৫০৬১}



❏ আরেক হাদিস প্রসঙ্গে লিখেন-


رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ، وَفِيهِ قَابُوسُ بْنُ أَبِي ظَبْيَانَ، وَهُوَ ثِقَةٌ وَفِيهِ ضَعْفٌ.


-‘‘ইমাম তাবরানী (رحمة الله) হাদিসটি সংকলন করেছেন এই সনদে কাবুস নামক রাবী রয়েছেন তিনি সিকাহ বা বিশ্বস্ত। তবে এই হাদিসে যঈফ।’’ ৫০

➥{ইমাম হাইছামী, মাযমাউয যাওয়াইদ, ৫/৩৩৭ পৃ. হাদিস/৯৭৩২ এবং ৭/৪৩ পৃ. হাদিস/১১০৯৩, ৮/৯০ পৃ. হাদিস/১৩১১৮}



❏ বিখ্যাত ইমাম সান‘আনী (ওফাত ১১৮২হি.) ইমাম তিরমিযির সমাধানকে গ্রহণ করেছেন। ৫১ 

➥{ইমাম সানআনী, সবলুস-সালাম, ১/৫০৯ পৃ. হাদিস/৫৫৭}



❏ ইমাম ইবনে হাদী হাম্বলী  তিরমিযির সমাধানকে মেনে নেন।  ৫২

➥{ইবনে হাদী, মুহারর ফিল হাদিস, ১/৩৩১ পৃ. ক্রমিক ৫৬০}



❏ ইমাম ইবনুল মুলাক্কীন  ‘হাসান’ হওয়াকে মেনে নিয়েছেন। ৫৩

➥{মুুলাক্কীন, বদরুল মুনীর ৫/৩৫১পৃ.}



❏ ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী  ইমাম তিরমিযির ‘হাসান’ বলাকে মেনে নিয়েছেন। ৫৪

➥{মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত, ৪/১২৫৭ পৃ. হাদিস/১৭৬৫}



সর্বশেষ আলবানীর তার জাহেলিয়াত বা মুর্খতা ছাড়া কিছুই বুঝা যায় না। উক্ত হাদিসটিকে ইমাম তিরমিযীর রায়ের উপর দিয়ে ডিঙ্গিয়ে দ্বঈফ বলার দুঃসাহস আলবানী ছাড়া কেউ দেখায় নি। ইমাম সুয়ূতি  তার কিতাবে তিরমিযীর রায়কে গ্রহণ করেছেন। 


❏ ইমাম তিরমিযী আরও বলেন- 


وَفِي البَاب عَنْ بُرَيْدَةَ، وَعَائِشَةَ


-‘‘উক্ত অধ্যায়ে (এই বিষয়ে) হযরত বুরায়দা (رضي الله عنه) থেকে এবং হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) হতে হাদিস বর্ণিত হয়েছে।’’ ৫৫

➥{তিরমিযী, আস সুনান, ২/৩৫৭ পৃ, কিতাবুয-জানাইজ, হা/১০৫৩}



দেখুন আলবানীর দৃষ্টিতে প্রত্যেকটি সনদ দ্বঈফ হলেও অন্তত একাধিক সনদের দ্বারা হাদিসটি ‘হাসান’ পর্যায়ের বলা অত্যন্ত তার উচিত ছিল। সে কিভাবে বলবে, নজদীর টাকায় কেনা তার সামনে কালো পর্দা টাঙ্গানো ছিল।


❏ অপরদিকে এই দোয়া প্রসঙ্গে আরো একাধিক সনদ পাওয়া যায়। যেমন-


وَأخرج إِبْنِ أبي الدُّنْيَا فِي كتاب الْقُبُور بِسَنَد فِيهِ مُبْهَم عَن عمر بن الْخطاب رَضِي الله عَنهُ أَنه مر بِالبَقِيعِ فَقَالَ السَّلَام عَلَيْكُم يَا أهل الْقُبُور أَخْبَار مَا........الخ-


-‘‘ইমাম আবিদ (রহ.) দুনিয়া তার “কিতাবুল জিয়ারাতুল কুবুর” এ হযরত উমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন,  তিনি যখন জান্নাতুল বাকী নামক কবরস্থান দিয়ে গমন করতেন অতঃপর এই দোয়া বলতেন-‘আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর শেষ পর্যন্ত।’ ৫৬

➥{ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী, শরহুস সুদুর, ২৬১ পৃ.}



❏ এ ছাড়া উক্ত বিষয়ে একাধিক সনদ রয়েছে। সবগুলো সনদ উলে­খ করলে কিতাব দীর্ঘায়িত হবে বলে করছি না। যেমন হযরত আলী (رضي الله عنه) এরূপ দোয়া পড়তেন এবং আরো অনেক সনদ সম্পর্কে জানতে হলে দেখুন। ৫৭

➥{ইমাম সুয়ূতি, শরহুস সুদুর, ২৬১-২৬৫ পৃষ্ঠা ।}

Top