আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শঃ
আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামাতের পরিচয় সম্পর্কে আল্লামা মায়দানী (رحمة الله) লিখেছেন-
أَهْلِ السُّنَّةِ السيرة والطريقة المحمدية و أَهْلِ الْجَمَاعَةِ من الصحابة والتابعين ومن بعدهم من المتبعين للنبي صلى الله عليه وسلم
-‘‘আহলুস সুন্নাহ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, রাসূল (ﷺ)‘র সীরাত এবং তাঁর তরিকার ওপর যারা প্রতিষ্ঠিত এবং আহলুল জামা‘আত দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, যারা রাসূল (ﷺ)‘র অনুসারী সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন এবং তাবে-তাবেয়ীগণের আদর্শের ওপর প্রতিষ্ঠিত।’’(শরহে আক্বিদাতুত তাহাবী, পৃ.৪৪)
সদরুশ শরিয়া আল্লামা উবায়দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) লিখেন-
أَهْلُ السُّنَّةِ وَالْجَمَاعَةِ هُمُ الذين والطريقهم طريقة الرسول وَأَصْحَابِهِ دون أَهْلِ الْبِدَعِ
-‘‘যাঁদের তরিকা হলো, রাসূল (ﷺ) এবং সাহাবাবিদের তরিকা, তারাই হলো আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত এবং তারা কোন বিদআতী সম্প্রদায় নয়।
➤ আল্লামা উবায়দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আত-তাওযীহ, ৩/৩৮পৃষ্ঠা
আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামাতের পরিচয় সম্পর্কে আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেন-
أَهْلُ السُّنَّةِ وَالْجَمَاعَةِ، وَهُمُ الَّذِينَ طَرِيقَتُهُمْ كَطَرِيقَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ–وَأَصْحَابِهِ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ -، دُونَ أَهْلِ الْبِدَعِ
-‘‘ যাদের তরিকা হলো, রাসূল (ﷺ) এবং সাহাবাবিগণের তরিকা, তারাই হলো আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত এবং তারা কোন বিদআতী সম্প্রদায় নয়।’’
➤ ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত, ৯/৪০৪৪পৃষ্ঠা, দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন, প্রথম প্রকাশ- ১৪২২হি।
আহলে হাদিসদের ইমাম ইবনে তাইমিয়া বলেন-
والبدعة مقرونة بالْجَمَاعَةِ فيقال: أَهْلِ السُّنَّةِ وَالْجَمَاعَةِ كما يقال اهل البدعة والفرقة
-‘‘বিদআত শব্দটি ফিরকা’ (বিচ্ছিন্নতাবাদ)‘র সাথে সম্পর্কিত এবং সুন্নাত শব্দটি জামাত (বৃহত্তম) দলের সাথে সম্পর্কিত। যেমন বলা হয়ে থাকে, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাত এবং বলা হয়, আহলুল বিদআত ওয়াল ফিরকা।’’ (আল-ইস্তিমাতু, ১/৪২পৃ.)
ইমাম তিরমিযি (رحمة الله) এক সঠিক মতটিকে উল্লেখ করতে গিয়ে লিখেন-
وَهَكَذَا قَوْلُ أَهْلِ العِلْمِ مِنْ أَهْلِ السُّنَّةِ وَالجَمَاعَةِ
-‘‘আর এটিই আহলে ইলম তথা আহলু সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আক্বিদা।’’
➤ তিরমিযি, আস্-সুনান, ৩/৪১পৃষ্ঠা, হাদিসঃ ৬৬২।
ইমাম জুরকানী (رحمة الله) একটি বিষয়কে হক প্রমাণে এবং বাতিলদের খন্ডনে বলতে গিয়ে লিখেন-
قَالَ أَهْلُ الْعِلْمِ مِنْ أَهْلِ السُّنَّةِ وَالْجَمَاعَةِ -
‘‘আর এটিই আহলে ইলম ( যারা ইলমে হাদিস ও ফিকহের অধিকারী) তথা আহলু সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আক্বিদা।’’
➤জুরকানী, শরহে মুয়াত্তা, ৪/৬৬৩পৃষ্ঠা, আযিমাবাদী, শরহে সুনানে আবি দাউদ, ১৩/১৩পৃষ্ঠা,দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন, প্রকাশ-১৪১৫ হিজরি।।
আহলে হাদিসদের ইমাম শাওকানী এক পর্যায়ে আহলু সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতকে হক এভাবে লিখেন-
لِأَنَّ الْمَسْحَ ثَبَتَ بِالتَّوَاتُرِ وَاتَّفَقَ عَلَيْهِ أَهْلُ السُّنَّةِ وَالْجَمَاعَةِ
-‘‘নিশ্চয় (জুতার উপর মোজা) মাসেহ করা মুতাওয়াতির পর্যায়ের হাদিস দ্বারা প্রমাণিত এবং আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাত এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।’’
➤ শাওকানী, নায়লুল আউতার, ১/২৩১পৃষ্ঠা, দারুল হাদিস, মিশর, প্রকাশ-১৪১৩হিজরি।
আহলে হাদিস মোবারকপুরী (ওফাত.১৩৫৩হি.) আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাত সম্পর্কে তার কিতাবের এক স্থানে লিখেন-
الشيخ الجيلاني في الغنية: وأما الفرقة الناجية فهي أهل السنة والجماعة.
-‘‘বড় পীর হযরত শায়খ আব্দুল কাদের জিলানী (رحمة الله) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘গুনিয়াতুত-ত্বালেবীন’ এ লিখেন, আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতই হলো একমাত্র নাযাতপ্রাপ্ত দল।’’
➤ মোবারকপুরী, তুহফাতুল আহওয়াযি, ৭/৩৩২পৃষ্ঠা,ও মের‘আতুল মাফাতিহ, ১/২৭১পৃষ্ঠা,দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।
ইমাম খতিবে বাগদাদী (رحمة الله) একজন রাবির গ্রহণযোগ্যতা ও সে সঠিক আক্বিদায় বিশ্বাসী ছিল বলতে গিয়ে লিখেন-
وكان شيخا صالحا صدوقا من أهل السنة، معروفا بالخير،
-‘‘তিনি হাদিসের শায়খ ছিলেন, সৎ, সত্যবাদী, আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আক্বিদায় বিশ্বাসী ছিলেন, পরিচিত ভালো ব্যক্তি ছিলেন।’’
➤ খতিবে বাগদাদ, তারীখে বাগদাদ, ৪/২২পৃষ্ঠা, ক্রমিক:১২৩৩, দারুল গুরুবুল ইসলামি, বয়রুত, লেবানন।