দ্বঈফ হাদীসের উপর আমল করা মুস্তাহাব

🖋গ্রন্থনায়ঃ মুফতি মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুর

(প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানাের স্বরূপ উন্মােচন)


দ্বঈফ বা দূর্বল হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযোগ্য তাতে মুহাদ্দিসীনগণ ঐক্যমত্য পোষণ করেছেন। ইলমে হাদিসের এ নীতিমালাটি এখানে এ জন্য উল্লেখ করলাম বর্তমান আহলে হাদিসগণ দ্বঈফ সনদের হাদিসের উপর আমল করা বৈধ নয় বলে উল্লেখ করেন। 


তথ্যসূত্র -

ক. এ বিষয়ে আহলে হাদিসের ইমাম নাসিরউদ্দিন আলবানীর একটি গ্রন্থ উল্লেখযোগ্য, এটি বাংলায় প্রকাশ করা হয়েছে এবং নাম রাখা হয়েছে "ছহিহ হাদিসের পরিচয় এবং হাদিস বর্ণনার মূলনীতি" এটি চট্টগ্রাম, আন্দরকিল্লা, আযাদ প্রকাশনী হতে প্রকাশিত। বইটির ২৩, ২৫, ২৭ পৃষ্ঠায় আলবানী লিখেছেন যে উপর ভিত্তি করে কোন ক্রমেই আমল করা যাবে না। নাউযুবিল্লাহ!


দলিল- ১

" হাকিম (رحمة الله) স্বীয় কিতাব (মুস্তাদরাক) হুযুর (ﷺ) থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন, “ যদি তােমাদের অন্তর চায় যে, তােমাদের নামায কবুল করা হােক, তবে তােমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তিই যেন ইমাম হন। আলােচ্য হাদিস সহিহ হলে তাে ভাল, অন্যথায় হাদিসটি দ্বঈফ বানােওয়াট নয়, আর দ্বঈফ হাদিস অনুযায়ী আমল করা যাবে। আমল বা ফজিলত প্রমাণের ক্ষেত্রে এমন হাদিস অবশ্যই দলীল।"


তথ্যসূত্র-

আল্লামা কামাল উদ্দীন ইবনে হুমাম : ফতহুল কাদীর, ১/৩৪৯পৃ, অধ্যায়- ইমামত, দারূল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন। 


দলিল নং- ২

ইমাম সৈয়দ আবু তালেব মক্কী (رحمة الله)  রচিত গ্রন্থ ' কুউয়াতুল কুলুব 'কিতাবে লিখেন, 


" এমন কিছু বিষয়, যেগুলাের কারণে হাদিস বর্ণনাকারীকে দুর্বল এবং তাঁদের বর্ণিত হাদিস সমূহকে সহিহ নয় বলে ঘােষণা দেয়া হয়। সম্মানিত ফিকহ বিশারদগণ ও ওলামা - ই - কেরাম সেগুলােকে দ্বঈফ বলার যােগ্য কিংবা ত্রুটিযুক্ত হিসেবে বিবেচনা করেন না। যেমন- বর্ণনাকারীর নাম উল্লেখ না থাকা বা অপরিচিত হওয়া। 


কারণ, এমনও হতে পারে যে, বর্ণনাকারী নিজেই তার নাম গােপন করেছেন। নিজেকে প্রকাশ ও প্রচারে উৎসুক না হওয়ার বিষয়ে শরীয়াতে প্রমাণিক দলীল রয়েছে। অথব এ জন্যই তিনি অপরিচিত হয়েছেন যে, তাঁর ছাত্র সংখ্যা কিংবা অনুসারী সংখ্যা একেবারে নগণ্য। ফলে ব্যাপক হারে মানুষ তার থেকে হাদিস বর্ণনা করার সুযােগ পায়নি।" (কুউয়াতুল কুলুব - প্রথম খন্ড, পৃ. ৩০০, দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত) 


