আশায় বাঁধুন বুক: যেখানে রূহ আছে, সেখানে রুহানিয়াত আছে
-----
যার আঙুল আছে, সে আঙুল সোজা করেও ঘি তোলার চেষ্টা করতে পারে, আঙুল বাঁকা করেও ঘি তোলার চেষ্টা করতে পারে। সেইটা কাফেরের আঙুল, নাকি আবেদের আঙুল, নাকি শোয়ার্জনিগারের আঙুল, ডাজনট ম্যাটার।
যার কণ্ঠনালী আছে সে শব্দ করতে পারে। এমনকি বোবা হলেও পারে, জানোয়ার হলেও পারে।
শরীর থাকলে যেমন শরীরের শক্তি থাকবে, মন থাকলে যেমন মনের বুদ্ধি থাকবে, রুহ থাকলে তেমনি রুহের শক্তিও থাকবে। এইটা প্রি-ইন্সটলড। স্মার্টফোনের সাথে আসা অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস এর মতন।
আপনারা করেন কী জানেন?
একজন সালাফি-আহলে হাদিস নিবিষ্ট মনে নামাজ পড়ছে, পড়ে খুব অনুভব করছে; বলেন, ভন্ডামি করছে।
একজন চরমোনাই মুরিদ বাঁশে লাফালাফি করছে, বলেন, ভন্ডামি করছে।
একজন দেওবন্দি মুরিদ পীরের স্পর্শ পেয়ে ওয়াজদ পাচ্ছে, বলেন, ভন্ডামি করছে।
একজন শিয়ার বুক পাগলের মত ওঠানামা করছে আশুরায়, বলেন, ভন্ডামি করছে।
আর আপনারা তো ধরেই নিয়েছেন, যারা প্রথাগত মুসলিম না, তারা আল্লাহ্ চেনেও না, তাদের পক্ষে মুওয়াহিদ হওয়া সম্ভবও না, তাই তাদেরও রুহানিয়াত সম্ভব না।
প্রকৃতপক্ষে,
এরা এইসব করে রুহানিয়াতের স্পর্শ পাচ্ছে। যে যেভাবে শুদ্ধ ভালবাসার চর্চা করে, সে সেভাবে একটু হলেও পায়। খুব খুব সামান্য হলেও পায়। এসব ভন্ডামি না।
তবে, কথা হল,
এসবই প্রি-ইন্সটলড শক্তি।
আসল রুহানিয়াতের স্রোত নির্ভর করে মনের শুদ্ধতার উপর। যার বিবেক অসম্ভব শুদ্ধ, যার মন অসম্ভব পরিচ্ছন্ন, তার ভিতরে ঢেউয়ের মত রুহানিয়াত আসতে থাকবে। ঠিক যতটা শুদ্ধ ততটা। ঠিক যতটা পরিচ্ছন্ন, ততটা। ঠিক যতটা নিবেদিত, ততটা। দান করলে প্রাপ্য’র চেয়ে বেশি পায় মানুষ, অন্যভাবে না। বিভিন্ন দলবাজির ঘৃণার সংস্কার যত মনের ভিতরে থাকবে, যত সংশয় এবং কূটতা থাকবে, যত হিংসা বিদ্বেষ ও আনানিয়াত থাকবে- রুহানিয়াত তত দুর্বল হতে থাকবে। দুর্বল হতে হতে এক সময় রুহ আছে না নেই তাও মানুষ বুঝতে পারে না। বেশিরভাগ মানুষ এমনি। তারাই ওরা, যারা সবকিছুকে বাইরের চোখে দেখে এবং ভিতরে কোন চোখ আছে তাও স্বীকার করে না।
শুদ্ধতম মনের মানুষ কখনো কাফির বা মুশরিক থাকতে পারে না।
সে ঠিকই নিজের মনে ইলাহাও ওয়াহিদার স্বরূপ পেয়ে যায়। সে ঠিকই আল্লাহ্ ছাড়া আর কাউকে ইলাহ্ মানতে ঘৃণা করে। এমনকি সে এ পথে যত থাকে, তত চিনতে থাকে রাসূল দ. কে। তত চিনতে থাকে আলী রা. হয়ে বেলায়াতের ধারাক্রম। তত মানতে থাকে নতমস্তকে।
এবং ওই লোকগুলোর ভিতরে ঝর্ণার মতন রুহানিয়াতের বর্ষণ হয়। একটা কথা মনে রেখেন, ইঁনি সেই আল্লাহ্, যিঁনি কাফের মুশরিক বিবেচনা না করেই খাওয়ান। কাফের মুশরিক বিবেচনা না করেই অন্তরে ভালবাসা দেন। কাফের মুশরিক বিবেচনা না করেই মানুষের দ্বারা ভাল কাজ করান। কাফের মুশরিক বিবেচনা না করেই মানুষকে অপরের কষ্টে, এমনকি কুকুর বিড়ালের কষ্টেও কাঁদান।
ইঁনি সেই আল্লাহ্।
না আল্লাহ্ কে চিনলেন, না আল্লাহ্’র মাহবুবদের, না বান্দাদের, না সৃষ্টিকে।
রুহানিয়াতের চরম উরুয না হোক, এট লিস্ট, আল্লাহ্-রাসূল-নিকটজনের প্রতি উন্মুক্ত ভালবাসা তো আসুক! এতেও রুহানিয়াতের ঝর্ণা বওয়া শুরু করে।
ইন্টারনাল এমপাওয়ারমেন্ট যখন হবে না? তখনি ইন্দ্রিয়ের প্রয়োজন ফুরাতে থাকবে। কারণ, রুহের দ্বারা ইন্দ্রিয় চালিত, ইন্দ্রিয়ের দ্বারা রুহ নয়। ঘ্রাণের জন্য নাক লাগবে না, স্বাদের জন্য জিভ লাগবে না, হিসাবের জন্য মস্তিষ্ক লাগবে না এবং প্রাণের জন্য দেহ লাগবে না।
এই সবকিছুকে চালিত করছে রুহ। ও আছে তো সব আছে, ও নেই তো কিছু নেই। ও-ই আল্লাহ্’র ফুঁক। বাকি সব মাটি ও পানি।
ভিডিও: পৃথিবী জুড়ে সূফিপন্থীদের মাউলিদ উন্ নবী দ. উদযাপন। ত্রিশটির বেশি দেশ গোণার পর ছেড়ে দেয়ছি। সম্ভবত ৫০ টা দেশের ভিডিও আছে। এদের মধ্যে ৯০% পরস্পর অসম্পর্কযুক্ত। অসম্পর্কিত।
প্রতিটা দেশের মাউলিদ উন্ নবী দ.’র ফ্লেভার ভিন্ন। কালচার ভিন্ন। প্রকাশ ভিন্ন। কিন্তু মূল সুর একই। শব্দগুলোকে ধরুন। একই।
এঁরা হলেন রুহানিয়াতের নেক্সট লেভেল স্পর্শ পাওয়া মানুষেরা।
https://www.youtube.com/watch?v=iIMe-AYVbs8