হাদিসের একটি সনদ জাল হলে মতনটি (মূল বিষয়) জাল হওয়া অপরিহার্য নয়

🖋গ্রন্থনায়ঃ মুফতি মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুর

(প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানাের স্বরূপ উন্মােচন)


বর্তমান বাতিলপন্থি বিশেষ করে আহলে হাদিসদের দেখা যায় যে কোন বিষয়ে হাদিসের একটি সনদ জাল হলে হাদিসটির মতন তথা বিষয় বস্তুকেও জাল বলতে ধিদ্বাবােধ করেন না। তাই এটা যে কত বড় ধোঁকা এবং তারা যে হাদিস পন্ডিতের নামে সাধারন মুসলমানদেরকে ধােকা দিচ্ছে তার কিছু নমুনা মুহাদ্দিসদের ভাষ্য দ্বারা দিতে চাই। ইমাম যাহাবী (رحمة الله) একটি মিথ্যাবাদি রাবির জীবনী আলােচনা করতে গিয়ে লেখেন, 

“ রাবি ইবরাহিম বিন মূসা "ইমাম মালেক (رحمة الله) থেকে তিনি তাবেয়ী নাফে (رحمة الله) থেকে তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ননা করেন রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ইলম অর্জন করা ফরজ। 


ইমাম আহমদ (رحمة الله) বলেন, মূসা মিথ্যাবাদী। ইমাম যাহাবি বলেন, ইমাম আহমদের উক্ত বক্তব্যেও মর্ম হলাে সনদের ব্যাপারে তবে মতনের (বিষয় বস্তুর) ব্যাপারে নয় কেননা এই হাদিসটির অনেক দুর্বল সনদ রয়েছে। ইমাম ইবনুল বা তার বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থ  ‘ আত - তামহীদ 'কিতাবে একটি হাদিস বর্ননা করেছেন -

“ মেসওয়াক করে নামাজ মেসওয়াক ছাড়া হতে ৭০ গুণ উত্তম।" এই সনদটি সম্পর্কে ইমাম ইবনে মুঈন (رحمة الله)  বলেন, হাদিসের এই সনদটি বাতিল। তার এই বক্তব্যের পর ইমাম সাখাভী বলেন, তা বক্তব্যটি সনদের ব্যাপারে কেননা এই হাদিসটি মিথ্যাবাদী রাবী রয়েছে কিন্তু হাদিসটির অনেক সনদ বর্নিত আছে। একটি হাদিসে রয়েছে। জনৈক এক ব্যক্তি রাসূল (ﷺ) কে বললেন আমার বিবি যাকে পায় তাকেই স্পর্ষ করে তার উত্তরে দয়াল নবিজী (ﷺ) বললেন, তুমি তাকে তালাক দাও, সে বলল আমি তাকে ভালবাসি। নবিজী (ﷺ) আবার বললেন তাহলে তুমি তাকে রেখে দাও। এই হাদিসের ব্যাপারে ইমাম নাসাঈ বলেন, এ হাদিসের কোন ভিত্তি নেই। তার জবাবে ইমাম জওজী বলেন, এই সনদটিরই এ অবস্থা কিন্তু এ হাদিসটির আরও অনেক সনদ রয়েছে। তাই এ রকম অনেক উদাহরন আমার এ কিতাবে বিভিন্ন হাদিসের আলােচনায় তা পাবেন যে একটি সনদ জাল বলে এ বিষয়টিই হাদিস জাল তা বলা ধােকাবাজি ছাড়া আর কিছু নয়। 

Top