দলীল নং- ৩

আল্লামা মুফতী আমীমুল ইহসান (رحمة الله) বলেন, 


“ দূর্বল হাদিস যদি কাল্পনিক না হয় যদিও তা একক রাবী কর্তৃক বর্ণিত হয়ে থাকে, তবু ফযীলতের বেলায় তার উপর আমল করা মুস্তাহাব। তবে শরীয়তের বিধান প্রয়ােগের ক্ষেত্রে এ হাদিস কার্যকর হবে না। হ্যাঁ, তবে সতর্কতার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জোর প্রকাশের জন্য দুর্বল হাদিসকেও দলীল হিসেবে পেশ করা যেতে পারে।" 


[আল্লামা মুফতী আমিমুল ইহসান : মিযানুল আখবার, পৃ - ১৫]


দলীল নং: ৫-৬ 

ইমাম আযম আবু হানিফা (رحمة الله) মত সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে, 


"ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) এ মত দৃঢ়ভাবে পােষণ করেছেন যে, দুর্বল হাদিস কিয়াসী রায় অর্থাৎ নিজস্ব মতামত থেকে অনেক উত্তম।" 


তথ্যসূত্র-

ক. মুফতি আমিমুল ইহসান : মিযানুল আখবার, পৃ - ১৫। 

খ. ইবনে হাজার মক্কী, আল খায়রাতুল হিসান, ২৭পু - মিশর হতে প্রকাশিত। 


দলীল নং - ৭

বিশ্ববিখ্যাত ফতােয়াবিদ এবং মুহাদ্দিস ইমাম ইবনে আবেদীন শামী (رحمة الله) ফতােয়ায়ে শামীর ১ম খন্ড লিখেন, 


“ আরিফকুল সম্রাট ইমাম শারানী (رحمة الله) বলেন, নিশ্চয় চার মাযহাবের ইমামগণ বলেছেন সহিহ হাদিস হলাে আমাদের মাযহাব। কিন্তু ফাযায়েল আমলের জন্য দ্বঈফ বা দুর্বল হাদিস আমল করা যায়েজ। যা আমি কিতাবুত তাহারাত অধ্যায়ে বিস্তারিত আলােচনা করেছি।" 


[ইমাম ইবনে আবেদীন শামী : ফতােয়ায়ে শামী, পৃ - ১৩৮৫ পৃ. কিতাবুল আযান, দারুল ফিকরইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন। ]


দলীল নং - ৮

বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী (رحمة الله) উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারীর মুকাদ্দামায় দ্বঈফ হাদীসের বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, 


“ ওলামায়ে কেরামের নিকট দ্বঈফ হাদিস ওয়াজ ও কাহিনীর জন্য এবং ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযােগ্য।" [ আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী : উমদাতুল ক্বারী, শরহে বুখারী :১৯ পৃ. ]


দলীল নং: ৯ - ১০ 

বিশ্ববিখ্যাত মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ফকিহ আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (رحمة الله) " তাফসীরে রুহুল বায়ানে ” বলেন, 


“ তবে মুহাদ্দিসীনে কিরাম এ ব্যাপারে ঐকমত্য পােষণ করেছেন যে, আকর্ষণ সৃষ্টি ও ভীতি সঞ্চারের বেলায় দ্বঈফ হাদিস অনুযায়ী আমল করা যায়েয।" [ আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী : রুহুল বায়ান, ২/৪১০ পূ ]


তিনি কিতাবের অন্যস্থানে বলেন, 


“ এই অধম আরজ করছি যে, ওলামায়ে কেরাম থেকে আমলের ব্যাপারে দ্বঈফ হাদিস গ্রহণযােগ্য। ব্যাপারটি বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত আছে।" [আলামা ইসমাঈল হাক্কী : তাফসীরে রুহুল বায়ান, ৭ পূ - ২২৯]


দলীল - ১১ 

আল্লামা ইমাম আবু তালিব মক্কী (رحمة الله) বলেন, 


“ ফাযায়েলে আমল এবং সাহাবাদের বা কারও ফযীলত বর্ণনার ক্ষেত্রে মুহাদ্দিসগণ একমত এই যে, তা যে প্রকারের হােক না কেন সেটা গ্রহণযােগ্য ও গৃহীত। যদিও তা সনদ অসংযুক্ত অথবা মুরসাল হয়, তার বিরােধীতা করা বা খন্ডন করা যাবে না। এমনকি পূর্ব যুগের ইমামগণ এরুপই করেছেন।" [আল্লামা আবু তালিব মক্কী : কুউয়াতুল কুলুব : ১ / ৩০১ পৃ.]


