Ans by (Mohammad Hossain)
ইসলামী শরীয়ত বহুক্ষেত্রেই নারী ও পুরুষের ইবাদতের বিধিান ভিন্ন ভিন্ন নির্ধারণ করেছে।
মাযহাব চতুষ্টয় (হানাফী, মালিকী, শাফীয়ী, হাম্বালী) এর ইজমা হচ্ছে মাইয়্যেত মহিলা হলে তাঁকে পাঁচ টুকরা কাপড়ে আবৃত করে দাফন করা হবে।
[দেখুন- বাদাঈ আল-সানাঈ’ (২/৩২৫); মাওয়াহিব আল-জালীল (২/২৬৬); আল-মাজমু’ (৫/১৬১); আল-মুগনী (৩/৩৯০) এবং আল-মুহাল্লা (৫/১২০)]।
ইবনে আল-মুনজীর বলেনঃ সংখ্যাগরিষ্ট উলামায়ে ক্বিরামের অভিমত হচ্ছে মাইয়্যেত মহিলার কাফন পাঁচ কাপড়ে হবে।
[সূত্রঃ আল-মুগনী ৩/৩৯১]।
কাজেই জীবিত অবস্থার ন্যায় মৃত নারীর বেলায় নারী ও পুরুষের কাফনের বিধান আলাদা।
পুরুষকে তিনটি কাপড়ে কাফন দেয়া গেলেও নারীকে দিতে হবে পাঁচটি কাপড়ে।
যথাঃ
১. ইযার, যা দিয়ে তার নিম্নাংশ আবৃত করা হয়।
২. উড়না; এটা থাকবে হবে মাথার উপর।
৩. জামা; এটা থাকবে তার শরীরের উপর।
৪-৫. থাকবে দু’টি লেফাফা; যা দিয়ে তার পূর্ণ শরীরকে ঢেকে দেওয়া হবে।
ইহা মালিকী, শাফিয়ী, হাম্বালী মাযহাবেরও অভিমত।
[সূত্রঃ মাওয়াহিব আল-জালীল (২/২৬৬), আল মাজমু’ (৫/১৬২) এবং আল-মুগনী (৩/৩৯২)]।
হযরত লায়লা সাকাফিয়্যাহ [রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা] বর্ণনা করেন- হযরত উম্মে কুলসুম [রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা] বিনতে রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) মারা গেলে যাঁরা তাঁকে গোসল দেয়, আমি তাঁদের একজন ছিলাম। রাসূলে কারিম [صلى الله عليه و آله وسلم] আমাদেরকে প্রথম যা দিয়ে ছিলেন, তা ছিলো ইযার, এরপর জামা, এরপর উড়না, এরপর লেফাফা। আমরা এগুলোকে আরেকটি কাপড় দিয়ে আচ্ছাদিত করে দেই।
[দেখুন- আবু দাউদ হা/ ৩১৫৭]।
ইমাম শাওকানী বলেন- হাদীস প্রমাণ করে যে, নারীর কাফনের জন্য বিধান হচ্ছে ইযার, জামা, উড়না, চাদর ও লেফাফা।
ঈরওয়া আল গালীলে পথভ্রষ্ট আলবানী যাকে ওহাবীরা মুহাদ্দিস মান্য করে তারা তার রায় গ্রহণ করে সে মুবারক হাদিসটিকে দ্বঈফ রায় দিয়ে হাদিসটি রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর হাদিস হওয়া সত্ত্বেও তা পালনে অসম্মতি জানিয়েছে। অথচ হযরত উম্মে আতিয়্যা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত ইবনে জাওজীর বর্ণনায় হাদিসটির সমর্থনকারী রয়েছে, যাতে তিনি বলেনঃ আমরা তাঁকে পাঁচ কাপড়ে আবৃত করে ছিলাম, আর জীবিত মহিলার ন্যায়ই তাঁকে আবৃত করেছিলাম।
আল-আল-হাফিজ অাল আস্কালানী বলেনঃ হাদিসটির সনদ সহীহ।
[সূত্রঃ ফাতহুল বারী ৩/১৫৯]।
ইবনে কুদামা বলেনঃ
মাইয়্যেত মহিলাকে এইরুপে আবৃত করা মুসতাহাব, কেননা জীবিত মহিলা জীবিতকালে জীবিত পুরুষের চেয়ে বেশী আবৃত থাকে। এর কারন হল মহিলার ‘আওরাহ পুরুষের চেয়ে ব্যাপক বিস্তৃত, কাজেই মৃত্যুর পরেও মহিলার 'আওরাহ অনুরুপই থাকে বিধায় ভিন্নতা রক্ষিত হবে।
[দেখুন- আল-মুগনী (৩/৩৯১)]।
আরও দেখুন- হিদায়া, দুররে মুখতার, আলমগীরী, ক্বাজী খান, ফাতহুল কাদীর ইত্যাদি প্রাচীন ফাতওয়া গ্রন্থসমূহ।