একজন রাবি মুনকার, মুদত্বরাব, মাতরুক ইত্যাদি হলে হাদিসের সনদটি জাল নয় বরং দ্বঈফ বলা যেতে পারে।
🖋গ্রন্থনায়ঃ মুফতি মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুর
(প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানাের স্বরূপ উন্মােচন)
বর্তমান আহলে হাদিসগণ খুবই ফিতনা ছড়াচ্ছে যে হাদিসের সনদে কোন কি ব্যাপারে যদি মুনকার ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা হয় তাহলে তা তাদের দৃষ্টিতে :
হাদিস হিসেবে গণ্য। অথচ এটি হচ্ছে তাদের মনগড়া নীতিমালা। মুহাদ্দিসগণই বলেছেন সনদের একজন রাবির প্রতি উপরের বর্নিত দুর্বলতার দ্বারা সনদটি দ্বঈফ হবে কিন্তু জাল নয়।
এ বিষয়ে ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতি (رحمة الله) বলেন, “ সর্বসম্মত অভিমত হলাে মুনকার সনদ জাল হাদিসের প্রকার নয়, বরং দ্বঈফ হাদিসের প্রকার।" (সুয়ূতি, তা'আকিবাত, ৩৭পৃ. অধ্যায়ঃ ইত'আম)
ইমাম সুয়ূতি (رحمة الله) তার এ কিতাবের অন্যস্থানে বলেন, “ এটা সুস্পষ্ট কথা ইমাম আদি (رحمة الله) বলেছেন মুনকার সনদের হাদিস জাল নয়।" (সুয়ুতি, তা'কিবাত, ৬২পৃষ্ঠা)
তিনি এ কিতাবের অন্যস্থানে বলেছেন যে, “ সনদ মুনকার হওয়া এটা দ্বঈফ হাদিসের প্রকার (জাল নয়) যা আমলের ফযিলত সম্ভবনা রাখে। (তা'কিবাত, কিতাবুল মানাকিব)।
অপরদিকে মুদরাব সনদ সম্পর্কে তিনি বলেন, “ সনদ মুদরাব হলাে দ্বঈফ সনদের প্রকার, জাল হাদিসের প্রকার নয়।" (সুয়ূতি, তা'কিবাত, ২৭পৃষ্ঠা)।
সিকাহ বা বিশ্বস্ত রাবির মুরসাল হাদিস গ্রহণযােগ্য বর্তমান আহলে হাদিসগণের দৃষ্টিতে মুরসাল হাদিস দ্বঈফ হিসেবে গণ্য তাই তা গ্রহণযােগ্য নয়। অথচ এটি হচ্ছে তাদের মনগড়া নীতিমালা। বিশেষ করে আলবানী এ বিষয়টি নিয়ে খুবই বেশী বাড়াবাড়ি করছে। অথচ আল্লামা মােল্লা আলী কারী (رحمة الله) একটি হাদিসের সনদ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, - "ইমাম আবু দাউদ বলেন সনদটি মুরসাল, আর মুরসাল হলাে মুনকাতেঈ এর প্রকার। তবে জমহুর মুহাদ্দিসীনে কেরামের নিকট মুরসাল হুজ্জাত বা দলিলের উপযুক্ত। (মিরকাতুল মাফাতিহ, ১/৩৬৮পৃ. হাদিস- ৩২৩, কিতাবুল ত্বহারাত)
উক্ত গ্রন্থকার তার এ গ্রন্থের ১৫ স্থানে বলেছেন যে, জমহুর মুহাদ্দিসীনে কেরামের নিকট মুরসাল হাদিস গ্রহণযােগ্য ও হুজ্জাত। এ ব্যাপারে ইমাম ইবনে আমিরুল হাজ্জ (رحمة الله) তার হুলিয়া গ্রন্থেও বলেছেন যে সিকাহ রাবির মুরসাল গ্রহণযােগ্য (হুলিয়া, ২৮৯পৃ . অধায়, সিফাতুস্ - সলাত)
আল্লামা বরুদ্দীন মাহমুদ আইনী (رحمة الله) ও বলেছেন মুরসাল হাদিস হুজ্জাত অধিকাংশ মুহাদ্দিসগণের নিকট গ্রহণযােগ্য। অনুরুপ অভিমত আহলে হাদিসদের কিছু ইমাম শাওকানী, মােবারকপুরী, আযিমাবাদী ও তাদের গ্রন্থে বলেছেন।