দলীল নং - ১২ 

আল্লামা ইমাম নববী (رحمة الله) বলেন, 


“ ওলামায়ে কেরাম এই বিষয়ে সবাই ঐকমত্য পােষণ করেছেন দুর্বল হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযােগ্য।" [আল্লামা ইমাম নাওয়াবী : আরবাঈন : ১/৪২ পৃষ্ঠা]


দলীল নং- ১৩ 

আল্লামা ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি (رحمة الله) বলেন, 


“ মুহাদ্দিস ও অন্যান্য ওলামাদের বক্তব্য হলাে দুর্বল সনদ সম্পর্কে অথবা কিছু ছাড় দেওয়া এভাবে যে মওদু বা বানােয়াট হয়, তা ফাযায়েল আমল এবং অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে আমল করা বৈধ আছে। যদি তা আহকাম ও আকায়েদের সাথে সম্পর্ক হয়, যে ইমামগণ এ মত পােষণ করেছেন, তাদের মধ্যে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল, ইমাম ইবনে মাহদী, ইমাম ইবনুল মােবারক সংযুক্ত আছেন। তারা বলেন যে, আমরা হালাল হারামের মধ্যে হাদিস বর্ণনা করতে গিয়ে কঠিনতা অবলম্বন করেছি এবং ফাযায়েল বর্ণনার ক্ষেত্রে নম্রতা অবলম্বন করেছি।" [ আল্লামা ইমাম আব্দুর রহমান জালালুদ্দীন সুয়ুতী : তাদরীবুর রাবী, ১ / ৫১পৃ.]


দলীল নং- ১৪

আল্লামা ইমাম নাওয়াবী (رحمة الله) বলেন, 


“ মুহাদ্দিসীনে কেরাম ও ফুকাহায়ে কেরাম এবং অন্যান্য ওলামায়ে কেরাম বলেছেন ফাযায়েল বা উৎসাহিত করা ও ভয়ভীতি প্রমাণ বা গ্রহণ করা হাদীসে দ্বঈফ দ্বারা জায়েজ আছে যদি তা জাল বর্ণনা বা জাল হাদিস না হয়।" [ আল্লামা ইমাম নাওয়াবী : কিতাবুল আযকার, ১৮ পৃষ্ঠা, দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন। ]


দলীল নং- ১৫ 

আল্লামা ইমাম বুরহানুদ্দিন ইবরাহিম হালবী (رحمة الله) বলেন, 


“গােসল বা ওজুর পরে রুমাল দ্বারা শরীর মুছাহ মুস্তাহাব। হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, হুযুর (ﷺ) এর একটি কাপড়ের টুকরা ছিল যা দ্বারা ওযুর পরে অঙ্গ মােবারক মাসেহ করিতেন। উক্ত হাদিস ইমাম তিরমিযী দুর্বল বলেছেন। এরপরেও উহার আমল বিদ্যমান আছে।" [আল্লামা ইমাম ইব্রাহীম হালবী হানাফি : গুনিয়াতুল মুসল্লী, ৫২ পৃ.]


দলীল নং- ১৬ 

আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেন, 


“ দ্বঈফ হাদিস ফাযায়েলে আমলের মধ্যে আমল করার ব্যাপারে ইমামগণের ঐকমত্য হইয়াছে। এই জন্য আমাদের ইমামগণ বলেছেন গর্দান মাসেহ করা মুস্তাহাব। অথবা সুন্নাত প্রমাণিত হয়েছে।" 

[আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী : মওজু অতুল কবীর : ১/৩১৫ পৃ.৪৩৩]


দলীল নং - ১৭ 

আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) অন্যস্থানে বলেন, 

“ দ্বঈফ সনদের হাদিস (মওদ্বু বা জাল নয়) ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযােগ্য।" 

[আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী : মেরকাত : ২০৬ পৃ, হাদিস : ৫২১]


দলীল নং - ১৮ 

আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) অন্যত্র বলেন, 

“ নিশ্চয় জেনে রাখুন! দুর্বল সনদের হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযােগ্য।"

[আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : মেরকাত : ৩ / ৪৯ কিতাবুস সালাত : হাদিস : ৯৭৪]


দলীল নং - ১৯

আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله)  আরও বলেন, 

“ সমস্ত ইমাম মুহাদ্দিস ঐকমত্য পােষণ করেছেন যে, ফাযায়েলে আমলের জন্য দ্বঈফ বা দুর্বল হাদিস দ্বারা আমল করা বৈধ।"

[আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী : মেরকাত : ৩ / ৪৯ কিতাবুস সালাত : হাদিস : ১১৭৩]


দলীল নং - ২০ 

আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) আরও বলেন, 

“ হাদিসটি দুর্বল, তবে ফাজায়েলের জন্য এবং আমলের জন্য গ্রহণযােগ্য।"

[আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী : মিরকাত : ৩৮৯৯পৃ . কিতাবুস সালাত : হাদিস : ১১৮৪]


দলীল নং - ২১

আল্লামা শায়খ আব্দুল হক  মোহাদ্দেস দেহলভী(رحمة الله) বলেন, 


“ দ্বঈফ হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযােগ্য, তা ব্যতিত অন্য বিষয়ের জন্য নয়। এই কথার মর্ম হচ্ছে তার বর্ণনা যদি একক হয়, একাধিক সনদে বর্ণিত যে হাদিস তা হাসানের অন্তর্ভূক্ত, তা তখন দ্বঈফের অন্তর্ভুক্ত নয়।" 

[আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী : মুকাদ্দামাতুশ শায়খ, ২৩ পৃ.]


দলীল নং - ২২ - ২৩ 

আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেন, 


 “ সমস্ত ওলামায়ে কেরাম ঐকমত্য পােষণ করেছেন যে দ্বঈফ হাদিস ফযিলতপূর্ন আমল এর ক্ষেত্রে গ্রহণযােগ্য।" আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) অন্য জায়গায় আরাে বলেন, “ দ্বঈফ হাদীসের উপর আমল করা জায়েয বা বৈধ।" 


তথ্যসূত্র-

১. আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী : মিরকাত, ৩ / ৩৪০ বাব : সাহরী কিয়ামে রামাদ্ধান : হাদিস নং - ১৩২১। 

২.  আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী : মিরকাত : ৩ / ৩৫০, হাদিসঃ১৩০৮। 


দলীল নং - ২৪

আল্লামা ড . মাহমুদ আত্ - তৃহান বলেন, 

“ দুর্বল হাদিসের উপর আমলের ব্যাপারে ইখতিলাফ (মত পার্থক্য রয়েছে তবে জমহুর (অধিকাংশ) ইমাম ও ওলামার মতে দ্বঈফ হাদিস ফাযায়েলে আমলের ক্ষেত্রে আমল করা মুস্তাহাব।"

[“আল্লামা ড. মাহমুদ জাহান : তাইসীরুল মাস্তালিউল হাদিস : ৪৪ পৃ.]


দলীল নং - ২৫ 

আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেন, 

“ হাদীসের সনদে কোন বর্ণনাকারী অজানা বা অচেনা হওয়া অথবা হাদীসের কোথাও স্পষ্ট না হওয়া দ্বারা হাদিসটি মওদু বা বানােয়াট বিবেচিত হয় না। তবে হ্যাঁ, দ্বঈফ বলা যেতে পারে। অতএব দ্বঈফ হাদিস অনুসারে ফযিলত বর্ণনার ক্ষেত্রে এবং আমল করা যাবে।"

[আল্লামা মােল্লা আলী কারী : ফাযায়েলে নিসফিস শাবান : ৪৪ পৃ. ]


 দলীল নং - ২৬

আল্লামা আযলূনী (رحمة الله) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) এর বর্ণিত ঘাড় মাসেহ এর হাদিস প্রসঙ্গে বলেন, 

“ উক্ত হাদিসটির সনদ দুর্বল। তবে হাদিসটি দ্বারা প্রমণিত হলাে ঘাড় মাসেহ করা মুস্তাহাব অথবা সুন্নাত।" 

[আল্লামা আলুনী : কাশফুল খাফা : ২/১৮৬ পৃ.হাদিস : ২২৯৮]


দলীল নং - ২৭ 


আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেন, 

“ এ হাদিসের উপর আমল করা বৈধ, কেননা হাদিসের সনদ দুর্বল, মুরসাল, মুনকাতে হলেও আমল করা বৈধ, আর এ ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছেন, যেমনটি ইমাম নাওয়াবী বলেছেন।"

[আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী, মিরকাত, ৪৭৭পৃ . হাদিস, ৫২১, দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত্ত, লেবানন। ]


দলীল নং - ২৮ 

তিনি এ কিতাবে আরও উল্লেখ করেন, 

“ এ হাদিসটি শাফেয়ী মাযহাবের অনুকূলে, তবে হাদিসটি দ্বঈফ। তবে তা শুধু ফাযায়েলে আমালের জন্যই গ্রহণযােগ্য।"

[আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী, মিরকাত, ৩ / ১২২৩পৃ . হাদিস, ১৭০৮। ]


দলীল নং - ২৯

তিনি আরও বলেন, 

“ নিশ্চয় এ হাদিসটি দ্বঈফ, আর যা ফাযায়েলে আমালের জন্য গ্রহণযােগ্য।" [মেরকাত, ১/২৮২]


দলীল নং - ৩০ 

তিনি তার এ কিতাবে অন্যস্থানে তাগিদ দিয়ে বলেন, 

“ জেনে রাখুন নিশ্চয় দ্বঈফ সনদের হাদিস ফাযায়েলে আমালের জন্য গ্রহণযােগ্য।"

[আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত, ২৭৭৩পৃ.। ]


দলীল নং - ৩১ 

হুবহু তিনি এ কিতাবের অন্যস্থানে বলেন এ রুপ বলেছেন।"

[আল্লামা মােল্লা আলী কারী, মেরকাত, ৩১২২৭পৃ . হাদিস, ১৭১৬। ]


দলীল নং - ৩২ 

আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী এ কিতাবে আরও বলেন, 

“ যখন বুঝা গেল হাদিসটি দ্বঈফ, তাই তা শুধু ফাযায়েলে আমলের জন গ্রহণযােগ্য।"


দলীল নং - ৩৩ 

তিনি আরও বলেন, “ সবাই এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে, দ্বঈফ সনদের হাদিস ফাযায়েলে। আমালের জন্য গ্রহণযােগ্য।"


দলীল নং - ৩৪ 

তিনি আরও লিখেন, "ইমাম ইবনে হাযার মক্কী (رحمة الله) বলেন নিশ্চয় দ্বঈফ সনদের হাদিস ফাযায়েলে আমালের জন্য গ্রহণযােগ্য।" 


দলীল নং - ৩৫

তিনি এ কিতাবে আরও বলেন, “ ফাযায়েলে আমালের জন্য দ্বঈফ সনদের হাদিসই যথেষ্ট।" 


দলীল নং - ৩৬ 

তিনি অন্যস্থানে বলেন, “ নিশ্চয় এ সনদটি দুর্বল, তবে এটি ফাযায়েলে আমালের জন্য গ্রহণযােগ্য।" 


দলীল নং - ৩৭ 

আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (رحمة الله) বলেন, 

“দ্বঈফ সনদের উপর আমালের ব্যাপারে জমহুর মুহাদ্দিসগণ বলেছেন যে, হাদিস ফাযায়েলে আমালের জন্য গ্রহণযােগ্য।" 


দলীল নং - ৩৮ 

আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (رحمة الله) বলেন, 

“ নিশ্চয় দ্বঈফ হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযােগ্য।" সর্বশেষ বলতে চাই উপরের আলােচনা থেকে বুঝলাম যে সকল ইমাম ও মুহাদ্দিসগণ একমত পােষন করেছেন দ্বঈফ হাদিস ফাযায়েলে আমালের জন্য গ্রহণীয় এবং মুস্তাহাব। 

Top